এক দিন বারে এক লোক ঢুকে বারটেন্ডারকে বলল, আজকে এই বারের সবাইকে আমার তরফ থেকে এক পেগ।
বারটেন্ডার বলল, তা ঠিক আছে। কিন্তু এই মন্দার সময় তোমার কাছে এত ডলার আছে তো?
লোকটি একতারা ডলার বের করে দেখাল। বারটেন্ডার অবাক হয়ে গেল, তুমি এত ডলার কোথায় পেলে?
লোকটি উত্তর দিল, বাজি ধরা আমার পেশা।
বারটেন্ডার বলল, কিন্তু বাজি মানেই তো ৫০:৫০ চান্স। তাহলে?
লোকটি বলল, ঠিক আছে, চলো ৫০ ডলার বাজি ধরি, আমি আমার ডান চোখে কামড় দেব।
বারটেন্ডার রাজি হলো। বাজিকর তখন তার নকল ডান চোখ খুলে কামড়ে দিল।
বারটেন্ডার বাজিতে হেরে ৫০ ডলার দিয়ে দিল।
বাজিকর বলল, হেরে তোমার মন খুব খারাপ হয়েছে বুঝতে পারছি। চলো তোমাকে আরেকটা সুযোগ দিই টাকা ফেরত নেওয়ার। এসো বাজি ধরি, আমি আমার বাম চোখে কামড় দেব।
বারটেন্ডার খুশি হয়ে উঠল, তোমার ডান চোখ নকল। আবার বারে তুমি দেখেই ঢুকেছ। তোমার বাম চোখটা তাহলে নকল না। আমি বাজিতে রাজি।
বাজিকর তখন তার নকল দাঁত খুলে বাম চোখে কামড় দিল।
ধুত- বারটেন্ডার বিরক্ত হয়ে বলল।
দেখলে, এভাবেই আমি আমার বাজিগুলো জিতি। এবারের ৫০ ডলার আমি তোমার কাছ থেকে নিলাম না। তার বদলে এক বোতল হুইস্কি দাও।
এক বোতল হুইস্কি নিয়ে বাজিকর চলে গেল জুয়ার রুমে। সারা রাত ধরে সে জুয়া খেলল আর হুইস্কির বোতলটা প্রায় খালি করে ফেলল। ভোরের দিকে সে বারটেন্ডারের কাছে এগিয়ে এল। সে নেশার কারণে ঠিকমতো পা ফেলতে পারছিল না।
কোনোমতে বারের ওপর ভর রেখে বাজিকর জড়ানো কণ্ঠে বলল, আমি তোমার সঙ্গে শেষ বাজি ধরতে এসেছি। আমি তোমার এই টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে তোমার পেছনের একটা খালি হুইস্কির বোতলে হিসু করে দেখাব। বাজি ১ হাজার ডলার।
বারটেন্ডার বাজিকরকে সারা রাতই হুইস্কি খেতে দেখেছে। সে নিশ্চিত সে কোনোভাবেই এই বাজিতে জিততে পারবে না। তাই সে খুশি মনে রাজি হয়ে গেল।
বাজিকর টেবিলের ওপর ওঠে পেছনের একটা হুইস্কির খালি বোতলে প্রস্রাব ফেলার অনেক চেষ্টা করল, কিন্তু সে এমনভাবে কাঁপছিল যে সে বোতল বাদে সব জায়গা নোংরা করে ফেলল।
শেষে লজ্জিত কণ্ঠে বলল, বারটেন্ডার, আমি পারলাম না।
বারটেন্ডার খুশিতে লাফ দিয়ে বলল, ইয়েস, আমি ১ হাজার ডলার জিতেছি।
বাজিকর খুশিমনে তাকে ১ হাজার ডলার দিয়ে দিল। বারটেন্ডার অবাক হয়ে বলল, কী ব্যাপার! তুমি এত সহজে হার স্বীকার করে নিলে?
বাজিকর বলল, জুয়ার রুমের লোকগুলোর সঙ্গে আমার বাজি রয়েছে যে, আমি তোমার পুরো বারে হিসু করব, কিন্তু তুমি হাসবে আর আমাকে মারবে না। ওদের সঙ্গে আমি ৫ হাজার ডলার জিতেছি।
n এক আইরিশ ডাবলিনের এক বারে এসে তিন পেগ মদ নিয়ে এক কোণায় বসল। তারপর একে একে তিনটি পেগ একাই খেয়ে নিল। আরেক দফা বারটেন্ডারের কাছে আসতেই বারটেন্ডার বলল, এই মদ ছোট পেগে খেয়ে মজা কম। যদি তিনটার বদলে একটা বড় পেগ নিতে তাহলে আরও মজা পেতে।
লোকটি হেসে বলল, আসলে আমরা তিন ভাই কাজের প্রয়োজনে তিন দেশে অবস্থান করছি। আমরা আলাদা হওয়ার আগে ঠিক করেছিলাম, যেখানেই থাকি, প্রত্যেকেই আমরা এক পেগ করে প্রত্যেকের তরফ থেকে খাব এবং পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করব।
বারটেন্ডার স্বীকার করল, এটা খুবই ভালো জিনিস। এতে পরিবারের সদস্যদের প্রতি সম্পর্ক ভালো থাকবে।
এভাবে আইরিশ লোকটা প্রতিদিন বারে আসত আর তিন পেগ করে মদ খেত। বারের নিয়মিত সবাই তার কাহিনি শুনেছিল বলে সবাই এটাকে স্বাভাবিকভাবেই দেখত।
এক দিন বারে ঢুকে লোকটি বলল, আমাকে দুই পেগ দাও। কথাটা বলামাত্র বারে পিনপতন নিস্তব্ধতা নেমে এল। বারটেন্ডার মলিন মুখে পেগ ঢেলে দিতে দিতে বলল, তোমার ভাইয়ের মৃত্যুতে আমিও গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তার বিদেহী আত্মার মুক্তি কামনা করি।
কী হয়েছে বুঝতে লোকটি একটু সময় নিল। তারপর হাসি ফুটে উঠল তার চেহারায়, আরে না, তোমরা যেটা মনে করছ, তেমন নয়। আমার ভাইয়েরা ঠিকই আছে। আজ থেকে আমি মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।
মেহেদী আল মাহমুদ