ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতের সহায়তায় অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায় আ.লীগ: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
ভারতের সহায়তায় অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায় আ.লীগ: মির্জা ফখরুল
ছবি: খবরের কাগজ

হিন্দু সম্প্রদায়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ভারতের সাহায্যে আওয়ামী লীগ আবারও দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আবার একটা নতুন খেলা শুরু হয়েছে সংখ্যালঘু, কিন্তু এদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, সবাই বাংলাদেশি। হিন্দু সম্প্রদায়কে ঢাল বানিয়ে আরেকটা কৌশল আবিষ্কার করে অরাজকতা তৈরির চক্রান্ত করছে আওয়ামী লীগ। দেশকে অস্থিতিশীল বা কিছু একটা করে ভারতের সহায়তায় ফিরে আসতে চায় তারা। এদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে। 

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার ও নৈরাজ্য ঠেকাতে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এ ছাড়াও বেলা ১১টা থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে, মালিবাগ, মৌচাক, শাহজাহানপুর, কাপ্তান বাজার এবং কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা মহানগর বিএনপি, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গত ১৫ বছর বিএনপি যে মূল্য দিয়েছে, তা পৃথিবীতে বিরল। ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। শত শত নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, নির্যাতন-গুলিতে অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। অনেক মা তার ছেলে হারিয়েছে, বোন তার ভাই হারিয়েছে, সন্তান তার পিতাকে হারিয়েছে। 

শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ইতিহাস বড় নির্মম, আল্লাহতাআলার বিচার বড় নির্মম। আল্লাহতাআলা চোখের সামনে দেখিয়ে দিলেন যে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী। অহংকার, কী অহংকার! আল্লাহর কি হুকুম, তাকে পালিয়ে যেতে হলো সেই জায়গায়, যেখানে তার গোড়া পোঁতানো আছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, এটা তাদের চোখের সামনে দেখিয়ে দিয়েছে।

ছাত্রদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মাত্র দেড় মাসে ছাত্র ও জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে অভূতপূর্ব বিপ্লবে সরকার পতন হয়েছে। এক হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে গুলি করে মারা হয়েছে। ইতিহাসে এটি রক্তাক্ত জুলাইয়ের বিপ্লব। রংপুরের আবু সাইদ টিউশনি করে লেখাপড়া চালিয়েছেন। অত্যন্ত গরিব ঘরের সন্তান। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচন দেবে, তাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেবে বিএনপি। এই সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত সহযোগিতা করার কথাও জানান তিনি।

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের কথা তুলে ধরে ফখরুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিরোধী ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার করতে হবে। যারা গণহত্যা চালিয়েছেন, লুণ্ঠন-নির্যাতন করেছেন, হত্যা করেছেন, টাকা পাচার করেছেন তাদেরকেও বিচার করতে হবে। যেসব সরকারি কর্মকর্তা স্বৈরাচারী সরকারের দোসর হয়ে কাজ করেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, শেখ হাসিনা সালমান এফ রহমানকে প্লেনে নেয়নি। আমাদের নেত্রীকে আটক করা হয়েছিল, আমাদের কেউ পালিয়ে যায়নি। এটাই হলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-নেত্রীদের মধ্যে পার্থক্য। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সারা জীবন দেশের জন্য কাজ করেছেন। আন্দোলন কিন্তু শেষ হয়নি, নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। 

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, এক বুক রক্ত দিয়ে ছাত্র-জনতা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা এনেছে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করার দুঃসাহস দেখাবেন না। এ দেশের ছাত্র-জনতা খেলা দেখিয়ে দিয়েছে। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আর এই দেশে তাদের আসতে দেবে না। 

