
যারা জিয়াবাদ আবিষ্কার করতে চাইছে তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কখনো জিয়াউর রহমানের মূর্তি স্থাপন করেনি। কোনো বিশিষ্ট জায়গায় জিয়াউর রহমানের পোস্টার টাঙায়নি। জিয়াউর রহমানকে আমরা দলীয় চর্চার মধ্যে, তার বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বিএনপি তিন বার ক্ষমতায় থাকতে আমরা জিয়াউর রহমানকে মূলধন করে রাজনীতি করিনি। যারা জিয়াবাদ আবিষ্কার করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অডিটোরিয়ামে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শহিদ জিয়ার অবদান’ শীর্ষক আলোচনাসভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।
আমীর খসরু বলেন,‘যারা বিএনপির বিরোধিতা করছে তারা জিয়াবাদ আবিষ্কার করেছে। বিএনপি কখনো জিয়াবাদ আবিষ্কার করতে পারেনি। আমরা জিয়াউর রহমানকে কোনোদিন মহামানব বানাইনি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের জন্য। বাংলাদেশের যত ধরনের সংস্কার হয়েছে, সেটির ৯০ শতাংশ সংস্কার করেছে বিএনপি। কিন্তু, এখন আমাদেরকে অনেকে সংস্কারের সবক দিচ্ছে। ছয় বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ মাধ্যমে যে সংস্কারের কথা বলেছে, যে দুই বারের অধিক কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, এগুলো ছয় বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন। হাসিনা-পরবর্তী যে বাংলাদেশ হবে এটাকে মাথায় রেখে খালেদা জিয়া কথাগুলো বলেছে। এই সংস্কারগুলো দরকার হবে আগামীর বাংলাদেশে। আজকে তারা সেই কথাগুলো আমাদেরকে বলতেছে। আবার সংস্কারের সবক দিচ্ছে। এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি সমর্থন দিয়ে যাবে বলে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘কারণ, এই সরকারের মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতায় আসবে। এজন্যই আমরা সবাই এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি। সুতরাং যারা সরকার পরিচালনা করছেন, তাদের প্রত্যেকটি পদক্ষেপে, প্রত্যেকটি কথাবার্তা বলার আগে এই কথাগুলো মাথায় রাখবেন। তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না। আর যদি কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে যদি অন্য কোনো পরিকল্পনা থাকে গণতন্ত্রের বাইরে, সেটা বোধ হয় ভালো হবে না। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সমর্থন থাকবে। কিন্তু, এর বাইরে কিছু করতে চাইলে সমর্থন বেশিদিন থাকার কথা না।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বাংলাদেশ যে গর্তের মধ্যে পড়েছে, এখান থেকে বের হতে হলে একটা জাতীয় ঐক্য দরকার। ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতিকে এই গর্ত থেকে বের করতে হবে। অনির্বাচিত সরকার যত বেশি দেশ পরিচালনা করবে, তত বেশি গণবিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত আসতে থাকবে। সেজন্য নির্বাচনকে বাদ দিয়ে কোনো গণতন্ত্র আসবে না।
জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ড. মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খাইরুল কবির খোকনের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/অমিয়/