ঢাকা ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মৃত্যুর পরের জীবন জানতে পড়ুন ‘মরণের পরে কী হবে’ বইটি

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০০ এএম
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০১ এএম
মৃত্যুর পরের জীবন জানতে পড়ুন ‘মরণের পরে কী হবে’ বইটি
মরণের পরে কী হবে বইয়ের ছবি। সংগৃহীত

যে জন্মেছে, সে মরবেই। মৃত্যুকে ভুলে থাকা যায়, কিন্তু এর থেকে পালিয়ে বেড়ানো যায় না। মৃত্যুর পরই শুরু হবে মানুষের চিরস্থায়ী জীবন। যে জীবনের শুরু আছে, শেষ নেই। মৃত্যুর পর কী হবে, কেমন কাটবে মানুষের জীবন, মানুষ কোথায়, কীভাবে, কত দিন থাকবে—এসবের কতটুকু আমরা জানি। হাশর-নাশর, হিসাব-নিকাশের দিনের অবস্থাই-বা কতটা ভয়াবহ হবে—কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক এসব বিষয়ে জানতে সংগ্রহ করুন মাওলানা মুহাম্মাদ আশেক এলাহী বুলন্দশহরী (রহ.) রচিত মরণের পরে কী হবে বইটি।

মানুষ পৃথিবীতে স্বল্প সময় অবস্থান করলেও তার যাত্রা সীমাহীন। ক্ষণস্থায়ী এ পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই পার্থিব জীবনের বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত রয়েছে। কিন্তু চিরস্থায়ী জীবন তথা পরকালীন জীবন ও তার বিষয়াদি সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই অজ্ঞ। তাই বলে পরজগতের ব্যাপারে এবং আত্মার যাত্রা সম্পর্কে তার জানার আগ্রহ শেষ হয়ে যায়নি। আখেরাত সম্পর্কে জ্ঞানের স্বল্পতার কারণেই মানুষ আল্লাহর পথ থেকে অনেক দূরে। দুনিয়ার কোনো সম্পদ দেখতে পেলে সেদিকেই দ্রুত অগ্রসর হয় এবং পরকালের নেয়ামত ও আল্লাহর সন্তুষ্টির ওপর একে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এসব মানুষের কথা চিন্তা করে এ বইয়ে এমন বিষয়সমূহের অনুসন্ধান ও আলোচনা করা হলো—যা অন্তরে ভয়ের সঞ্চার ও চোখে অশ্রু প্রবাহিত করবে এবং পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। 

এ বইয়ে কোরআন-সুন্নাহ এবং অতীত জাতির অবস্থা এবং তাদের উপদেশসমূহের ওপর গভীরভাবে দৃষ্টি দিয়ে কিছু শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এ বই প্রত্যেকের জন্য জীবন চলার পাথেয় হয়ে থাকবে এবং পরকালে সবার জন্য আমলে বা সৎকর্ম হিসেবে পরিগণিত হবে। 

এ বইয়ে চারটি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে কবর সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা, দ্বিতীয় অধ্যায়ে জাহান্নামের আদ্যোপান্তের বিবরণ, তৃতীয় অধ্যায়ে হাশর ও কিয়ামতের অবস্থার বর্ণনা এবং চতুর্থ অধ্যায়ে জান্নাতের বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। 

বইটি অনুবাদ করেছেন মাওলানা শহীদুল্লাহ আড়াইহাজারী। বইটি প্রকাশ করেছে রুচিশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান আনোয়ার লাইব্রেরি। বইয়ের মোট পৃষ্ঠা ২৬৩। বাংলাবাজার ইসলামী টাওয়ারে অবস্থিত আনোয়ার লাইব্রেরির আউটলেট এবং অনলাইন থেকে সরাসরি বইটি কিনতে ভিজিট করুন ফেসবুক পেইজ

বই: মরণের পরে কী হবে
লেখক: মাওলানা মুহাম্মাদ আশেক এলাহী বুলন্দশহরী (রহ.)
অনুবাদ: মাওলানা শহীদুল্লাহ আড়াইহাজারী
প্রকাশক: আনোয়ার লাইব্রেরি
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২৬৩
মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০/- টাকা
মোবাইল: ০১৯১৩৬৮০০১০

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

ইবাদতের সুবর্ণ সময় রাত

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
ইবাদতের সুবর্ণ সময় রাত
রাতে প্রার্থনা করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত

রাত মুমিনের জন্য অপার সম্ভাবনাময় সময়। মুমিন শুধু ঘুমিয়ে রাত কাটায় না; বরং সে একটা সময় বেছে নেয় আল্লাহর ইবাদতের জন্য। আল্লাহকে কাছে পাওয়ার জন্য। যারা রাতের শেষ ভাগে ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর ইবাদত করে, কোরআনে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে আলাদা হয়। তারা ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে। আর আমি তাদেরকে যে রিজিক দান করেছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে।’ (সুরা সাজদা, আয়াত: ১৬) 

শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া বান্দার অতিরিক্ত দায়িত্ব। তাহাজ্জুদ পড়লে আল্লাহ বান্দার প্রতি খুশি হন। তাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় করো তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। আশা করা যায়, তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৭৯)

রাতে ইবাদতের জন্য দণ্ডায়মান হওয়া বেশ কষ্টকর। রাতের নামাজে লোকদেখানোর ব্যাপার থাকে না। ফলে রাতের ইবাদত হয় একনিষ্ঠভাবে। রাত জেগে ইবাদত করা জান্নাতবাসীদের গুণ। আল্লাহ বলেন, ‘এ সকল জান্নাতবাসী ছিল এমন সব লোক, যারা রাতে সামান্যই ঘুমাত এবং ভোর রাতে ক্ষমতার দোয়া করত।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৭-১৮)

রাতের ইবাদতে আল্লাহর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজনগুলো মনভরে বলা যায়। রাতের এক-তৃতীয়াংশের পরবর্তী প্রহর দোয়া কবুলের অন্যতম সময়। এ সময় আল্লাহতায়ালা বান্দাকে ডাকেন, প্রয়োজন জানতে চান। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন রাতের প্রথম এক-তৃতীয়াংশ অতিক্রম হয়ে যায়, তখন তিনি (আল্লাহ) দুনিয়ার আকাশে নেমে এসে বলতে থাকেন, ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? (যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আর আমি তাকে ক্ষমা করব)। কোনো তওবাকারী আছে কি? (যে তওবা করবে আর আমি তার তওবা কবুল করব)। কোনো প্রার্থনাকারী আছে কি? (যে প্রার্থনা করবে আর আমি তার প্রার্থনা কবুল করব)। কোনো আহ্বানকারী আছে কি? (আমি তার আহ্বানে সাড়া দেব)। এভাবে ফজরের সময় পর্যন্ত তিনি বলতে থাকেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৭৫৮)

দিনের তুলনায় রাতের ইবাদতে বেশি একাগ্রতা সৃষ্টি হয়। ওই সময়ের ইবাদত ও প্রার্থনায় সৌভাগ্য ও কল্যাণের দরজা খুলে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ) প্রতিষ্ঠা করা উচিত। কেননা এ হলো তোমাদের পূর্ববর্তী নেককারদের অবলম্বিত রীতি। রাতের নামাজ আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও গুনাহ থেকে বাঁচার উপায়; মন্দ কাজের কাফফারা এবং শারীরিক রোগের প্রতিরোধক।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৪৯)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা ওই ব্যক্তির ওপর রহম করুন, যে রাত জেগে নামাজ আদায় করে; অতঃপর সে স্বীয় স্ত্রীকে ঘুম হতে জাগ্রত করে। আর যদি সে ঘুম হতে উঠতে না চায়, তখন সে তার চোখে পানি ছিটিয়ে দেয় (নিদ্রাভঙ্গের জন্য)। আল্লাহতায়ালা ওই নারীর ওপর রহম করুন, যে রাতে উঠে নামাজ আদায় করে এবং নিজের স্বামীকে জাগ্রত করে। যদি সে ঘুম থেকে উঠতে অস্বীকার করে, তখন সে তার চোখে পানি ছিটিয়ে দেয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৩০৮)

লেখক: শিক্ষার্থী, ফতোয়া বিভাগ , মারকাজুশ শাইখ আরশাদ আল-মাদানী, মুগদা

মসজিদ-উত-তাকওয়ার তিন দিনব্যাপী সিরাত উ‍ৎসব

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০৭ পিএম
মসজিদ-উত-তাকওয়ার তিন দিনব্যাপী সিরাত উ‍ৎসব
মসজিদ-উত-তাকওয়া সোসাইটি, ধানমন্ডি। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র সিরাতুন্নবি (সা.) উপলক্ষে ধানমন্ডির মসজিদ-উত-তাকওয়া সোসাইটিতে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী সিরাত উৎসব।

