ঢাকা ২১ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

বরগুনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদকসহ গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
বরগুনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদকসহ গ্রেপ্তার ৫
বরগুনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইমুল ইসলাম রাব্বি

বরগুনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে সদর থানার পুলিশ তিনজনকে ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- বরগুনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইমুল ইসলাম রাব্বি ও নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম। বাকি তিনজন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা।

জানা যায়, ১৪ আগস্ট বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় সাইমুল ইসলাম রাব্বিকে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বরগুনা উকিলপট্টি এলাকার তার চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম বলেন, ‘পুরাতন একটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

ওসি জগলুল বলেন, ‘১৪ আগস্টে করা মামলার তদন্তে অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় সাইমুল ইসলাম রাব্বিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং অন্য আসামিদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

মহিউদ্দিন অপু/জোবাইদা/অমিয়/

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াতের

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াতের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বুধবার (৬ নভেম্বর) গণমাধ্যম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার দীপ্ত শপথ গ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য জামায়াতের সব শাখা ও দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সব মুক্তিকামী জনতা রাজপথে নেমেছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মেজর জে. খালেদ মোশাররফ পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করেছিল। তখন আমাদের দেশপ্রেমিক সিপাহী ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ৭ নভেম্বর নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে রাজপথে নেমে খালেদ মোশাররফের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজত করেছিলেন।
 
জামায়াতের শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী বারবার দেশকে বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছে। ৫ আগস্ট দেশের ছাত্র-জনতা অনেক তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময় দেশকে সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছে এবং দেশের সামরিক বাহিনী ছাত্র-জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা এমন এক সময় ৭ নভেম্বর পালন করতে যাচ্ছি, যখন জাতি নানা সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। জাতিকে আবার ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানামুখি চক্রান্ত শুরু হয়েছে। জাতি আবার ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদীরা পুনরায় ফিরে আসলে জাতি এক মহাসঙ্কটে নিপতিত হবে। এ অবস্থায় জাতিকে রক্ষা করার জন্য দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল-মত নির্বিশেষে এবং বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

জাহেলিয়াত দূর করে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ফেরাতে হবে: শিবির সভাপতি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পিএম
জাহেলিয়াত দূর করে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ফেরাতে হবে: শিবির সভাপতি
প্রকাশনা উৎসবে ছাত্রশিবিরের নেতারা। ছবি: খবরের কাগজ

জাতির মন-মগজে জেঁকে বসা হীনমন্যতা ও জাহেলিয়াতকে দূর করে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি প্রতিস্থাপন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সমাজে প্রচলিত জাহেলিয়াতপূর্ণ চিন্তা ও মূল্যবোধ আমাদের জাতির অগ্রগতি ও মঙ্গলকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব ভুল ধারণার বিরুদ্ধে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিস্থাপন অপরিহার্য।’

বুধবার (৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ছাত্রশিবিরের ২০২৫ সালের প্রকাশনা সামগ্রীর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ও ঢাকার বিভিন্ন শাখা সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মানবতার সঠিক পথপ্রদর্শন করে। ইসলামী সংস্কৃতি ও নীতির মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা ও নীতি-নৈতিকতায় আমূল পরিবর্তন আনতে পারব, যা সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যাবে। এটি আমাদের জাতির প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে একমাত্র সঠিক দিশা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঠিক অনুধাবন তরুণ ছাত্রদের মধ্যে গড়ে তোলার প্রয়াসে ছাত্রশিবির কাজ করে যাচ্ছে। পশ্চিমা বয়ান শুনে যারা ইসলামকে শুধুমাত্র একটি ধর্ম হিসেবে মনে করেছে, তাদেরকে ইসলামের বিশালতা বোঝানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের প্রকাশনা-সামগ্রী সেই আলোকে সাজিয়েছি।’

সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধারণ করে আসছে। জুলুম ও নির্যাতনের মূল উচ্ছেদ করে একটা বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করার লক্ষ্যেই ইসলামী ছাত্রশিবির গঠিত হয়, যা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই এ বছর আমরা আমাদের প্রকাশনায় এই আন্দোলনের শহিদদের আত্মত্যাগ ও সাহসী ভূমিকা বীরত্বগাথা গল্পগুলো স্থান দিয়েছি।’

প্রতি নতুন বছরেই আকর্ষণীয় প্রকাশনা সামগ্রী প্রকাশ করে ছাত্রশিবির। 

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

ক্যাম্পাস সংস্কারে ১২ দফা দাবি জবি ছাত্রশিবিরের

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পিএম
ক্যাম্পাস সংস্কারে ১২ দফা দাবি জবি ছাত্রশিবিরের
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও বৈষম্যহীন ক্যাম্পাস বিনির্মাণসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন শাখা ছাত্রশিবির। 

এর আগে এসব দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র শিবিরের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন জবি শাখার সেক্রেটারি জেনারেল আসাদুল ইসলাম এবং লিখিত দাবি উপস্থাপন করেন শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন শিকদার।

লিখিত বক্তব্যে, জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় শহিদদের মরণোত্তর ও আহতদের বীরত্বের সম্মাননা প্রদান, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিগত ১৫ বছরের সব নিয়োগ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারার ছাত্ররাজনীতি প্রবর্তনের লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ কার্যকর, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে স্থায়ী নীতিমালা এবং পরবর্তী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে জকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। 

বর্তমান ক্যাম্পাসকে মূল ক্যাম্পাস রেখে কেরানীগঞ্জে নির্মাণাধীন ক্যাম্পাসকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়াসহ বর্তমান ক্যাম্পাসের পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পুনঃনির্মাণ এবং ক্লাসরুম সংকটে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাকে স্থানান্তরেরও দাবি জানান তারা।

এছাড়া দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ ৬০ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় বেদখল হওয়া হলগুলো উদ্ধার, ভবন পুনঃনির্মাণ এবং মাসিক আবাসন ভাতার ব্যবস্থা, দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন এবং প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর সমাবর্তনের আয়োজনের দাবি জানান তারা।

এ ছাড়াও অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি হটলাইন চালু, সব দলীয় সুপারিশ বা রাজনৈতিক পরিচয়ে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দুটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স, ক্যাফেটেরিয়ায় মানসম্মত খাবার নিশ্চিত এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন পুলে বাস বাড়ানোর দাবিও জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে শাখা শিবিরের অফিস সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক শাহিন আহমেদ, দাওয়াহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, বাইতুলমাল সম্পাদক মোহাম্মদ শাওন সর্দার, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইনুদ্দিন, স্কুল বিতর্ক ও তথ্যপ্রযুক্তি নাহিদ হাসান রাসেল, সমাজসেবা ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদ, আবাসন ও পাঠাগার সম্পাদক মো. মাসুম বিল্লাহ, এইচআরডি ও ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক মো. জাহেদ, আইন সম্পাদক মো. সোহান আহমেদসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

সিলেট মহানগর বিএনপি সুদিনের কমিটিতে স্থান পাননি দুর্দিনের নেতারা

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পিএম
সুদিনের কমিটিতে স্থান পাননি দুর্দিনের নেতারা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সিলেট মহানগর বিএনপির কাউন্সিলের ২০ মাস পর ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে ১৭০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গত সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। 

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময়কে ‘সুদিন’ আখ্যা দিয়ে এই কমিটি ঘোষণার পরই অভিযোগ ওঠে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাননি বিগত কমিটির পদধারী এবং আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা নেতা-কর্মীরা। এই কমিটি প্রকাশের পর পদবঞ্চিত নেতাদের পক্ষে ক্ষুব্ধ কর্মীদের একটি অংশ গত রবিবার রাতে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভও করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। গত জুলাইয়ে নাসিম হোসাইনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আবারও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হলো। এমনকি সদস্য পদেও স্থান পাননি দলের দুর্দিনে বিএনপির ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাত নেতা, সিসিকের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। 

কমিটি প্রকাশের পর খবরের কাগজের কাছে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা। সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই কমিটির ব্যাপারে আমার কোনো ক্রিয়াও নেই প্রতিক্রিয়াও নেই। এই কমিটির বিষয়ে আমি কোনোভাবেই অবগত না। তাই কমিটিতে কে পদ পেল, কে পেল না এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে আমি রাজি না।’

দুঃখ প্রকাশ করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সদস্য সালেহ আহমদ খসরু। তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটি দেখার পর আমার স্পষ্ট মনে পড়ছে, ওই ছেলেগুলোর মুখগুলো। গুলিকে উপেক্ষা করে তারা পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল মারছে। সেই যুবকগুলো যখন কমিটিতে থাকে না তখন আমার মতো ৬৪ বছরের রাজনীতি করা মানুষের কমিটিতে না থাকার কোনো আক্ষেপ নেই। শুধু দুঃখ আমার একটাই, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বাধীনতায় সিলেট মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বৈষম্যের শিকার। আরিফুল হক চৌধুরীর মতো নেতা যে কমিটিতে সম্মানিত সদস্য হতে পারেন না, তখন পুলিশের গুলিতে আমার যে রক্ত ঝরেছিল সে রক্তের ফোটা উৎসর্গ করলাম বৈষম্যের শিকার সব নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে।’ 

‘এই কমিটিতে বিগত আন্দোলনে যারা ছিলাম তারা তেমন কেউ নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কমিটির ১৬৯ জনের মধ্যে পাঁচ থেকে সাতজন আন্দোলনকারী নেতা আছেন কমিটিতে। আর বাকি ১৫০ জনই আছেন যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ঘরে বসে ছিলেন। 

সালেহ আহমদ খসরু আরও বলেন, ‘দল একটি কমিটি দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। যারা আমাকে এই কমিটিতে আনেনি, তারাও বলতে পারবে না যে আন্দোলন-সংগ্রামে আমি পিছনে ছিলাম। আমি হাসিনা সরকারের আমলের পুলিশের গুলি খেয়েছি। ৪৬ বছরের রাজনীতি করার পর আজও বৈষম্যের শিকার হতে হয় আমাকে। অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল আজকের এই দেশ এবং ১৭ বছরের সংগ্রামের ওপর দাঁড়িয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত করেছি আমরা। তাহলে কি আমরা নিজ দলেই বৈষম্যের শিকার হলাম? দলের নেতার ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারণ এত ছোটখাটো বিষয় দেখার কোনো সুযোগ তার নেই। কিন্তু যারা এই জিনিসটা করলেন, তাদের কি একবারও বিবেক সাড়া দেয়নি যে, আমরা কাদেরকে কমিটিতে আনছি আর কাদেরকে ফেলে দিচ্ছি!’

সিলেট মহানগর বিএনপির গত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এখনো আমাদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের নেতৃত্বে সংকল্পবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিগত আন্দোলনে যারা কোনো কিছুতেই যুক্ত ছিলেন না, অনেকেই আবার আওয়ামীঘেঁষা ছিলেন, এমন মানুষও কমিটিতে এসেছেন। আমরা ঘোষিত কমিটির বিরোধিতা করছি না। কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলাকে মসৃণ করার জন্য ওয়ার্ড পর্যায়েও যেসব ত্যাগী নেতা-কর্মী বাদ পড়েছেন তাদের সংযোজন করার দাবিতে আমরা বিক্ষোভ করেছি। তবে আমরা অবশ্যই দলের নীতি-আদর্শ মানতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

স্থায়ী কমিটির বৈঠক নির্বাচনের বিষয় পরিষ্কার না করায় ক্ষুব্ধ বিএনপি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০০ এএম
নির্বাচনের বিষয় পরিষ্কার না করায় ক্ষুব্ধ বিএনপি
বিএনপি (লোগো)

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ তিন মাস শেষ হতে চললেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য দিনক্ষণ বা রোডম্যাপ প্রকাশ না করায় ক্ষুব্ধ বিএনপি। তবে নির্বাচনি রোডম্যাপের জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

গত সোমবার (৪ নভেম্বর) বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, বৈঠকে কেউ কেউ বলেন, উপদেষ্টারা ইতোমধ্যে বলা শুরু করেছেন যে, রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উশখুশ করছেন। তারা নানা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। তখন উপস্থিত দু-একজন সদস্য বলেন, মনে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেবে না। তাদের বক্তব্যও সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, ওয়ান-ইলেভেন সরকারের মতোই বিরাজনীতিকরণের ‘মাইনাস টু’ পথে হাঁটতে চাইছে সরকার। নানা ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। 

নির্ভরযোগ্য ওই সূত্র আরও জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ থাকা উচিত বলে বৈঠকে উপস্থিত কেউ কেউ মনে করেন। তারা বলেন, কিন্তু নির্বাচনের রোডম্যাপ কবে দেবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তখন স্থায়ী কমিটির দুইজন সদস্য বলেন, এর জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করা যেতে পারে। এরপর পরবর্তী করণীয় ঠিক করা যাবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য গত রবিবার এক স্মরণ সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে বাদ দিয়ে আবারও চক্রান্ত করে কিছু করার চেষ্টা করতে যাবেন না। এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। একবার বিরাজনীতিকরণ মাইনাস টু করার খুব চেষ্টা করা হয়েছিল। আবারও ওই রাস্তায় (বিরাজনীতিকরণ) যাওয়ার কথা কেউ চিন্তা করবেন না। 

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গত ১৬ বছরের বিনা ভোটের সরকারকে মানেনি, এখন এই সরকারকেও দীর্ঘদিন মানবে না। রাষ্ট্র কাঠামোর কী কী সংস্কার করবেন, কতদিন সময় লাগবে, কোনো ছলচাতুরী ছাড়াই তা স্পষ্ট করুন। জাতিকে ধোঁয়াশা-অন্ধকারে রেখে আপনারা যা খুশি তাই করবেন, আমরা তো সেটা মেনে নেব না। অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন।’ 

নির্ভরযোগ্য সূত্র আরও জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন এবং ৮ নভেম্বর র‌্যালি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে শেষ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন বিষয়ে কোনো কিছু বলছে না। ফলে দেশে গণতন্ত্রের সংকট তৈরি হলে আবারও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে। তাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে, বিএনপিকে বাদ দিয়ে বিরাজনীতিকরণের পথে হাঁটতে চাইছে। বিএনপিকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু করার ষড়যন্ত্র দেশের জনগণ মানবে না। 

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সোমবার রাত ৮টায় এ বৈঠক শুরু হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।