ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

ইশরাকের নামাজ কি ও কখন পড়তে হয়?

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৭ এএম
ইশরাকের নামাজ কি ও কখন পড়তে হয়?
নামাজরত এক মুসল্লির ছবি। ইন্টারনেট

ইশরাক অর্থ আলোকিত হওয়া, উজ্জ্বল হওয়া। সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। হাদিসে এ নামাজকে সালাতুত দোহা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

ইশরাকের উত্তম সময়
ইশরাক নামাজের মূল সময় সূর্যোদয় থেকে নিয়ে সূর্য মাথার ওপরে আসা পর্যন্ত। তবে উত্তম হলো সূর্য উদিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর আদায় করা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসসমূহ থেকে এমনই জানা যায়। আলেমরা বলেন, সূর্য ওঠার ১০-১২ মিনিট পর এই নামাজ আদায় করতে হয়। তবে ১৫ মিনিট পর পড়া ভালো। কেউ কেউ ২০ মিনিট পর পড়ার কথাও বলেছেন।

আরও পড়ুন: আজকের নামাজের সময়সূচি

ইশরাক নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় ইশরাক নামাজ আদায় করেছেন। সাহাবায়েকেরাম (রা.)-কেও আদায়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার প্রিয়তম রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। এক. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুই. দুহার নামাজ, তিন. ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা।’ (বুখারি, হাদিস: ১১৭৮)

হজ বা উমরা করা প্রত্যেক মুসলমানের জীবনের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। ইশরাকের নামাজ আদায়ে হজ ও উমরার সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও উমরার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৫৮৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা করা। সাহাবায়েকেরাম বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদে কোথাও থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজ এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫২২২)

ইশরাকের নামাজের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম-পদ্ধতি নেই। ইশরাকের নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মতো দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে হয়। 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

সিজদায় আগে হাঁটু নাকি হাত?

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২২ এএম
সিজদায় আগে হাঁটু নাকি হাত?
সিজদারত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন সিজদা করার ইচ্ছা পোষণ করতেন, তখন তাকবির (আল্লাহু আকবার) দিতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮০৩; মুসলিম, হাদিস: ৭৫৪)

দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সিজদায় যাওয়ার সময় জমিনে আগে হাঁটু রাখতে হবে নাকি আগে হাত রাখতে হবে—এ বিষয়টা নিয়ে দুই ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বলেন, ‘আমি দেখেছি সিজদায় গমনকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) জমিনে হাত রাখার আগে হাঁটু রাখতেন এবং সিজদা থেকে ওঠার সময় হাঁটুর আগে হাত উঠাতেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৮৩৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৮৮২)

অন্য এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন সিজদার সময় উটের মতো না বসে। সিজদার সময় যেন জমিনে হাঁটু রাখার আগে হাত রাখে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৮৪০; নাসায়ি, হাদিস: ১০৯১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি সাত অঙ্গের দ্বারা বা সাত অঙ্গের ওপর ভর করে সিজদা করার ব্যাপারে নির্দেশিত হয়েছি—কপাল দ্বারা। এরপর তিনি হাত দ্বারা নাকের প্রতি ইশারা করলেন। আর দুই হাত, দুই হাঁটু এবং দুই পায়ের আঙুলসমূহের অগ্রভাগ দ্বারা।’ (বুখারি, হাদিস: ৮১২)

আরও পড়ুন: রুকু থেকে ওঠার সময় কোন দোয়া পড়তে হয়?

