অন্তর্বর্তী সরকার গত তিন মাসে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিন মাসে অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। অনেকগুলো কাজও করেছে। আমরা সবাই যদি সহযোগিতা করি তাহলে এই সরকার উপযুক্ত ও যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিলে, জাতির সামনে যে চ্যালেঞ্জ আছে তা পূরণে সক্ষম হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশপ্রেমিক সৈনিক-জনতা দ্বিতীয়বারের মতো আধিপত্যবাদকে এবং তাদের দোসরদের পরাজিত করে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করে। ৭ নভেম্বরের পরে রাজনীতি ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রাজনীতি, সেই রাজনীতি ছিল আধিপত্যবাদকে পরাজিত করে গণতন্ত্রের শত্রুদের পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের পর শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের অবস্থা পরিবর্তন করেন। সে সময় জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে আসেন। তিনি রুদ্ধ বাজার অর্থনীতিকে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে রূপান্তর করেন। তিনি বাংলাদেশে নতুন অর্থনীতির সম্ভবনা সৃষ্টি করেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতীয়বাদী দল ও জাতীয়তাবাদ দর্শন সৃষ্টি করেছেন। এই দর্শনে দীর্ঘকাল দলটি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই ও সংগ্রাম করছে। খালেদা জিয়ার দীর্ঘ সংগ্রামে দলটি তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে।’
ফ্যাসিবাদ সরকারের ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছিল, তারা নির্যাতন-নিপীড়ন করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিল। এই আওয়ামী লীগ প্রায় ৬০ লাখের মতো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। ৭০০ মানুষকে গুম করে, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে তৃতীয়বারের মতো এই দেশে আধিপত্যবাদকে পরাজিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের প্রধান নায়ক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে জিয়ারত করে শ্রদ্ধা জানিয়েছি এবং নেতা-কর্মীরা শপথ নিয়েছে। শপথ নিয়েছি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আধিপত্যবাদকে রুখে দিয়ে স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখব, সংগ্রাম ও আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা আমান উল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, খাইরুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুসহ বিএনপি কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল/পপি/অমিয়/