ঢাকা ২৯ মাঘ ১৪৩১, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলের একক ভোটবাক্স থাকবে: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলের একক ভোটবাক্স থাকবে: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর)।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামী দলগুলো এক হচ্ছে এবং একক ভোটবাক্স দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর)।

তিনি বলেন, বিগত দিনে যারা সরকারে ছিল তারা ক্ষমতায় থাকতে ইসলামী দলগুলোকে সিঁড়ি বানিয়ে বার বার ব্যবহার করেছে। আর এটা হতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ইসলামের শাসন দেখতে চায়। এবারের নির্বাচনে যেন সব ইসলামী দলগুলোর একটি মাত্র ভোটবাক্স হয় এবং দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী জোট হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

দেশের সব রাজনৈতিক দল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নিয়ে জনগণের মধ্যে কোনো বিতর্ক নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ তোষণে নয় ইসলামের বিজয়েই দেশবাসির মুক্তি নিহিত এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ও ২৪-এর গণহত্যার বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে জনমত গড়ার আহ্বানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত নগর সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।  

জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। এ স্বাধীনতা অর্থবহ করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে উল্লেখ করে চরমোনাই পীর বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও আমরা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারিনি। এই লম্বা সময় ধরে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল, তাদের অনেকেই রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করেছে। বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করেছে। দেশকে বিশ্ব দরবারে বার বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করার খেতাব অর্জন করেছে। 

পাশাপাশি দেশের মেধাবীরা বেকার থাকলেও অযোগ্যদের প্রশাসনের বড় বড় জায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।  

একই সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। ইসলামের বাংলা গড়তে হলে দায়িত্বশীল কর্মীদেরকে ত্যাগ এবং কোরবানির নজরানা পেশ করতে হবে। আগামী নির্বাচনে ইসলামের পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠন করতে হবে। 

একটি দল বর্তমান সরকারের কাছে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে উল্লেখ করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান হয়নি। জুলাই বিপ্লবে অন্যতম শক্তি ছাত্র-জনতার সাথে বিএনপি বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছে। এ বাকবিতণ্ডা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। এতে করে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সম্মেলন শেষে আগামী ২০২৫-২৬ সালের জন্য সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমকে সভাপতি ও আবদুল আউয়াল মজুমদারকে সেক্রেটারি করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।

শফিকুল/সিফাত/

প্রশাসনের রদবদলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে জনগণ মেনে নেবে না: আমিনুল হক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
প্রশাসনের রদবদলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে জনগণ মেনে নেবে না: আমিনুল হক
ঢাকা মহানগর উত্তর আদাবর থানা বিএনপির কর্মীসভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

প্রশাসনের রদবদলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে সেটা এদেশের জনগণ মেনে নেবে না মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমিনুল হক।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আদাবরের শেখেরটেক পিসিকালচার হাউজিং এ ঢাকা মহানগর উত্তর আদাবর থানা বিএনপির কর্মীসভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবার নতুনভাবে আমরা যে রদবদল দেখতে পাচ্ছি। সেই রদবদলের উদ্দেশ্য যদি এদেশের জনগণের কল্যাণে হয়, তাহলে কোন সমস্যা নেই। যদি সেই রদবদল বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রের জন্য আসন্ন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ কখনই তা মেনে নেবে না।

আমিনুল হক বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষ একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলিত হবে। বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের প্রতিফলন ঘটবে। বাংলাদেশের মানুষের দাবিগুলোর প্রতিফলন ঘটবে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ভবিষ্যৎতে আর কোন স্বৈরাচারের জন্ম হউক তা দেখতে চায় না।

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার গত ১৭ বছরে সবলদের পাশে ছিল। স্বৈরাচার সরকারের সময়ে আমরা দেখেছি যারা সবল অর্থাৎ যারা ধনী ছিল তাদেরকে আরও ধনী বানিয়েছিল, কিন্তু বিএনপি সবসময় গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে কথা বলেছে। ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় সাধারণ মানুষ ও অসহায় মানুষের অধিকার ও দাবিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজনীতি করে। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার জন্য বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সুসংগঠিত ভাবে ও উজ্জীবিত হয়ে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চায়।

আমিনুল হক বলেন, গত ১৭ বছরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার এদেশের জনগণ থেকে সম্পূর্ণরুপে বিচ্ছিন্ন ছিল। জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মাজা ভেঙে দিয়েছিল তারা। 

তিনি আরও বলেন,স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের রেখে যাওয়া ধ্বংসস্তূপকৃত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংষ্কারের জন্যই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফার রূপরেখা দিয়েছেন। সেই রূপরেখার বার্তা আমাদেরকে সারা বাংলাদেশের তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। 

আদাবর থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাদেক হোসেন স্বাধীন এর সভাপতিত্বে থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন সরকার ও আবুল কালাম আজাদ এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়াপারসন উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য সচিব মো. মোস্তফা জামান,মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, সাবেক যুবনেতা এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, 
ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, হাজী মোহাম্মদ ইউসুফ, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, তহিরুল ইসলাম তুহিন, আফাজ উদ্দিন,শাহ আলম, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য হাজী নাসির উদ্দীন, শামীম পারভেজ, নুরুল হুদা ভূঁইয়া নূরু, মোতালেব হোসেন রতন, মনিরুল আলম রাহিমী, হাফিজুর রহমান শুভ্র, এমএস আহমাদ আলী, তাসলিমা রিতা, শ্রমিকদল ঢাকা মহানগর উত্তর যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন ফরিদ আহমেদ, জাসাস ঢাকা মহানগর উত্তর সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনু, মহিলাদল ঢাকা মহানগর উত্তর সদস্যসচিব অ্যাড. রুনা লায়লা রুনা, ওলামাদল ঢাকা মহানগর উত্তর আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, তাঁতীদলের মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদল সভাপতি সালাহ্উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ এছাড়াও আদাবর থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হানিফ, শাহিন শাহ, জাহিদ হোসেন ইমন, বিল্লাল পাটোয়ারী, হাজী নিজাম উদ্দিন, ৩০নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি সালাম হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মোবারক হোসেন দেওয়ান, সিএম আনোয়ার হোসেন, রানা চৌধুরী, তুরাগ থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল আলী, মো.পুর থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. সারোয়ার হোসেন সাকিফ, মীর মো. কামাল হোসেন, সিনিয়র সদস্য ফরিদ উদ্দিন ফরহাদ, ৩৩নং ওয়ার্ড বিএনপি সিনিয়র সহসভাপতি মো. ওসমান গণি সেন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে দুপুরে পল্লবীতে ঢাকা মহানগর উত্তর পল্লবী থানার ২নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।

 

সরকারের দায়িত্ব নির্বাচন দেওয়া, কিন্তু শুনছি সংস্কারের জারি গান: গয়েশ্বর চন্দ্র

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম
সরকারের দায়িত্ব নির্বাচন দেওয়া, কিন্তু শুনছি সংস্কারের জারি গান: গয়েশ্বর চন্দ্র
লালমনিরহাটে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এই সরকারের দায়িত্ব একটা নির্বাচন দেওয়া। তারা নির্বাচনের ব্যাপারেও নাই, দেশ পরিচালনায়ও নাই। শুধু সকাল বিকাল জারি গান শুনছি সংস্কার আর সংস্কার।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) লালমনিরহাট রেলওয়ে মুক্ত মঞ্চে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা এবং পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলার জনদাবিতে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, দ্রব্যমূল্যে বর্তমান লাগামহীন কিন্তু যারা উৎপাদন করে তারা ন্যায্যমূল্য পায় না। বাজার ব্যবস্থার সিন্ডিকেট এখনো রয়েছে। এই সিন্ডিকেট নির্মূল করতে আমরা দেখিনা। 

তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন হয়েছে এক দফা, ফ্যাসিবাদের পতন। কেন? সুষ্ঠু একটি অবাধ নির্বাচন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি দেব। এই ১৬ বছর কীসের জন্য আন্দোলন করেছি আমরা?’

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে, আমাদের আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া আপোষ করেননি। তিনিও নানা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। খালেদা জিয়া বিএনপির রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তিনি ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে রাজনীতি করছেন। 

গয়েশ্বর বলেন, আপনারা উপদেষ্টারা সরকারে থাকবেন, রাতে গোপন বৈঠক করবেন আর বাচ্ছা প্রসব করবেন তা হবেনা। আপনারা নিরপেক্ষতা হারাচ্ছেন। কেন এমন হচ্ছে। এখানে নিশ্চয়ই ষড়যন্ত্র আছে। ইতিবাচকভাবে আপনারা কাজ করেন। ভোট দেন। ইতিহাসে লেখা হয়ে থাকবেন।

লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, আব্দুল খালেকসহ জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি,  যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

এম আই বকুল/মাহফুজ

বিএনপির উদারতায় রাজনীতির সুযোগ পায় জামায়াত: রিজভী

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
বিএনপির উদারতায় রাজনীতির সুযোগ পায় জামায়াত: রিজভী
রাজশাহীতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘বিএনপির উদারতার কারণে বাংলাদেশে প্রথম রাজনীতি করার সুযোগ পায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু এই দলটি সবসময় মুনাফেকি করেছে। মুনাফেকি ছাড়া তারা কিছু করেনি।’

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শহিদ অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডলের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘যে অন্যায় করে কোনো না কোনোভাবে সেই চক্রে নিজেই পড়ে যায়। শেখ হাসিনা নিজেকে মনে করেছিল খুন গুম, হামলা মামলা দিয়ে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু তার আশ্রয় এখন হয়েছে ভারতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে দল ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করেছে, হত্যা করেছে নির্বিচারে, জামায়াত বলে বসল, তারা আওয়ামী লীগকে মাফ করে দেবে।’ ‘আবু সাঈদ, মুগ্ধর রক্তকে কীভাবে মাফ করবেন?’- প্রশ্ন রাখেন রিজভী।

জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা উন্নয়নের নামে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল করেছেন শুধু টাকা কামানোর জন্য। ভোট কেন্দ্রে ভোটার না গেলেও আওয়ামী লীগ সরকারকে একমাত্র স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। সেই ভারতও শেখ হাসিনাকে পাহারা দিতে পারল না। ফলে তিনি পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই এখন ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলছে, উস্কানি ছড়াচ্ছে। সেই ভারত আপনাদের কাছে প্রিয় হয়ে গেল। এটা খুবই দুঃখজনক।’

আওয়ামী লীগের ১৬-১৭ বছরের নানান অনিয়ম দুর্নীতি, খুন, গুম, লুটপাট তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘জনগণ শেখ হাসিনার নাম দিয়েছিল মাফিয়া হাসিনা। শেখ হাসিনা নিজের ও আত্মীয় স্বজনদের নামে প্লট নিয়েছেন। তাদের পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে এখন তদন্ত হচ্ছে। বিদেশে টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত হচ্ছে। এদেশের আইন-আদালত হাতের মুঠোয় নিয়ে অপরাধ করে পার পাওয়া যায়, কিন্তু বিদেশে নয়। বাংলাদেশ টিকে থাকুক, মাথা উঁচু করে দাঁড়াক, শেখ হাসিনা তা চাননি।’

তাহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবু নঈম মো. সামসুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলিম বাবুর সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ, মহানগর বিএনপি'র যুগ্ম-আহবায়ক নজরুল হুদা, বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি.এম জিয়াউর রহমান, বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক কামাল হোসেন, ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপি সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক প্রমূখ।

এছাড়াও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফা মামুনসহ রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এনায়েত করিম/মাহফুজ

সংসদে নারীদের জন্য ১০-২০টি আসনই যথেষ্ট: ইসলামী ফ্রন্ট

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম
সংসদে নারীদের জন্য ১০-২০টি আসনই যথেষ্ট: ইসলামী ফ্রন্ট
গোলটেবিল বৈঠকে ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীদের জন্য নিরঙ্কুশ ১০০টি আসনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। তবে কমিশনের এই সুপারিশের যৌক্তিকতার পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। 

তারা বলেছে, ‘নারীদের জন্য ১০০টি নয়, বরং সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০টি আসনই আমরা যথেষ্ট মনে করি।’ 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রদত্ত সুপারিশমালা ও আমাদের বক্তব্য’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা এসব কথা বলেন। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, সুপারিশকৃত প্রস্তাবনায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধকে যথার্থ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার ঐক্যকে তুলে ধরা হয়েছে। তবে আমরা মনে করি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার সঙ্গে ২৪-এর তুলনা করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহল বিরত থাকবে। এ সময় সংবিধানে ‘প্রজাতন্ত্র’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে ‘আন্তধর্ম সম্প্রীতি কমিশন’ ও ‘জাতীয় শরিয়াহ কাউন্সিল’ গঠনের দাবি জানায় ইসলামী ফ্রন্ট। সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, বর্তমান সংবিধানের তুলনায় প্রস্তাবিত সংবিধান সংস্কার সুপারিশমালা অধিকতর টেকসই ও যুগোপযোগী। 

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিনের সভাপতিত্বে ও স উ ম আবদুস সামাদের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জগলুল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আইনসচিব মুহাম্মাদ ইকবাল হাছান প্রমুখ।

 

জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার ছাড়া গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে: দুদু

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার ছাড়া গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে: দুদু
ছবি: খবরের কাগজ

জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার ছাড়া গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ও যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুদু বলেন, দেশে একটা ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের গ্রাস থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। এত বড় একটা পরিবর্তনের পরেও বাংলাদেশের মানুষ আশায় বুকে বেঁধেছিল, তাদের জীবন ধারনের জন্য অন্তত পক্ষে গত সরকারের আমলের তুলনায় এবার অনেক ভালো থাকবে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুরুতেই দ্রব্য মূল্যের দাম একটু কমের দিকে গেলেও পরবর্তীতে দাম বেড়ে যায়। মাঠ পর্যায়ের যে কৃষকরা সঠিক দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে, সেটির ধারেকাছেও তারা যেতে পারেনি। এদেশের কৃষক শ্রমিক সবসময় অবহেলিত থেকেছে এবং নিমর্মতার স্বীকার হয়েছে।  

তিনি বলেন, বিএনপি গরিব মানুষের দল, বিএনপি খেটে খাওয়া মানুষের দল, কামার, কুৃমার, কুলি, মজুর ঠিক তেমনি মধ্যবিত্তের দল। সব শ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি। সেই বিএনপি আজকে এ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানালো। কিন্তু সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ৬ মাস চলে যাওয়ার পরেও ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই মনে করছে। এ সরকার বাজারদর এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। দেশের শৃঙ্খলা  রক্ষা করতেও পারছেন না।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা শুরুতেই বলেছিলাম প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন। বর্তমান সরকার তার সমর্থনকে কাজে লাগানোর যে দক্ষতার দরকার ছিল সেটা তারা করতে পারেনি। কিন্তু এ সরকারকে এখনও আমরা সমর্থন করি। এ সরকারের সমালোচনা করি সঠিক পথে থাকার জন্য। হয়ত তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট হতে পারে। কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো ছাড়া কোনো পথ নেই। কারণ তারা যদি ব্যর্থ হয় তাহলে এর অংশীদার আমাদেরকেও হতে হবে। সরকারের সমালোচনার কারণ হলো তারা যাতে সফল হয়। এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না।  

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশের মধ্যে একধরনের নির্বাচনের আমেজ তৈরী হতে যাচ্ছে। সেই জায়গায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কার নয়, সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলছেন। বলতেই পারে! সকল রাজনৈতিক দলতো স্বাধীন। সকল রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। তারা যদি মনে করে  এই সরকারের সংস্কার দরকার সেই কথা তারা বলতে পারে। আমার কাছে মনে হয় নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কার করতে পারে। জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার যদি কেউ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে তারা ব্যর্থ হবে। সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, যদি নির্বাচন পরিত্যাগ করে, নির্বাচন গ্রহণ না করে, তাহলে তো তিন বছর, চার বছর, পাঁচ বছর পরপর গণঅভ্যুত্থান করতে হবে। আর আরেকটা হলো সামরিক অভ্যুত্থান। সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যারা নির্বাচনের বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছেন, নির্বাচনের স্রোতে আসেন, জনগণের পাশে দাঁড়ান। ভয়ভীতি সন্দেহ রেখে যদি সময় বিলম্বিত করেন তবে পার্শ্ববর্তী দেশে বসে থাকা ফ্যাসিস্ট শক্তি পাবে, আরও বেশি উৎসাহিত হবে। 

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরসহ প্রমুখ।

শফিকুল/মেহেদী/