মিসওয়াক: মিসওয়াক করাও মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। এটি আহলে সুন্নতের স্বপ্ন। স্বপ্নে মিসওয়াক করতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা নিকটাত্মীয়ের প্রতি সুসম্পর্ক স্থাপনকারী হবে। নাপাক কোনো কিছু দ্বারা মিসওয়াক করতে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা ভালো কাজে হারাম সম্পদ ব্যয় করবে।
নামাজের জন্য অজু করতে দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টার জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তার আলামত। নিজেকে ফরজ গোসল অবস্থায় দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা সফর করবে। সে এমন কোনো প্রয়োজনের পেছনে পড়বে, যা ছাড়া তার কোনো উপায় নেই।
গোসল: যদি কেউ গোসল করতে দেখে, তা হলে তার আশা পূর্ণ হবে। স্বপ্নে গোসল করতে দেখা, চিন্তামুক্ত করে এবং গুনাহ মাফ করে পবিত্র করে দেয়। যে স্বপ্নে দেখবে যে, সে গোসল করেছে এবং নতুন কাপড় পরিধান করেছে, তা হলে স্বপ্নদ্রষ্টা যদি চাকরিচ্যুত হয়, পুনরায় চাকরি পাবে। দরিদ্র হলে ধনী ও সম্পদশালী হবে। বন্দি হলে মুক্তি পাবে। অসুস্থ হলে সুস্থ হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বা অচল পেশাদার হলে স্বপ্নদ্রষ্টার পেশা ও ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হবে। প্রচুর সম্পদ উপার্জনের ব্যবস্থা হবে। ধনী হলে হজ করবে। চিন্তিত হলে চিন্তা দূর হবে। ঋণী হলে ঋণ পরিশোধ হবে। কেননা আইয়ুব (আ.) যখন গোসল করে নতুন কাপড় পরলেন, মহান আল্লাহ তখন তাকে পরিবার-পরিজন এবং এর মতো বহু সম্পদ দান করলেন। দূরীভূত হলো তার দুশ্চিন্তা। ফিরে পেলেন সুস্থতার নেয়ামত।
গোসল করে পুরাতন কাপড় পরতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা চিন্তামুক্ত হবে বটে, কিন্তু দরিদ্র থেকে যাবে। স্বপ্নে যদি কেউ গোসল করতে দেখে, কিন্তু এখনো তার গোসল পূর্ণ হতে দেখেনি, তা হলে তার কাজকর্ম পূর্ণ হবে না। পূরণ হবে না মনের কামনা-বাসনা। প্রবাহিত পানিতে অজু বা গোসল করতে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টার হৃত সম্পদ ফিরে পাবে।
অজু করে নামাজ শুরু করতে দেখলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করবে এবং যাবতীয় চিন্তামুক্ত হবে। যদি কেউ এমন পানি দ্বারা অজু করতে দেখে, যার দ্বারা অজু করা জায়েজ নয়, তা হলে সে এমন কোনো চিন্তায় পতিত আছে, যা থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে কিন্তু উদ্ধার হতে পারছে না।
তায়াম্মুম: স্বপ্নে তায়াম্মুম করতে দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টার জন্য আশু প্রশস্ততা, আনন্দ ও শান্তির নিদর্শন। কেননা তায়াম্মুম আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রশস্ততার প্রমাণ।
খতনা: শায়খ আবু সাদ (রহ.) বলেন, পবিত্রতার আলোচনায় সবার আগে খতনার আলোচনা তুলে ধরা উত্তম। কেননা এটা মানুষের সহজাত অভ্যাস। সুতরাং খতনা করতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা এমন কোনো নেক কাজ করবে, যার দ্বারা আল্লাহ তাকে বহু পাপ থেকে পবিত্র করবেন। সে উত্তমরূপে আল্লাহর আদেশ পালন করার তাওফিকপ্রাপ্ত হবে। কারও ভাষ্য অনুসারে, সে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকবে। স্বপ্নদ্রষ্টা নিজ পুরুষাঙ্গের মুখ আবরণে ঢেকে গেছে দেখলে বুঝতে হবে, দুনিয়ার স্বার্থে সে দীন থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। যদি কেউ খতনা করতে এবং অনেক রক্ত ঝরতে দেখে, তা হলে সে গুনাহ হতে ফিরে আসবে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হবে।
(স্বপ্নের ব্যাখ্যাবিদ মুহাম্মাদ ইবনে সিরিনের বিখ্যাত বই তাফসিরুল আহলাম বা স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকে সংক্ষেপিত)
লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক