মৃত্যু অবধারিত। প্রতিটি প্রাণকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তবে কার মৃত্যু কখন হবে এটা কেউ জানে না। প্রত্যেকটি মৃত্যুই তার স্বজনদের জন্য অপূরণীয় দুঃখ-কষ্ট বয়ে আনে। আপনজন হারানোর বেদনা শুধু স্বজনরাই অনুভব করতে পারে। বেদনায় অনেকের স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পায়। এ সময় কেউ কেউ অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে যায়। কাজে জড়িয়ে পড়ে। ইসলামে শোক প্রকাশ নিষিদ্ধ নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবারবর্গের কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ ও মাতম করে কাঁদা, শরীরে আঘাত বা কাপড় ছিঁড়ে কান্নাকাটি করা যাবে না। মৃতের স্বজনদের সান্ত্বনা দেওয়া, তাদের বোঝানো ও তাদের পাশে দাঁড়ানো মুমিনদের বৈশিষ্ট্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি কেউ তার মুমিন ভাইকে বিপদে সান্ত্বনা দেয়, তবে আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন মহামূল্যবান সবুজ রাজপোশাক পরাবেন।’
সামর্থ্য থাকলে মৃত ব্যক্তির পরিবারের জন্য খাবার রান্না করে নিয়ে যাওয়া ভালো। আবদুল্লাহ ইবনে জাফর (রা.) বলেন, ‘জাফর (রা.)-এর ইন্তেকালের খবর পেয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা জাফরের পরিবার-পরিজনের জন্য খাবার তৈরি করো। কেননা তাদের ওপর এমন এক বিপদ এসে গেছে, যা তাদের রান্নাবান্না করে খেতে বাধা সৃষ্টি করবে।’ (তিরমিজি)
আপনজন মারা গেলে তার জন্য দোয়া করা উত্তম কাজ। কোরআন পড়ে দোয়া করা ভালো। সুরা ফাতিহা পড়া যেতে পারে। মৃত ব্যক্তির নামে সওয়াব পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে কোরআন পড়িয়ে টাকা দেওয়া-নেওয়া নাজায়েজ। মৃত্যুর ৪০ দিন পর অনুষ্ঠান করে লোক খাওয়ানোর প্রচলন আছে সমাজে। এটা হলো জাহেলি যুগের কুসংস্কার। নয় দিন বা ৪০ চল্লিশ দিনের খাবার বলে ইসলামে কিছু নেই।
গরিব ও মিসকিনদের খাওয়ানো সওয়াবের কাজ। তবে মৃত ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে দিন-তারিখ নির্ধারণ করে খাওয়ানো ঠিক নয়। মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা উত্তম কাজ। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের উচিত মৃত ব্যক্তির জন্য সচেতনভাবে কোরআন-হাদিস সম্মত আমল করা। কোনো প্রকার বিদাআত বা প্রচলিত ভুল, এমন আমল করা থেকে বিরত থাকা একান্ত কর্তব্য।
লেখক: অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার,সেলস অপারেশনস, ফেয়ার ডিস্টিবিউশন লিমিটেড