
লিবিয়া উপকূলের যে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার বেশির ভাগের বাড়িই মাদারীপুরের। যে প্রবাসীরা নিজের জীবন দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে তাদের এরকম ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। ইতালি যাওয়ার চোরাই পথ হলো লিবিয়া। সেখানেই আমাদের দেশীয় দালালরা লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের টার্গেট করে তাদের লিবিয়া পাঠিয়ে থাকে। এর পর নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয় আরও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। মাদারীপুরের বেশির ভাগ লিবিয়া প্রবাসীই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
যখন দেশে এসে প্রতারকদের ব্যাপারে থানায় মামলা করতে যান তখন থাকে না তার কোনো প্রমাণ পত্র। আবার থাকলেও প্রতারক চক্রের কালো টাকার নৈরাজ্যে থানা-পুলিশের সহযোগিতাও তাদের মেলে না। কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমে লিবিয়া উপকূলে লাশের ভয়াবহ চিত্র ঘুরপাক খাচ্ছে। এতদিন লাশের পরিচয় না মিললেও শেষমেশ তাদের ঠিকানা পাওয়া গেছে। ২৩টি লাশের মধ্যে ১০ জনেরই বাড়ি মাদারীপুর। দেশের সবচেয়ে গরিব এবং অবহেলিত জেলা হলো- মাদারীপুর। এখানকার অর্থনীতি মূলত কৃষির ওপরই বেশি নির্ভরশীল। তাই তো এ জনপদের মানুষকে প্রতারক চক্র টার্গেট করে ফায়দা তুলতে পারছে সবচেয়ে বেশি। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রতারক চক্র ও তাদের দালাল। তারাই মূলত লিবিয়ার উপকূল দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথ তৈরি করেন। তাদের ধরে আইনের আওতায় আনা না গেলে এ জনপদের আরও অনেক মায়ের বুক খালি হবে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের জলে। তবে যারা সমুদ্রের ভয়াবহ দুর্বিষহ পথ পাড়ি দিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠায় তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্রকে আরও যত্মশীল হতে হবে। তারা অবহেলিত হলে তার দায়ও রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
হাজি মো. রাসেল ভূঁইয়া
খলিফাবাড়ী, সিপাহীপাড়া, মুন্সীগঞ্জ
[email protected]