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

শহিদ মিনারে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি 

ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রদল। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহিদ মিনারের এই কর্মসূচিতে, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ঢাকা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বাংলা কলেজ, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেছা কলেজ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতা-কর্মীরাও অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে চলা আন্দোলন কর্মসূচিতে যেসব ছাত্র-জনতা শহিদ হয়েছেন, তাদের সঠিক বিচারের দাবিতে ও বিগত ১৫ বছরে ছাত্রদলের যেসব নেতা-কর্মী গুম ও খুন হয়েছেন, এসব গুম ও খুনের বিচারের দাবিতে আমরা শহিদ মিনারে অবস্থান নিয়েছি।’

শফিক/এমএ/

 

দুই দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত
গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি

অন্তর্বর্তী সরকারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা সবাই মিলে দেখেছি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনে ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করব। এখানে যদি দুই-একটা সংযোজন করার প্রয়োজন হয়, সেগুলোও আলোচনার মাধ্যমে আগামী দিনে সংযোজন করবো। ৩১ দফা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরব।’

আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি, কারণ জাতি রক্তপাতের মধ্য দিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে। এই সরকার যাতে দ্রুত তাদের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারে এবং নির্বাচনি কার্যক্রমের মধ্যে নিয়ে গিয়ে একটি স্বৈরাচারী প্রথা থেকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণতন্ত্রের মাধ্যমে দেশে নির্বাচন হয়- এখানে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ঐকমত্য হয়েছি।’

বিএপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচনের পর আন্দোলনরত সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবেন। যার মাধ্যমে এই ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ।’ 

বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো সহযোগিতা করবে। আর এই সরকার কতদিন থাকবে, সেটা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন হয়। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, এতদিন আমরা ৪২টি দল মৌলিক দাবিতে একমত হয়ে আন্দোলন করেছি। যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো সরকারের যৌক্তিক সময় দেওয়ার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে।’

বিএনপি লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ও লিয়াঁজো কমিটি প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কমিটির সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সংগঠনের আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাটের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়। এদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চারজন সমন্বয়কও ছিলেন। পরে বিকাল সোয়া ৫টায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

 

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলে ইউরোপিয়ান আ.লীগের নিন্দা

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলে ইউরোপিয়ান আ.লীগের নিন্দা
আওয়ামী লীগ

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান এই প্রতিবাদ জানান। 

পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিশেষ নিরাপত্তা আইন পুনর্বহাল করার জোর দাবিও জানিয়েছেন।

‘রাজনৈতিক সরকার ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না’

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম
‘রাজনৈতিক সরকার ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না’
দাবি দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট

রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখাসহ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাম জোটের ‘দাবি দিবস’ উপলক্ষে বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তারা এসব দাবি জানান। 

জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, রেশনিং চালু, খেলাপি ঋণ ও পাচারের টাকা উদ্ধার, দুর্নীতিবাজ-ঋণখেলাপি-অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবিও জানান। 

বাম নেতারা বলেন, ‘প্রশাসন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সবখানেই সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকলে এবং জবাবদিহির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হলে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে না। এক দখলবাজের পরিবর্তে আর এক দখলবাজ নয়; সাম্প্রদায়িক হামলা ও নিপীড়নও আমরা চাই না।’

তারা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট, দেশের টাকা পাচার, দিনের ভোট রাতে নয়- এটাই দেশের গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের রূপরেখা হাজির করতে হবে। ফ্যাসিবাদী শাসক উচ্ছেদের পর এখন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ প্রয়োজন। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারই যথেষ্ট নয়, দুর্নীতি এবং পাচারকৃত টাকা উদ্ধার করতে হবে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক ও বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

মাজারের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জাকের পার্টির

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
মাজারের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জাকের পার্টির
জাতীয় প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে জাকের পার্টি

সারা দেশে মাজারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াসহ প্রতিটি মাজারে নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে জাকের পার্টি। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাকের পার্টির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে দলটি।

লিখিত বক্তব্যে দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার অভিযোগ করেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বিজয়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং সামগ্রিক অর্জনকে নস্যাৎ করার অনভিপ্রেত দুরভিসন্ধিমূলক ঘটনার অবতারণা চলছে। মাজারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।’ 

আওয়ামী লীগ বা বিএনপি জোটে জাকের পার্টি নেই বলে উল্লেখ করে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন, ‘মাজারবিরোধীরা আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকের পার্টির মাজারে হামলা করার গোপন পরিকল্পনা করেছে।’ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আ.লীগের পতন হয়েছে : জি এম কাদের

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম
শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আ.লীগের পতন হয়েছে : জি এম কাদের
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিতর্কের দায়ে নয়, দুর্নীতি-দুঃশাসন ও শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্যই আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, এই কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় মহিলা পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জি এম কাদের। 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পতনে কোনো রাজনৈতিক দলের কৃতিত্ব নেই। অনেক দল তো নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল, পেরেছিল কি? অনেক দল নির্বাচনে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকারই তাদের নামে বিভিন্ন মামলা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রেখেছিল। তবে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়নি, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে তাদের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য। শেখ হাসিনার গোঁয়ার্তুমির জন্য আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে।’

দশম থেকে দ্বাদশ- প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে নানা মহলে। জাতীয় পার্টি প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হওয়ায় দলটিকে নিয়েও সমালোচনার অন্ত নেই। এ প্রসঙ্গে সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচনে নিয়েছে। এতে জাতীয় পার্টি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি কি মন্ত্রী হতে নির্বাচনে গিয়েছি? আমি তো ২০০৮ সালে মন্ত্রী ছিলাম। তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেছিলাম। আমি কখনো মন্ত্রিত্বের জন্য রাজনীতি করি না।’

২০১৪ সালে জাপার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও তার ভাই জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নেতা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জি এম কাদের বলেন, ‘তখন আওয়ামী লীগ রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির আরও একটি গ্রুপ বানিয়ে লাঙল মার্কা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। এই ধারাবাহিকতায় বজায় থাকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও।’  

জি এম কাদের বলেন, ‘জোর করে নির্বাচনে নেওয়ার কারণে আমাদের রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন বর্জন করতে পারিনি। আওয়ামী লীগের পতন না হলে আমাদের দল বিলীন হয়ে যেত। আওয়ামী লীগের পতন না হলে কোনো দলই বাংলাদেশে থাকত না। শুধু আওয়ামী লীগ থাকত।’ 

সমালোচকদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টি চেয়াম্যান বলেন, ‘আমরা কখনো আওয়ামী লীগের দোসর ছিলাম না। আমরা সব সময় জনগণের দোসর ছিলাম। তবে জাতীয় পার্টিকে সব সময় ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে জাতীয় পার্টি নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র এখনো চলছে।’

জাতীয় পার্টি কখনো আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল না বলেও দাবি করেন দলটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে দানব বানিয়েছি। কোনো দল যদি দানব হয়ে থাকে তাহলে তারা নিজেদের দোষেই দানব হয়েছে। আবার কোনো দল সুযোগ পেলে যে দানব হবে না তা কি বলা যায়। তা ছাড়া এখন যারা বড় বড় কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের আমলে কতজন কথা বলতে পেরেছেন? আওয়ামী লীগকে নিয়ে থা বলার পরে যদি আওয়ামী লীগ পরের দিন আপনাকে আবার সেই কথার উল্টা কথা বলতে বলত, না বলে পারতেন? আমরা আমাদের কথা বলে গেছি, আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলেছি। আমাদের বিরোধীদল করা হয়েছিল, আমরা ইচ্ছেমতো সরকারের সমালোচনা করতে পেরেছি।’

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মনিরুল ইসলাম মিলন, মাসরুর মওলা, পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেরুন্নেসা খান হেনা পন্নী, মহিলা পার্টির নেতা ডা. সেলিনা খান, জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা, তাসলিমা আক্তার রুনা, সীমানা আমির, ফরিদা সিকদার, মিথিলা রওয়াজাসহ আরও অনেকে।

জয়ন্ত সাহা/সালমান/