খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা
সখর গামেদি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরুর অংশ বরকতময় করুন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১২১২)। এই দোয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতের জন্য করেছেন। আমরা জানি তাঁর দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয়। সুতরাং ভোরের সময়টা পুরোপুরি আল্লাহর রহমত ও বরকতে পরিপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠে পড়তেন, যেহেতু তিনি নিয়মিত ফজর নামাজ আদায় করতেন।
একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত, মুহাম্মাদ (সা.)-এর অভ্যাসগুলো রপ্ত করে নিজেদের প্রাত্যহিক জীবনেও প্রয়োগ করা। এটা সত্য যে, শুরুর দিকে আমাদের কষ্ট হবে, খানিকটা ক্লান্তি অনুভব করতে পারি। তবে যখন আমরা নিয়মিত এই অভ্যাসটা গড়ে তুলব, তখন এর বহুমুখী সুফলও আমরা ভোগ করতে পারব। এতে সময়ের বরকত পাওয়া যাবে। এগিয়ে যাওয়ার সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে ও মানসিক বিভ্রান্তি হ্রাস পাবে। এ জন্য ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্রুত ঘুমাতে হবে এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে।
পরিমিত খাবার গ্রহণ করা
জটিল রোগ-ব্যাধি থেকে বাঁচতে এবং সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে ইসলাম মুমিনদের পরিমিত খাবার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। পরিমিত খাবার শুধু শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে না; বরং হৃদয়কে বিগলিত করে, ইবাদত-বন্দেগিতে উৎসাহিত করে। আর অপরিমিত খাবার শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি হৃদয়কে শক্ত করে তোলে। ফলে ইবাদত-বন্দেগিতে অমনোযোগী হয়। মিকদাম বিন মাদিকারিব (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘একজন মানুষ নিজের পেটের চেয়ে অধিকতর নিকৃষ্ট কিছুই পূর্ণ করে না। তার পিঠ সোজা রাখতে সক্ষম এমন অল্প পরিমাণ খাবারই একজনের জন্য যথেষ্ট। যদি তা করতেই হয়, তা হলে এক-তৃতীয়াংশ খাবার, এক-তৃতীয়াংশ পানি ও এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখতে হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৩৮০)
নিয়মিত ব্যায়াম করা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুর্বল মুমিন অপেক্ষা সবল মুমিন শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৬৬৪) বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এই হাদিসে ‘শক্তি’ বলতে বোঝানো হয়েছে ঈমানের জোরকে। তবে শারীরিক শক্তিকে অগ্রাহ্য করা হয়নি। আমরা কীভাবে শারীরিক সক্ষমতা বজায় রাখতে পারি? নিশ্চিতভাবে নিয়মিত ব্যায়াম করার মধ্য দিয়ে। আমাদের প্রিয়নবি (সা.) নিয়মিত ব্যায়াম করতেন। তিনি খুবই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং শক্তিশালী ছিলেন। তিনি সব সময় তার ঘোড়া/উটের পিঠে চড়তেন। মাঝে মধ্যেই সেগুলোর পিঠে বোঝা না চাপিয়ে তার সঙ্গীদের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরে শক্তি বাড়ে। কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
লেখক : অনুবাদক ও সাংবাদিক