ঢাকা ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

রুকুতে যাওয়ার আগে সামান্য বিরতি নিতে হয় কেন?

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ পিএম
রুকুতে যাওয়ার আগে সামান্য বিরতি নিতে হয় কেন?
কিরাত পাঠ শেষ করে সামান্য বিরতি নিয়ে রুকু করতে হয়। ছবি: ইন্টারনেট

নামাজে দাঁড়িয়ে কিরাত পাঠ শেষ করার পর সঙ্গে সঙ্গে রুকুতে না গিয়ে সামান্য বিরতি নিয়ে রুকু করতে হবে। সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে (নামাজে) দুটি বিরতির জায়গা মুখস্থ করেছি। আর ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন, আমি (নামাজে) একটি বিরতির জায়গা মুখস্থ করেছি। সামুরা (রা.) বলেন, আমরা এর মীমাংসার জন্য মদিনায় উবাই ইবনে কাব (রা.)-এর কাছে চিঠি লিখলাম। তিনি উত্তরে জানালেন, সামুরা (রা.) সঠিক মুখস্থ রেখেছ। সাইদ (রহ.) বলেন, আমরা কাতাদাকে (রা.) জিজ্ঞাসা করলাম, (নামাজে) বিরতি দুটি কোন কোন জায়গায়? তিনি বললেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে প্রবেশ করতেন মানে তাকবিরে তাহরিমা বলার পর এবং যখন তিনি কিরাত শেষ করতেন মানে রুকুতে যাওয়ার আগে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৫১)

জামাতের নামাজে ইমাম তাকবির বলে পুরোপুরি রুকুতে যাওয়ার পর মুক্তাদিদের রুকু করতে হবে। ইমামের আগে, বহু পরে ও সমানতালে কোনো রুকন আদায় করা যাবে না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি কি ভয় পাচ্ছে না, যে ইমামের আগেই রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে নেয়, আল্লাহতায়ালা তার মাথাকে গাধার মাথায় রূপান্তরিত করবেন বা তার গঠনকে গাধার গঠনে পরিণত করবেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৯১) 

আরও পড়ুন: স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়

আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম তোমাদের আগেই রুকু করবেন এবং তোমাদের আগেই রুকু থেকে মাথা উঠাবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪০৪)

ইমামের আগে কখনো কোনো রুকন আদায় করা যাবে না। ইমাম রুকু করার পর রুকু, সিজদা করার পর সিজদা, ওঠা-বসার পর ওঠা-বসা ও সালাম আদায়ের পর মুক্তাদি সালাম আদায় করবে। আনাস (সা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আমার আগে রুকু, সিজদা, ওঠা-বসা ও সালাম আদায় করো না।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪২৬) 

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

 

কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গত বছর রমজানের শেষদিকে আমার দাদা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার কারণে তার ছয়টি রোজা কাজা হয়ে যায়। ওই অসুস্থতার মধ্যেই ঈদের তিন দিন পর তিনি মারা যান। জানার বিষয় হলো, আমার দাদার ওই রোজাগুলোর ফিদিয়া দিতে হবে?

সাব্বির রহমান, পঞ্চগড়

উত্তর: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার দাদা যেহেতু সুস্থ হয়ে রোজাগুলো কাজা করার সময় পাননি; বরং ওই অসুস্থতার মধ্যেই মারা গেছেন। তাই তার ওপর ওই রোজাগুলোর কাজা ওয়াজিব হয়নি। সুতরাং ওই রোজাগুলোর ফিদিয়া দেওয়া আবশ্যক হবে না। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি রমজানে অসুস্থ হয় (যার কারণে রোজা রাখতে পারেনি) এবং উক্ত অসুস্থতার মাঝেই মারা যায়, তা হলে তার ওপর কোনো কিছু ওয়াজিব নয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক, বর্ণনা: ৭৬৩০; আননাহরুল ফায়েক, ২/২৯; আদ্দুররুল মুখতার, ২/৪২৪)

আরও পড়ুন: মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। নির্দিষ্ট কয়েক দিন, তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, কিংবা সফরে থাকবে, তা হলে সে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর রোজা পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩-১৮৪)

ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, ‘এ আয়াতটি মানসুখ (রহিত) হয়নি, বরং আয়াতটি ওইসব অতিশয় বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যারা রোজা পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাওয়াবেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৪৫০৫) 

প্রত্যেক রোজার জন্য ফিদিয়ার ন্যূনতম পরিমাণ হলো, সদকায়ে ফিতরের সমান তথা অর্ধ ‘সা’ বা ১.৫ কিলোগ্রাম খাবার। কোনো ব্যক্তি রোজা রাখতে একান্ত অপারগ হলে সে প্রতিদিন একজন দরিদ্রকে পেট ভরে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করবে। কেউ চাইলে নগদ টাকাও দিয়ে দিতে পারবে। (আল ইনায়াহ, ২/২৭৩)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

দোয়া কুনুত কি, কখন পড়তে হয়?

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ এএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ এএম
দোয়া কুনুত কি, কখন পড়তে হয়?
নামাজ আদায়রত মুসল্লির ছবি। ইন্টারনেট

দোয়া কুনুত একটি বিশেষ দোয়া। এর মাধ্যমে একজন মুমিন তার অন্তরের প্রশান্তি লাভ করেন এবং আল্লাহর প্রতি আরও বেশি আত্মসমর্পণ করেন। জীবনের কঠিন সময়ে আল্লাহর সাহায্য পান। তাই এ দোয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক।

দোয়া কুনুত কখন পড়বেন
সাধারণত দোয়া কুনুত বলতে বিতরের নামাজের দোয়াকে বোঝায়। আর এটা বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে কিরাতের পর তাকবির বলে পড়তে হয়। আসওয়াদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) (বিতরের নামাজে) যখন কিরাত পড়া শেষ করতেন তখন তাকবির বলতেন। এরপর যখন দোয়া কুনুত পড়া শেষ করতেন তখন তাকবির বলে রুকু করতেন। (মুজামে কাবির, তাবরানি, হাদিস: ৯১৯২)

তাকবির বলার পর রুকুর আগে কুনুত পড়তে হয়। যদিও এ নিয়ে দ্বিমত পাওয়া যায়। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তিন রাকাত বিতর পড়তেন। প্রথম রাকাতে সুরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন ও তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়তেন এবং রুকুর আগে কুনুত পড়তেন।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১৬৯৯, ইবনে মাজা, হাদিস: ১১৮২)

আরও পড়ুন: নামাজের পর আয়াতুল কুরসি কেন পড়বেন?

দোয়া কুনুতের সময় হাত বাঁধা
বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে কিরাতের পর তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা-না বাঁধার ক্ষেত্রে তিনটি পদ্ধতির কথা জানা যায়।

১. দোয়ার মতো হাত উঠিয়ে রাখা। 
২. তাকবির বলে হাত ছেড়ে দেওয়া। 
৩. কিয়ামের মতো দুই হাত বেঁধে নেওয়া। 

প্রথম পদ্ধতিটি হানাফি ইমামদের কাছে পছন্দনীয় নয়। কেননা নামাজের যত জায়গায় দোয়া আছে, কোথাও হাত উঠানোর নিয়ম নেই। সুতরাং দোয়ায়ে কুনুতের সময়ও এর ব্যতিক্রম হবে না।  ইবনে উমর (রা.) এই পদ্ধতি বেদআত বলেছেন। তিনি বলেন, দেখ, তোমরা যে ফজরের নামাজেও ইমামের কিরাত শেষে কুনুতের জন্য দাঁড়াও, আল্লাহর কসম, এটা বেদআত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তা শুধু এক মাস করেছেন। দেখ, তোমরা যে নামাজের হাত তুলে কুনুত পড়ো, আল্লাহর কসম, এটিও বেদআত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তো শুধু কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলতেন। (মাজমাউজ জাওয়াইদ, ২/১৩৭)। উল্লিখিত পদ্ধতিগুলোর মধ্যে তৃতীয় পদ্ধতিটিই সুন্নাহ সম্মত। কেননা দাঁড়ানো অবস্থায় হাত বাঁধা সুন্নত। 

কুনুতে নাজেলা কখন পড়বেন
মুসলমানদের ওপর যদি ব্যাপক বিপদাপদ আসে, তা হলে সেক্ষেত্রে আল্লাহতায়ালার কাছে সাহায্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে কুনুতে নাজেলা পড়া মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিপদ আপতিত হলে ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সময় কুনুতে নাজেলা পড়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের নামাজের সময় সর্বদা কুনুত (নাজেলা) পড়তেন না। শুধু পড়তেন কোনো জাতির জন্য দোয়া করতে বা বদদোয়া করার প্রয়োজন হলে। তিনি কুনুত পড়তেন যখন ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকু থেকে মাথা উঠাতেন।’ (ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১০৯৭)

কুনুতে নাজেলা পড়ার পদ্ধতি হলো ফজরের নামাজের ফরজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে ইমাম আওয়াজ করে দোয়া পড়বেন, আর মুসল্লিরা আস্তে আস্তে আমিন বলবেন। দোয়া শেষে নিয়ম মোতাবেক সিজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদির মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন। (ইলাউস সুনান, ৬/৮১)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক
 

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি কেন পড়বেন?

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ এএম
নামাজের পর আয়াতুল কুরসি কেন পড়বেন?
শিল্পীর তুলিতে আঁকা ইবাদতরত নারীর ছবি। ইন্টারনেট

পবিত্র কোরআনে ফজিলতপূর্ণ বিশেষ কিছু আয়াত ও সুরা আছে। এসবের মধ্যে আয়াতুল কুরসি অন্যতম। একাধিক হাদিসে আয়াতুল কুরসি পড়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কেননা এর সঙ্গে রয়েছে আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং দৈনন্দিন জীবনে কল্যাণকর প্রভাব। এ সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো।

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত এই আমল করতেন। অন্যদের পড়তে উৎসাহিত করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে শুধু মৃত্যুই বাধা হয়ে থাকবে। অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১০০, তাবারানি, কাবির, হাদিস: ৭৪০৮)

আরও পড়ুন: মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?

আয়াতুল কুরসির বরকত
প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ শুধুমাত্র জান্নাতের পথে সহজতা সৃষ্টি করে না; বরং দৈনন্দিন জীবনের অশান্তি, মানসিক অস্থিরতা এবং শয়তানের প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে রমজানের জাকাত (সাদকাতুল ফিতরের) হেফাজতের দায়িত্ব দেন। এরপর আমার কাছে এক আগন্তুক আসল। সে তার দুহাতের কোষ ভরে খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে লাগল। আমি তাকে ধরে বললাম, আমি অবশ্যই তোমাকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব। তখন সে একটি হাদিস উল্লেখ করল এবং বলল, যখন তুমি বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন হেফাজতকারী থাকবে এবং ভোর হওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এ ঘটনা শুনালে তিনি বললেন, ‘সে তোমাকে সত্য বলেছে, অথচ সে মিথ্যাবাদী এবং শয়তান ছিল।’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৪৫)

আয়াতুল কুরসিতে ইসমে আজম
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, এ আয়াতে ১০টি বাক্য রয়েছে। প্রতিটি বাক্যের সঙ্গেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা রয়েছে। তাছাড়া আয়াতুল কুরসির মধ্যে ইসমে আজম আছে। কাসিম (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর ইসমে আজম যা দিয়ে দোয়া করলে তা কবুল করা হয়, তা তিনটি সুরায় রয়েছে। সুরা বাকারা, সুরা আলে ইমরান ও সুরা তোহা।’ (ইবনে মাজা, হাদিস: ৩৮৫৬) 

ইসমে আজমের প্রথম বাক্য, আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। দ্বিতীয়টি হলো, ওয়া ইলা হুকুম ইলাহুন ওয়াহিদ, লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রাহমানুর রহিম। তৃতীয়টি হলো, আলিফ-লাম-মিম। আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৭৮) 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ এএম
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৮ এএম
মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?
জানাজা নামাজ আদায়ের ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: আমাদের মহল্লায় কেউ মারা গেলে সাধারণত তার জানাজা নামাজ মহল্লার মসজিদে পড়া হয়। মসজিদে মেহরাব বরাবর বাইরে খালি জায়গা আছে। জানাজার সময় সেখানে লাশ রাখা হয়। ইমাম ও মুসল্লিরা দাঁড়ায় মসজিদে। কিছু দিন একজন আলেমের মুখে শুনেছি, মসজিদে জানাজা পড়া মাকরুহ। জানার বিষয় হলো, ওই আলেমের কথা কি সঠিক?

আশরাফ আলী, কিশোরগঞ্জ
 

উত্তর: পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে...।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫; সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৫৭)

আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন একমুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (সুরা  নাহল, আয়াত: ৬১)। 

মানুষের মৃত্যুর পর জীবিতদের কর্তব্য হলো, তাকে গোসল করিয়ে কাফন পরিয়ে জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা। জানাজা মসজিদের বাইরে যেকোনো মাঠে-ময়দানে বা জানাজার জন্য নির্ধারিত স্থানে আদায় করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সময়ও জানাজা মসজিদের বাইরে পড়া হতো। মসজিদে নববির পাশে একটি খালি জায়গা ছিল, রাসুলুল্লাহ (সা.) সেখানে জানাজ পড়তেন। (মুয়াত্তা মুহাম্মাদ, পৃষ্ঠা: ২৪৮)

আরও পড়ুন: মানব হত্যার শাস্তি

অতএব, মসজিদের বাইরে জানাজা পড়ার সুযোগ থাকলে মসজিদে জানাজা পড়া মাকরুহ। তবে কোনো কোনো ফকিহের মতে, লাশ মসজিদের বাইরে থাকলে মসজিদের ভেতর জানাজা পড়া জায়েজ আছে; মাকরুহ নয়। সুতরাং আপনাদের মহল্লায় মসজিদের বাইরে জানাজা পড়ার ব্যবস্থা না থাকলে মসজিদের বাইরে অবস্থিত মেহরাবের সামনের জায়গায় লাশ রেখে মসজিদের ভেতর জানাজা পড়তে পারবেন। (ফাতহুল কাদির, ২/৯০; রদ্দুল মুহতার, ২/২২৪)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

 

মানব হত্যার শাস্তি

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
মানব হত্যার শাস্তি
প্রতীকী ছবি

অন্যায়ভাবে মানব হত্যা এমন জঘন্য অপরাধ, যা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুমিন-মুসলমানের দ্বারা কখনোই ঘটতে পারে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এটা কোনো মুমিনের কাজ হতে পারে না যে, সে ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করবে। ভুলবশত হয়ে গেলে সেটা ভিন্ন কথা।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৯২)।

হত্যাকারী আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত। হত্যাকারীর জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। অন্যায়ভাবে একজন মানুষ হত্যা করা গোটা মানবজাতি হত্যা করার সমতুল্য আখ্যা দিয়ে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘আমি বনি ইসরাইলের প্রতি বিধান দিয়েছিলাম, কেউ যদি হত্যা অথবা পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টির অপরাধ ছাড়া (অন্যায়ভাবে) কাউকে হত্যা করে, তবে সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারও প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন গোটা মানবজাতির প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৩২)। 

একজন মুমিনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার গুনাহ ও অপরাধ কতটা গুরুতর, তা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একটি হাদিস পড়লেই বোঝা যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনকে হত্যা করা আল্লাহর কাছে গোটা পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার চেয়ে গুরুতর।’ (নাসায়ি, হাদিস: ৩৯৮৮)। অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা হারাম। এটি কুফুরি কাজ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা সেই প্রাণ হত্যা করো না, যার হত্যা আল্লাহ হারাম করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘মুসলমানকে গালি দেওয়া পাপাচার, তার সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া কুফর।’ (বুখারি, হাদিস: ৪৮)। একজন মুসলমানের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হওয়া যদি কুফর হয়, বর্তমানে আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা নারকীয় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে—তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

লেখক: আলেম ও শিক্ষক

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });