ঢাকা ১ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর ১১০ ভাগ মানুষ বিএনপি হয়ে গেছে: আবু ওয়াহাব

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০১:৪৩ পিএম
আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর ১১০ ভাগ মানুষ বিএনপি হয়ে গেছে: আবু ওয়াহাব
ছবি: খবরের কাগজ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে দেশে ১১০ ভাগ মানুষ বিএনপির সমর্থক হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) ও ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে নগরীর টাউন হলে শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলের আগে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

ওয়াহাব আকন্দ বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের আগে দেশে ৯০ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগ ছিল। আর ৫ আগস্টের পর ১১০ ভাগ মানুষ বিএনপি হয়ে গেছে। এটা খুবই চিন্তার কারণ। গত ১৭ বছর যারা জীবন বাজি রেখে দলের জন্য কাজ করেছেন, তাদের বাইরে নতুন বিএনপির দরকার নেই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের স্বাধীনতা নস্যাৎকারী কোনো ব্যক্তির মৃত্যু বা জন্মদিন আর বাংলাদেশে পালন করা হবে না। আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি চলবে। রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবিলা করা হবে।’

দুঃসময়ের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা এতদিন আমাদের দেখে টিপ্পনি কেটে বলত- ওই যে যাচ্ছে এতিমের টাকা খাওয়া নেত্রীর নেতারা। তাদের মতো কোনো খালাতো, মামাতো ভাই নিয়ে কেউ আমাদের সামনে আসবেন না। আগে দুঃসময়ের নেতা-কর্মীদের সুযোগ মতো মূল্যায়ন করা হবে।’ 

এ সময় দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, মহানগর বিএনপির সদস্য রতন আকন্দ বক্তব্য রাখেন। 

বিক্ষোভ মিছিলে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক লিটন আকন্দ, দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শহীদুল আলম খসরু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হক টুটুসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কামরুজ্জামান মিন্টু/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে মুসলিম উম্মাহকে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ এএম
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে মুসলিম উম্মাহকে তারেক রহমানের শুভেচ্ছা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বাণীতে এ শুভেচ্ছা জানান তিনি।

বাণীতে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের কাছে প্রার্থনা করি, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগের মহিমা আমরা সবাই যেন নিজেদের জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারি। আমি শেষ নবী সাইয়েদুল মুরছালিন হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্য অসংখ্য দরুদ ও তার প্রতি সালাম জানাই।’

তিনি বলেন, ‘মহানবী (সা.)-এর আবির্ভাব ছিল একটি বিস্ময়কর ব্যাপার। মানবজাতি তার আগমনে নিজেদের কল্যাণ ও শান্তির নিশ্চয়তা লাভসহ জগতের সব অত্যাচার-অনাচার, কুসংস্কার, নিষ্ঠুরতা, সামাজিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মানবিক অসাম্য ও মানবাধিকার বৈষম্যের ঘোর অন্ধকার যুগ থেকে নিষ্কৃতি লাভের আলোকিত পথের সন্ধান পায়। তিনি মানবতার মুক্তির দিশারী।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সত্তার আবির্ভাব ঘটে এই পৃথিবীতে। এই দিনটি শেষ নবীর জন্মদিন হিসেবে মুসলমানের মধ্যে পালিত একটি উৎসব। সৃষ্টির সেরা মানব বিশ্বনবীর মতো এ মহান নেয়ামতের আগমন দিবস কতই না মর্যাদাবান, গুরুত্ববহ, কতই না আনন্দের তা সহজেই অনুমেয়।’ 

আজ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও মানবতার পথপ্রদর্শনকারী মহানবীর ধরাপৃষ্ঠে আবির্ভাবের দিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তার মর্যাদা সুউচ্চ আসনে অভিষিক্ত করেছেন। পৃথিবীতে মানুষ ইহজগত ও পরজগতের মুক্তির সন্ধান পায় এই দিনে।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘মহানবী (সা.) মানব জাতির জন্য এক অত্যুজ্জ্বল অনুকরণীয় আদর্শ। নিজ যোগ্যতা, সততা, মহানুভবতা, সহনশীলতা, কঠোর পরিশ্রম, আত্মপ্রত্যয়, অসীম সাহস, ধৈর্য, সৃষ্টিকর্তার প্রতি অগাধ বিশ্বাস, নিষ্ঠা ও অপরিসীম দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে তিনি তার ওপর অবতীর্ণ সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ আল কোরআনের বাণী তথা তাওহিদ প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালন করেন।’

শেখ হাসিনা মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছেন : মামুনুল হক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৩ পিএম
শেখ হাসিনা মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছেন : মামুনুল হক
গণসমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। ছবি : খবরের কাগজ

শেখ হাসিনা মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পঞ্চগড় স্টেডিয়ামে নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ছিল শেখ হাসিনার প্রতিশোধের রাজনীতি। তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি আরেকটি দেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। তিনি একবারও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর কথা না ভেবে পালিয়ে গেছেন।’ 

মামুনুল হক আরও বলেন, ‘একাত্তরের স্বাধীনতা হয়েছিল কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন তৈরি হবে না তার ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা দেখলাম বিজয়ের পরে সাত কোটি মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ’৭২-এ বাংলাদেশের মানুষের ওপর একটি সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাহাত্তরের এই চেতনার মাধ্যমে একাত্তরের চেতনাকে হাইজ্যাক করা হয়েছিল। ’৭১ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত ৩০ হাজার যুবককে হত্যা করেছে বাকশালীরা। আপনার কাছে যদি ৩০ হাজার মানুষের প্রাণের কোনো দাম না থাকে তাহলে এ দেশের মানুষের কাছে আপনার বাপ-ভাইয়ের রক্তের কোনো দাম থাকবে না।’ 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কখনোই সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা হতো না। এটি ছিল নাটক। এই নাটকের কুশীলব ছিলেন শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। এরা রাতের অন্ধকারে কাল নাগিনী হয়ে সংখ্যালঘুদের ছোবল মারত, আবার সকালে ওঝা হয়ে ঝাড়ত। এখন তারা নেই, নাটকও নেই। এখন বাংলাদেশ সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংগঠনটির পঞ্চগড়ের সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিন, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইনসহ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতা-কর্মী এবং হাজারও মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

ফ্যাসিবাদী সরকার পাথর আমদানির মাধ্যমে টাকা পাচার করেছে: ফয়জুল করীম

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ পিএম
ফ্যাসিবাদী সরকার পাথর আমদানির মাধ্যমে টাকা পাচার করেছে: ফয়জুল করীম
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কথা বলছেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম। ছবি : খবরের কাগজ

পরিবেশের দোহাই দিয়ে দেশের পাথর উত্তোলন বন্ধ করে ভারত থেকে পাথর আমদানির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকার সেদেশে টাকা পাচার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়খে চরমোনাই মুফতি ফয়জুল করীম।

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার নদী থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভারত থেকে নিম্নমানের পাথর কেনে। ফলে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করার সুযোগ পায় তারা। প্রতিবছর ভারতে চলে যায় ৫ বিলিয়ন কোটি ডলার।’

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন ফয়জুল করীম। 

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থে সবকিছু করেছে। দেশের জনগণের স্বার্থে কিছু করেনি। আর বিনিময়ে ভারত আমাদের নিম্নমানের জিনিস দেয়, বর্ষা মৌসুমে ডুবিয়ে মারে, শুষ্ক মৌসুমে পানি বন্ধ করে মরুভূমিতে পরিণত করে। এটাই ভারতের বন্ধুত্বের নমুনা।’ 

ফয়জুল করীম আরও বলেন, ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিয়ে নদী থেকে পাথর উত্তোলন শুরু করতে হবে। পাথর না তুললে নদী ভরাট হয়ে বন্যার সৃষ্টি হবে।’ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পাথরকোয়ারিদের দাবি মেনে নিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের মহাসচিব মুফতি রেজাউল করীম আবরার, বুনিয়ান আবাসনের চেয়ারম্যান মাওলানা রশীদ আহমদ ফেরদৌস, মুফতি ইমাম উদ্দীন, সিলেট বিভাগীয় পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আলী বাবুল, কোম্পানীগঞ্জ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুল আজিজ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিমুল ইসলাম আঙ্গুর, জাফলং পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন লিপু প্রমুখ। 

নেতারা বলেন, ‘অনতিবিলম্বে পাথর কোয়ারি খুলে দিয়ে ঋণখেলাপিতে ধসে পড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ মওকুফ করতে হবে। দেশি ভালো ও মানসম্মত পাথর উঠিয়ে ভারতের পাথর আমদানি বন্ধ করে রিজার্ভ বৃদ্ধি করুন। ডলার সংকটের এই দুঃসময়ে বিদেশ থেকে কোটি কোটি ডলার খরচ করে নিম্নমানের পাথর আমদানি করা হচ্ছে।’

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

রাঙামাটিতে বিএনপির ৯ নেতাকর্মী বহিষ্কার

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ পিএম
রাঙামাটিতে বিএনপির ৯ নেতাকর্মী বহিষ্কার
বিজ্ঞপ্তি

রাঙামাটি সদর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৯ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে জেলা বিএনপি।

এসব নেতাদের বিরুদ্ধে ‘জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দলের নেতাকর্মীকে শারীরিক নির্যাতন করাসহ নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার পর থেকে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পৃথক তিনটি চিঠি দিয়ে ৯ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানায়।

চিঠিতে জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপুর স্বাক্ষর রয়েছে।

বহিষ্কারকৃতরা হলেন- বাঘাইছড়ি পৌর বিএনপির সদস্য মো. নাছির, বাঘাইছড়ি পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বখতেয়ার, রাঙামাটি মহিলা কলেজ এলাকার মোহাম্মদ রানা, মো. লিটন, মো. রুবেল, জেলার পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের মোহাম্মদ কালু মিয়া (কসাই কালু), মো. ফারুক, মো. ইকবাল ও মো. জুয়েল।

প্রকাশিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘দলীয় পদ-পরিচয় ব্যবহার করে আপনি মো. নাছির, সদস্য, বাঘাইছড়ি পৌর বিএনপি এবং মো. বখতেয়ার, যুগ্ম আহবায়ক, বাঘাইছড়ি পৌর স্বেচ্ছাসেবক দল রাঙামাটি পার্বত্য জেলা নিজ স্বার্থে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দলের নেতাকর্মীকে শারীরিক নির্যাতন করাসহ দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

এরূপ অপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাঙামাটি জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দলের সব নেতাকর্মীকে বহুবার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আপনি দলের নির্দেশনা অমান্য করে এ সব গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করছেন।

আপনার এ সকল কর্মকাণ্ড দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিরোধী হওয়ায় দলের গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে আপনাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পর্যায়ের সংগঠনের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। এই সিদ্ধান্ত আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।’

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর করা ওই চিঠির অনুলিপি বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বাঘাইছড়ি পৌর বিএনপির সভাপতি সম্পাদক ও রাঙামাটি জেলা যুবদলের সভাপতি সম্পাদকের কাছে দেওয়া হয়েছে।

জিয়াউর জুয়েল/জোবাইদা/অমিয়/

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিএনপির ৪২২ নেতাকর্মী নিহত: ফখরুল

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ পিএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫২ পিএম
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিএনপির ৪২২ নেতাকর্মী নিহত: ফখরুল
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

জুলাই ও আগস্টের গণহত্যায় (১৩ আগস্ট পর্যন্ত) মোট ৮৭৫ জন শহিদ হয়েছেন। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পোশাকশ্রমিক কিংবা রিকশাচালক। পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী, সব মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান। আর তাই, সমান গুরুত্বের সঙ্গেই প্রণয়ন করতে হবে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তালিকা ও নিশ্চিত করতে হবে সুবিচার। শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐকমত্য আমরা দেখতে পাই তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা, এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে, গণআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে, অভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল নয়, বিএনপির উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে, অভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে, ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা।’

আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম নির্যাতনের ভয়াবহতা তুলে ধরে ফখরুল জানান, অস্বাভাবিক নিপীড়ণের শিকার হয়ে ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, হুমাযুন পারভেজ, সাজেদুল ইসলাম সুমন, জাকিরসহ কেবল বিএনপির ৪২৩ জন নেতাকর্মী এবং সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে প্রায় ৭০০ জন গুম হয়েছেন। তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারাবন্দি নাসিরুদ্দিন পিন্টু ও বিএম বাকির হোসেনকে হত্যার মাধ্যমে যে নৃশংস সংস্কৃতি সূচনা করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, তারই ধারাবাহিকতায়, রংপুরের লক্ষ্মিটারী ইউনিয়নের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম ও অন্তত আরও ২০ জন বিএনপি নেতাকে নির্যাতনের মাধ্যমে কারাগারে খুন করা হয়। এসব হৃদয়বিদারক ঘটনায়, ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হন বিএনপির এক হাজার ৫৫১ জন নেতাকর্মী।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গায়েবি মামলা, ও নৃশংস নিপীড়ন দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এর ফলস্বরূপ জাতিসংঘসহ স্বীকৃত মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ায়।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যুক্ত ছিল- গণতান্ত্রিক প্রতিটি ব্যক্তি, দল, সংগঠন ও গোষ্ঠী তাদের সবার আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি না দিলে তা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার। সকল শ্রেণি-পেশা-মতের মানুষের অংশগ্রহণকে সম্মান জানিয়ে, জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সেই পথযাত্রায় ও রাষ্ট্র সংস্কারে, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে গড়ে তুলতে হবে একটি নিরাপদ ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিফলন ঘটবে জনগণের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশার।

ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণকে বারবার ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতাকে যখনই গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র, প্রতিবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। বাকশালের পর বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের পর সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, দেশের মানুষের অধিকার ও মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন; গণতান্ত্রিক প্রতিটি ব্যক্তি, দল, সংগঠন ও গোষ্ঠী তাদের সবার আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি না দিলে তা হবে ইতিহাসের প্রতি অবিচার। সকল শ্রেণি-পেশা-মতের মানুষের অংশগ্রহণকে সম্মান জানিয়ে, জনগণের লুন্ঠিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সেই পথযাত্রায় ও রাষ্ট্র সংস্কারে, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে গড়ে তুলতে হবে একটি নিরাপদ ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে প্রতিফলন ঘটবে জনগণের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশার।

ফখরুল বলেন, ‘এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস, গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ব্যাথাতুর মায়ের ডাক, স্বামী হারানো বেদনাবিধূর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ, পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার, আর কারাগারে বন্দি ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থণা। তাদের সবার ১৬ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে, প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে; চলমান ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/