প্রযুক্তির বিকাশ এবং ডিজিটালকরণের সঙ্গে সঙ্গে কয়েক বছর ধরে স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়েছে। এখন স্মার্টফোন ছাড়া মানুষ এক মুহূর্তও থাকতে পারে না। কিছুক্ষণের জন্য মোবাইল থেকে সরে এলে মনে হয় কী একটা মিস হয়ে গেল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে মোবাইল ফোন থেকে সরে আসার এই ভীতিকে বলা হয় ‘নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া’। সংক্ষেপে যাকে বলে ‘নোমোফোবিয়া’।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই নোমোফোবিয়া একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও এখন নোমোফোবিয়া সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। শিশু, তরুণ, বৃদ্ধ সবাই নোমোফোবিয়ায় আক্রান্ত। বেশি সময় ধরে মোবাইল ফোনে লেগে থাকায় মানুষের ক্ষীণ দৃষ্টি, মাথাব্যথা, হতাশা, মেজাজ খিটখিটেসহ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি ঘটছে। এ সমস্যা নিরসনে ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ কয়েকটি দেশ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও বাংলাদেশে এখনো তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে বাংলাদেশে নোমোফোবিয়ার সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।
এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশকে নোমোফোবিয়া নিয়ে কার্যকর গবেষণা প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় সীমিত করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করা উচিত। শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ডিটক্স ক্যাম্প চালু করা হোক, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকতে পারবে। যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
মাইফুল জামান ঝুমু
শিক্ষার্থী, ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]