সুনামগঞ্জ-১ আসন সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে আয়তনে বড় ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ অন্যতম একটি নির্বাচনি এলাকা। তাহিরপুর-ধর্মপাশা-জামালগঞ্জ-মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। জলজসম্পদের আধার হিসেবে পরিচিত এ আসনটিতে আশির দশকে এমপি ছিলেন হাওরাঞ্চলের প্রবাদপ্রতিম বাম রাজনীতিবিদ বরুণ রায়। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর নির্বাচনে এমপি হন বিএনপিদলীয় নজির হোসেন। এই আসনে একবার নির্বাচন করেছিলেন বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
বরেণ্য রাজনীতিবিদদের ভোটের লড়াইয়ে বরণীয় এই আসনটিতে হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসেন রাজনীতির মাঠে আনকোরা মুখ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। পেশায় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী হলেও নামের আগে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ ব্যবহার করেন। ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করায় তখন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মনোনয়ন-বাণিজ্যের। বিপুল টাকা খরচ করে তিনি মনোনয়ন বাগিয়ে নেন। নৌকার জয়জয়কার সময়ে ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর টাকা রোজগারের মচ্ছবে মেতে ওঠেন রতন। যেন পুরো নির্বাচনি এলাকা তার ‘রসের হাঁড়ি’।
সম্পদসমৃদ্ধ জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওরসহ চার উপজেলার জলমহাল, বালুমহাল, সীমান্ত-বাণিজ্য থেকে শুরু করে হাটবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রতন চাঁদাবাজির একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন। একটানা তিনবার এমপি থাকার সুবাদে অভিযোগ রয়েছে, শুধু চাঁদাবাজি থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। অবৈধ সম্পদে হৃষ্টপুষ্ট রতন আওয়ামী লীগ জমানার সর্বশেষ নির্বাচনে (২০২৪-এর ৭ জানুয়ারি) দলীয় মনোনয়ন পাননি। তবে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটে লড়ে হেরে যান। সেই থেকে নির্বাচনি এলাকাছাড়া ছিলেন সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান। তিনি এখন দেশে আছেন না বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন, এ নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। এ অবস্থায় তার এলাকায় ক্ষমতার দাপটে জায়গা দখল করে নির্মাণ করা ৪৭টি দলীয় অফিস বেহাত হয়েছে। কোনো কোনো অফিস ক্ষুব্ধ জনতা তালা দিয়ে রেখেছেন।
লুটপাটের রোজগারে বাড়িবিলাসী রতন তার নির্বাচনি এলাকাসহ সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ঢাকায় করেছেন ২৫টি বাড়ি। এসব নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে বলা হতো রতনের ‘রসের হাঁড়ি’ অফিস-বাড়ি। সবই হাতছাড়া এখন। বিলাসবহুল বাড়ি বিনা ভাড়ায় বসবাস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এলাকাবাসী কটাক্ষ করে বলছেন, ‘মাগনা নিবাস’।
৪৭-দলীয় অফিস
সুনামগঞ্জ জেলা শহরে আওয়ামী লীগের স্থায়ী কোনো অফিস (দলীয় কার্যালয়) না থাকলেও সুনামগঞ্জ-১ আসনের চারটি উপজেলায় ছিল ৪৭টি অফিস। এর মধ্যে উপজেলায় অফিস ছিল চারটি। বাকি ৪৩টি ছিল গ্রাম এলাকায়। রতন এমপি হওয়ার পর থেকে এসব অফিস করা হয়। তৃণমূলে দলের সাংগঠনিক কাঠামো বিস্তৃত করার কথা বলে স্থায়ী অফিস নির্মাণের জন্য সরকারি ভূমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমি, নিরীহ মানুষের জমি দখল করার অভিযোগও ছিল।
৪৭টি অফিস দলীয় হলেও এগুলো শুধু রতনের লোকজন ব্যবহার করতেন। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে অফিসকে ব্যবহার করা হতো। কখনো দলীয় কর্মসূচি অফিস থেকে হয়নি। দখল করা জায়গায় অফিস করায় ক্ষোভ থেকে এসব অফিসের অধিকাংশ ভাঙচুর হয়েছে। ক্ষোভ থেকে অফিসকে শৌচাগার হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে। একাধিক স্থানীয় নেতা বলেছেন, অফিসগুলোর জায়গা বিরোধপূর্ণ জমি। অফিসে ঘর করার টাকা রতনসহ দলীয় নেতারা দিয়েছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৪৭ অফিসের বেশির ভাগই হয় পাকা ভবন, না হয় অর্ধপাকা। ৫ আগস্টের পর অফিসগুলোর একটিও অবিকল অবস্থায় নেই। কোথাও কোথাও বিক্ষুব্ধ জনতা তালা ঝুলিয়েছেন, কোথাও অন্য সামাজিক সংগঠনের সাইনবোর্ড ঝুলছে। কোনো কোনো অফিসে বসছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। তাহিরপুরের আনোয়ারপুর সমাজকল্যাণ সংস্থার অফিসে আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দলীয় অফিস হিসেবে উদ্বোধন করার অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির স্থানীয় এক নেতা বলেন, ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে সামাজিক সংগঠনের অফিসে ঝুলানো হয়েছিল আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড। ৫ আগস্টের পর বিক্ষুব্ধ জনতা অফিসটিতে তালা ঝুলিয়েছেন। পরে শুনেছি, এই অফিসের ভবন করার সময় মিস্ত্রিদের টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। এখনো টাইলস মিস্ত্রি মজুরির টাকা পাননি।
জামালগঞ্জের সাচনাবাজার অফিসও বিরোধপূর্ণ ভূমিতে করা হয়েছে। অফিসটি বিক্ষুব্ধ লোকজন ভাঙচুর করেছে। এরপর দুয়েক দিন বিএনপি নেতা-কর্মীরা ওই অফিসে বসেছিলেন। পরে তালা দিয়ে অফিসের চাবি স্থানীয় বণিক সমিতির কাছে রাখা হয়েছে।
ধরমপাশার বাদশাগঞ্জ বাজারে সেলবরস ইউনিয়নে যখন অফিস করা হয়েছিল, তখন স্থানীয় লোকজন আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন, বাদশাগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভূমি অফিসের জন্য দখল করা হয়েছে। এ অফিসেও বিক্ষুব্ধ জনতা তালা ঝুলিয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা সদরের অফিস এখন শৌচাগার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন জানান, অফিসটিতে নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের একজনের ভূমি ও সরকারি ভূমি ঢুকেছে। জামালগঞ্জ উপজেলা সদরে দলীয় অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। অফিসের বারান্দায় এখন হকাররা বসে কাপড় বিক্রি করছেন। চাঁনপুরের হারুন মার্কেটের অফিসের সাইনবোর্ড খুলে এখন ‘অগ্নিসেনা যুব সংঘ’ নামের সংগঠনের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। মান্নানঘাটের অফিসে ব্যানার টাঙানো ছিল। সেটি খুলে অফিস দখলে নিয়েছিল বিক্ষুব্ধ জনতা। এখন বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছেন ব্যবসায়িক কাজে।
এক নির্বাচনিএলাকায় এত অফিস করার কী কারণ? এ প্রশ্নে কথা হয় উপজেলা ও ইউনিয়ন শাখার ছয়জন আ.লীগ নেতার সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতারা একবাক্যে জানান, এগুলো শুধু নামেই দলীয় অফিস ছিল। রতনের প্রভাব-প্রতিপত্তি ধরে রাখতেই অফিস হয়েছিল, ৫ আগস্ট পরবর্তী চিত্র তার প্রমাণ। জলমহালে মাছ ধরার মৌসুমে মাছ লুণ্ঠন, বালু-পাথর মহালে অবৈধভাবে উত্তোলন, বড়ছড়া-চারাগাঁওয়ের শুল্ক স্টেশনে কয়লা আমদানিকারক সমিতিসহ বিভিন্ন মার্কেট, হাটবাজার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজিতে এসব অফিস ব্যবহার করা হতো। রতনের অফিস-বাড়ি রসের হাঁড়ি উল্লেখ করে মধ্যনগর উপজেলার এক নেতা বলেন, ‘রতন নাই, রসও নাই, অফিসের আর কী দরকার!’
২৫ বাড়ি বিলাস
সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুরে সাত কোটি টাকায় ‘পায়েল পিউ’ নামের একটি আলিশান বাড়ি কেনেন রতন। নিজ এলাকা ধরমপাশায় তৈরি করেন বিলাসবহুল বাড়ি ‘হাওর বাংলা’। দুই বাড়িতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। এ দুটো বাড়ি করার পর রতনের বাড়ি বিলাসের বিষয়টি আলোচনায় আসে। প্রকাশ পায় তার বাড়ি বিলাসের বিষয়টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পায়েল পিউ কিংবা ধরমপাশায় হাওরবাংলা নয়, সুনামগঞ্জের প্রতিবেশী জেলা নেত্রকোনা ও মোহনগঞ্জ, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৫টি বাড়ি রয়েছে তার। বাড়ি ছাড়াও নেত্রকোনা শহরে মা-বাবার নামে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য ৫০ কোটি টাকায় জমি কিনেছেন। ছোট ভাই মোবারক হোসেন যতনের নামে ২৫ একর জমি কিনেছেন। তিন মেয়াদে এমপি থাকাকালে শুধু বাড়ি বিলাস, জায়গা কেনা ও কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।
ধরমপাশায় নিজের গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি করে ‘হাওর বাংলা’ নামে একটি কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেন রতন। সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুরে জেলা পুলিশ লাইন্সের বিপরীতে পায়েল পিউ বাড়িটিতে কেউ থাকছেন না। সীমানাপ্রাচীর তালাবদ্ধ। প্রতিবেশীরা জানান, পটপরিবর্তনের পর থেকে বাড়িটি সুনসান। বসবাস যারা করছেন, তারা ভাড়ায় থাকছেন বলে জানালেও আসলে বাড়িটি রক্ষায় ‘মাগনা’(বিনা ভাড়ায়) বসবাস করছেন তারা। একই অবস্থা নেত্রকোনা, মোহনগঞ্জ ও ঢাকার বাড়িগুলোর।
এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রতনের নিজ এলাকা ধরমপাশায় আরও সাতটি বাড়ি রয়েছে। মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরেও রয়েছে দুটি বাড়ি। নেত্রকোনা শহরেও একটি বাড়ি রয়েছে। নেত্রকোনা শহরে মা-বাবার নামে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকায় জমি কিনেছেন। রাজধানীর নিকেতনে তার নামে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। সহোদর যতন মিয়ার নামে ৫০০ একর জমি কিনেছেন এমপি রতন। সব মিলে ২৫টি বাড়ি রয়েছে তার।
সুনামগঞ্জ শহরে পায়েল পিউ বাড়ির জমির পরিমাণ ৩৫ শতক। ঢাকার সাভারে রয়েছে একটি বাড়ি। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর শহরে বাড়ি করার জন্য রয়েছে ২১০ শতক জমি। সুনামগঞ্জের হাজিপাড়া এলাকায় দ্বিতীয় স্ত্রী জিনাতুল তানভী ঝুমুরের নামে একটি বাড়ি রয়েছে। বড় ভাই মোবারক হোসেন মাসুদকে পাইকুরাটি বাজারে জায়গা কিনে একটি বাড়ি ও একটি স’মিল করে দিয়েছেন রতন। ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেন রুকনকে নওধারা গ্রামে একটি বাড়ি ও নেত্রকোনা শহরের বিজিবি ক্যাম্পের সঙ্গে চারতলা একটি বাড়ি করে দিয়েছেন। আরেক ছোট ভাই মোবারক হোসেন যতনকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার হাসপাতাল রোডে জায়গা কিনে বাড়ি করে দিয়েছেন। পাশাপাশি ছোট বোন মিনা আক্তার ও শাকুরা আক্তারকে সুনামগঞ্জ শহরে বাড়ি করে দিয়েছেন। তার আরেক ছোট বোন আংরুজা আক্তারকে নেত্রকোনায় জায়গা কিনে বাড়ি করে দিয়েছেন। সব মিলে রতনের বাড়ি সংখ্যা ২৫টি।
মোয়াজ্জেম হোসেন রতন তৃতীয় দফায় এমপি হওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন তার নির্বাচনি এলাকার মিজানুর রহমান সোহেল নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর এ অভিযোগের অনুসন্ধান করে দুদক সত্যতা পাওয়ায় পরবর্তী সময় রতনকে দুদকে তলব করা হয়েছিল। তার বিদেশ যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছিল। তবে তৎকালীন সরকারদলীয় এমপির দাপটে দুদকের তৎপরতা বন্ধ করে দিয়েছিলেন রতন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ ছিল রতনের নির্বাচনি এলাকা থেকে দৈনিক ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হতো। চাঁদার অর্ধেক পেতেন রতন। সীমান্তে কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ নামের প্রতিষ্ঠানটির ব্যানারে মাসে কোটি টাকা চাঁদাবাজি হতো। এসবের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক তাকে তলব করেছিল। তদন্তসংশ্লিষ্ট দুদকের একজন উপ-পরিচালক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এখন পরিবর্তিত অবস্থায় সেই সব অভিযোগ সূত্রে নতুন করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’
সম্পদে হৃষ্টপুষ্ট
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন রতন। এরপর ২০১৪ সালে বিনাভোটে, ২০১৮ সালে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এবং সর্বশেষ দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি মোট চারবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন।
প্রথম নির্বাচনি হলফনামায় রতন স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে সম্পদ দেখিয়েছিলেন ৪ কোটি ৫ লাখ ৫৯৩ টাকার। সর্বশেষ নির্বাচনি হলফনামায় সম্পদ দেখিয়েছেন ৯ কোটি ৩১ লাখ ৬৫ হাজার ১২৮ টাকার। ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবিধারী হলেও হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখ নেই। প্রথম হলফনামায় পেশা উল্লেখ করেছিলেন ‘কনসালটেন্সি ব্যবসা’। বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ৫ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৫৪৬ টাকা, পেশা থেকে ২ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২৬০ টাকা এবং অন্যান্য ৫৪ হাজার ৪০ টাকা। সর্বশেষ ৭ জানুয়ারির নির্বাচনি হলফনামায় রতন উল্লেখ করেন, তার পেশা শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক। বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫৬ টাকা, সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত অর্জিত ভাতা বাবদ আয় ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪২৭ টাকা, অন্যান্য ১ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৪ টাকা।
হলফনামায় রতন তার গ্রামের বাড়ির বিলাসবহুল বাড়ি ‘হাওর বাংলা’কে ‘একটি দালান’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ছিল, কানাডায় বাড়ি ও বিদেশে অর্থ পাচারের। ২০১৯ সালে অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রতনকে দুদক তলব করেছিল।
তবে মোয়াজ্জেম হোসেন রতন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অসত্য বলে উড়িয়ে দিতেন। হলফনামার তথ্যে সম্পদে হৃষ্টপৃষ্ট অবস্থা ও দুদকে তলব সম্পর্কে বিগত সংসদ নির্বাচন চলাকালে রতন এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘সব অসত্য। দুদক তদন্ত করে কিছুই পায়নি। আমার সম্পদের হিসাব খুবই পরিষ্কার। সবই আয় কর ফাইলে উল্লেখ আছে। বিদেশে কোনো বাড়ি নেই, কোনো টাকাপয়সাও পাচার করিনি।’