ঢাকা ২১ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

গণহত্যাকারী-দুর্নীতিবাজদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে: মজিবুর রহমান মঞ্জু

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম
আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৯ পিএম
গণহত্যাকারী-দুর্নীতিবাজদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে: মজিবুর রহমান মঞ্জু
কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুরে এবি পার্টির কর্মশালায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা চালিয়েছেন, জুলুম করেছেন, যারা দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, তাদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার চেয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, এদের অনেকেই এখনো দেশেই আছেন, তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে। 

রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুরে এবি পার্টির কর্মশালায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পাটির যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্ণেল (অব.) হেলাল উদ্দীন, লে. কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ, সহকারী সচিব সফিউল বাসার, বাংলাদেশ ছাত্র পক্ষের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক প্রিন্স আল আমিন, কুমিল্লা জেলা এবি পার্টির সমন্বয়ক মিয়া মো. তৌফিক প্রমুখ।  

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, আমাদের বড় দায়িত্ব হচ্ছে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা, শ্রমিক, রাজনৈতিক দল আমরা যারা একসঙ্গে ছিলাম তাদের কার কী অবদান তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা মনে করি, আমাদের জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আগের দুর্নীতিগ্রস্ত, বিপর্যস্থ, বিপদগ্রস্ত ও বিভক্ত বাংলাদেশ আর দেখতে চাই না। আমরা নতুন বাংলাদেশ সূচনা করতে চাই। বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এসময় আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন মঞ্জু। 

মতবিনিময় শেষে এবি পাটির কুমিল্লা জেলা ও মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়। মিয়া মোহাম্মদ তৌফিককে আহ্বায়ক, এম এ কাইয়ুমকে সদস্য সচিব এবং আবু সালেহ মো. মাসুদকে সাংগাঠনিক সম্পাদক করে এবি পার্টি কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে জিএম সামদানীকে আহ্বায়ক, ওমর ফারুক সোহাগকে যুগ্ম আহ্বায়ক, আবু সাঈদকে সদস্য সচিব এবং মো. ইসমাঈল হোসেনকে সাংগাঠনিক সম্পাদক করে এবি পার্টি কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

শফিক/এমএ/

গিয়াস উদ্দিন কাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ বিএনপির

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ পিএম
গিয়াস উদ্দিন কাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ বিএনপির
বিএনপি

চট্টগ্রামের রাউজানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার, হামলা, নেতা-কর্মীদের অসম্মানসহ নানা অভিযোগে দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। আগামী ৩ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কারণ দর্শানো হয়। 

বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার।

তিনি বলেন, ‘রাউজান থেকে কেন্দ্রীয় দপ্তরে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের নামে নানা অভিযোগ এসেছে। এ জন্য তাকে কেন্দ্র থেকে ওই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

নোটিশে বলা হয়, দলমত নির্বিশেষে ওই এলাকার ধনী ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওমান প্রবাসী সিআইপি ব্যবসায়ী ইয়াসিনের কাছে দেড় কোটি টাকা এবং সিআইপি ব্যবসায়ী মো. ফোরকানের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন গিয়াস উদ্দিন। চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ইয়াসিনের রাউজানের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া এবং ফোরকানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বলে জানা যায়।

এতে আরও বলা হয়েছে, গিয়াস উদ্দিনের সন্ত্রাসীরা দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থানরত রাউজানের ব্যবসায়ীদের ওপর ঢালাও চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছে। রাউজানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়া। এটা বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ বলেও উল্লেখ করা হয়। 

এ ছাড়া দীর্ঘ ৬ বছর বিদেশে থেকে নতুন সরকারের শুরুতে দেশে এসে দেশ-বিদেশের সন্ত্রাসীদের ভাড়া করে রাউজানে অস্থিরতা ও মারাত্মক আতঙ্ক তৈরি করেছেন গিয়াস কাদের।

শফিকুল/সালমান/

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াতের

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের আহ্বান জামায়াতের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

যথাযোগ্য মর্যাদায় ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বুধবার (৬ নভেম্বর) গণমাধ্যম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার দীপ্ত শপথ গ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য জামায়াতের সব শাখা ও দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সব মুক্তিকামী জনতা রাজপথে নেমেছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মেজর জে. খালেদ মোশাররফ পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করেছিল। তখন আমাদের দেশপ্রেমিক সিপাহী ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ৭ নভেম্বর নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে রাজপথে নেমে খালেদ মোশাররফের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজত করেছিলেন।
 
জামায়াতের শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সামরিক বাহিনী বারবার দেশকে বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেছে। ৫ আগস্ট দেশের ছাত্র-জনতা অনেক তাজা প্রাণ ও রক্তের বিনিময় দেশকে সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছে এবং দেশের সামরিক বাহিনী ছাত্র-জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা এমন এক সময় ৭ নভেম্বর পালন করতে যাচ্ছি, যখন জাতি নানা সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। জাতিকে আবার ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নানামুখি চক্রান্ত শুরু হয়েছে। জাতি আবার ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদীরা পুনরায় ফিরে আসলে জাতি এক মহাসঙ্কটে নিপতিত হবে। এ অবস্থায় জাতিকে রক্ষা করার জন্য দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল-মত নির্বিশেষে এবং বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

