চার বছর পর যে অলিম্পিক দুয়ারে এসে উপস্থিত হয়েছিল, প্যারিসে সেই আসরের সমাপ্তি হচ্ছে আজ রাতে। তিন শতাধিক ইভেন্ট নিয়ে হওয়া এবারের আসর প্রতিদিনই জন্ম দিয়েছে একের পর এক দারুণ ঘটনা। সর্বশেষ যেমন এবারের আসরে হকির দুটি সোনাই গিয়েছে নেদারল্যান্ডসের ঘরে। তাদের নারী ও পুরুষ দুই দলই করেছে শিরোপা উৎসব।
আর তাতেই জন্ম নিয়েছে দারুণ এক গল্পের। ডাচদের পুরুষ দলের হয়ে খেলা থিস ফন ডাম এবং নারী দলের পিয়েন স্যান্ডার্স প্রেমিক-প্রেমিকা হওয়ায় জন্ম নিয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকার স্বর্ণ জয়ের মতো ঘটনাও। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ক্রীড়াপ্রেমীদের এই অলিম্পিক বরাবরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে। সেখানে এমন মজাদার পার্শ্ব ঘটনা বা মুহূর্তের জন্ম নেয় বলেই তো অলিম্পিককে বলা হয় ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ।’
প্রথমে পুরুষদের ফাইনালে জার্মানিকে হারিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের ছেলেরা। ম্যাচের নির্ধারিত ৬০ মিনিটের ১-১ গোলে সমতা থাকলে খেলা গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানে ৩-১ ব্যবধানে হকির ছেলেদের দলগত ইভেন্টের সোনা জিতেন নেদারল্যান্ডসের ছেলেরা।
ছেলেদের সাফল্যের এক দিন পর মেয়েদের ঝুলিতেও ধরা দেয় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। ফাইনালে তারাও জয় পান চীনের বিপক্ষে। এই ম্যাচের ফলাফলও হয়েছে একই। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ এ সমতা থাকার পর পেনাল্টি শুটআউটে তারাও জয় ছিনিয়ে এনেছেন ৩-১ ব্যবধানে। এই জয়ে মেয়েরা আবার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন তাদের শিরোপাও। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার হকির সোনা জিতলেন তারা।
১৯৮০ সালে অলিম্পিকে নারীদের হকি যুক্ত হওয়ার পর প্রথমবার কোনো দেশ নারী ও পুরুষ এই ইভেন্টের দুই স্বর্ণপদকই জিতল ডাচরা।
ছেলেদের ফাইনালে জয়ের পথে পেনাল্টি শুটআউটে গোল করেছিলেন থিস ফন ডাম। ২৪ ঘণ্টার পর একই পথ অনুসরণ করেছিলেন মেয়েদের ফাইনালে তার প্রেমিকা পিয়েন স্যান্ডার্সও। মেয়েদের হয়ে ফাইনাল জেতার পর স্যান্ডার্স বলেন, ‘আমরা দুটো সোনাই জিতেছি, এটা ঐতিহাসিক। আমি মনে করি ডাচ দলের জন্য চাপ সব সময়ই বেশি থাকে এবং আমরা এখানে সোনা নিয়ে এসেছি, এটা খুবই দারুণ ব্যাপার।’
এই জয় নেদারল্যান্ডসের জন্য যেমন আনন্দের, তেমনিভাবে থিস ফন ডাম ও স্যান্ডার্সের জন্যও স্মরণীয় স্মৃতি। একই অলিম্পিকে অংশ নিয়ে একই খেলায় দুজনই জিতেছেন স্বর্ণপদক। তাদের ব্যক্তিগত জীবনেও নিশ্চিতভাবেই রোমন্থন করার মতো স্মৃতি এবারের প্যারিসের অলিম্পিক।