বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সংস্থার আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের কাছে এই চিঠি হস্তান্তর করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদও ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এই অবৈধ সরকারের অধীনে বাংলাদেশে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, নাগরিকদের যে হত্যা করা হয়েছে তার একটি আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ঘটনা উদঘাটন করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, নাগরিকদের গুম করা হয়েছে এটার উন্মোচন করা প্রয়োজন। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে এবং দেশের বাইরে যে ঘটনার মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞ হয়েছে তা জাতি ও বিশ্বের সামনে আমাদের তুলে ধরতে হবে। যাতে আগামী দিনে নাগরিকদের হত্যা করে জোর করে ক্ষমতায় থাকার সাহস যেন কেউ করতে না পারে।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে একটি নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য তদন্তের কথা বলেছি, জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। জাতিসংঘকে বলার জন্য ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেছি। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত জনগণের আকাঙ্ক্ষা।’
এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘এখানে সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় গণহত্যা হয়েছে, এর ওপরেই তদন্ত হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ স্বচ্ছ একটি তদন্ত দরকার।’
তিনি বলেন, ‘দেশে আগে আইন বলে কিছু ছিল না। এখন আমরা ক্রমান্বয়ে ফিরে পাচ্ছি। গণহত্যার যে ঘটনা ঘটেছে তা বিশ্বে ঘৃণিত হয়েছে এবং সারা বিশ্ব এটার প্রতিবাদ করেছে।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মানের একটি স্বচ্ছ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। যদি এসব তুলে ধরতে না পারি ভবিষ্যতেও স্বৈরাচার এবং এরকম ফ্যাসিস্ট সরকার আসবে। তারাও মানুষকে গুম-খুন, হত্যা করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে।’
‘গণহত্যাকারী’ কি আবার দেশে এসে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি-না প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু বলেন, ‘দেখুন ফিরে আসা না আসা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কিন্তু গণহত্যার বিচারের সম্মুখীন হবে এটা নিয়ে কারও মনে সন্দেহ থাকার কথা নয়। এটা কোনো আলোচনার বিষয় নয়।’
শফিকুল ইসলাম/সালমান/