ঢাকা ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
English

ইসলামি বইমেলায় নতুন বই

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
ইসলামি বইমেলায় নতুন বই
ইসলামি বইমেলায় নতুন প্রকাশিত ২০ বইয়ের প্রচ্ছদের কোলাজ ছবি। খবরের কাগজ

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে চলছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইসলামি বইমেলা। লেখক-পাঠকদের সরব উপস্থিতি মুখর করছে মেলা প্রাঙ্গণ। নতুন বইয়ের মধুর ঘ্রাণ বিমোহিত করছে সবাইকে। প্রতিদিনই নতুন বই আসছে। ২০টি নতুন বইয়ের পরিচিতি তুলে ধরা হলো-

১. মুহাম্মাদ সা. (দুই খণ্ড)
লেখক: ড. ইয়াসির ক্বাদি
প্রকাশক: গার্ডিয়ান পাবলিকেশনস
স্টল নং: ২৩
পৃষ্ঠা: ১১০০
মুদ্রিত মূল্য: ১৫০০/-
মোবাইল: ০১৭১০১৯৭৫৫৮

২. আকিদা ও সুন্নাহ
লেখক: মুফতি রেজাউল করীম আবরার
প্রকাশক: কালান্তর প্রকাশনী
স্টল নং: ০৪
পৃষ্ঠা: ১৬০
মুদ্রিত মূল্য: ২৮০/- 
মোবাইল: ০১৩১২১০৩৫৯০

৩. পোস্টারে সেঁটে থাকা সেই মেয়েটি
অনুবাদক: মিরাজ রহমান ও মনযূরুল হক
প্রকাশক: অর্পণ প্রকাশন
স্টল নং: ৮৩-৮৪
পৃষ্ঠা: ২৩৮
মুদ্রিত মূল্য: ৩৮০/-
মোবাইল: ০১৯১২৩৯৫৩৩১

৪. ইসরাইলের বন্দিনী
লেখক: সায়ীদ উসমান
প্রকাশক: রাহনুমা প্রকাশনী
স্টল নং: ৩৫
পৃষ্ঠা: ২৬০
মুদ্রিত মূল্য: ৫০০/- 
মোবাইল: ০১৯৩৪০৮০০৩৬

৫. ইসলামি জাগরণ : নীতি ও নির্দেশনা 
লেখক: মুহাম্মাদ বিন সালিহ 
অনুবাদক: সানজিদা শারমিন
প্রকাশক: সিয়ান 
স্টল নং: ৭১-৭২
পৃষ্ঠা: ২৪০
মুদ্রিত মূল্য: ৩৯৫/-
মোবাইল: ০১৭৫৩৩৪৪৮১১

৬. সাহাবিদের অনন্য জীবন
লেখক: আব্দুল ওয়াহিদ হামি
অনুবাদক: আশিক আরমান নিলয়
প্রকাশক: সমকালীন প্রকাশন
স্টল নং: ৭৬
পৃষ্ঠা: ৪৪৬
মুদ্রিত মূল্য: ৬৬৫/-
মোবাইল: ০১৪০৯৮০০৯০০

৭. আমার নবি মুহাম্মাদ
লেখক: জাকারিয়া মাসুদ
প্রকাশক: সন্দীপন প্রকাশন
স্টল নং: ৫২
পৃষ্ঠা: ৫০৪
মুদ্রিত মূল্য: ৭৫০/-
মোবাইল: ০১৪০৬৩০০১০০

৮. নতুন দিনের গল্প শোনো
লেখক: নকীব মাহমুদ
প্রকাশক: পুনরায় প্রকাশন
স্টল নং: ০৮
পৃষ্ঠা: ৯৬
মুদ্রিত মূল্য: ১৪০/- 
মোবাইল: ০১৭৯০১২০৬৪৪

৯. রাসুলকে নিবেদিত বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী কবিতা
গ্রন্থনা: জুবায়ের রশীদ
প্রকাশক: ইলহাম
স্টল নং: ১৪
পৃষ্ঠা: ১৬০
মুদ্রিত মূল্য: ৩৫০/- 
মোবাইল: ০১৭৬৩৫৪৫৪৬৩