সিজদা অবস্থায় হাতের আঙুলগুলো মিলিয়ে কিবলামুখী করে, দুই বাহু পার্শ্বদেশ থেকে আলাদা, পায়ের আঙুলগুলো উন্মুক্ত এবং মুখমণ্ডল দুই হাতের মাঝে রাখতে হবে। ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন রুকু করতেন তখন হাতের আঙুলগুলো ছড়িয়ে রাখতেন আর যখন সিজদা করতেন তখন হাতের আঙুলগুলো মিলিয়ে রাখতেন।’ (মুসতাদরেকে হাকেম, হাদিস: ৮১৪)

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘হাতের আঙুলগুলোর অগ্রভাগ কিবলামুখী করে রাখতেন।’ (ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ৬৪৩)

দুই বাহু দুই বগল থেকে আলাদা এবং দুই পায়ের আঙুল উন্মুক্ত রাখতে হবে। আবু কাতাদা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় তাঁর দুই বাহু দুই বগল থেকে আলাদা রাখতেন এবং দুই পায়ের আঙুলগুলো উন্মুক্ত রাখতেন।’ (ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ৬৮৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদাতে কপালের মতো নাকও মাটিতে রাখতেন। হাতের আঙুলগুলো সোজাভাবে নরম করে কিবলামুখী করে রাখতেন। দুই পায়ের গোড়ালি একত্রে মিলিয়ে আঙুলগুলো কিবলামুখী করে পা খাড়া করে রাখতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৯৭৭)

সিজদায় দুই বাহু কুকুরে মতো জমিনে বিছিয়ে দেওয়া যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সিজদার সময় তোমাদের কেউ যেন তার দুই বাহু কুকুরের মতো জমিনে বিছিয়ে না দেয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৮২২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রুকু ও সিজদায় পিঠ সোজা না রাখে, তার নামাজ পূর্ণ হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৬৫)

বারা ইবনে আজিব (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদায় মুখমণ্ডল কোথায় রাখতেন? তিনি বলেন, ‘দুই হাতের মাঝখানে রাখতেন।’ (তিরমিজি, ১/৩৭)

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

 

রুকু থেকে ওঠার সময় কোন দোয়া পড়তে হয়?

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০২ পিএম
রুকু থেকে ওঠার সময়  কোন দোয়া পড়তে হয়?
রুকু আদায়রত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

ইমাম রুকু থেকে ওঠার সময় ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ বলবে এরপর বলবে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’। আর মুক্তাদি শুধু ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলবে। একাকী নামাজি ব্যক্তি উভয়টি বলবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ বলে রুকু থেকে উঠতেন। এরপর ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’ বলতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৯৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ বলবে, তখন তোমরা বলবে ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল’ হামদ। কারণ তোমাদের যার এ বলা ফেরেশতাদের বলার সঙ্গে মিলে যাবে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৯৬)

আরও পড়ুন: রুকুতে কতবার তাসবিহ পাঠ করতে হবে?

রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে মোট চারভাবে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বাক্যটি পাঠ করার বর্ণনা পাওয়া যায়—

  • রব্বানা লাকাল হামদ।
  • রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ।
  • আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ।
  • আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ। 

রিফা ইবনে রাফি (রা.) বলেন, ‘একবার আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে নামাজ আদায় করলাম। তিনি যখন রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা’ পড়লেন, তখন পেছন থেকে এক সাহাবি পড়লেন, ‘রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ হামদান কাসিরান তাইয়িবান মুবারাকান ফি’। নামাজ শেষে রাসুলুল্লাহ (সা.) জানতে চাইলেন, কে এমনটা পাঠ করেছে? সে সাহাবি বলল, আমি হে আল্লাহর রাসুল, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি দেখলাম ৩০ জনের অধিক ফেরেশতা এ আমলের সওয়াব লেখার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৯৯)

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

সাপ খেলা দেখানো ও এর বিনিময় নেওয়া কি জায়েজ?

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ এএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ এএম
সাপ খেলা দেখানো ও এর বিনিময় নেওয়া কি জায়েজ?
সাপ খেলা দেখাচ্ছেন এক সাপুড়ে। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন: দেখা যায়, সাপুড়েরা খেলা দেখানোর জন্য সাপ নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে। গ্রামের কিছু মানুষ ঘণ্টা প্রতি সাপুড়েদের পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সাপ খেলা দেখানোর চুক্তি করে। এক জায়গায় লোকজন জড়ো করে তাদের থেকে টাকা নেওয়ার মাধ্যমে খেলা দেখানো হয়। নির্ধারিত পারিশ্রমিক সাপুড়েদের নিয়ে বাকি টাকা তারা রেখে দেয়। শরিয়তের দৃষ্টিতে সাপ খেলা দেখানো এবং এর বিনিময় নেওয়া কি জায়েজ?

জুবায়েদ রহমান, ঠাকুরগাঁও

উত্তর: সাপ খেলা দেখানো, একে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা এবং এর বিনিময় নেওয়া জায়েজ নয়। শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি বিনিময়যোগ্য কাজ নয়। এ ধরনের খেলা দেখা ও দেখানো সম্পূর্ণ বেহুদা ও অনর্থক কাজ। এই খেলায় দ্বীনি ও দুনিয়ার কোনো লাভ নেই; বরং এ ধরনের অনর্থক ও বাজে কাজে সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করা অপব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত। 

আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধির আশায় পণ্য গুদামজাত করা যাবে?

এ ছাড়া এ জাতীয় পেশায় নিয়োজিতদের অনেকেরই সাপের কামড়ে মৃত্যু ঘটে। এই কাজ নাজায়েজ হওয়ার এটিও একটি কারণ। সুতরাং এ থেকে বিরত থাকা জরুরি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা একটি তিরের উসিলায় তিনজন লোককে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। এক. তির নির্মাতা—যে নির্মাণকালে কল্যাণের আশা করেছে, দুই. (যুদ্ধে) এই তির নিক্ষেপকারী এবং তিন. তা নিক্ষেপে সাহায্যকারী। তিনি আরও বলেন, তোমরা তিরন্দাজি করো ও ঘোড়দৌড় শিক্ষা করো। তবে তোমাদের ঘোড়দৌড় শেখার তুলনায় তিরন্দাজি শিক্ষা করা আমার কাছে বেশি পছন্দনীয়। মুসলিম ব্যক্তির সব ক্রীড়া-কৌতুকই বৃথা। তবে তির নিক্ষেপ, ঘোড়ার প্রশিক্ষণ এবং নিজ স্ত্রীর সঙ্গে ক্রীড়া-কৌতুক বৃথা নয়। (কারণ) এগুলো হলো উপকারী ও বিধি সম্মত।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৬৩৭; আল মাবসুত, সারাখসি: ১৬/৩৭; আদ দুররুল মুখতার, ৬/৩৯৪)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

রুকুতে কতবার তাসবিহ পাঠ করতে হবে?

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
রুকুতে কতবার তাসবিহ পাঠ করতে হবে?
রুকু আদায়রত কিশোরের ছবি। পিন্টারেস্ট

রুকুতে কমপক্ষে একবার রুকুর তাসবিহ বা সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম পাঠ করতে হবে। তবে তিনবার পাঠ করা উত্তম। হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকুতে সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম পড়তে থাকতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৯৯)। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকুতে তিনবার সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম পড়তেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৮৮৮)

নির্দিষ্ট এ তাসবিহটি ছাড়াও রুকুতে রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বেশ কিছু জিকির পাঠের বর্ণনা পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম একটি জিকির হলো—

বাংলা উচ্চারণ: সুবহানাকাল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ ফিরলি।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, হে আমাদের রব, আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন। (বুখারি, হাদিস: ৮১৭) 

রুকুতে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও যে জিকিরটি করতেন— 

বাংলা উচ্চারণ: সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুল মালা ইকাতি ওয়া রুহ।

বাংলা অর্থ: সব ফেরেশতা ও রুহের (জিবরাইল আ.) প্রতিপালক মহিমান্বিত ও অত্যন্ত পবিত্র। (মুসলিম, হাদিস: ৯৭৮)

আরও পড়ুন: রুকুতে পিঠ ও মাথা সোজা রাখতে হয়

রুকু অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করতে নিষেধ করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। তিনি বলেছেন, ‘সাবধান! আমাকে নিষেধ করা হয়েছে, আমি যেন রুকু বা সিজদা অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত না করি। তোমরা রুকু অবস্থায় আল্লাহতায়ালার শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব বর্ণনা করবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৯৬১) 

রুকুর সুন্নত হলো—

  • রুকুতে তাকবির বলা।
  • রুকুতে উভয় হাত দ্বারা হাঁটু ধরা।
  • হাঁটু ধরার সময় আঙুলগুলো ছড়িয়ে রাখা।
  • পায়ের গোছা সোজা রাখা।
  • পিঠকে বিছিয়ে দেওয়া।
  • মাথা ও নিতম্ব বরাবর করা।
  • রুকুতে কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ বলা।
  • রুকু থেকে ওঠার সময় ইমামের ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলা, মুকতাদির ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা, একাকী নামাজি ব্যক্তির উভয়টা বলা।

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

মূল্যবৃদ্ধির আশায় পণ্য গুদামজাত করা যাবে?

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ এএম
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
মূল্যবৃদ্ধির আশায় পণ্য গুদামজাত করা যাবে?
পণ্য গুদামজাতের ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গত ধানের মৌসুমে আমি ৯০০ টাকা দরে ৪০ মণ ধান কিনে রেখেছি। কয়েক মাস পরে ধানের দাম বাড়লে সেগুলো বিক্রি করব। স্বাভাবিকভাবে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে ধানের দাম বাড়ে। তখন ধানগুলো বিক্রি করার ইচ্ছা করেছি। কিন্তু শুনেছি, ইসলামে পণ্য মজুত করে রাখা নিষেধ। জানার বিষয় হলো, আমার এ কাজ কী শরিয়ত-নিষিদ্ধ মজুতের আওতায় পড়বে নাকি এভাবে ব্যবসা করা আমার জন্য বৈধ হবে? 

নাদিম আহমেদ, মুন্সিগঞ্জ

উত্তর: প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি যে পরিমাণ ধান কিনে রেখেছেন এর পরিমাণ যেহেতু সামান্য, যার কারণে বাজারে এর প্রভাব পড়বে না এবং এলাকায় ধানের সংকট তৈরি হবে না, তাই তা শরিয়ত-নিষিদ্ধ মজুতকরণের আওতায় পড়বে না। কিন্তু একই এলাকায় বহু মানুষ এ পরিমাণ ধান (বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য) কিনে মজুত করে রাখে, যার ফলে এলাকায় ধানের সংকট দেখা দেয় এবং বাজারে ধানের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, তাহলে তখন তা অন্যায় ও গুনাহের কাজ হবে। (বাদায়েউস সানায়ে, ৪/৩০৮; আদ দুররুল মুখতার, ৬/৩৯৮)

তবে কাঙ্ক্ষিত মুনাফা লাভের আশায় নিজের খেতের ফসল বিক্রি না করে মূল্যবৃদ্ধির অপেক্ষায় রেখে দেওয়া শরিয়ত নিষিদ্ধ মজুতদারির অন্তর্ভুক্ত নয় এবং নাজায়েজও নয়।

পণ্য মজুতের মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়ানো নাজায়েজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পণ্য মজুত করে রাখবে সে গুনাহগার হবে। (মুসিলম, হাদিস: ১৬০৫)

আরও পড়ুন: কাস্টমার শরবতের গ্লাস ভাঙলে জরিমানা নেওয়া যাবে?

যেসব ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বাড়তি মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবসা করে, তারা কখনো প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না। তারা কখনো জান্নাতে যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো কৃপণ, ছদ্মবেশধারী ধোঁকাবাজ, খিয়ানতকারী ও অসচ্চরিত্র ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে না। প্রথম যারা জান্নাতের দরজার কড়া নাড়বে, তারা হবে দাস-দাসী, যদি তারা আল্লাহ ও তাদের মনিবের সঙ্গে ন্যায়সংগত আচরণ করে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৩২) 

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক