ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বানান ভুলের উপকারিতা

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১০ পিএম
বানান ভুলের উপকারিতা

আপনি কি আমার মতোই যেখানে-সেখানে লিখেন আর হাজারখানেক বানান ভুল করেন?

মানুষজন আপনাকে বানান ভুলের জন্য অপমান করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে?

আপনার বানান ভুলে সবাই এখন বিরক্ত অথবা অভ্যস্ত হয়ে বানান ভুলের কথা উচ্চারণ করে না?

আপনি কি এজন্য খুবই আপসেট?

কেন আপনার বানান ভুল হয়- তা নিয়ে কি টেনশনযুক্ত?

মানুষের তিরস্কার শুনতে শুনতে এখন কি লেখাজোখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম?

নো টেনশন! আসুন জেনে নিই বানান ভুলের উপকারিতা!

আপনি যদি কিছু লেখেন এবং তা যদি কেউ পড়ে মন্তব্য করে বানান ভুল, তাহলে ধরে নেবেন লোকটি আপনার লেখাটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছে। মনোযোগ সহকারে না পড়লে তিনি বানান ভুল ধরতে পারতেন না। তাই বানান ভুলের মাধ্যমে আপনি জেনে যাচ্ছেন আপনার লেখাটি কে মনোযোগ দিয়ে পড়ছে, কে পড়ছে না।

আপনি যদি ভুল বানান লেখেন, তাহলে যে ব্যক্তি আপনার লেখাটি পড়ছেন তিনি বারবার চেষ্টা করবেন আপনি ভুল শব্দটি কী লিখেছেন তা বের করতে। এতে করে পাঠকের চিন্তাশক্তি বিকশিত হবে। আপনি বানান ভুল করে পাঠকের উপকার করছেন। মনে করবেন আপনি একজন উপকারী ব্যক্তি।

একটা চিরাচরিত সত্য কথা আছে- ‘মানুষ মাত্রই ভুল করে।’ তাই অন্যরা যখন বলবে আপনার লেখার মধ্যে ভুল, তখন আপনি মনে করবেন আপনি একজন মানুষ। শুধু হাত-পা থাকলেই মানুষ হওয়া যায় না। আপনি যেহেতু ভুল করেছেন, সেহেতু আপনি সত্যিকারের মানুষ।

আপনি সবসময় ভুলভাল লেখেন, এটা যদি পাঠকদের একবার কষ্ট করে বোঝাতে পারেন, তাহলে আপনার অনেক পরিশ্রম কমে যাবে। যেমন- কখনো কোনো কিছু লিখতে গিয়ে বানান করতে পারছেন না অথবা বুঝতে পারছেন না বানানটা সঠিক হচ্ছে কি না। নো টেনশন, আপনার মনে যা আসবে তাই লিখে দেন। পাঠক বুঝে নেবে আপনার সঠিক শব্দটি কী হবে। কারণ পাঠক জানে, আপনি প্রায় সময়ই ভুলভাল লিখে থাকেন।

বানান ভুল হয় এটা নিয়ে কখনো মন খারাপ করবেন না। মনে করবেন এটা একটা গুণ! কয়জনের এমন গুণ থাকতে পারে। এটা সবাই পারে না। আপনি সবার থেকে আলাদা। এটা আপনার ঐতিহ্য।

স্ট্যাটাসে বানান ভুল করলে আপনি অনেক পাঠকের দৃষ্টি এক লেখাতেই সৃষ্টি করতে পারেন। কোনো মতে যদি একজন পাঠক মন্তব্য করেন বানান ভুল, তাহলে দেখবেন জাতির সব পাঠক কীভাবে আপনার লেখার বানান ভুল ধরার জন্য ওঠেপড়ে লেগেছেন। আর একেকজন একেক মন্তব্য করছেন। এতে করে বানান ভুলের কারণে আপনার লেখায় বেশি কমেন্টস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

বানানে ভুল অক্ষর ব্যবহার করতে করতে আপনি একসময় বাংলার অভিধানে নতুন শব্দের সৃষ্টি করে ফেলতে পারেন। যেমন- বাংলার অভিধানে বে-সম্ভব বলে কোনো শব্দ নেই কিন্তু আমরা এটা অসম্ভব হিসেবে ব্যবহার করি। যেই লেখক এই শব্দটা প্রথম আবিষ্কার করেন, তিনিও নিশ্চয় আপনার-আমার মতো বানান ভুল করতেন। তাই নিজেকে ছোট করে দেখবেন না।

মাঝে মধ্যেই দেখবেন রাস্তায় পাঁচ-দশ টাকার বই বিক্রি হচ্ছে। এই বইয়ে সব প্রশ্নের সমাধান লেখা থাকে। এসব বইয়ে আপনার নামও ওঠে যেতে পারে। প্রশ্নটা থাকতে পারে এমন- বলুন তো কোন লেখক তার পুরো জীবনে সব লেখায়াই ভুল বানান লিখে এসেছেন? উত্তরে থাকতে পারে আপনার নাম। আপনিই হতে পারেন সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি শুধু বানান ভুলের কারণে।

বাংলাদেশের টিভি অনুষ্ঠান টক শোতে আপনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা আছে। কারণ টক শোতে কী নিয়ে টক করবে তা তারা নিজেরাও জানে না। আপনাকে ডাকা হতে পারে বানান ভুল পাঠকের ওপর কেমন প্রভাবের সৃষ্টি করে তা নিয়ে টক করার জন্য।

আপনি বানান ভুল করে যদি কোনোভাবে একবার জাতির মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেন, তাহলে দেখবেন মিডিয়া আপনার পিছে ঘুরঘুর করছে।

 কলি

গণিতজ্ঞদের নিয়ে হাসাহাসি

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০০ পিএম
গণিতজ্ঞদের নিয়ে হাসাহাসি

হিমালয় আরোহণ করছে একদল গণিতবিদ। কিন্তু অভিযানের কয়েক ঘণ্টা পরই দিক হারিয়ে ফেলল তারা। চারদিকে কেবল তুষারশুভ্র পর্বত আর পর্বত। ঠিক কোথায় তাদের অবস্থান কেউ বের করতে পারল না।
অভিযানে আনা মানচিত্রটি বের করে গভীরভাবে সেটি পর্যবেক্ষণ করল একজন গণিতবিদ। তারপর তাকাল সে চারপাশের ভূমিরূপের দিকে। সবশেষে কম্পাস বের করে সূর্যের অবস্থান দেখে বেশ কিছু হিসাব-নিকাশ করল। 
‘দেখ, দেখ!’ উল্লাসে চিৎকার করে উঠল গণিতবিদ।
‘কী হয়েছে, কী!’ তীব্র কৌতূহলে অন্যরা ঘিরে ধরল তাকে।
‘ওই যে দূরের পর্বত চূড়াটা দেখতে পাচ্ছ?’ গণিতবিদ বলল।
‘হ্যাঁ, হ্যাঁ।’ একসঙ্গে উত্তর করে সবাই।
‘এই যে মানচিত্র দেখ। মানচিত্র বলছে আমরা এখন তার ওপরই দাঁড়িয়ে আছি।’

জুনিয়র বুশের শাসনামল। বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনা চলছে আমেরিকান সিনেটে।
‘ইরাকের উম্মুল কসর বন্দরে গত রাতে ভয়ানক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছে, মি. প্রেসিডেন্ট। তিন ব্রাজিলিয়ান সেনা নিহত হয়েছে এতে।’ ডোনাল্ড রামসফিল্ড রিপোর্ট পেশ করল।
‘ওহ, কী ভয়ংকর, কী ভয়ংকর!’ দুই হাতে নিজের মাথা চেপে ধরে বুশ। টেবিলে কনুই রেখে ঝুঁকে থাকে কিছুক্ষণ।
খানিক নীরবতার পর টেবিল থেকে মাথা তোলেন বুশ, জানতে চান, ‘আচ্ছা, ডোনাল্ড, কতজন মিলে এক ব্রাজিলিয়ান হয়?’

স্নায়ু যুদ্ধের সময়কার কথা। একাডেমিক জগতেও পড়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। রাশিয়ার এক গণিতবিদ ইউএসএ থেকে আমন্ত্রণ পেলেন গণিতের ওপর বক্তব্য দিতে। অনেক কষ্টে ভিসা ম্যানেজ করে, ইমিগ্রেশন অফিসারদের নানান যন্ত্রণা জেরা পেরিয়ে, এমনকি ট্যাক্সিচালকদের খোঁচা সহ্য করে সেমিনারে পৌঁছলেন তিনি।
তার সিরিয়াল আসলে বোর্ডে একটি সূত্র লিখে আলোচনা শুরু করলেন গণিতবিদ। যখন তা প্রমাণ করতে গেলেন, হলভর্তি আমেরিকান দর্শক ব্যঙ্গ করতে লাগল, এ তো একেবারে জলের মতো ক্লিয়ার, প্রমাণ করার কী আছে!
স্বাভাবিকভাবেই বিরক্ত হলেন গণিতবিদ, কিন্তু তা চেপে রেখে আরেকটি সূত্র ধরে আলোচনা চালিয়ে যেতে লাগলেন তিনি। যখন দ্বিতীয় সূত্রটির প্রমাণের ওপরও আলোকপাত করতে গেলেন, হলভর্তি দর্শক আবার আগের মতোই শুরু করল, ‘হি হি, প্রমাণের কী আছে এতে? এ তো জানারই কথা!’
থমথমে কঠোর মুখে তৃতীয় সূত্রটি লিখেন গণিতবিদ। ‘নিশ্চয়ই বলবেন না, এটিও একেবারে জলের মতো স্পষ্ট ও সোজা?’ দর্শকদের দিকে প্রত্যাশা নিয়ে তাকালেন তিনি।
‘হা হা হা। তা নয়তো কী? এ তো আমরা সবাই জানি, একেবারে দিবালোকের মতো পরিষ্কার।’
কাষ্ঠহাসি হেসে গণিতবিদ বললেন, ‘না, দিবালোকের মতো পরিষ্কার নয়, এবার সূত্রটা ভুল লিখেছি আমি, হে হে!’

এক কর্নেল একদিন তার গাড়ির পরিবর্তে একেবারে ট্যাংক নিয়ে হাজির হলেন বুয়েটে। থামলেন ক্যাফেটেরিয়ার সামনে কড়াই গাছের নিচে। বিপদ হবে না নিশ্চিত হয়ে শিক্ষার্থীরা গেল ট্যাংক দেখতে।
‘দেখতে পাচ্ছ ট্যাংকটি? সর্বাধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তিসম্পন্ন এটি, সমরকৌশলের চরম উৎকর্ষ বলা যায় একে!’ গর্বে কর্নেলের গলা ফুটে উঠে।
‘কম্পিউটারের স্পিড কত, স্যার?’ জানতে চায় একজন শিক্ষার্থী।
‘কেন? ট্যাংকের যা স্পিড, কম্পিউটারেরও তা, এ তো জানারই কথা।’

গণিতের এক প্রফেসরের বাসার রান্নাঘরের বেসিনটি নষ্ট হয়ে গেছে। সারানোর জন্য একজন মিস্ত্রি ডাকলেন তিনি। পরদিন মিস্ত্রি এসে বেসিনের কয়েকটি স্ক্রু ঠিক করে দিল। সঙ্গে সঙ্গে বেসিনও ঠিক হয়ে গেল। খুব খুশি হলেন প্রফেসর, কিন্তু মিস্ত্রি যখন মজুরির বিল ধরিয়ে দিল, চোখ একেবারে ছানাবড়া হয়ে গেল তার।
‘এ তো আমার এক মাসের বেতনের তিন ভাগের এক ভাগ! দুই মিনিটের একটা কাজের জন্য এত বেশি!’ গজগজ করতে লাগলেন প্রফেসর।
‘আমি আপনাকে বেশি চার্জ করিনি। বাজারে বর্তমানে এটাই রেট’, মিস্ত্রি বলল।
দুঃখ চেপে টাকা শোধ করে দিলেন প্রফেসর। মিস্ত্রি তখন সান্ত্বনা দিয়ে বলল, ‘প্রফেসর হিসেবে আপনার অবস্থাটা আমি বুঝতে পারছি। তা আপনি কেন বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিয়ে আমাদের কোম্পানিতে জয়েন করেন না? তিনগুণ রোজগার হবে আপনার। তবে আপনি যখন আবেদন করবেন, ফরমে শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় লিখবেন, ক্লাস সেভেন পাস। তারা কিন্তু আবার শিক্ষিত লোক পছন্দ করে না।’
বাস্তবে সে রকমই হলো। কল সারানোর মিস্ত্রি হিসেবে কাজ পেলেন প্রফেসর। অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ ভালো হলো তার। মাঝে মধ্যে শুধু একটি-দুটি স্ক্রু ঠিক করা, মোটামুটি এটুকুই কাজ। কিন্তু ইনকাম বাড়তে লাগল।
একদিন কোম্পানির বোর্ড ঠিক করল, কাজে দক্ষতার জন্য সব মিস্ত্রিকে নৈশ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে অষ্টম শ্রেণি পাস করতে হবে। প্রফেসরকেও যেতে হলো।
ঘটনাক্রমে প্রথম দিনেই গণিতের ক্লাস। নৈশ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জ্ঞান পরীক্ষা করার জন্য তাদের বৃত্তের ক্ষেত্রফলের সূত্র জিজ্ঞেস করলেন। প্রফেসরকেই ধরলেন প্রথমে।
ব্ল্যাক বোর্ডের কাছে গিয়ে প্রফেসর বুঝতে পারলেন, সূত্র ভুলে গেছেন। সূত্রটি নিয়ে ভাবতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পর ইন্টিগ্রেশন, 
ডিফারেন্সিয়েশন এবং উচ্চতর গণিতের আরও অন্যান্য প্রতীক ও সূত্রে ব্লাক বোর্ড ভরে উঠল। একসময় বৃত্তের ক্ষেত্রফলের সূত্রটি বের করতে পারলেন। A=-πr^2। কিন্তু ক্ষেত্রফলে নেগেটিভ চিহ্ন পছন্দ হলো না তার। তাই সব মুছে আবার প্রথম থেকে শুরু করলেন, আবারও সূত্র এলো A=-πr^2।
খুব হতাশ হয়ে গেলেন প্রফেসর। ভয়ার্ত চোখে ক্লাসের দিকে তাকালেন তিনি, দেখলেন সবাই ফিসফিস করে তাকে বলছে, ‘আরে মিয়া, লিমিট দুইটা উল্টাইয়া দাও।’

 কলি

স্বামী আমার ফেসবুক রোগী

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ পিএম
স্বামী আমার ফেসবুক রোগী

অবাক হয়ে আমার সামনে বসা ছেলেটার কাণ্ড দেখছি। এ সময় তার আমার পাশে বসে আমার ঘোমটা তোলার কথা। তার বদলে সে ল্যাপটপের সামনে গিয়ে বসেছে।

লজ্জা ভেঙে বলেই ফেললাম, আপনি কী করছেন?

সে উৎকণ্ঠার সঙ্গে জবাব দিল, দাঁড়াও দাঁড়াও! ‘ম্যারিড’ স্ট্যাটাসই তো এখনো দিইনি। ম্যারিড স্ট্যাটাস না দিলে বিয়ে হয় নাকি! ও হ্যাঁ! তোমাকে তো ট্যাগ করতে হবে। তুমি তোমার ফেসবুক আইডির নাম বলো, আমি রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছি।

আমি খানিকক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। ম্যারিড স্ট্যাটাস না দিলে বিয়ে হয় না এটা আমার অজানা ছিল। পৃথিবীতে কত নতুন নতুন জিনিসই না আছে জানার!

আমি ফেসবুক আইডির নাম বলে তার রিকোয়েস্ট অ্যাক্সেপ্ট করলাম। সে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দিল। সেই ট্যাগ আবার আমাকে অ্যাক্সেপ্ট করতে হলো।

এতক্ষণে সে আনন্দিত গলায় বলল, বাহ! এইতো হয়েছে! আচ্ছা তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো ততক্ষণে আমি কমেন্টগুলোর রিপ্লাই দিই।

আমি বাথরুমে ঢুকে চোখেমুখে পানি দিতে দিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় বুঝে গেলাম। আমি একজন ফেসবুক সেলিব্রিটিকে বিয়ে করেছি। তার কাছে ভার্চুয়াল জগৎ আমার থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই রাতে সে আমার হাত ধরে অনেক রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলল। কথাগুলো ছিল এমন, জানো লাবণ্য! আমার অনেক দিনের শখ ছিল রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেব। বউকে নিয়ে কাপল পিক প্রোফাইলে দেব। ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে হবে কভার পিক। তুমি তো জানোই, কভার পিক ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে দিতে হয়। তুমি এই কয়দিন গুগলে কাপল পিকের পোজগুলো ভালোভাবে দেখবা। আমরা কয়দিন পর হানিমুনে যাব তো! তখন ভালো ভালো ছবি তুলতে হবে। প্রোফাইলের জন্য, কভারের জন্য, ইনস্টার জন্য। এ ছাড়া মাই ডে, মোবাইল আপলোডেও তো দিতে হবে! এক ড্রেস পরে দিলে হবে না। একেকটা ছবিতে একেক ড্রেসে বুঝলে!

সে চোখ বন্ধ করে আসন্ন কভার পিকের চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেল।

কিছুদিন কেটে গেল। বিয়ের পর প্রথম বাপের বাড়ি এসেছি। আব্বু জামাইয়ের পাশে বসে তার কাঁধে হাত রেখে বললেন, বাবা! কেমন আছ? সব খবর ভালো তো!

সে তৃপ্তির হাসি দিয়ে বলল, খুবই ভালো আব্বা! ২কে লাইক আর ৫৭০ কমেন্ট, সেই সঙ্গে ১১২টা শেয়ার।

আব্বু অবাক হয়ে বললেন, এগুলো কী বাবা!

সে হাসিমুখে বলল, আপনার মেয়ের সঙ্গে আমার ম্যারিড স্ট্যাটাস।

আব্বু আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন তার আগেই আম্মু খেতে ডাক দিলেন। খেতে বসে আম্মু প্লেটে খাবার বাড়তে যাবে, তার আগেই সে আম্মুর হাত ধরে থামিয়ে দিয়ে বলল, আম্মা এক মিনিট! একটা ছবি তুলে নিই। জামাই আদর বলে কথা!

সবার অবাক দৃষ্টি উপেক্ষা করে সে ছবি তুলল। তারপর খেতে খেতেই তিন-চারটা ফিল্টার ইউজ করে এডিট করে মাই ডে দিতে দিতে ততক্ষণে আমাদের সবার খাওয়া শেষ।

আম্মু আর বড় খালা আমাকে আলাদা ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে চিন্তিত গলায় বললেন, ছেলের সমস্যা কী রে? কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের খুলে বল।

আমি সহজ গলায় বললাম, ছেলে ফেসবুক সেলিব্রিটি।

খালা অবাক হয়ে বললেন, সেটা আবার কী?

আমি আম্মু আর খালাকে বোঝাতে বসলাম। দুজনেই মোটামুটি ফেসবুক চেনে। ফেসবুক সেলিব্রিটি জিনিসটা ক্লিয়ার করে বোঝাতেই খালা চোখ কপালে তুলে বললেন, কী বলিস! আমাদের জ্ঞাতি-গুষ্টির ভেতরে এই রোগ তো কারও নেই! এটা কি ছোঁয়াচে? ভবিষ্যতে বাচ্চাকাচ্চাদেরও কি এই রোগ হতে পারে?

আমি দুখী গলায় বললাম, ছোঁয়াচে কি না জানি না! তবে বাচ্চাকাচ্চাদের এই রোগ অবশ্যই থাকবে।

খালা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন তার আগেই আম্মু কান্না জুড়ে দিলেন আর আমি আমার বরের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি চলে এলাম।

রাতে শ্বশুরবাড়িতে খেতে বসেছি। দেখলাম আমার বরের গলা দিয়ে খাবার নামছে না। সে ভাতের মধ্যে আঙুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করছে কিন্তু খাচ্ছে না। তাকে কখনো এত আপসেট দেখিনি। নিশ্চয়ই লাস্ট কোনো স্ট্যাটাসে মনমতো লাইক-কমেন্ট পায়নি।

খাওয়া শেষ করে ওঠার পর বেসিনের কাছ থেকে ফিসফিস করে বললাম, কী হয়েছে?

সে দুঃখভারাক্রান্ত গলায় বলল, বাড়িতে আব্বার সঙ্গে খেতে বসলে ছবি তুলতে দেয় না! এত খাবারদাবার এত আয়োজন একটা মাই ডে দিতে পারলাম না!

আহারে! খাবার আছে মাই ডে নেই! তার জন্য সত্যিই অনেক বড় দুঃখের খবর এটা। আমাদের হানিমুনে যাওয়ার সব বন্দোবস্ত প্রায় হয়েই গেছে। এমন সময় আমার আম্মু, আব্বু আর বড় খালা ডিভোর্স পেপার রেডি করে আমাকে নিতে এলেন।

বড় খালা ছেলের মাকে রাগী গলায় বললেন, আপনাদের দোষ! বিয়ের আগে বলেননি কেন যে ছেলে ফেসবুক সেলিব্রিটি? এত বড় একটা রোগ নিয়ে আমাদের সরল সাদাসিধা মেয়েটার গলায় এই ছেলেকে ঝুলিয়ে দিলেন? আমরা মেয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

অনেক কথা কাটাকাটি, ঝগড়াঝাটির পর সিদ্ধান্ত হলো আমি চলেই যাব। যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়িয়েছি, এমন সময় আমার বর মুখ খুলল। দুখী চোখে আমার দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, তুমি জানো না ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস ‘সেপারেট’ দিলে সেটা টাইমলাইনে শেয়ার হয় না? ওইটা দিলে তো আমি লাইক কমেন্ট পাব না! এটা তুমি করতে পারলে আমার সঙ্গে?

 কলি

আইটি ফান

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পিএম
আইটি ফান
আঁকা মাসুম

টেক সাপোর্ট: আপনার কম্পিউটারটা কেমন?
কাস্টমার: সাদা।

কাস্টমার: হাই, আমি মেরি। আমার ডিস্কটি বের করতে পারছি না।
টেক সাপোর্ট: ডিস্ক ড্রাইভের বাইরে যে বাটন আছে সেটা প্রেস করুন।
কাস্টমার: কাজ হচ্ছে না, বেশ শক্ত করেই আটকেছে।
টেক সাপোর্ট: অবস্থা তো তাহলে ভালো নয়, আপনি কম্পিউটারটি নিয়ে আমাদের ল্যাবে নিয়ে আসুন।
কাস্টমার: আরে, সরি। সাহায্য লাগবে না। ডিস্কটা তো আমি ঢুকাইনি। টেবিলের ওপরই পড়ে আছে।

টেক সাপোর্ট: স্ক্রিনের বাম দিকে যে ‘মাই কম্পিউটার’ আইকন আছে, তাতে ক্লিক করুন।
কাস্টমার: আমার বাম দিক না আপনার বাম দিক?

কাস্টমার: আমি লাল কালার প্রিন্ট করতে পারছি না।
টেক সাপোর্ট: আপনার কালার প্রিন্টার আছে?
কাস্টমার: ওহ হো...আচ্ছা ধন্যবাদ।

কাস্টমার: আমার কি-বোর্ড কাজ করছে না।
টেক সাপোর্ট: কি-বোর্ডটা কম্পিউটারের সঙ্গে লাগানো আছে তো?
কাস্টমার: জানি না। কম্পিউটারের পেছনে যেতে পারছি না।
টেক সাপোর্ট: কি-বোর্ডটা নিয়ে দশ কদম পেছনে যান।
কাস্টমার: ওকে।
টেক সাপোর্ট: কি-বোর্ড আপনার সঙ্গে এসেছে?
কাস্টমার: হ্যাঁ।
টেক সাপোর্ট: তার মানে কি-বোর্ডটি কানেক্ট করা ছিল না। ওখানে আর কোনো কি-বোর্ড আছে?
কাস্টমার: হ্যাঁ, আরেকটা আছে। এটা কাজ করে।

প্রথম বন্ধু: তোর কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড হলো, ‘ছোট হাতের এ, বড় হাতে ভি এবং সেভেন।’
দ্বিতীয় বন্ধু: সেভেন কী ছোট হাতের না বড় হাতের?

লোক: আমি ইন্টারনেটে কানেক্ট হতে পারছি না।
টেক সাপোর্ট: আপনি সঠিক পাসওয়ার্ড দিয়েছেন?
লোক: হ্যাঁ, আমি শিওর। আমার সহকর্মীকেও একই পাসওয়ার্ড দিতে দেখেছি।
টেক সাপোর্ট: পাসওয়ার্ডটা বলুন তো।
লোক: ছয়টা স্টার।

টেক সাপোর্ট: আপনি কোন অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করেন?
লোক: ফায়ারফক্স।
টেক সাপোর্ট: এটা তো অ্যান্টিভাইরাস না।
লোক: ওহ, সরি... ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার।

আমার কম্পিউটারে অনেক বড় একটা সমস্যা হয়েছে। আমার বন্ধু একটা স্ক্রিন সেভার সেট করে দিয়েছে। কিন্তু আমি মাউজ নাড়ালেই সেটা চলে যায়।

টেক সাপোর্ট: কীভাবে সাহায্য করতে পারি?
কাস্টমার: আমি আমার প্রথম ই-মেইল লিখছি।
টেক সাপোর্ট: আচ্ছা, তাহলে আপনার সমস্যাটা কী?
কাষ্টমার: আমি a লিখেছি, কিন্তু এর ওপর গোল চিহ্নটা কীভাবে দেব?

কলি 

প্রসঙ্গ প্রোগ্রামার

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
প্রসঙ্গ প্রোগ্রামার

নির্জন অন্ধকার পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল প্রোগ্রামার। একজন পথরোধ করে দাঁড়িয়ে টাকা দাবি করল। প্রোগ্রামার ভাবল:
নিশ্চয়ই প্রোভাইডার!

 মাঝে মধ্যেই হঠাৎ করে মনিটরে ভেসে ওঠা নীল পর্দা দেখে দেখে অতিষ্ঠ? মাইক্রোসফটের সাইট থেকে একটি ‘প্যাচ’ ডাউনলোড করে নিন। এরপর কন্ট্রোল প্যানেলে গিয়ে বেছে নিন, কী রঙের পর্দা দেখতে চান।

স্বর্গ আর নরকের মধ্যে পার্থক্য কী?
নরকে ইন্টারনেট নেই।

প্রোগ্রামারের লেখা স্মৃতিকথা থেকে: মেয়েটির সঙ্গে নেট-বন্ধুত্ব ছিল প্রায় দুই বছরের। এখন তার কথা ঠিক মনে পড়ে না। তবে তার আইপি অ্যাড্রেসটি ভুলিনি এখনো।

প্রোগ্রামার টাকা ধার চাইছে বন্ধুর কাছে:
তোমার কাছে ৫০০ টাকা হবে? না না, ৫০০ নয়, ৫১২।

কম্পিউটারের ভাষায় স্বামীকে কী বলা যায়?
স্ত্রীর রেজিস্টার্ড ইউজার।

ইন্টারনেটে অনুষ্ঠিত হলো সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ইন্টারনেট’। শ্রেষ্ঠ সুন্দরী নির্বাচিত হয়েছেন B21399KS.JPG

ট্যাক্সি চড়ে যাচ্ছিল প্রোগ্রামার। হঠাৎ তা থেমে গেল। স্টার্ট নিচ্ছে না কিছুতেই। প্রোগ্রামার বলল:
কয়েকটা জানালা (উইন্ডো) বন্ধ করে দিলে কাজ হওয়ার কথা।

 কলি

জামাই আদরের তারতম্য

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ পিএম
জামাই আদরের তারতম্য

প্রথম বছর
বাসমতী চালের ভাত, ভাতে ঘি, সঙ্গে কাগজি লেবু এক ফালি, মুগের ডাল, কুমড়োফুলের বড়া, ফুলকপির তরকারি, মাছের কালিয়া, কচি খাসির মাংস, আমসত্ত্বের চাটনি, খাসা পাঁপড়, মিষ্টি দই, শেষে জোর করে দুটি মিষ্টি। কী আর হবে, এই বলে দুটি মিঠা পান মুখে পুরে দেওয়া।

দ্বিতীয় বছর
অনেকটা প্রথম বছরের পুনরাবৃত্তি, সবজি ও মিষ্টির পদের পরিবর্তন।

তৃতীয় বছর
মিনিকেট চালের ভাত, উচ্ছে ভাজা, কলাই ডাল, কলাই ডালের বড়া, আলু পোস্ত, শাহি পাঁপড়, দুই পিস মাছ ও ঝোল, সাদা দই। বিকেলে দুই পিস বালুসাই।

চতুর্থ বছর
আগের বছরের মতোই, বিকেলে বালুসাইয়ের বদলে একটু চানাচুর।

পঞ্চম ও ষষ্ঠ বছর
ভাত, মসুর ডাল, আলু-কপি ভাজা, কাঁচা পেঁয়াজ, লোকাল পাঁপড়, মেনি মাছের ঝাল, কিশমিশ দিয়ে সুজির হালুয়া।

সপ্তম ও অষ্টম বছর
ভাত, আলু ভর্তা, উচ্ছে ভাজি, ঢ্যাঁড়শ ভাজি, ডিমের কারি, সঙ্গে সালাদ। রাতে শোবার আগে জিজ্ঞাসা করা হবে, ‘বাবা এক গ্লাস দুধ খাবে নাকি?’

নবম ও দশম বছর
চা ও শিঙাড়া দিয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে, দুপুরে খেয়ে যাবে তো? চলো বাজার ঘুরে কিছু সবজি নিয়ে আসা যাক।

একাদশ ও দ্বাদশ বছর
লেবু-চা, সঙ্গে দুটি সল্টেড বিস্কুট। তারপর প্রশ্ন: এদিকে কী মনে করে? কোনো কাজ ছিল নাকি? আজকে থাকছ তো?

ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ বছর
শাশুড়ি: কেমন আছ বাবাজি? তাড়াহুড়ো না থাকলে চা খেয়ে যেও।

পঞ্চদশ ও ষোড়শ বছর
শাশুড়ি বলছে শ্বশুরকে: এই যে, জামাই বাবু এসেছে, কী ব্যাপার জেনে নাও। সব ঠিকঠাক তো?

সপ্তদশ ও অষ্টাদশ বছর
শাশুড়ি: এমনি পরিস্থিতিতে আছি যে জামাইকে চাও খাওয়াতে পারছি না।

উনবিংশ ও বিংশ বছর
শাশুড়ি: কী গো জামাই, শুনলাম চা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছ। শুধু শুধু শরীর খারাপ নিয়ে আসা-যাওয়ার কী দরকার। তাতে নিজের যেমন সমস্যা হয়, তেমনি অন্যদেরও সমস্যা হয়। ঘরে বসে থাকাই ভালো।

এবার বলুন, আপনাদের বিয়ের কয় বছর হলো?

 কলি