নিত্যপণ্যের বাজার এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ করছেন ৬ দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। দলটির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি রোধ করা যাচ্ছে না। স্বৈরাচারের পতন হলেও বাজার সিন্ডিকেট এখনো আওয়ামী দোসরদের দখলে। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি এবং কার্যকর পদক্ষেপও নিতে পারেনি
বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নেতারা এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুইয়া প্রমুখ।
মঞ্চের নেতারা বলেন, সাড়ে ১৫ বছরের গণতান্ত্রিক লড়াই এবং ২৪-এর ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের জনগণ দুর্নীতি, লুটপাট, বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল। একদিকে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের অপতৎপরতা, অন্যদিকে সরকারের নানাবিধ সীমাবদ্ধতা সেই প্রত্যাশাকে সংকুচিত করছে। সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই মাসেরও বেশি সময় পার হলেও এখনো সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোপুরি সক্রিয় হয়নি। সেখানেও পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো সক্রিয়।
অবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় ’২৪ এর ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থান তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত এক প্রশ্নের জবাবে মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, শেখ হাসিনা ও তার ভারতে চলে যাওয়া আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ভারত ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেওয়ার মধ্য দিয়ে একটা প্রশ্ন তৈরি করেছে, এটা দেশটির বন্ধুসুলভ আচরণ নয়। সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন এতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হবে না। মনে হচ্ছে জোড়াতালি দিয়েও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো দেখাতে হবে। এইটা ঠিক মনে হয়নি আমাদের। ভারতের সঙ্গে আমরা অবশ্যই বন্ধুত্ব চাই, তবে সেটা সমতার ভিত্তিতে হতে হবে।
তিনি বলেন, বিশেষ পরিস্থিতির সরকারের প্রতি আন্দোলনকারী যতগুলো শক্তি ছিল, সবাই সমর্থন করছে। সবাই মিলে বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে দেশটাকে গণতান্ত্রিক মানবিক রাষ্ট্র গড়ব। উন্নত দেশ গড়ব। সরকার কীভাবে কাজ করতে চায়, সে অনুযায়ী আমরা পরামর্শ এবং সময় দেব। সংলাপের মাধ্যমে একটা ঐক্যমত্যে আসতে হবে। সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে।’
শফিকুল ইসলাম/এমএ/