গেল কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশ দলে পেসারদের ভূমিকা অনেকবেশি। স্পিনারদের ওপর ভর করে নিয়মিত ম্যাচ জেতা দলটা এখন নিয়মিতই পেসারদের নৈপুণ্যে জিতছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে সবগুলো উইকেটই নিয়েছে পেসাররা। পেসারদের এমন পারফরম্যান্স বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের কাজটা সহজ করবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
ইএসপিএনক্রিকইনফোতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেসারদের প্রশংসা করতে গিয়ে এমন কথা বলেছেন তামিম। নিজের দলের বোলারদের এমন পারফরম্যান্স অভিভূত করেছে তামিম ইকবালকে। পেসারদের এমন আক্রমণে ব্যাটারদের জন্যেও অনেক কাজে দেবে বলে মনে করেন তিনি, ‘বাংলাদেশ ভালো পেস বোলিং আক্রমণ পেলে ব্যাটারদের জীবনটা একটু সহজ হবে। সাধারণত যখন আমরা বাইরে সফর করি, উইকেটে অনেক ঘাস থাকে। এখন বাংলাদেশ পেসাররা যে সামর্থ্য দেখাচ্ছে, তাতে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের বিপক্ষ কেমন উইকেট হবে, সেটা ঠিক করতে দুইবার ভাববে। আগে আমরা স্পিনারদের ওপর অতিরিক্ত নির্ভর করতাম। আমাদের ভালো পেস বোলিং আক্রমণ ছিল না। প্রতিপক্ষ ঘাসের উইকেট রাখত, আমাদের কাজটা কঠিন হয়ে যেত।’
ক্রিকেটে টস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সদ্যসমাপ্ত সিরিজের দুটি টেস্টেই টস জিতেছে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই টেস্টেই এই টস জয় বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে রেখেছে বড় ভূমিকা। এমনটা মনে করেন তামিম, ‘সত্যি বলতে প্রথম টেস্টে টসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। প্রথম টেস্টে বৃষ্টির পর বাংলাদেশ টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত দেয়। পাকিস্তান কঠিন কন্ডিশনে ব্যাটিং করেছে। দ্বিতীয় টেস্টে একই ঘটনা ঘটেছে। টস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। টসে জেতাটা দারুণ ছিল। তবে টস গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এটাই সব না। সব ছোট মুহূর্তগুলো বাংলাদেশ জিতেছে।’
দ্বিতীয় টেস্টে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটার লিটন কুমার দাস ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। দুইজন মিলে গড়েন ১৬৫ রানের অনবদ্য জুটি। মিরাজ ৭৮ রানে আউট হলেও লিটন পান ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। তাদের জুটিই বাংলাদেশের জন্য ম্যাচ বাঁচিয়ে রেখেছিল।
লিটন ও মিরাজের জুটি নিয়ে তামিম বলেছেন, ‘আমার মনে হয় ৬ নম্বর পজিশনটা লিটনের সঙ্গে অনেক মানানসই। এটাই ওর একমাত্র ভালো ইনিংস নয়। ৩-৪ পেছনে গেলেও একই ধরনের অনেক ইনিংস দেখা যাবে, এর বেশির ভাগই কঠিন পরিস্থিতিতে। ও যেভাবে ব্যাটিং করেছে, যে ধৈর্য ও দেখিয়েছে, কখনোই নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল না। যা করতে চেয়েছে, সেটাই করেছে। মেহেদী মিরাজের অবদান ভুলে গেলেও চলবে না। ২৬ রানে যখন ৬ উইকেট পড়ে যায়, তখন মিরাজই পাল্টা আক্রমণ করে, এর পর থেকে পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে। সারা বিশ্ব থেকে এই দুটো ছেলের অনেক প্রশংসা প্রাপ্য।’