বগুড়া সদরের বাস স্ট্যান্ড এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিজানুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় আহত লেদু মিয়া নামে আরেকজনকে শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ভেতরে পিটিয়ে হত্যা করেছে আরেক দল দুর্বৃত্ত।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার দুই ঘণ্টা আগে রাত ৯টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল স্ট্যান্ডের আন্তজেলা ট্রাক মালিক সমিতির কার্যালয়ে মিজানুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। পরে তাকে শজিমেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা মিজান সোমবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে কয়েকজনের সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন। তখন বিদ্যুৎ ছিল না। হঠাৎ পাঁচটি মোটরসাইকেলে কয়েক দুর্বৃত্ত এসে তাদের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা মিজানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যান।
বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী ও গোকুলের বাসিন্দারা জানান, গোকুল ইউনিয়ন যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত নেতা বিপুল ও লেদুর সঙ্গে মিজানের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোকুল স্থল বন্দরে সনি রহমান নামে একজন খুন হন। সেই বিরোধের জের ধরেই গত সোমবার রাতে বিপুল তার দলবল নিয়ে মিজানের ওপর হামলা চালান।
এদিকে পুলিশ জানায়, গোকুল স্ট্যান্ডে মিজানের ওপর হামলাকারীদের একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে নিহত মিজানের পক্ষের লোকজন তাকে লেদু নামে শনাক্ত করেন। এর পরই মিজানের পক্ষের লোকজন ও বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মী উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
তারা পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়েন। সেখানে তারা আহত লেদুকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। একই সঙ্গে জরুরি বিভাগে হামলা ও ভাঙচুর চালান। এ সময় জরুরি বিভাগে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন যমুনা টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো প্রধান মেহেরুল সুজনসহ কয়েকজন সাংবাদিক। লেদুকে মারধরের ভিডিও ধারণ করায় তাদের ওপরও হামলা চালায় মিজানের পক্ষের লোকজন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে উপস্থিত হন।
বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।