ঢাকা ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
English
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রায় বিলম্ব

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ পিএম
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রায় বিলম্ব
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

উন্নত চিকিৎসায় নভেম্বরের শুরুতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। খালেদা জিয়াও আগের চেয়ে সুস্থ। তবে দিন-ক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। কী কারণে লন্ডনযাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে তা স্পষ্ট করতে নারাজ খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। 

মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাতে খবরের কাগজকে জানান, ‘ম্যাডামের বিদেশযাত্রায় দেরি হবে। আগামী সপ্তাহেও হতে পারে, বা আরও পরে। বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না। ম্যাডাম আগের চেয়ে সুস্থ আছেন। বাসায় তার চিকিৎসা চলবে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের সঙ্গে তার ছোট পুত্রবধূ গুলশানে আছেন। এবার ম্যাডাম ও তার ছেলে তারেক রহমানের একসঙ্গে হজ পালন করার কথা রয়েছে। সেটা বিদেশ যাওয়ার সময়ও হতে পারে, আবার দেশে ফেরার পথেও হতে পারে।’ সবশেষ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হজ পালন করেন বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়া। 

বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ একজন নেতা গতকাল বলেন, ম্যাডাম বিদেশে যেতে প্রস্তুত। যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন। তবে রাজনৈতিক কারণে যেতে বিলম্ব হচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে। লন্ডন থেকেই গ্রিন সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ এখন দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল বলা যায় না। এই মুহূর্তে বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা দেশে না থাকাটা একটু ঝুঁকি তো বটেই। তারেক রহমানও মামলার কারণে দেশে আসতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল বোর্ডের আরেক সদস্য বলেন, ম্যাডামের লন্ডনের ভিসা আজ (বৃহস্পতিবার) হাতে পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়াধীন। আমরা পৃথিবীর সেরা চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাই। এ জন্য দুই দেশের ভিসা একসঙ্গে নিচ্ছি। পরিস্থিতি বলে দেবে আমাদের কী করতে হবে। উন্নত চিকিৎসায় প্রয়োজনে লন্ডন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। সব মিলিয়ে ম্যাডামের বিদেশে যেতে একটু সময় লাগছে। যাত্রার নির্দিষ্ট তারিখ বলা যাচ্ছে না। মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ম্যাডাম এখন বিমানে ভ্রমণ করতে পারবেন। মানে ভ্রমণ করার মতো ফিট আছেন। কখন কী হয়, সেটা তো আর কেউ বলতে পারবে না। আমরা ৬ জন চিকিৎসক সঙ্গে যাচ্ছি। সবমিলিয়ে হয়তো ১৬ জনের মতো সফরসঙ্গী থাকতে পারে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন যাওয়ার কথা রয়েছে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. শাহাবুদ্দিন, ডা. শামসুল আরেফিন, ডা. নূর উদ্দিন, ডা. এফ এম সিদ্দিক ও ডা. আল মামুনের। এ ছাড়া দুই নার্স ও তিন সহকারীসহ ১৬ জন সফরসঙ্গী থাকবেন বলে জানা গেছে। 

সম্প্রতি ডা. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন নেওয়া হবে। সেখান থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হবে। তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। অতিদ্রুত তাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি হাসপাতালে নিতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তার অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। তিনি আশা করেন, প্রক্রিয়া শেষ করে অতিদ্রুতই খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন। 

তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কারণ ম্যাডামের সঙ্গে চিকিৎসক-নার্সসহ আত্মীয়-স্বজন যারা যাবেন তা জানানো হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। এই চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে দুই-একটি সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।

উল্লেখ ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছর অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন। সাময়িক মুক্তির পর তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও শর্তের যুক্তি দিয়ে বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে সাবেক শেখ হাসিনার সরকার।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দিন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে সর্বশেষ ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপি প্রধান।

বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।

খালেদা জিয়াকে বিশেষ উপহার চীনের রাষ্ট্রদূতের

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২১ পিএম
খালেদা জিয়াকে বিশেষ উপহার চীনের রাষ্ট্রদূতের
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সাক্ষাতকালে খালেদা জিয়াকে চীনের ঐতিহ্যের চিত্র ‘দেয়ালে টাঙানো ব্যানার’ উপহার দেন রাষ্ট্রদূত। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন। 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় রাষ্ট্রদূতের পতাকাবাহী গাড়ি প্রবেশ করে। সোয়া ঘণ্টাব্যাপী এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও ভাইস-চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী।   

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর পাঁচ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ২৫ নভেম্বর সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান এবং তিন ডিসেম্বর পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ ফারুক বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সাক্ষাৎ করেন।  

শফিকুল ইসলাম/মেহেদী 

সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্ত নস্যাৎ করতে হবে: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১২ পিএম
সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চক্রান্ত নস্যাৎ করতে হবে: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে রাজনৈতিক দলসমুহের যৌথ সভায় ভারতে বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম ও জাতীয় পরিষদ সদস্য মুঈনুদ্দীন আহমেদ ।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমুহের যৌথ সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন তারা।

সভায় জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিম নিম্নলিখিত বক্তব্য থেকে মূল অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির হামলার ঘটনা ও তার পূর্বে কলকাতায় বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

ছাত্র শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট আমরা নিম্নলিখিত বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি:

ক। ভারত সরকারকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। এখনো পর্যন্ত ভারত সরকার মুখে এক কথা বলছে বাস্তবে অন্য কাজ করছে। 

খ। ছাত্র, শ্রমিক, জনতার গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট বেঈমান শেখ হাসিনা জুলাই অভ্যুত্থানে উচ্ছেদ হয়ে গিয়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। বিশ্বের কোন দেশ এই পতিত ফ্যাসিস্ট বেঈমান শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দিলেও ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। ভারতে বসে বেঈমান শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টে তৎপরতা চালাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারকে দাবী করতে হবে যে, ভারত সরকারকে অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বের করে দিতে হবে। আমরা মনে করি এই একটা ইস্যুই বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

গ। বাংলাদেশের হিন্দুরা বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশ যেমন মুসলমানদের হেফাজত করছে তেমনি হিন্দুসহ অপরাপর ধর্মাবলম্বীদের হেফাজত করছে। বাংলাদেশের হিন্দুরা ভারতের নাগরিক নন। সুতরাং এ নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। 

ঘ। বিশ্ববাসী জানে ভারতে সাম্প্রদায়িকতা কোন পর্যায়ে বিরাজ করছে। সেখানে প্রতিবছর মুসলিম, খৃষ্টান, আদিবাসী, দলিত জনগণের উপর কি বর্বরোচিত হত্যা, হামলা, নির্যাতন করা হয়। গুজরাটের গণহত্যা তার এক উদাহরণ।  ভারতের মুসলমানরা ভারতকে নিজেদের দেশ মনে করে। 

ঙ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে আমরা বলতে চাই, ভারতের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির জন্য ভারতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো দরকার।

৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী বেঈমান শেখ হাসিনা উচ্ছেদের পর ভারত ও পতিত ফ্যাসিস্ট বেঈমান হাসিনার দোসর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একশ্রেণীর মতলববাজ হিন্দু নেতাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে দাঁড় করানোর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। ভারতের গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঝুঁকির মধ্যে নিক্ষেপ করা। 

কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনে পরিকল্পিতভাবে সহিংস হামলা ও জাতীয় পতাকার অবমাননা বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বর উপর হামলা।

আমরা তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট জোর দাবি জানাই :

১। ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত হাসিনা-মনমোহন চুক্তি ২০১০, হাসিনা-মোদী চুক্তি ২০১৫, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সামরিক চুক্তি ২০১৭ সহ সকল অসম ও অধীনতামূলক চুক্তি প্রকাশ করতে হবে ও বাতিল করতে হবে। 

২। ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তা বাঁধ সহ অভিন্ন আন্তর্জাতিক ৫৪ টি নদীতে ভারত কর্তৃক একতরফা বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রাকৃতিক ও জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হয়ে চলেছে, যে মরুকরণ প্রক্রিয়া চলছে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জনমত গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে ভারতকে বাধ্য করতে হবে পানি আগ্রাসান নীতি থেকে সরে আসতে।

৩। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতের বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিকদের বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ উত্থাপন করতে হবে। 

৪। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত রাষ্ট্রের আগ্রাসন নীতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নিতে হবে। 

৫। সরকারকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। 

আমরা মনে করি, বাংলাদেশে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে গণতান্ত্রিক অধিকার, সাম্য, মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা গেলে কোনো বৈদেশিক শক্তিই আমাদের জনগণের বৃহত্তর ঐক্যকে বিনষ্ট করতে সফল হবে না।

মেহেদী/এমএ/

ক্ষমতা নয়, দেশ পরিচালনার সুযোগ চাই: তারেক রহমান

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ পিএম
ক্ষমতা নয়, দেশ পরিচালনার সুযোগ চাই: তারেক রহমান
ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কিছু সহকর্মীর মধ্যে এমন একটি ভাব চলে এসেছে যে, আমরা ক্ষমতায় চলে যাচ্ছি কিংবা চলে গেছি। দৃঢ়ভাবে বলতে চাই আমরা ক্ষমতায় যাইনি। আমরা ক্ষমতায় যাব কিনা জানি না। ক্ষমতা আর দেশ পরিচালনার মধ্যে পার্থক্য আছে। জনগণ আপনাকে ক্ষমতা দেবে না। দেশ পরিচালনার সুযোগ দেবে। আমরা ক্ষমতা নয়, দেশ পরিচালনার সুযোগ চাই। 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক কর্মশালায় যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি। চট্টগ্রাম বিভাগ বিএনপি দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে।

তারেক রহমান বলেন, ‘সামনে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তা বাংলাদেশের যেকোন নির্বাচনের চেয়ে কঠিন হবে। মানুষ অনেক সচেতন। বিএনপির প্রতি জনগণের যে আস্থা আছে, তা ধরে রাখতে হবে।’ দলের নেতাদের জনগণের সঙ্গে থাকার এবং জনগণকে সঙ্গে রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘গত দেড়-দুমাস ধরে যেসব সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে তার সবই আমাদের ৩১ দফায় আছে। এটি প্রথমে ২৭ দফা ছিল। পরবর্তীতে আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা করেছি। এটা শুধু বিএনপির দফা নয়। সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের চিন্তার ফসল এটি। দফাগুলো মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এর প্রতি সমর্থন আদায় করতে হবে। 

নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপির আগামী দিনের সব কিছু এমন হতে হবে, যাতে জনগণের সমর্থন থাকে। এর দায়িত্ব আমার একার না। দায়িত্ব আমাদের স্থায়ী কমিটির সবার না। দায়িত্ব দলের সবস্তরের নেতাকর্মীর।

তারেক রহমান বলেন, ‘সামনের নির্বাচন অত সহজ হবে না। অত্যন্ত কঠিন হবে। হতে পারে আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। তারপরও সামনে যে নির্বাচন হচ্ছে তা বাংলাদেশের যেকোন নির্বাচনের চেয়ে কঠিন হতে চলেছে। আপনার এলাকার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করে এখন থেকেই কাজ করেন। ষড়যন্ত্রের শিকড় উপড়ে ফেলতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে।

সার্বভৌমত্বকে হুমকিতে ফেলার চেষ্টায় ভারত: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০০ পিএম
সার্বভৌমত্বকে হুমকিতে ফেলার চেষ্টায় ভারত: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে দেশের সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

ভারতের নানা আচরণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি প্রশ্ন করেন, এটা কোন ধরনের বন্ধুত্ব, প্রতিবেশিসুলভ আচরণ? বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে এমন একটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকিতে ফেলার চেষ্টা করছে ভারত।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের ইস্ট লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি। 

সংগঠনের সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদসহ দলের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, পতাকা নামিয়ে আগুন দেওয়া, কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভ, সিলেট ও বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে উগ্রবাদী ভারতীয়দের বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টার প্রতিবাদ জানান যুক্তরাজ্য সফররত বিএনপি মহাসচিব। 

ভারতকে অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা বড় দেশ। তাই বলে বাংলাদেশকে খাটো করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। কারণ বাংলাদেশ যুদ্ধ করে, জীবন দিয়ে স্বাধীন হয়েছে, সংগ্রাম করে গণতন্ত্র আদায় করে নিয়েছে, বুকের রক্ত দিয়ে অধিকার আদায় করেছে।’

প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের তালিকায় নাম নেই, ফিরে গেলেন কর্নেল অলি

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের তালিকায় নাম নেই, ফিরে গেলেন কর্নেল অলি
এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে রাজনীতিবিদদের নামের তালিকায় নাম না থাকায় ফিরে গেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গিয়েও তার ঢোকা হয়নি। শেষ পর্যন্ত তিনি ফিরে যান।

এলডিপির একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রটি জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এলিডিপি সভাপতিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। তাকে জানানো হয়েছিল, আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দলগুলো ছাড়া বাকিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তাই দুপুরের পর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নিজের মতামত তুলে ধরতে গিয়েছিলেন তিনি। ঢোকার মুখে রাজনীতিবিদদের যে তালিকা দেওয়া ছিল, তাতে নাম না থাকায় শেষ পর্যন্ত তিনি ঢুকতে পারেননি।

ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, পরক্ষণেই উপদেষ্টাদের পক্ষে আবারও যোগাযোগ করা হয়েছিল কর্নেল অলির সঙ্গে। তাকে আসতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি।

শফিকুল/সালমান/