ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দরুদে সিক্ত থাকুক জবান

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১৮ এএম
দরুদে সিক্ত থাকুক জবান
দরুদ লেখা আরবি ক্যালিগ্রাফির ছবি

রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি। তাঁর মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ। পৃথিবীতে তাঁর আদর্শের বিকল্প নেই। আল্লাহকে পাওয়ার একমাত্র পথ হলো তাঁর আদর্শের অনুসরণ ও আনুগত্য করা। তাঁর জন্য হৃদয়ের গভীরে ভালোবাসা পোষণ এবং তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করা প্রতিটি মুমিন-মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করা ছাড়া কোনো মানুষ মুমিন হতে পারবে না। আল্লাহকে পাবে না। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ নবির প্রতি অনুগ্রহ করেন, তাঁর ফেরেশতারা নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মুমিনরা, তোমরাও নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করো এবং যথাযথ শ্রদ্ধাভরে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)

 
দশ রহমত: আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরুদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১/১৬৬)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে এক হাদিসে আছে, ‘তার আমলনামায় দশটি নেকি লেখা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৭৫৬১)

সুপারিশ অবধারিত: রুওয়াইফি ইবনে সাবিত আল আনসারি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে এ দরুদ পাঠ করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত হয়ে যাবে।’ (আলমুজামুল কাবির, তাবরানি: ৪৪৮১)

গুনাহ ক্ষমা: উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) জিকিরের খুব তাগিদ করলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করে থাকি। আমি আমার দোয়ার কতভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব? তিনি বললেন, তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা। তিনি আরও বললেন, তবে তাতে তোমার ইচ্ছা হাসিল হবে, তোমার গুনাহ মাফ করা হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২/৭২)

ফেরেশতার দোয়া লাভ: আমের ইবনে রবিআ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি, আমার ওপর দরুদ পাঠকারী যতক্ষণ দরুদ পড়ে, ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৯০৭)

নবিজির সান্নিধ্য: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পড়েছে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১১০)

লেখক: মাদরাসা শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক 

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করবে রহমাতুল্লিল আলামীন ফাউন্ডেশন

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ এএম
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করবে রহমাতুল্লিল আলামীন ফাউন্ডেশন
বন্যার্তদের হাতে সহায়তা তুলে দিচ্ছেন ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী ও সদস্যসচিব মুফতি আহসান শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন রহমাতুল্লিল আলামিন ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজীর নেতৃত্বে ও সদস্যসচিব মুফতি আহসান শরীফের সমন্বয়ে ছয়টি টিমে ভাগ হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছে সংস্থাটি। 

জানা যায়, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে বন্যাদুর্গত কয়েক হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা দিয়েছে রহমাতুল্লিল আলামীন ফাউন্ডেশন। বন্যার শুরুর দিকে চিড়া, চিনি, মুড়ি, বিস্কুট, ওষুধ, স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি, মোমবাতি, ম্যাচলাইট এবং পরিধানের পোশাকসহ প্রয়োজনীয় আসবাব দিয়েছেন। দিয়েছেন রান্না করা খাবার। নগদ অর্থও দিয়েছেন অনেককে। 

এদিকে বন্যাপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, চিকিৎসাসেবা ও স্বাবলম্বী করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফাউন্ডেশনটি। বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে কাজ করতে সুবিধা হবে বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের দায়িত্বশীলরা। 

ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী বলেন, ‘ত্রাণ বিতরণ করে আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে ছিলাম। বন্যা শেষে আমাদের সাধ্যানুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসন, চিকিৎসাসেবা এবং স্বাবলম্বীকরণে কাজ করব। বিত্তবানরা সহযোগিতা করলে ব্যাপক হারে কাজ করা যাবে এবং মানুষও উপকৃত হবে।’ 

উল্লেখ্য, নবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর পূর্ণাঙ্গ সিরাতচর্চা এবং মানবজীবনে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে বিজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে লালবাগ জামেয়ার মুহাদ্দিস মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় রহমাতুল্লিল আলামীন ফাউন্ডেশন। জামিয়াতুল বালাগ ঢাকার প্রিন্সিপাল, লেখক ও গবেষক মুফতি আহসান শরীফ সংগঠনটির সদস্যসচিব। প্রতি বছর সিরাতবিষয়ক কনফারেন্সের আয়োজন করে সংগঠনটি। মানুষকে নবিপ্রেমে উজ্জীবিত করতে, শিক্ষার্থীদের মনে নবিজির আদর্শের বীজ রুইয়ে দিতে সিরাতবিষয়ক প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা এবং নাতে রাসুলের মতো নানা আয়োজন থাকে সংগঠনের। 

রায়হান/মিরাজ রহমান 

সুবহে সাদিকের সঠিক সময় কোনটি?

প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০২ এএম
সুবহে সাদিকের সঠিক সময় কোনটি?
সুবহে সাদিক হলো সেই ক্ষীণ আলো, যা পূর্ব আকাশে প্রকাশ পায় আর সাহরির সময় শেষ হয়ে যায়। ছবি : ইন্টারনেট

ফজরের সময় হওয়ার সময়কে সুবহে সাদিক বলা হয়। সারা পৃথিবীর মুসলমানরা দৃশ্যমান আলামতের ওপর ভিত্তি করে সুবহে সাদিকের সময়টি বলেছেন। আল্লাহ কোরআনে সুবহে সাদিক সম্পর্কে বলেন, ‌‌‘আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ না রাতের কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত হয়।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

সুবহে সাদিক হলো সেই ক্ষীণ আলো, যা পূর্ব আকাশে প্রকাশ পায় আর সাহরির সময় শেষ হয়ে যায়। সুবহে সাদিকের সময় ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয় আর যখন সূর্য উদিত হয় তখন ফজরের ওয়াক্ত শেষ হয়। ওয়াক্ত শুরু ও শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে সুবহে সাদিক ও সূর্যোদয় এক প্রকাশ্য আলামত। দুনিয়ার মুসলিম সমাজ এ আলামতের ভিত্তিতেই বছরব্যাপী ফজর আদায় করেন এবং রমজানে সাহরি শেষ করেন।

তবে আধুনিক জোতির্বিজ্ঞানীরা সুবহে সাদিকের বিভিন্ন ডিগ্রির তাপমাত্রার কথা বলেছেন। সুবহে সাদিক কত ডিগ্রিতে উদিত হয়, গবেষণার মাধ্যমে তা জানা যায়নি। তবে পুরাতন লেখায় পাওয়া যায় যে, তা ১৫ ডিগ্রিতে হয়। (মাখতুতাহ, আয়াসুফিয়া, ইস্তাম্বুল, ২৬৪৮, ওয়ারাক, ৫৬)

জোতির্বিজ্ঞানীদের দাবিসমূহ মান্যকর নয়। তবে তাদের দাবি ও প্রকাশ্য আলামতের সাথে যদি অনেকবার মিলে যায়, তা হলে তাদের এ দাবি গ্রহণ করা যেতে পারে।

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বানভাসিদের পাশে আল-মারকাজুল ইসলামী

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ পিএম
বানভাসিদের পাশে আল-মারকাজুল ইসলামী
লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন আল-মারকাযুল ইসলামীর স্বেচ্ছাসেবীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভারী বর্ষণ আর ভারত থেকে নামা ঢলে দেশের ১২ জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। দেশের এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে আল-মারকাজুল ইসলামী। বন্যার শুরু থেকে ত্রাণ বিতরণ, পানিবন্দিদের উদ্ধার ও আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো, মৃতদের উদ্ধার ও কাফন-দাফন এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে সংস্থাটি। বন্যায় মৃত ৯ জনের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক কাফন-দাফন করেছে তারা। 

জানা গেছে, ৪ হাজার পরিবারকে শুকনো খাবার, ৬ হাজার পরিবারের মাঝে ভারী ফুড আইটেম, ১৫ হাজার পরিবারকে ৫ লিটারের বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হয়েছে। ময়লা পানি বিশুদ্ধকরণ ৭০ হাজার পিস ট্যাবলেট বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

এদিকে সংস্থাটির নেতৃত্বে ফেনীর ৬টি উপজেলায় ৮ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি বিনামূল্যে ১,২০০ টাকার ওষুধ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালীতে মেডিকেল ক্যাম্প করে ফ্রিতে ১০ হাজার রোগী দেখার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। 

সংস্থাটির চেয়ারম্যান হামজা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মারকাজুল ইসলামী প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিপন্ন, অসহায় ও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ১৯৮৭ সালে আমার বাবা মুফতি শহীদুল ইসলাম বিন-নুরী টাউনে পড়াকালে বন্ধুদের নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাও হয়েছে বন্যার্তদের সহায়তাকে কেন্দ্র করে। ৮৮ এর বন্যায় বিপুল পরিমাণ সহায়তা করেছে। ৯৮ এর বন্যায় ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছে সংস্থাটি। ১২ কোটি টাকার নগদ অর্থও সহায়তা করা হয় সেসময়। কভিড-১৯ এ মৃতদের কাফন-দাফনের পাশাপাশি ব্যাপক কাজ করেছি আমরা। এবারের বন্যায় শুরু থেকে আমরা কাজ করেছি। প্রথমে উদ্ধার কাজ করেছি। শুকনো ও রান্না করা খাবার থেকে শুরু করে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়েছি।’ 

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সাল থেকে মানবসেবায় নিবেদিত আল-মারকাজুল ইসলামী (এএমআই)। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহীদুল ইসলাম। বিশেষত ১৯৮৮ ও ১৯৯৮-এর বন্যা ও কোভিড-১৯-এ সংস্থাটির কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। কোভিড-১৯-এ জীবন বাজি রেখে মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে সংস্থার লোকজন। সংস্থাটির সরাসরি তত্ত্বাবধান ও অর্থায়নে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্যও তাদের মাদরাসা রয়েছে। সংস্থাটি তিনটি কাজ সামনে রেখে কাজ করছে- শিক্ষা, আত্মশুদ্ধি ও সেবা। 

এ ছাড়া সংস্থাটির অধীনে স্বল্প খরচে চিকিৎসার জন্য নিজস্ব হাসপাতাল, ফ্রি লাশ গোসল ও কাফনসেবা, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, দুর্যোগে জরুরি ত্রাণ ও পুনর্বাসন, স্বাবলম্বীকরণ, বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য ডিপ টিউবওয়েল বা সাধারণ টিউবওয়েল স্থাপন ইত্যাদি কার্যক্রম রয়েছে। 

রায়হান/মিরাজ রহমান

সুরা ওয়াকিয়া পড়ার ফজিলত

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ এএম
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
সুরা ওয়াকিয়া পড়ার ফজিলত
পবিত্র কোরআনের প্রচ্ছদ। ছবি: ইন্টারনেট

সুরা ওয়াকিয়া পবিত্র কোরআনের ৫৬তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর আয়াত সংখ্যা ৯৬। রুকু আছে ৩টি। ওয়াকিয়া অর্থ নিশ্চিত ঘটনা। মুফাসসিররা বলেন, ওয়াকিয়া অর্থ কিয়ামতও বটে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে তার ওপর অভাব আসবে না।’ (বায়হাকি, হাদিস: ২৪৯৭)

সুরা ওয়াকিয়া কখন পড়তে হয়
দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকাল-সন্ধ্যা খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি সময়। মহান আল্লাহ এ দুই সময়ে জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। মাগরিবের নামাজের পর সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করার অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইসলামি স্কলাররা।

সুরা ওয়াকিয়া শেখা-শেখানো
সুরা ওয়াকিয়া পাঠের বিশেষ একটি শিক্ষা পাওয়া যায় আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর সঙ্গে আমিরুল মুমিনিনের বিশেষ কথোপকথন থেকে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) যখন অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন তখন ওসমান (রা.) তাকে দেখতে গিয়ে বলেন, আপনার অসুখটা কী? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমার পাপ আমার অসুখ। ওসমান (রা.) বলেন, আপনার বাসনা কী? তিনি বলেন, আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি। তিনি বলেন, আমি সরকারি বায়তুল মাল থেকে কোনো উপঢৌকনের ব্যবস্থা করে দেব, যা আপনার এবং আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে? ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, এর কোনো প্রয়োজন নেই। আমি আমার কন্যাদের সুরা ওয়াকিয়া শিক্ষা দিয়েছি। আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, অভাব তাকে কখনো স্পর্শ করবে না। (তাফসিরে জালালাইন, ৬/৩৫৩)

লেখক: আলেম ও অনুবাদক

বন্যার্তদের পাশে নানা আয়োজনে পিসব

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ পিএম
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পিএম
বন্যার্তদের পাশে নানা আয়োজনে পিসব
মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে পিপলস ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের (পিসব) স্বেচ্ছাসেবিরা। ছবি: সংগৃহীত

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অনেক জেলার অধিকাংশ অঞ্চল। বন্যার শুরুতে গভীর রাতে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় মানুষেরা ঘর ছাড়েনি বা ছাড়ার সুযোগ পায়নি। দুই সপ্তাহ ধরে ঘরবন্দি হয়ে খাবার-পানিবিহীন এক অনিশ্চিত সময় পার করেন লাখো মানুষ। মানুষের যখন এমন বিপদ, তখন তো আর ঘরে বসে থাকা যায় না। শুরু থেকেই বিরামহীনভাবে বানভাসি মানুষের জন্য কাজ করছে মাওলানা মুহাম্মাদ ইমরান হাবিবীর পিপলস ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিসব)।

পিসবের নেতৃত্বে শুরুতে দক্ষ সাঁতারুদের চারটি টিম আটকেপড়াদের উদ্ধার করেছে। ফেনী ও নোয়াখালী জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কয়েকটি টিমে ভাগ হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা, শিশুখাদ্য, রান্না করা খিচুড়ি, শুকনো খাবার, পানি ও মোমবাতিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বন্যাদুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা।

জানা যায়, ১৫ হাজার বন্যার্ত মানুষকে খাদ্য সহায়তার আওতায় শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার, শিশুখাদ্য, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়েছে তারা। এ পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার ওষুধ সংগ্রহ করেছে সংগঠনটি। প্রায় চার লাখ টাকার চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করবেন বলে জানা গেছে।

বন্যাপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের সহায়তায় বহুমুখী সেবামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে পিসব। প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে ৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা, শিশুখাদ্য ও স্যানিটাইজের জন্য পরিবারপ্রতি ১৫০০ টাকা, পুনর্বাসন প্রকল্পে পরিবারপ্রতি ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা, জরুরি গৃহ-আসবাব প্রকল্পে ১৫০০ টাকা, টিউবওয়েলের জন্য ২৫ হাজার টাকা ও টয়লেট নির্মাণে পরিবারপ্রতি ১২ হাজার টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মাদরাসাছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ, ট্রাঙ্ক ও বিছানাপত্রের জন্য জনপ্রতি ২৫০০ টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এর মধ্যে বহু মানুষকে সহায়তা দিয়েছেন।

সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ ইমরান হাবিবী বলেন, ‘পিসব প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেবামূলক কাজ করে আসছে। বন্যার শুরু থেকে নানামুখী সেবা নিয়ে আমরা মানুষের কাছে হাজির হয়েছি। বন্যাপরবর্তী অসহায়দের পুনর্বাসন এবং স্বাবলম্বী করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। মাদরাসাছাত্রদের আসবাব, শিক্ষা উপকরণ, মাদরাসা সংস্কার এবং অসহায়দের জন্য টিউবওয়েল স্থাপন ও টয়লেট নির্মাণ করব।’

উল্লেখ্য, মুসলিম সন্তানদের মৌলিক ধর্মীয় শিক্ষা ও নানামুখী সেবামূলক কাজের জন্য ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিপলস ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিসব)। প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা মুহাম্মাদ ইমরান হুসাইন হাবিবী। এ পর্যন্ত সংস্থাটি মুসলিম শিশুদের মৌলিক ধর্মীয় শিক্ষার জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মক্তব প্রতিষ্ঠা, অসহায়দের স্বাবলম্বী ও ঘর নির্মাণ করে দেওয়া, দেশে বিভিন্ন সময় বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা, মসজিদ নির্মাণ ও আলেমদের সহায়তা দিয়ে আসছে। করোনাকালে প্রায় ১ লাখ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা ও নগদ অর্থ দিয়েছেন তারা।

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক