কাঁদছে আবু সাঈদের মা। পাড়া-পড়শীরা আবু সাঈদের স্মৃতি হাতড়িয়ে বিলোপ করছে। কাঁদছে তার সহপাঠীরা। এ কান্নার কি শেষ আছে? শিক্ষার্থী রোহানের মা কাঁদছে। ঘরে পড়ার টেবিলের দিকে তাকালেই তার মা বিলাপ করে উঠছে। কিছুতেই তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। কর্মজীবী শিবলু বাচ্চা নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই বুলেট এসে তার মাথা ভেদ করে চলে যায়।
তাতেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরিবারটিকে অনিশ্চয়তায় ভাসিয়ে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। অসহায়ের মতো কাঁদছে শিবলুর স্ত্রী আর তার সন্তানরা। কিশোর সায়মন ছোটবেলায় বাবাকে হারায়। আট-দশ বছর বয়স থেকেই সংসারের হাল ধরে চা দোকানে কাজ করে। সে এখন একটু বড় হয়ে ঢাকা শহরে এসে ১৪ হাজার টাকা বেতনে কাজ পেয়েছিল। তাতেই চলছিল তার অসহায় মায়ের সংসার। মা শহরে ছেলের জন্য নিজ হাতে পিঠা বানিয়ে নিয়ে এসেছিলেন ছেলেকে খাওয়াবেন বলে।
কিন্তু সায়মনের আর মায়ের হাতে পিঠা খাওয়ার সৌভাগ্য হলো না। মায়ের কাঁধে চড়ে লাশ হয়ে ফিরতে হলো তাকে। কেউ ভাত নিয়ে বসে আছে ছেলে এসে খাবে বলে। কেউ মাকে বলেছিল মা সাবধানে থেকো। কেউ মায়ের জন্য ওষুধ আনতে গিয়েছিল। কেউ সংসারের সচ্ছলতার আশায় গ্রাম থেকে শহরে এসেছিল কাজের আশায়। কেউ বের হয়েছিললেন ক্ষুধার্ত সন্তানদের আহার জোগাতে। শত শত মায়ের বুক খালি করে রাজপথ রঞ্জিত করে যে অধিকার আদায় হলো তা কি ভূলুণ্ঠিত হবে? নাকি এ থেকে শিক্ষা নেবে শাসকশ্রেণি।
মো. ফাহিম সরদার
বরপা, তারাবো, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ
[email protected]