মসজিদ-উত-তাকওয়া আয়োজিত সিরাত উৎসবটি চলবে শনিবার থেকে সোমবার (১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত।

আয়োজকরা জানান, শনিবার শুরু হয়ে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। তিন দিনের এই উৎসবে প্রতিদিন মাগরিব থেকে এশা পর্যন্ত সিরাতভিত্তিক উপদেশ আয়োজনে ‘সুন্নাহ অনুসরণের অপরিহার্যতা’ বিষয়ে অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ বিষয়ে হাফেজ মুফিত সাইফুল ইসলাম, ‘উসওয়াতুন হাসানাহ’ বিষয়ে মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী ও ‘কোরআনের ভাষায় সিরাতের বর্ণনা’ নিয়ে এস এম নাহিদ হাসান কথা বলবেন।

এ ছাড়া প্রতিদিন জোহর নামাজের পর ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি, ফুড অব প্রফেট (সা.) ও সিরাত গ্রন্থ প্রদর্শনী থাকবে। রবিবার মাগরিবের পর থেকে এশা পর্যন্ত নাত সন্ধ্যা ও সোমবার ১১টা ৩০ মিনিট থেকে ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ছোটদের জন্য রয়েছে ‘এসো নবিজির গল্প শুনি’ অনুষ্ঠান। আয়োজনে নারীদের বসার আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।

মসজিদ-উত-তাকওয়া সোসাইটির খতিব হাফেজ মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এবারও মসজিদ-উত-তাকওয়া সোসাইটির উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী সিরাত উৎসব শুরু হলো। আমরা একটা উৎসব ও ইবাদতমুখর পরিবেশে সময়টা উদযাপন করব। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মুহাম্মদ (সা.)—যিনি আমাদের জীবনের চেয়েও বেশি প্রিয়। তাঁর সম্পর্কে আমাদের খুব একটা জানা নেই। তাঁর সম্পর্কে আমরা অনেকে জানি না। খুব ভালো করে তাঁকে চিনি না। তাঁর সম্পর্কে আমাদের পড়াশোনা নেই। সিরাতের ব্যাপারে, আমাদের প্রিয় নবিজির ব্যাপারে যেন আমাদের এবং পরবর্তী প্রজন্মের ভেতর আরও বেশি আগ্রহ তৈরি করতে পারি—তাঁকে জানা, বোঝা এবং সুন্নতের ওপর আমলের ব্যাপারে—এজন্যই মূলত আমাদের সিরাত উৎসব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই পুরো আয়োজনের ক্ষেত্রে আমাদের মুসল্লি ভাইবোনদের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকে, এটা অভূতপূর্ব। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমাদের বর্তমান কমিটির প্রতি—তারা ভালোবেসে এগিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি মুসল্লি ভাইবোনদের প্রতি এবং যারা আয়োজনের পেছনে থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, আয়োজন সফল করতে শ্রম দিচ্ছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

সমস্যা সমাধানের দুই উপায়

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ এএম
সমস্যা সমাধানের দুই উপায়
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত মোনাজাতরত মুসল্লির ছবি

জীবনের বাঁকে বাঁকে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। নানা বিপদ-আপদ ও দুশ্চিন্তা আমাদের গ্রাস করে। আমরা তখন হতাশ হয়ে পড়ি। করণীয় ঠিক করতে পারি না। এটা আমাদের যেমন হয়, মানুষ হিসেবে দুনিয়ার জীবনে নবি-রাসুলদেরও হতো। কিন্তু তারা আমাদের মতো হতাশ হতেন না। আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করতেন। আল্লাহর সাহায্য কামনা করতেন। এই আশ্রয় গ্রহণ এবং সাহায্য কামনার দুটি পদ্ধতি পবিত্র কোরআন আমাদের জানাচ্ছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে  সাহায্য কামনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩) 

ধৈর্য ধারণ করা: বিপদ আসলে ধৈর্য ধরতেই হয়। কেউ স্বেচ্ছায় ধৈর্য ধরে, কেউ বাধ্য হয়ে। ধৈর্য ধরা ছাড়া মানুষের উপায় থাকে না। হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, একজন সাধারণ মানুষের ধৈর্য আর মুমিনের ধৈর্য এক নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের ব্যাপারটি আশ্চর্যজনক! তার প্রতিটি বিষয়ই কল্যাণকর। এ মর্যাদা মুমিন ছাড়া আর কারও জন্য নয়। যদি সে সুখ-শান্তিতে থাকে, তাহলে কৃতজ্ঞতা আদায় করে; ফলে সেটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি সে বিপদাক্রান্ত হয়, তখন সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে সেটাও তার জন্য কল্যাণকর হয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৯৯৯)। এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, মুমিনের জীবনে বিপদ এলেও লাভ। মুমিন ধৈর্য ধরে আখেরাতের সম্বল অর্জন করে নেয়। 

নামাজ আদায় করা: সমস্যা সমাধানে সাহায্য চাওয়ার দ্বিতীয় মাধ্যম নামাজ। এটা সব নবি-রাসুলের আমল ছিল। তাঁরা সমস্যায় পড়লে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নবিরা বিচলিত হলেই, সমস্যায় পড়লেই নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৮৯৩৭)। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও এমন করতেন। হুজাইফা (রা.) বলেন, ‘কোনো বিষয় নবিজিকে চিন্তিত করলেই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৩১৯) 
বিপদে পড়লে নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার কথা কোরআনে আছে। সমস্যায় পড়লে কী করতে হবে এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা হলো, ‘কেউ কোনো সমস্যায় পতিত হলে সে যেন খুব ভালোভাবে অজু করে, পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে অন্যান্য নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৪৭৮) 
 

লেখক: শিক্ষক , মাদরাসাতুল হেরা, মিরপুর, ঢাকা

হতাশা থেকে মুক্তির আমল

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
হতাশা থেকে মুক্তির আমল
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত হতাশাগ্রস্ত তরুণের ছবি

স্বভাবতই মানুষ মানসিকভাবে দুর্বলচিত্তের মনের; অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। হতাশা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। মুমিনদের উদ্দেশে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হতাশ হয়ো না, অবশ্যই আল্লাহতায়ালা তোমাদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা তওবা, আয়াত: ৪০)। জীবনে হতাশা পেয়ে বসলে আল্লাহর মুখাপেক্ষী হতে হবে। তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। হতাশা থেকে বেঁচে থাকার কয়েকটি আমল এখানে তুলে ধরা হলো

ধৈর্য ধারণ করা: হতাশা শয়তানের চক্রান্ত ও ফাঁদ। হতাশা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। হতাশা মুমিনকে আল্লাহর রহমতের কথা ভুলিয়ে রাখতে চায়। হতাশা থেকে বাঁচার জন্য মুমিনদের ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা মাঝে মধ্যে বিপদ-আপদ দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন। যারা আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধারণ করেন, তিনি তাদের সফলতা দান করেন। আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘তোমাদের ভয় ও ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি (এসবের) কোনো কিছুর দ্বারা নিশ্চয়ই পরীক্ষা করব, ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)

অল্পে তুষ্ট থাকা: অল্পে তুষ্ট থাকা আমাদের হতাশা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আমরা আল্লাহতায়ালার লাখো নেয়ামতে ডুবে আছি। আমাদের উচিত, নেয়ামতগুলো স্মরণ করে শুকরিয়া আদায় করা। প্রাচুর্যতাই সচ্ছলতা নয়; আবার সম্পদের স্বল্পতাই দরিদ্রতা নয়। যতটুকু আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকাই মুমিনের গুণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তাহাজ্জুদের নামাজ আর মানুষ থেকে অমুখাপেক্ষিতার মধ্যে আছে মুমিনের সম্মান।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব, হাদিস: ৯২৯)

নামাজ আদায় করা: নামাজ আদায় হতাশা দূর করে। কখনো হতাশা চেপে বসলে বিচলিত না হয়ে অজু করে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার জন্য পবিত্র কোরআনে নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)

তাকদিরে বিশ্বাস রাখা: ঈমানের অন্যতম ভিত্তি তাকদিরে বিশ্বাস রাখা। ভালো-মন্দ যাই হোক না কেন; তাকদিরের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলে হতাশ হওয়ার অবকাশ থাকবে না। সমস্যার সমাধান একমাত্র আল্লাহই করতে পারেন, অন্তরে এই বিশ্বাস লালন করুন; হতাশা আপনার আশপাশেও আসবে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ যদি তোমাকে কষ্ট দিতে চান তাহলে তিনি ছাড়া তা দূর করার কেউ নেই, আর আল্লাহ যদি তোমার কল্যাণ করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহ ফিরিয়ে দেওয়ার কেউ নেই।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭)

আল্লাহকে ডাকা বা সাহায্য চাওয়া: আল্লাহর বান্দা হিসেবে আমাদের উচিত সবসময় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি তো নিশ্চয়ই নিকটবর্তী। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া পড়া: হতাশা ও দুশ্চিন্তা অনেক সময় আর্থিক সংকটের কারণে হয়। এজন্য বেশি বেশি ইসতেগফার করলে আল্লাহতায়ালা আর্থিক সংকটসহ অন্যান্য বিপদ দূর করে দেবেন। হতাশা থেকে বাঁচার জন্য দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা জরুরি। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে এই দোয়াটি পড়তে পারি– 

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হামমি ওয়াল হুজনি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিদ দাইনি ওয়া কহরির রিজাল।
বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা থেকে আশ্রয় চাই। আমি আশ্রয় চাই অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, আপনার কাছে আশ্রয় চাই ভীরুতা ও কার্পণ্য হতে, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের রোষানল থেকে। 

লেখক : শিক্ষার্থী, আনন্দমোহন সরকারি কলেজ, ময়মনসিংহ

ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত পবিত্র কোরআনের ছবি

সত্য অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া গবেষণা। যার সাধারণ অর্থ সত্য ও জ্ঞানের অনুসন্ধান। ড. খুরশিদ বলেন, বিজ্ঞানসম্মতভাবে নতুন জ্ঞান অন্বেষণ হলো গবেষণা। ড. ইয়াহইয়া ওয়াহাব বলেন, পাথর খণ্ডে গর্ত খনন করার মতো পরিশ্রম করে নতুন তথ্য পাওয়াটাই হলো গবেষণা। 


ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিজ্ঞানময় কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আসমানগুলো ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য বহু নিদর্শন আছে। যারা আল্লাহকে দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট এবং শায়িত অবস্থায় স্মরণ করে থাকে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টির ব্যাপারে চিন্তা করে (ও বলে), হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করোনি, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, সুতরাং আমাদের অগ্নির শাস্তি থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০-১৯১)


আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘এটি একটি কল্যাণময় কিতাব তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি—যাতে তারা এর আয়াতগুলোর প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে, আর জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।’ (সুরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯) 

মানবজাতির বোঝার সুবিধার্থে আল্লাতায়ালা কোরআনকে সহজ করে দিয়েছেন। যারা চিন্তাভাবনা করে আর যারা করে না, তাদের ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি বলে দিন, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা করো না?’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৯)। জ্ঞানী ও গবেষকদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত–আল্লাহ তাদের মর্যাদা উঁচু করে দেবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা করো।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)। আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনি (আল্লাহ) রাত-দিন ও চাঁদ-সূর্যকে তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে তাঁরই বিধানে। অবশ্যই এতে বিবেকবান লোকদের জন্য রয়েছে নিদর্শনাবলি।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২)


যারা জ্ঞান ও গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকেন, আল্লাহ তাদের যুদ্ধ বা রোজা রাখার মতো সওয়াব দান করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করা জিহাদতুল্য।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘জ্ঞান-গবেষণা রোজার সমান।’
ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব অনেক বেশি। জ্ঞান গবেষণা মুসলিমদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। গবেষণার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করতে পারি। জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারি। তাই মুসলিমদের উচিত গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করা এবং জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশ হিসেবে মেনে নেওয়া। 


মানুষের উচিত প্রতিদিনই নতুন নতুন পথের সন্ধান করা। একই পথ নিয়ে পড়ে না থাকা। দুটি পথ থাকলে তৃতীয় পথ কী করে তৈরি করা যায়; তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। এই চিন্তাকে জাগানোর জন্যই বারবার আহ্বান করেছে কোরআন। 

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, পাংশা