ইশরাক অর্থ আলোকিত হওয়া, উজ্জ্বল হওয়া। সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। হাদিসে এ নামাজকে সালাতুত দোহা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
ইশরাকের উত্তম সময়
ইশরাক নামাজের মূল সময় সূর্যোদয় থেকে নিয়ে সূর্য মাথার ওপরে আসা পর্যন্ত। তবে উত্তম হলো সূর্য উদিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর আদায় করা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসসমূহ থেকে এমনই জানা যায়। আলেমরা বলেন, সূর্য ওঠার ১০-১২ মিনিট পর এই নামাজ আদায় করতে হয়। তবে ১৫ মিনিট পর পড়া ভালো। কেউ কেউ ২০ মিনিট পর পড়ার কথাও বলেছেন।
আরও পড়ুন: আজকের নামাজের সময়সূচি
ইশরাক নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় ইশরাক নামাজ আদায় করেছেন। সাহাবায়েকেরাম (রা.)-কেও আদায়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার প্রিয়তম রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন, যেন আমি তা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ত্যাগ না করি। এক. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুই. দুহার নামাজ, তিন. ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করা।’ (বুখারি, হাদিস: ১১৭৮)
হজ বা উমরা করা প্রত্যেক মুসলমানের জীবনের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। ইশরাকের নামাজ আদায়ে হজ ও উমরার সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল এবং সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকল; অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, সে একটি পরিপূর্ণ হজ ও উমরার সওয়াব পাবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৫৮৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সদকা করা। সাহাবায়েকেরাম বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’ তিনি বলেন, ‘মসজিদে কোথাও থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজ এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫২২২)
ইশরাকের নামাজের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম-পদ্ধতি নেই। ইশরাকের নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মতো দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়তে হয়।
লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক