প্রশ্ন: আমাদের কোম্পানির এমডি স্যার অনেক সম্পদশালী। তিনি নিজে কয়েকবার হজ করেছেন। কোম্পানিতে চাকরিরত যেকোনো একজনকে তার পক্ষ থেকে নফল বদলি হজে পাঠান তিনি। আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর হজে যাওয়ার জন্য আমার নাম প্রস্তাবে এসেছে। আমার ওপর হজ ফরজ নয়। কিন্তু আমার একটি খটকা আছে, আমি একটি মাসয়ালা শুনেছি, নিজে হজ করতে একেবারে অক্ষম হয়ে গেলেই নাকি বদলি হজ করানো যায়? আমাদের এমডি স্যার সুস্থ-সবল মানুষ, তার জন্য কি বদলি হজ করানো জায়েজ হবে; যদিও তা নফল হোক না কেন?
নাহিদ ইসলাম, ঢাকা
উত্তর: আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হজ ও ওমরা পালন করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬)
তিনি আরও বলেন, ‘অতঃপর তারা যেন এখানে এসে তাদের যাবতীয় ময়লা, কালিমা দূর করে, নিজেদের মানতসমূহ পুরো করে, বিশেষ করে তারা যেন এ প্রাচীন ঘরটির তাওয়াফ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত: ২৯)
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ ঘরের হজ করা ওই ব্যক্তির ওপর ফরজ করা হলো, যার এখানে আসার সামর্থ্য রয়েছে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে (সে জেনে রাখুক যে,) আল্লাহ জগদ্বাসী থেকে মুখাপেক্ষীহীন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনোরূপ অশ্লীল কথা বা গুনাহের কাজে লিপ্ত না হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হজ আদায় করল, সে সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে এলো।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫২১)
আরও পড়ুন: তাশাহুদের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
আয়েশা (রা.) মহানবি (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। সুতরাং আমরা (নারীরা) কি জিহাদে শরিক হব?’ তিনি বলেন, না, বরং তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হচ্ছে হজে মাবরুর।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫২০)
ফরজ হজ নিজে করার সক্ষমতা থাকলে অন্যকে দিয়ে বদলি হজ করানোর সুযোগ নেই। কিন্তু নফল হজের হুকুম এর থেকে ভিন্ন। কেউ শারীরিকভাবে সক্ষম ও সামর্থ্যবান হলেও তার জন্য নিজের পক্ষ থেকে অন্য কাউকে নফল হজে পাঠানো জায়েজ আছে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি তার পক্ষ থেকে নফল হজে যেতে পারবেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই। (আলমাবসুত, সারাখসি, ৪/১৫২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৪৮; আলবাহরুল আমিক, ৪/২২৫৮)
লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক