বাঙালি হুজুগের পাবলিক। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন কারিকুলাম নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড ঘটে গেল। সবাই নিজের মতো করে মতামত দিল! ব্যস! যা হওয়ার হতে থাকুক। এবার সরকার আর অভিভাবকের গ্যাঁড়াকলে পড়লাম আমরা শিক্ষার্থীরা। একটু অশুদ্ধ ভাষায় বললে ‘মাইনকার চিপায়’। এই দুর্মূল্যের বাজারে কারিকুলামের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু কিনতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এক মাস পেলাম নতুন কারিকুলামের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। ক্লাসে বসলাম গ্রুপ ওয়ার্কের জন্য, কিন্তু বেঞ্চে বসতে না বসতেই সময় শেষ। অ্যাসাইনমেন্টসের স্তূপ জমেছে বাসায়। শিক্ষার্থীরা তো তখনই আনন্দের সঙ্গে অ্যাসাইনমেন্টস করবে, যখন শিক্ষক ধৈর্যসহকারে পড়াবেন। এক কথায় শিক্ষকদেরও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। যে কারিকুলামে সরকার আমাদের শিক্ষিত করাতে চাচ্ছে, সে কারিকুলাম বিদেশের, আর সেখানে একটা শ্রেণিকক্ষে বেশি হলে ২০-৩০ জন ছাত্রছাত্রী থাকে। তাও আবার সকাল থেকে সন্ধ্যা। আর আমাদের এক একটা শ্রেণিকক্ষে কমপক্ষে ৮০-৯০ জন ছাত্রছাত্রী থাকে। সময় সকাল থেকে খুব বেশি হলে দুপুর ১২টা অবধি। বিদেশের শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে পড়াশোনা, অ্যাসাইনমেন্টস, প্রজেক্টস ইত্যাদি কিছুই করতে হয় না। তাহলে কীভাবে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম বিদেশের মতো উন্নত হয়ে উঠবে? এখন সরকার যদি জাতিকে মূর্খ বানাতে চায় সেটা আলাদা কথা, কিন্তু কোনো ভালো উদ্দেশ্য যদি থেকে থাকে, তাহলে আমার একটাই কথা। যারা এই কারিকুলামের পেছনে ভূমিকা রাখছেন, আপনারা আর একটু পরিকল্পনা করুন। সময় এখনো ফুরায়নি কিন্তু নিঃসন্দেহে অতি দ্রুত ফুরিয়ে যাবে।
সামিহা তাহমিদ
২৯৭ পূর্ব রামপুরা, ঢাকা-১২১৯