
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক ও সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তরে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করে গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক ও সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ নিয়ে নগরীতে শোডাউন করায় তাদের শোকজ করা হয়েছে। মনিরুজ্জামান ফারুক ও জিয়াউদ্দিন সিকদার উভয়েই নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, ‘শোকজ নোটিশ পেয়েছি। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে শোডাউনের যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা সঠিক নয়। মূলত আমাদের ঢাকা থেকে ফেরার খবরে উৎসুক নেতা-কর্মীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসেন। আমরা দুজন পৃথক গাড়িতে ছিলাম। তারপরও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে যথাসময়ে শোকজের জবাব দেব।’
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মনিরুজ্জামান খান ফারুক ও জিয়াউদ্দিন সিকদার গত শনিবার দুপুরে বরিশালে আসেন। দুই নেতাকে বহনকারী একটি প্রাইভেটকার এবং একটি মাইক্রোবাসের পেছনে ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিকদলসহ বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অসংখ্য মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউনে অংশ নেন। এর ফলে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, সিঅ্যান্ডবি রোড, চৌমাথা, বটতলা ও সদর রোড পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। শোডাউন শেষে উভয়েই সদর রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।
একই দিন দুপুরে নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় মহানগর বিএনপির পদবঞ্চিত সাবেক নেতারা রাষ্ট্র মেরামতে তারেক রহমানের ৩১ দফা ঘোষণার লিফলেট বিতরণ করেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করেন। এতে নেতৃত্ব দেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ হাসান, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাফ মাহমুদ সিকদার, সৈয়দ আকবর, আনোয়ারুল হক তারিন, একেএম শহিদুল্লাহ।
তারা জানান, গত ৪ নভেম্বর বরিশাল মহানগরের জন্য ৪২ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে অনেক জ্যেষ্ঠ নেতার বাদ পড়ায় বরিশালের নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা গত শনিবার পাল্টাপাল্টি সভা-সমাবেশ করে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, দলে নির্দেশনা ছিল শোডাউন করা যাবে না। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকা থেকে বরিশালের গিয়ে মনিরুজ্জামান ফারুক ও জিয়া উদ্দিন সিকদার শোডাউন করেছেন। যা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী। শোডাউনের কারণে সাধারণ জনগণও এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেজন্য তাদের শোকজ করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতেও বলা হয়েছে। বরিশাল মহানগর বিএনপিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বড় নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কাজ করছেন, যা দলের শৃঙ্খলার ক্ষতি করছে।