১০. চরিত্রের তরজমা
লেখক: হাবীবুল্লাহ সিরাজ
প্রকাশক: হসন্ত প্রকাশন
স্টল নং: ৫৪
পৃষ্ঠা: ২৫০
মুদ্রিত মূল্য: ২৮০/- 
মোবাইল: ০১৮৮৪৬১৪৪১৪

১১. রাসুল সা. প্রেমের সওগাত
লেখক: কাজী সিকান্দার
প্রকাশক: কলম একাডেমি
স্টল নং: ০৭
পৃষ্ঠা: ১৯২
মুদ্রিত মূল্য: ৩২০/-
মোবাইল: ০১৮১৭৭১১৪৩৮

১২. প্লিজ কামব্যাক
লেখক: হাসান আল-আফাসি
প্রকাশক: বৈচিত্র্য প্রকাশন
স্টল নং: ২৬
পৃষ্ঠা: ২০৬
মুদ্রিত মূল্য: ৩৮০/- 
মোবাইল: ০১৬০৯১১২৮০৭

১৩. চরিত্র সংশোধন
লেখক: হাকিম মুহাম্মদ আখতার
অনুবাদক: আবদুল কাইয়ুম শেখ
প্রকাশক: মাকতাবাতুল হেরা
স্টল নং: ৩৯
পৃষ্ঠা: ৯৬
মুদ্রিত মূল্য: ২০০/- 
মোবাইল: ০১৯২৩৭৪৭৯২২

১৪. সন্তান প্রতিপালন ও পরিচর্যা 
লেখক: আশরাফ আলি থানভি 
অনুবাদক: ইলিয়াস আশরাফ
প্রকাশক: মাকতাবাতুল ফুরকান 
স্টল নং: ০১
পৃষ্ঠা: ১২৮
মুদ্রিত মূল্য: ৩০০/-
মোবাইল: ০১৭৩৩২১১৪৯৯

১৫. দৈনন্দিন জীবনে কোরআন-হাদিসের দোয়া
লেখক: উবায়দুল হক খান
প্রকাশক: জ্ঞানপিপাসু প্রকাশন
স্টল নং: ২৬
পৃষ্ঠা: ১২৮
মুদ্রিত মূল্য: ২২০/-
মোবাইল: ০১৭৩৫৮৯১৩১৯

১৬. সিরাজউদ্দৌলা
লেখক: আমীরুল ইসলাম ফুয়াদ
প্রকাশক: বাতায়ন
স্টল নং: ২৬
পৃষ্ঠা: ২০০
মুদ্রিত মূল্য: ৩০০/-
মোবাইল: ০১৬১৫১২৯০৬৯

১৭. জান্নাত লাভের আমল
লেখক: শাইখ আহমাদ মুস্তফা মুতাওয়াল্লি
অনুবাদক: হাসান শুয়াইব
প্রকাশক: দ্বীন পাবলিকেশন
স্টল নং: ১০
পৃষ্ঠা: ৩৫২
মুদ্রিত মূল্য: ৫৭০/-
মোবাইল: ০১৩০৩৭৭১২২২

১৮. অলসতার বিরুদ্ধে লড়াই 
লেখক: মাহমুদ বিন নূর
প্রকাশক: রাইয়ান প্রকাশন
স্টল নং: ১১
পৃষ্ঠা: ১৪২
মুদ্রিত মূল্য: ২২০/-
মোবাইল: ০১৮১০০৪৭৭৬৩

১৯. মুসলিম হবার গল্প 
লেখক: আবিদ এইচ রাহাত
প্রকাশক: ওয়াফি পাবলিকেশন
স্টল নং: ৫৫
পৃষ্ঠা: ১২৮
মুদ্রিত মূল্য: ২৩৭/-
মোবাইল: ০১৭৪১৯৯২৬৬৪

২০. বিশ্বাসের সন্ধানে 
লেখক: ড. খালিদ আবু শাদি
অনুবাদক: আহমাদুল্লাহ আল জামি
প্রকাশক: মুহাম্মদ পাবলিকেশন
স্টল নং: ২৭ 
পৃষ্ঠা: ১৭৬
মুদ্রিত মূল্য: ৩০০/-
মোবাইল: ০১৭৯৭৪৫৫৪৭৩

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

 

বিবাহে সমতাবিধানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
বিবাহে সমতাবিধানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত বর-কনের কার্টুন

ইসলামে নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের একমাত্র বৈধ পন্থা বিবাহ। এ জন্য আল্লাহতায়ালা পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মানুষের কাছে সুশোভিত করা হয়েছে নারী, সন্তান, স্তূপীকৃত স্বর্ণ ও রৌপ্যভাণ্ডার, চিহ্নযুক্ত অশ্বরাজি, গৃহপালিত পশু এবং শস্যক্ষেত্র, এসব পার্থিব জীবনের সম্পদ, আর আল্লাহ; তাঁরই কাছে রয়েছে উত্তম আশ্রয়স্থল।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৪)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হে মানবজাতি, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের একটি মাত্র ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তা থেকে তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই দুজন থেকে বহু নারী-পুরুষ ছড়িয়ে দিয়েছেন। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। যাঁর নামে তোমরা পরস্পর পরস্পরের কাছে (অধিকার) চেয়ে থাকো এবং সতর্ক থাক আত্মীয়-স্বজন সম্পর্কে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১)


মানুষের যৌবিক চাহিদা পূরণ, পরিবার গঠন, সংরক্ষণ ও বংশবিস্তারের হালাল উপায় বিয়ে। বিবাহ মানুষের চরিত্রকে সুন্দর করে। চোখকে সংযত রাখে ও লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। নানাবিধ উপকার এবং ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ এই বিধান সম্পাদনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নীতিমালা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কুফু বা সমতাবিধান। বিবাহের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে দ্বীন, শিক্ষা-দীক্ষা, সামাজিক মর্যাদা, বংশমর্যাদা, পারিবারিক জীবনাচার পদ্ধতি, রূপ সৌন্দর্য। তবে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে ধর্মশিক্ষা বা ধর্মীয় প্র্যাকটিস। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘চারটি গুণ দেখে নারীকে বিবাহ করা হয়; তার ধন-সম্পদ, বংশমর্যাদা, রূপ-সৌন্দর্য এবং তার দ্বীন-ধর্ম। তুমি দ্বীনদার পাত্রী লাভ করে সফলকাম হও (অন্যথায় তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে)।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০৯০)


বিয়ের ক্ষেত্রে দ্বীনদারি এবং সচ্চরিত্র প্রাধান্য দিতে হবে। বর-কনে অর্থে দুর্বল হলেও সেদিকে লক্ষ না রেখে লক্ষ রাখতে হবে দ্বীনদারি ও চরিত্রের দিকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কাছে কোনো পাত্র বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যদি দ্বীনদারি ও চরিত্র তোমাদের পছন্দ হয়, তাহলে তার সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন করো। অন্যথা জমিনে বড় বিপদ দেখা দেবে এবং সুদূরপ্রসারী বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১০৮৪-৮৫)
সর্বোপরি বর-কনের রুচি, চাহিদা, বংশ, যোগ্যতা সবকিছু সমান সমান বা কাছাকাছি হতে হবে। সমতাবিধান মেনে চলতে হবে। অন্যথায় পরে এসব অবস্থানের মিল না হলে দাম্পত্য জীবনে কলহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু হয়; তা বিষাদের রূপ নেয়। 


উচ্চবিত্ত ছেলেমেয়েদের চাহিদা আর নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্তদের চাহিদার ভিন্নতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। একইভাবে প্র্যাকটিসিং মুসলিম এবং নামমাত্র মুসলিমের চালচলন, ধর্মীয় আচরণ-অনুষ্ঠান পালন­­—এগুলো ভিন্নতা হবে এটাই তো স্বাভাবিক। ফলে এগুলো আমলে না নিলে পরবর্তী সময়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আল্লাহ বলেন, ‘দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য; সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য উপযুক্ত।’ (সুরা নুর, আয়াত: ২৬)। আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ব্যভিচারী পুরুষ যেন ব্যভিচারী বা মুশরিক নারী ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে। আবার ব্যভিচারী নারী যেন ব্যভিচারী পুরুষ বা মুশরিক পুরুষ ছাড়া কাউকে বিয়ে না করে। মুমিনদের জন্য এ ধরনের চরিত্রের নারী-পুরুষকে হারাম করা হয়েছে।’ (সুরা নুর, আয়াত: ৩)


রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ভবিষ্যৎ বংশধরদের স্বার্থে উত্তম নারী গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবেচনায় বিয়ে করো। বিয়ে দিতে সমতার প্রতি লক্ষ রাখো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৯৬৮)
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীর ভালোবাসা ও দাম্পত্য জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি লাভ করাই কুফুর মুখ্য উদ্দেশ্য। কনে যদি দ্বীনদার ও পবিত্র চরিত্রের হয় আর বর যদি বেদ্বীন-চরিত্রহীন হয়, তাহলে অন্য সব দিক দিয়ে সমতা হলেও সে মিল শরিয়তের দৃষ্টিতে কাম্য নয়। তেমনি এ ধরনের বিয়ে স্থিতিশীল নাও হতে পারে। হলেও সে দাম্পত্য জীবন হতে পারে তিক্ত ও বিষাক্ত। তাই বিবাহে কুফু বা সমতাবিধান নিশ্চিত করা জরুরি। 

 

লেখক: খতিব, বঙ্গভবন জামে মসজিদ

সিরিয়া নিয়ে নবিজির (সা.) ৬ ভবিষ্যদ্বাণী

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ এএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ পিএম
সিরিয়া নিয়ে নবিজির (সা.) ৬ ভবিষ্যদ্বাণী
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত উমাইয়া মসজিদ

রাসুলুল্লাহ (সা.) শামের জন্য বরকতের দোয়া করেছেন। শামকে ‘আমাদের শাম’ বলে উল্লেখ করেছেন। ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ, আমাদের শামে বরকত দাও, আমাদের ইয়ামেনে বরকত দাও। তখন উপস্থিত সাহাবিরা বলল, আমাদের নিজেদের জন্যও বরকতের দোয়া করুন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সেখানে তো রয়েছে ভূমিকম্প ও ফেতনা-ফ্যাসাদ। শয়তানের শিং সেখান থেকেই বের হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৯৯০) 


জায়েদ বিন সাবেত (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, শাম কতই না কল্যাণময়! শাম কতই না কল্যাণময়! আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, শাম কেন এত কল্যাণকর? রাসুলুল্লাহ বললেন, রহমানের ফেরেশতারা তার ওপরে ডানা বিছিয়ে রাখেন।’ (তিরিমিজি, হাদিস: ৩৯৫৪)
সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন, জর্ডান প্রভৃতি অঞ্চলকে সে সময় ‘মুলকে শাম’ বলা হতো। বিশ্বজুড়ে এখন আলোচনার বিষয় সিরিয়া। সিরিয়ার নাম শুনলেই এই প্রজন্মের কল্পনায় ভাসে যুদ্ধবিধ্বস্ত এক নগরীর ছবি। যেখানে তীব্র খাদ্য সংকট, ভঙ্গুর অর্থনীতি, বিপর্যস্ত জনজীবন, শরণার্থী মানুষের মিছিল ও বিশ্ব মোড়লদের যুদ্ধ যুদ্ধ ধ্বংসাত্মক খেলা। বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসেও সিরিয়া সব সময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। সাড়ে চৌদ্দ শত বছর আগে রাসুলুল্লাহ (সা.) সিরিয়া নিয়ে অনেক ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। এখানে ছয়টি ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করা হলো—

কোরআনের ঘাঁটি হবে সিরিয়া 
প্রসিদ্ধ সাহাবি আমর ইবনে আস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি একদিন স্বপ্নে দেখলাম, কোরআনকে আমার বালিশের নিচ থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। অতঃপর আমি এর দিকে চেয়ে আছি, হঠাৎ দেখি সেটি একটি  উজ্জ্বল আলোর বস্তুতে পরিণত হলো। আর তাকে রাখা হলো শামদেশে। (এতটুকু বর্ণনার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত সাহাবিদের উদ্দেশ করে) বলেন, যখন পৃথিবীময় ফেতনা বিস্তার লাভ করবে, তখন ইমান থাকবে শামদেশে। অর্থাৎ শামবাসীদের কাছেই থাকবে ইমানের আলো, তারাই ইসলাম ও কোরআনকে সব ধরনের ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করবে।’ (আল-মুসতারেক, হাদিস: ৮৫৫৪)

খাঁটি মুমিনদের বাসস্থান
আলি (রা.) সম্পর্কে হজরত শুরাইহ ইবনে উবাইদ (রহ.) বর্ণনা করেন, ‘এক সময় আলি (রা.) ইরাকে থাকতেন। সেই সময় তাকে কেউ একজন বলল, আপনি শামবাসীদের জন্য বদদোয়া করুন। তখন তিনি বলেন, না, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, শাম হলো খাঁটি মুমিনদের বাসস্থান। তারা আল্লাহর খাস বা বিশেষ বান্দা। তারা এক সময়ে একসঙ্গে ৪০ জন থাকেন। যখনই তাদের একজন মৃত্যুবরণ করেন, আল্লাহ তদস্থলে আরেকজনকে বসিয়ে দেন। তাদের উছিলায় বৃষ্টি হয়, শত্রুর ওপর বিজয়ও লাভ করে। তাদের উছিলায় এক সময় শামবাসীদের থেকে আজাব উঠিয়ে নেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৮৬৯)

নিরাপদ আশ্রয়
দুনিয়াজুড়ে যখন ফেতনা ও বিপদাপদ বেড়ে যাবে, তখন শামই হবে একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অচিরেই তোমাদের দিকে হাজরামাউতের দিক থেকে একটি আগুন ধেয়ে আসবে। উপস্থিত সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করল, তখন আমাদের করণীয় কী হে আল্লাহর রাসুল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তখন তোমরা শামদেশের দিকে গমন করবে এবং সেখানেই আঁকড়ে থাকবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২২১৭)

মুসলিমদের ঘাঁটি
আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যুদ্ধের দিন মুসলিমদের শিবির স্থাপন করা হবে গুতা নামক শহরে। যা সিরিয়ার সর্বোত্তম শহর দামেস্কের পাশে অবস্থিত।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪২৯৮)

কিয়ামতের আগে ইসা (আ.)-এর অবতরণের স্থান
ইসা (আ.)-কে আল্লাহতায়ালা দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি আকাশে আছেন। কিয়ামতের আগে তিনি দুনিয়াতে নেমে আসবেন। তাঁর অবতরণের স্থান হবে সিরিয়া। নাওয়াস ইবনে সিময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা ইসা (আ.)-কে দুনিয়াতে পাঠাবেন। তিনি দুজন সাদা কাপড় পরা ফেরেশতার কাঁধের ওপর ভর করে দামেস্কের শুভ্র-সফেদ উজ্জ্বল মিনারে অবতরণ করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৭৫৬০)

শাম হবে হাশরের ময়দান
হাশরের ময়দান হবে বর্তমান শাম অঞ্চলটি। মুসনাদে আহমাদে হজরত বাহজা থেকে একটি রেওয়াত বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিরিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, সেটিই হবে তোমাদের জড়ো হওয়ার ময়দান। হাকিম বিন মুয়াবিয়া (রহ.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সেখানেই তোমাদের হাশর হবে (তোমরা একত্র হবে)। সেখানেই তোমাদের হাশর হবে। সেখানেই তোমাদের হাশর হবে। তখন লোকেরা আরোহী, পদাতিক ও অধঃমুখী এই তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। ইবনে বুকাইর (রহ.) বলেন, সেখানেই তোমাদের হাশর হবে বলার সময় তিনি শাম দেশের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২০০৩১)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

দোয়া কুনুত না পড়লে বিতরের নামাজ হবে?

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম
দোয়া কুনুত না পড়লে বিতরের নামাজ হবে?
সিজদারত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

বিতর নামাজ ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বিতর নামাজ হক ও ওয়াজিব।’ (দারা কুতনি, হাদিস: ১৬৪০)। তাউস (রহ.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, ‘বিতর নামাজ ওয়াজিব। কাজা হয়ে গেলে তা আদায় করতে হবে।’ (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস: ৪৫৮৭) 

অন্যান্য নামাজের মতোই বিতর নামাজ আদায় করতে হয়। তবে তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলিয়ে তাকবির বলে হাত বেঁধে দোয়া কুনুত পড়তে হয়। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যু পর্যন্ত কুনুত পড়েছেন। আবু বকর (রা.)ও মৃত্যু পর্যন্ত কুনুত পড়েছেন, উমর (রা.)ও মৃত্যু পর্যন্ত কুনুত পড়েছেন।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ, ১/১৩৯)

দোয়া কুনুত না পারলে করণীয়
রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া কুনুত হিসেবে বিভিন্ন দোয়া পাঠ করেছেন। হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো দ্রুত শেখা উচিত। দোয়া কুনুত না পারলে ‘রাব্বানা আতি না ফিদ্দুন ইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া কি না আজাবান নার’ এই আয়াত পাঠ করা যায়। কুনুতের উদ্দেশ্যে দোয়াসংবলিত এক বা একাধিক আয়াতও পড়া যায়। ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলি’ তিনবার পাঠ করলেও বিতর আদায় হয়ে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/১৭০, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া,২/৩৪৪)

আরও পড়ুন: দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। দোয়া কুনুত ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। পুনরায় নামাজ আদায় করতে হয়। যদি ভুলক্রমে বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পড়া হয়, তা হলে সিজদায়ে সাহু করতে হয়। অন্যথায় বিতর নামাজ সহিহ হবে না। হাসান (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দোয়া কুনুত ভুলে যায়, সে সিজদায়ে সাহু আদায় করবে।’ (সুনানুল কুবরা, বাইহাকি, হাদিস: ৩৯৮৩)‬‎

দোয়া কুনুত না পড়ে ভুলে রুকুতে চলে গেলে দোয়া কুনুতের জন্য রুকু থেকে ফিরে আসার প্রয়োজন নেই। বরং যথারীতি বাকি নামাজ পূর্ণ করে সাহু সিজদার মাধ্যমে নামাজ শেষ করবে। অবশ্য রুকু থেকে উঠে দোয়া কুনুত পড়লে পুনরায় রুকু করবে না। কারণ রুকু থেকে উঠে দোয়া কুনুত পড়ার দ্বারা আগের রুকু বাতিল হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রেও সিজদায়ে সাহু করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে, ১/৪১৩; ফাতাওয়া খানিয়া, ১/১২১)

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা ইনুকা, ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নুমিনু বিকা, ওয়া নাতা ওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়ানুস নি আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু, মাই য়াফ জুরুকা, আল্লাহুম্মা ইইয়াকা নাবুদু, ওয়া লাকা নুসল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা, ইন্না আজাবাকা বিল কুফফারি মুলহিক।

দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করছি। আপনার কাছে ক্ষমার আবেদন করছি। আপনার কাছে তওবা করছি। আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি। আপনার ওপর ভরসা করছি। আপনার সব কল্যাণের প্রশংসা করছি। আমরা আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা আপনার অনুগ্রহ অস্বীকার করি না। আমরা পৃথক চলি এবং পরিত্যাগ করি এমন লোকদের, যারা আপনার বিরুদ্ধাচরণ করে। হে আল্লাহ, আমরা আপনারই ইবাদত করি। এবং আপনারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমরা নামাজ পড়ি ও সিজদা করি। আপনার প্রতিই আমরা ধাবিত হই এবং আমরা আপনার আজাব ভয় করি। নিশ্চয়ই আপনার প্রকৃত আজাব কাফেরদের ওপর পতিত হবে। (শরহু মাআনিল আসার, হাদিস: ১৪৭৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৩০৩৩৫)  

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

টেইলার্সের দোকানের সুতা, বোতাম ইত্যাদির জাকাত দিতে হবে?

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ এএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
টেইলার্সের দোকানের সুতা, বোতাম ইত্যাদির জাকাত দিতে হবে?
সুতা, বোতাম ইত্যাদির ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: আলহামদুলিল্লাহ, আমার বড় একটি টেইলার্সের দোকান আছে। আমি জানি, যে সমস্ত জিনিস ব্যবসায়িক পণ্য নয়; বরং উপার্জনের মাধ্যম, তাতে জাকাত আসে না। তাই আমার দোকানে যেসব মেশিনারি আছে তার জাকাত দেওয়া লাগবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাপড় সেলাই করার সময় যে জিনিসগুলো ব্যবহার করা হয়; যেমন- সুতা, বোতাম, চেন, বক্রম ইত্যাদি। যা সাধারণত আমার দোকানে বিপুল পরিমাণে কিনে রাখতে হয়, এগুলোর কি জাকাত দিতে হবে? 

নুর মুহাম্মাদ, নরসিংদী

উত্তর: প্রশ্নোক্ত জিনিসগুলোর মূল্য (স্বতন্ত্রভাবে কিংবা নিজের জাকাতযোগ্য অন্য সম্পদের সাথে মিলে) জাকাতের নেসাব পরিমাণ হলে সেগুলোর জাকাত দিতে হবে। কেননা, গ্রাহকদের থেকে যেহেতু এগুলোর মূল্য নেওয়া হয়, তাই এগুলো ব্যবসায়িক পণ্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই অন্যান্য ব্যবসায়িক পণ্যের মতো এগুলোও জাকাতযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। (ফাতাওয়া খানিয়া, ১/২৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/১৭২)

আরও পড়ুন: দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

জাকাত স্বাধীন, পূর্ণ বয়স্ক এমন মুসলিম নারী-পুরুষ আদায় করবে, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে। তবে এর জন্য শর্ত হলো—

১.  সম্পদের ওপর পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকতে হবে।
২.  সম্পদ উৎপাদনক্ষম ও বর্ধনশীল হতে হবে।
৩.  নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে।
৪.  সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকলেই শুধু জাকাত ফরজ হবে।
৫.  জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য ঋণমুক্ত হওয়ার পর নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা শর্ত।
৬.  কারও কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক বছর থাকলেই শুধু ওই সম্পদের ওপর জাকাত দিতে হবে।

সাড়ে সাত ভরি (৮৭ দশমিক ৪৫ গ্রাম) সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি (৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম) রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমাকৃত যেকোনো ধরনের টাকা, ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে।

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

 

