
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করার সময় দেখা হবে না কে কোন ধর্মের। দেখা হবে সে এই দায়িত্বের উপযুক্ত কি না। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বের রাজনীতি বিশ্বাস করি না। আমাদের ওপর যে পরিমাণ জুলুম করা হয়েছে, যদি আমাদের কর্মীরা ধৈর্য না ধরতো তাহলে এদেশে অনেক প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে যেত। যতটা খুন হয়েছে প্রতিটি খুনের বিচার হতে হবে। বিচার যদি না হয় তাহলে খুনের সংস্কৃতি বন্ধ হবে না। লুটপাটের যদি বিচার না হয় তাহলে লুটপাটের সংস্কৃতি বন্ধ হবে না। এ বিচার আমরা দাবি করি কিন্তু তাই বলে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিক, এটাও আমরা পছন্দ করি না। আইন আইনের গতিতে চলবে।’
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় দিনাজপুর গোড় এ শহিদ বড় ময়দানে দিনাজপুর জেলা জামায়েত ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামের দায়িত্বশীল শীর্ষ পর্যায়ের ১১ জন নেতা-কর্মীকে একে একে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে। পাঁচজনকে ফাঁসিরকাস্টে ঝুলানো হয়েছে। বাকিদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তৎকালীন আমিরে জামায়াত মতিউর রহমান নিজামী থেকে শুরু করে সাবেক আমিরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযম এবং কুরআনের পাখি আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ সকলের প্রতি নির্মম আচরণ করা হয়েছে। তাদেরকে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো আদালতে পাতানো সাক্ষী দিয়ে দুনিয়া থেকে তাদেরকে বিদায় করা হয়েছে। তাদের অপরাধ ছিল তারা দেশকে ভালোবাসেন। তাদের অপরাধ ছিল দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশে আমাদের সব কয়টি কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছিল, আমাদের দলের নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছে। আমাদেরকে নিষিদ্ধ করেছিল। আমাদের লাখ লাখ ভাই-বোনদেরকে জেলে বন্দি করেছিল।
আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব কয়েকবার বলেছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাতে তাদের ৫ লাখের অধিক নেতা-কর্মীদেরকে খুন করা হবে। কিন্তু ৫ জনকেও খুন করা হয় নাই। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।
দিনাজপুর জেলা আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল ও কেন্দ্রীয় মজলিসের সুরা সদস্য ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বক্তব্য প্রদান করেন।
এদিকে সকাল হতে না হতেই দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলাসহ ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার জামায়াতের বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা জামাতের আমিরের বক্তব্য শোনার জন্য দিনাজপুর গোড়ে এ শহিদ বড় ময়দানে উপস্থিত হন।
সুলতান মাহমুদ/মাহফুজ