জাহেলিয়াত দূর করে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ফেরাতে হবে: শিবির সভাপতি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ পিএম
জাহেলিয়াত দূর করে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি ফেরাতে হবে: শিবির সভাপতি
প্রকাশনা উৎসবে ছাত্রশিবিরের নেতারা। ছবি: খবরের কাগজ

জাতির মন-মগজে জেঁকে বসা হীনমন্যতা ও জাহেলিয়াতকে দূর করে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি প্রতিস্থাপন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সমাজে প্রচলিত জাহেলিয়াতপূর্ণ চিন্তা ও মূল্যবোধ আমাদের জাতির অগ্রগতি ও মঙ্গলকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব ভুল ধারণার বিরুদ্ধে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিস্থাপন অপরিহার্য।’

বুধবার (৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ছাত্রশিবিরের ২০২৫ সালের প্রকাশনা সামগ্রীর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ও ঢাকার বিভিন্ন শাখা সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মানবতার সঠিক পথপ্রদর্শন করে। ইসলামী সংস্কৃতি ও নীতির মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা ও নীতি-নৈতিকতায় আমূল পরিবর্তন আনতে পারব, যা সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে যাবে। এটি আমাদের জাতির প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে একমাত্র সঠিক দিশা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঠিক অনুধাবন তরুণ ছাত্রদের মধ্যে গড়ে তোলার প্রয়াসে ছাত্রশিবির কাজ করে যাচ্ছে। পশ্চিমা বয়ান শুনে যারা ইসলামকে শুধুমাত্র একটি ধর্ম হিসেবে মনে করেছে, তাদেরকে ইসলামের বিশালতা বোঝানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, যার ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের প্রকাশনা-সামগ্রী সেই আলোকে সাজিয়েছি।’

সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধারণ করে আসছে। জুলুম ও নির্যাতনের মূল উচ্ছেদ করে একটা বৈষম্যহীন সমাজ গঠন করার লক্ষ্যেই ইসলামী ছাত্রশিবির গঠিত হয়, যা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই এ বছর আমরা আমাদের প্রকাশনায় এই আন্দোলনের শহিদদের আত্মত্যাগ ও সাহসী ভূমিকা বীরত্বগাথা গল্পগুলো স্থান দিয়েছি।’

প্রতি নতুন বছরেই আকর্ষণীয় প্রকাশনা সামগ্রী প্রকাশ করে ছাত্রশিবির। 

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

ক্যাম্পাস সংস্কারে ১২ দফা দাবি জবি ছাত্রশিবিরের

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পিএম
ক্যাম্পাস সংস্কারে ১২ দফা দাবি জবি ছাত্রশিবিরের
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও বৈষম্যহীন ক্যাম্পাস বিনির্মাণসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন শাখা ছাত্রশিবির। 

এর আগে এসব দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র শিবিরের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন জবি শাখার সেক্রেটারি জেনারেল আসাদুল ইসলাম এবং লিখিত দাবি উপস্থাপন করেন শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন শিকদার।

লিখিত বক্তব্যে, জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় শহিদদের মরণোত্তর ও আহতদের বীরত্বের সম্মাননা প্রদান, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিগত ১৫ বছরের সব নিয়োগ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারার ছাত্ররাজনীতি প্রবর্তনের লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ কার্যকর, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে স্থায়ী নীতিমালা এবং পরবর্তী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে জকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। 

বর্তমান ক্যাম্পাসকে মূল ক্যাম্পাস রেখে কেরানীগঞ্জে নির্মাণাধীন ক্যাম্পাসকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়াসহ বর্তমান ক্যাম্পাসের পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পুনঃনির্মাণ এবং ক্লাসরুম সংকটে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাকে স্থানান্তরেরও দাবি জানান তারা।

এছাড়া দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ ৬০ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় বেদখল হওয়া হলগুলো উদ্ধার, ভবন পুনঃনির্মাণ এবং মাসিক আবাসন ভাতার ব্যবস্থা, দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন এবং প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর সমাবর্তনের আয়োজনের দাবি জানান তারা।

এ ছাড়াও অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি হটলাইন চালু, সব দলীয় সুপারিশ বা রাজনৈতিক পরিচয়ে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দুটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স, ক্যাফেটেরিয়ায় মানসম্মত খাবার নিশ্চিত এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন পুলে বাস বাড়ানোর দাবিও জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে শাখা শিবিরের অফিস সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক শাহিন আহমেদ, দাওয়াহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, বাইতুলমাল সম্পাদক মোহাম্মদ শাওন সর্দার, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইনুদ্দিন, স্কুল বিতর্ক ও তথ্যপ্রযুক্তি নাহিদ হাসান রাসেল, সমাজসেবা ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদ, আবাসন ও পাঠাগার সম্পাদক মো. মাসুম বিল্লাহ, এইচআরডি ও ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক মো. জাহেদ, আইন সম্পাদক মো. সোহান আহমেদসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়/

সিলেট মহানগর বিএনপি সুদিনের কমিটিতে স্থান পাননি দুর্দিনের নেতারা

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পিএম
সুদিনের কমিটিতে স্থান পাননি দুর্দিনের নেতারা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সিলেট মহানগর বিএনপির কাউন্সিলের ২০ মাস পর ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে ১৭০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গত সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। 

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময়কে ‘সুদিন’ আখ্যা দিয়ে এই কমিটি ঘোষণার পরই অভিযোগ ওঠে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাননি বিগত কমিটির পদধারী এবং আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখা নেতা-কর্মীরা। এই কমিটি প্রকাশের পর পদবঞ্চিত নেতাদের পক্ষে ক্ষুব্ধ কর্মীদের একটি অংশ গত রবিবার রাতে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভও করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। গত জুলাইয়ে নাসিম হোসাইনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আবারও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হলো। এমনকি সদস্য পদেও স্থান পাননি দলের দুর্দিনে বিএনপির ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাত নেতা, সিসিকের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। 

কমিটি প্রকাশের পর খবরের কাগজের কাছে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন পদবঞ্চিত নেতা। সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই কমিটির ব্যাপারে আমার কোনো ক্রিয়াও নেই প্রতিক্রিয়াও নেই। এই কমিটির বিষয়ে আমি কোনোভাবেই অবগত না। তাই কমিটিতে কে পদ পেল, কে পেল না এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে আমি রাজি না।’

দুঃখ প্রকাশ করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সদস্য সালেহ আহমদ খসরু। তিনি বলেন, ‘নতুন কমিটি দেখার পর আমার স্পষ্ট মনে পড়ছে, ওই ছেলেগুলোর মুখগুলো। গুলিকে উপেক্ষা করে তারা পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল মারছে। সেই যুবকগুলো যখন কমিটিতে থাকে না তখন আমার মতো ৬৪ বছরের রাজনীতি করা মানুষের কমিটিতে না থাকার কোনো আক্ষেপ নেই। শুধু দুঃখ আমার একটাই, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্বাধীনতায় সিলেট মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা বৈষম্যের শিকার। আরিফুল হক চৌধুরীর মতো নেতা যে কমিটিতে সম্মানিত সদস্য হতে পারেন না, তখন পুলিশের গুলিতে আমার যে রক্ত ঝরেছিল সে রক্তের ফোটা উৎসর্গ করলাম বৈষম্যের শিকার সব নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে।’ 

‘এই কমিটিতে বিগত আন্দোলনে যারা ছিলাম তারা তেমন কেউ নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কমিটির ১৬৯ জনের মধ্যে পাঁচ থেকে সাতজন আন্দোলনকারী নেতা আছেন কমিটিতে। আর বাকি ১৫০ জনই আছেন যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ঘরে বসে ছিলেন। 

সালেহ আহমদ খসরু আরও বলেন, ‘দল একটি কমিটি দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। যারা আমাকে এই কমিটিতে আনেনি, তারাও বলতে পারবে না যে আন্দোলন-সংগ্রামে আমি পিছনে ছিলাম। আমি হাসিনা সরকারের আমলের পুলিশের গুলি খেয়েছি। ৪৬ বছরের রাজনীতি করার পর আজও বৈষম্যের শিকার হতে হয় আমাকে। অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফসল আজকের এই দেশ এবং ১৭ বছরের সংগ্রামের ওপর দাঁড়িয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত করেছি আমরা। তাহলে কি আমরা নিজ দলেই বৈষম্যের শিকার হলাম? দলের নেতার ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই। কারণ এত ছোটখাটো বিষয় দেখার কোনো সুযোগ তার নেই। কিন্তু যারা এই জিনিসটা করলেন, তাদের কি একবারও বিবেক সাড়া দেয়নি যে, আমরা কাদেরকে কমিটিতে আনছি আর কাদেরকে ফেলে দিচ্ছি!’

সিলেট মহানগর বিএনপির গত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এখনো আমাদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাদের নেতৃত্বে সংকল্পবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিগত আন্দোলনে যারা কোনো কিছুতেই যুক্ত ছিলেন না, অনেকেই আবার আওয়ামীঘেঁষা ছিলেন, এমন মানুষও কমিটিতে এসেছেন। আমরা ঘোষিত কমিটির বিরোধিতা করছি না। কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ পথচলাকে মসৃণ করার জন্য ওয়ার্ড পর্যায়েও যেসব ত্যাগী নেতা-কর্মী বাদ পড়েছেন তাদের সংযোজন করার দাবিতে আমরা বিক্ষোভ করেছি। তবে আমরা অবশ্যই দলের নীতি-আদর্শ মানতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’