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
শিল্পীর তুলিতে আঁকা নামাজরত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। এটি তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলিয়ে তাকবির বলে হাত বেঁধে পড়তে হয়। রুকুর আগে পাঠ করতে হয়। আসিম আল আহওয়াল (রহ.) বলেন, ‘আমি আনাস ইবনে মালেক (রা.)-কে নামাজে (দোয়া) কুনুত পড়তে হবে কিনা এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তে হবে। আমি বললাম, রুকুর আগে নাকি পরে? তিনি বললেন, রুকুর আগে। আমি বললাম, অমুক ব্যক্তি আপনার সূত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন, আপনি রুকুর পর কুনুত পাঠ করার কথা বলেছেন। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) মাত্র এক মাস পর্যন্ত রুকুর পর কুনুত পাঠ করেছেন। এর কারণ ছিল, নবি (সা.) সত্তরজন কারির একটি দল মুশরিকদের কাছে কোনো এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাদের মধ্যে চুক্তি ছিল। তারা (আক্রমণ করে সাহাবিদের ওপর) বিজয়ী হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের প্রতি বদদোয়া করে নামাজে রুকুর পর এক মাস পর্যন্ত কুনুত পাঠ করেছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৭৯৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিতর নামাজে সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া পড়তে নির্দেশ করেননি। বরং এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এর যেকোনো একটি পড়লেই কুনুত আদায় হয়ে যাবে। ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) বিতরের নামাজে আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা দোয়া পড়া পছন্দ করতেন এবং অন্যকে পড়তে আদেশ করতেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস: ৪৯৯৭)

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা ইনুকা, ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নুমিনু বিকা, ওয়া নাতা ওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়ানুস নি আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু, মাই য়াফ জুরুকা, আল্লাহুম্মা ইইয়াকা নাবুদু, ওয়া লাকা নুসল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা, ইন্না আজাবাকা বিল কুফফারি মুলহিক।

আরও পড়ুন: ৪০ দিনের আগে নেফাস বন্ধ হলে করণীয় কী?

দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করছি। আপনার কাছে ক্ষমার আবেদন করছি। আপনার কাছে তওবা করছি। আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি। আপনার ওপর ভরসা করছি। আপনার সব কল্যাণের প্রশংসা করছি। আমরা আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা আপনার অনুগ্রহ অস্বীকার করি না। আমরা পৃথক চলি এবং পরিত্যাগ করি এমন লোকদের, যারা আপনার বিরুদ্ধাচরণ করে। হে আল্লাহ, আমরা আপনারই ইবাদত করি। এবং আপনারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমরা নামাজ পড়ি ও সিজদা করি। আপনার প্রতিই আমরা ধাবিত হই এবং আমরা আপনার আজাব ভয় করি। নিশ্চয়ই আপনার প্রকৃত আজাব কাফেরদের ওপর পতিত হবে। (শরহু মাআনিল আসার, হাদিস: ১৪৭৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৩০৩৩৫) 

হাদিসে বর্ণিত দুটি দোয়া কুনুত
এক. আবুল হাওরা (রহ.) বলেন, একবার হাসান ইবনে আলি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন, যা আমি বিতরের নামাজে পাঠ করি। রাবি ইবনে জাওয়াস (রহ.)-এর বর্ণনায় আছে বিতরের দোয়া কুনুতে পড়ি। তা হলো—

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাহ দিনি ফিমান হাদায়তা, ওয়া আফিনি ফিমান আফায়তা, ওয়া তা ওয়াল্লানি ফিমান তাওয়াল্লাইতা, ওয়া বারিক লি ফিমা আতিইতা, ওয়া কিনি শাররা মা কাদাইতা, ইন্নাকা তাকদি ওয়ালা জুকদা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লায়া জিল্লু মান ওয়া লাইতা ওলা য়াইজজু মান আদাইতা, তাবারাকতা রবানা ওয়া তা আলাইতা। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২৫, তিরমিজি, হাদিস: ৪৬৪)

দুই. ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তিনি বিতরের কুনুতের জন্য এ দোয়া পড়তেন— 

বাংলা উচ্চারণ: লাকাল হামদু মালা আস সামাওয়াতিস সাবয়ি, ওয়া মালাআ আরজিনাস সাবয়ি, ওয়া মালাআ মা বাইনাহুমা মিন শাইয়িম বাদু, আহলাস সানায়ি ওয়াল মাজদি, আহাক্কু মাকালাল আবদু, কুলুনা লাকা আবদুন লা মানিআ লিমা আতাইতা, ওয়ালা মুতিআ লিমা মানাতা, ওয়ালা ইয়ান ফাউ জাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৬৯৬২) 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });