
মনকে প্রফুল্ল ও সতেজ রাখতে মুচকি হাসির বিকল্প নেই। হাসি পরিশুদ্ধ করে মানুষের হৃদয়। দেহে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে শরীর চাঙা রাখে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, হাসি মানুষকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিমুক্ত জীবনযাপন উপহার দেয়। মানুষকে আকৃষ্ট করার সহজ, সুন্দর ও পরিশ্রমহীন কাজ হচ্ছে, কারও দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসা।
আপনি যখন কারও দিকে তাকিয়ে হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে একটু মুচকি হাসবেন, তখন আপনার প্রতি তার হৃদয়ে ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। সম্পর্কের দেয়াল মজবুত হবে। মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে হাসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাসিই মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সহজ করে দেয়। কঠোর হৃদয়ের লোকেরও মন নরম হয়। আল্লাহ বলেন, ‘বহু মুখমণ্ডল সেদিন উজ্জ্বল হবে, সহাস্য ও প্রফুল্ল।’ (সুরা আবাসা, আয়াত: ৩৮-৩৯)
মুহাম্মাদ (সা.) হেসেছেন—মুচকি হাসি। কেউ অকারণে তাঁকে মুখ গোমড়া হতে দেখেননি। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার ইসলাম গ্রহণের পর থেকে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে (তাঁর কাছে আসতে) বাধা দেননি। আর আমাকে দেখা মাত্রই তিনি হাসতেন।’ (তিরমিজি, ১৭১)
মুচকি হাসি দিলে সদকার সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুচকি হাসি সদকা আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ।’ (তিরমিজি, ১৯৫৬)
উচ্চৈঃস্বরে হাসা উচিত নয়। উচ্চৈঃস্বরে হাসলে ভেতরাত্মা মরে যায়। আখেরাতের ব্যাপারে উদাসীনতা সৃষ্টি হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) কম হাসতেন, বেশি কাঁদতেন। মানুষকে কম হাসতে ও বেশি করে কাঁদতে উপদেশ দিয়েছেন তিনি।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তবে তোমরা খুব কমই হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে।’ (বুখারি, ৬৪৮৫)
সদা হাস্যোজ্জ্বল থাকা, কোনো মুমিনের সঙ্গে দেখা হলে তার সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল মুখে সাক্ষাৎ করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনু জাজয়ি (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে অধিক মুচকি হাস্যকারী ব্যক্তি কাউকে দেখিনি।’ (তিরমিজি, ১৬৮)
সদকায় অনেক সওয়াব রয়েছে। এতে বিপদাপদ দূর হয়। আবু জার (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘ভালো কোনো কিছু দান করা হীন মনে করে না, এমনকি হোক সেটা ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ দেওয়া।’ (মুসলিম, ৬৫৮৪)
লেখক: কবি ও গল্পকার