ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

সাউথ পয়েন্ট আন্তঃ হাউজ ফুটবলে ব্রহ্মপুত্র চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০১ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০২ পিএম
সাউথ পয়েন্ট আন্তঃ হাউজ ফুটবলে ব্রহ্মপুত্র চ্যাম্পিয়ন
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকার সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজে (মালিবাগ) ছাত্রদের আন্তঃ হাউজ ফুটবল ও হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি সিতোরিও কারাতে পরীক্ষা শেষে বিভিন্ন বেল্ট বিতরণ করা হয়। 

জুনিয়র ও সিনিয়র উভয় বিভাগে ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয় হয়েছে ব্রহ্মপুত্র হাউজ। রানার্স আপ হয় কপোতাক্ষ হাউজ। জুনিয়র বিভাগে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব জেতে আরিক নবী দীপ্র। টুর্নামেন্টের সেরা গোলদাতা সালাউদ্দিন ইলহান, টুর্নামেন্ট সেরা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুকিত ও সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পান বিমুর্ত সরকার। 

বালক বড় বিভাগে সেরা খেলোয়াড় ও সেরা গোলদাতা ইশরাক রহমান, টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হয়েছে জারিফ তাহসান ও সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জেতে তাহমিদ আলম। 

সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের অধ্যক্ষ কর্নেল মোঃ শামসুল আলম, পি এস সি (অবঃ) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন। এ সময় সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের ন্যাশনাল কারিকুলামের উপাধ্যক্ষ জেরিনা ফেরদৌস, ইংরেজি মাধ্যমের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ শামীম আরা রহমান মুন, দিবা শাখার কোঅর্ডিনেটর গুলে জান্নাত। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্নেল শামস শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানান ও লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ দেন এবং আসন্ন গ্রীষ্মকালীন আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অত্র প্রতিষ্ঠানের সফলতা কামনা করেন।

২২ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে ইকুয়েডরের ফুটবলার

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২১ পিএম
২২ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে ইকুয়েডরের ফুটবলার
ছবি : সংগৃহীত

মাত্র ২২ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন মার্কো আনগুলো। অনূর্ধ্ব-২৩ দলে না খেলেই সরাসরি খেলেছিলেন ইকুয়েডরের জাতীয় দলে। তাই তাকে ঘিরে ইকুয়েডর জাতীয় দলের স্বপ্নটাও ছিল বেশ বড়। কিন্তু সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি চলে গেলে না ফেরার দেশে।

ইকুয়েডরের এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আনগুলো হাসপাতালে পার করেছেন জীবনের শেষ এক মাস। 

গেল মাসের ৭ তারিখ গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হন মার্কো আনগুলো। মাথায় ও ফুসফুসে গুরুতর আঘাত পান তিনি। এরপর থেকেই টানা একমাস ছিলেন আইসিইউতে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। মাঠের খেলায় বহুবার জয়ী হলেও হেরে গেলেন জীবনের যুদ্ধে। মাত্র ২২ বছর বয়সেই তিনি শেষ করেছেন তার দুনিয়ার সফর।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে ইকুয়েডর ফুটবল ফেডারেশন।

ইকুয়েডরের বয়সভিত্তিক দলে খেলা আনগুলোর সাবেক সতীর্থ এবং ইন্ডিপেন্ডেন্তে জুনিয়র্সের ডিফেন্ডার রবার্তো কাবেজাসও মারা গেছেন এই দুর্ঘটনায়। দুই ফুটবলারকে হারিয়ে শোকে ডুবেছে ইকুয়েডরের ফুটবল ফেডারেশন। শোকের ছায়া নেমে এসেছে আনগুলোর ক্লাব যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটি এফসিতেও। এমএলএসের এই ক্লাবেই ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করেছেন এই ফুটবলার।  

ইকুয়েডরিয়ান ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, ‘ইকুয়েডরের সাবেক ফুটবলার, যে প্রতিভা ও নিবেদন দিয়ে যখনই সুযোগ পেয়েছে আমাদের দেশের মুখ রক্ষা করছে। শুধু দুর্দান্ত একজন ফুটবলারই ছিল না, মার্কো দারুণ একজন সতীর্থও ছিল। তিনি আমাদের হৃদয়ে গভীর শোকের ছাপ রেখে গিয়েছেন’। 

সিনসিনাটি আনগুলোর প্রতি সম্মান জানিয়ে লিখেছে, ‘মার্কোকে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। যিনি ছিলেন একজন স্বামী এবং বাবা, ছিলেন কারো ভাই, কারো সন্তান। সর্বোপরি একজন বন্ধু আর সতীর্থ। তিনি উল্লসিত ও বিনীত তরুণ ছিলেন। যে রুমেই পা দিতেন, আলোকিত করতেন।’

আনগুলোর স্ত্রী এবং সন্তানও একই দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলেন। তবে তারা দুজনেই দুর্ঘটনার পর বেঁচে ফিরেছেন। 

চোটে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না লিসান্দ্রোর

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭ এএম
চোটে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না লিসান্দ্রোর
ছবি : সংগৃহীত

প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার দুইদিন আগে চোটে পড়ে আর্জেন্টিনার স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেলেন লিসান্দ্রো মার্তিনেস। কেবল প্যারাগুয়ে নয়, খেলা হবে না তার পেরুর বিপক্ষেও।

তার বদলি হিসেবে দলে ডাক পেয়েছেন লঁসের ডিফেন্ডার ফাকুন্দো মেদিনা। খবরটি আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে এক্সে।

লিসান্দ্রোর চোট নিয়ে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গেল রবিবার প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচে চোট পেয়েছেন এই আর্জেন্টাইন। সেই ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে চোট পেলেও পুরো সময়ই মাঠে ছিলেন তিনি।

যদিও তার চোটের ধরন সম্পর্কে পরিস্কার করে কিছুই জানায়নি ক্লাব ও জাতীয় দল। 

১৫ নভেম্বর ভোরে বাংলাদেশ সময় ৫টা ৩০ মিনিটে প্যারাগুয়ের মাঠে তাদের বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা। এরপর ২০ তারিখ ভোর ৬টায় পেরুর বিপক্ষে মাঠে নামবে লিওনেল স্কালোনির দল। 

এখন পর্যন্ত ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ১০ ম্যাচে সাত জয় ও এক ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা।

প্রকাশিত বিপিএল ২০২৫ আসরের পূর্ণাঙ্গ সূচি

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২০ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২১ এএম
প্রকাশিত বিপিএল ২০২৫ আসরের পূর্ণাঙ্গ সূচি
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসর শুরু হচ্ছে ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ। আসন্ন আসরকে সামনে রেখে প্রকাশিত হয়েছে বিপিএলের পূর্ণাঙ্গ সূচি।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সূচি প্রকাশ করে সেই সূচির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। 

নতুন আসরের সূচি অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে দুর্বার রাজশাহী। প্রথম দিনে সন্ধ্যা ৬টায় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে রংপুর রাইডার্স ও নবাগত ঢাকা ক্যাপিটালস। 

অন্যান্য আসরের মতো যথারীতি এবারও দিনে দুটি করে ম্যাচ মাঠে গড়াবে। দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।

শুক্রবার প্রথম খেলা মাঠে খেলা গড়াবে দুপুর দেড়টায় আর দ্বিতীয়টি সন্ধ্যা ৭টায়। 

ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ পর্যন্ত চলবে লিগ পর্বের খেলা। প্রথম ৮ ম্যাচ হবে ঢাকায় ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। 

এরপর খেলা হবে সিলেটে ৬ থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১২ ম্যাচ। সিলেট পর্ব শেষে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ১৬ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আরও ১২টি ম্যাচ হবে।

সেখান থেকে পুনরায় ঢাকায় ফিরবে বিপিএল লিগ পর্বের শেষ ১০ ম্যাচসহ প্লে অফ এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়। 

আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি প্লে-অফ পর্বের এলিমিনেটর এবং প্রথম কোয়ালিফায়ার ও ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার অনুষ্ঠিত হবে। আর ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিপিএল ফাইনাল।

সাক্ষাৎকারে শাহেদা আক্তার রিপা এশিয়ান পর্যায়ে ভালো করতে চাই

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২০ এএম
এশিয়ান পর্যায়ে ভালো করতে চাই
ছবি : সংগৃহীত

বয়সভিত্তিক ফুটবলে আলো ছড়ানো শাহেদা আক্তার রিপার প্রথমবারের মতো অভিজ্ঞতা হলো সিনিয়র সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার। প্রথমবারই তিনি পেয়েছেন শিরোপার স্বাদ। কক্সবাজারের উখিয়া থেকে উঠে আসা এই ফরোয়ার্ড খবরের কাগজের মুখোমুখি হয়ে নিজের ও দলের সাফল্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ

খবরের কাগজ: প্রথমবার সাফ খেলেই শিরোপার স্বাদ পেলেন। কেমন লাগছে?

রিপা: সিনিয়র পর্যায়ের সাফ এবারই প্রথম খেললাম আমি। প্রথমবার গিয়েই সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমার জন্য অন্য রকম অনুভূতি, অন্য রকম ভালো লাগার। এই অনুভূতি আমার জন্য সারা জীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

খবরের কাগজ: এবার তো আপনাদের সামনে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ ছিল। কাজটা কতটা কঠিন ছিল?

রিপা: অবশ্যই অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ দুই বছর আগে আপুরা দেশকে প্রথমবার সাফে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। এবার আমাদের জন্য বড় দায়িত্ব হয়ে গিয়েছিল যে, শিরোপাটা যে করেই হোক ধরে রাখতেই হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা খেলেছি। সবাই নিজেদের শতভাগ দিতে পেরেছে বলে আমরা শিরোপাটা নিয়ে আসতে পেরেছি।

খবরের কাগজ: এবার যদিও প্রথম খেললেন। পরের আসরে তো আপনার দায়িত্ব অনেক বেড়ে যেতে পারে। সেই দিক থেকে জানতে চাচ্ছি, কতটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলেন?

রিপা: যেহেতু প্রথমবার সিনিয়র সাফে গিয়েছি, অবশ্যই অনেক ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। অনেক কিছু শিখেছি। আপুরা খেলেছে, দেখেছি তারা কীভাবে খেলে। নতুন একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে।

খবরের কাগজ: ভুটানের বিপক্ষে বদলি হিসেবে খেলা ছাড়া আর কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। এ নিয়ে আক্ষেপ নেই?

রিপা: কোনো আক্ষেপ নেই। আক্ষেপ হবে কেন?

খবরের কাগজ: টুর্নামেন্ট চলাকালে অনেক বিষয় নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। দলে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব আছে বলেও গুঞ্জন চাউর হয়েছিল। এরকম কিছু কি আসলে ছিল?

রিপা: না, না, এরকম কোনো কিছুই নেই। আমরা দলের ভেতরের সবাই জানি, আমরা আসলে কেমন আছি। আমাদের বন্ডিংটা অনেক ভালো। সিনিয়র-জুনিয়র বলে কিছু নেই। আমরা এখানে সবাই একটা পরিবারের মতো। আপুরা বড় বোনদের মতো আমাদের আদর করে।

খবরের কাগজ: যাই হোক, টানা দুবার আপনারা সাফে চ্যাম্পিয়ন হলেন। সামনে লক্ষ্য কি?

রিপা: যেহেতু বাংলাদেশ দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এখন হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। আর শুধু দক্ষিণ এশিয়ার ভেতরে থাকতে চাই না। এশিয়ান পর্যায়ে ভালো করতে চাই।

খবরের কাগজ: ছোট করে আপনার ফুটবলার হয়ে ওঠার গল্পটা একটু বলুন।

রিপা: আমি কক্সবাজারের উখিয়ার মেয়ে। আমার বাড়ির পাশেই খেলার মাঠ। সেখানে ছোটবেলা থেকেই ছেলেদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবে খেলতে খেলতেই বিকেএসপিতে ট্রায়ল দেই। টিকেও যাই। ক্লাস সিক্সে আমি বিকেএসপিতে ভর্তি হই। যাত্রাটা খুব কষ্টের ছিল। সহজ ছিল না, মোটেও। তবে এলাকার সবাই সাহায্য করেছে। সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন আমার একজন স্যার। তার নাম সানাউল্লাহ স্যার। শামসুল আলম সোহাগ স্যারও অনেক হেল্প করেছেন। উনারা দুজন না থাকলে আজকে হয়তো আমি এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না।

খবরের কাগজ: বাবা-মা কতটা খুশি আপনার সাফল্যে?

রিপা: আমার বাবা-মা তো অনেক খুশি। কারণ আমি ছোটবেলা থেকেই যখন খেলতাম, আমাকে আমার বাবা-মা কোনো দিন বাধা দেননি। আমাদের এলাকায় তো খুব বেশি খেলোয়াড় ছিল না। আমাদের গ্রামে মেয়েরা ফুটবল খেলে না বললেই চলে। সেখানে বাবা-মা আমাকে কোনো দিনই খেলতে বাধা দেননি।

খবরের কাগজ: রিপার নিজের কাছে নিজের চাওয়া কী? নিজেকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়?

রিপা: নিজে একজন ভালো ফুটবলার হব, এটাই সবচেয়ে বড় চাওয়া। বিদেশে লিগ খেলতে চাই। এই স্বপ্নটা আমি খুব ছোটবেলা থেকেই দেখি। এ ছাড়া এবার এইচএসসি শেষ করলাম। ইচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। যদি চান্স হয়, তাহলে তো হলোই। না হলে অন্য কোথাও… আসলে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়তে চাই।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের অনেক ‘প্রথম’

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ এএম
আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের অনেক ‘প্রথম’
ছবি : সংগৃহীত

‘যদি দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের এই সিরিজটা খারাপও হয়ে যায় তার মানে এই না যে আমাদের দলটা খারাপ হয়ে গেছে, আমাদের রেকর্ড কিন্তু অনেক ভালো।’

মেহেদী হাসান মিরাজের এই কথাগুলো নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। ২০২৩ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে তার বলা কথাগুলো সেবার সিরিজ হেরে আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। তবে নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সেই মিরাজের কথার প্রতিফলন দেখা যায়নি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হওয়ার দিনে। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে হেরে সিরিজটাও হারিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। যা কি না আফগানদের কাছে ছিল টাইগারদের টানা দ্বিতীয় সিরিজ হার। 

সামর্থ্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মেহেদী হাসান মিরাজকে একটু মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে, ঘরের বাইরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে সংস্করণে যেখানেই প্রথম সিরিজ খেলা হয়েছে সেখানেই বাংলাদেশ হেরেছে। এমনকি ঘরের মাঠে পর্যন্ত প্রথম টেস্টে হেরেছিল বাংলাদেশ। দেরাদুনে ২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণের কথা তো মনেই আছে সবার। ৩ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারেনি সেবার সাকিবরা। অবশ্য মনে করিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই, সেই সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন মিরাজ। সে বছর এশিয়া কাপে দুই দলের প্রথম লড়াইয়ে ১৩৬ রানে হারে বাংলাদেশ। পরে অবশ্য সুপার ফোরের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েসের ব্যাটিংয়ের পর মোস্তাফিজের শেষ ওভারের চমকে ৩ রানের কষ্টার্জিত জয় পায় বাংলাদেশ। 

দুই দলের প্রথম মুখোমুখি লড়াইয়েও হেসেছিল আফগানিস্তান। ২০১৪ সালে ফতুল্লায় এশিয়া কাপে সামিউল্লাহ শিনওয়ারির ৮১ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ২৫৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় আফগানিস্তান, যেখানে ২০০ রান করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এতেই স্পষ্ট যে প্রথম সাক্ষাতেই বাংলাদেশকে নিজেদের কমফোর্ট জোনে নিয়ে এসেছিল আফগানরা। এরপর ব্যাটিং ধসের পর জিয়াউর রহমানের ইনিংস দর্শকদের আনন্দ দিলেও বাংলাদেশ হেরেছিল ৩২ রানে। আগেই যেহেতু ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের কথা চলে এসেছে, এর মানে দাঁড়াল এশিয়া কাপের প্রথম তিন লড়াইয়ের দুটোতেই বাংলাদেশের লজ্জাজনক হার।

রঙিন পোশাকে না হয় আফগানিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে পেরেছে। সাদা পোশাকের ক্রিকেটের খেলায় সদ্য অভিষিক্ত দলটা বাংলাদেশের সামনে আর কতটুকুই বা পারবে? সমর্থকদের মনের এই প্রশ্নের জবাবটা চট্টগ্রামে দুই দলের একমাত্র টেস্টের আগে পাওয়া গেছে আফগানদের তৎকালীন কোচ অ্যান্ডি মোলের কথাতেই ‘বাংলাদেশের প্রতি আমাদের অনেক সম্মান থাকলেও আমরা তাদের ভয় পাই না।’ তার কথার প্রতিফলন দেখা গেছে মাঠে। বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই টেস্ট ২২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হার মেনেছিলেন সাকিব আল হাসানরা। মোহাম্মদ নবীর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখেন রশিদ খানরা। ২০১৯ সালের সেই টেস্ট তাই বিশেষ কিছু আফগানিস্তানের কাছে। 

এবার আরও একবার ফিরে আসা যাক ২০২৩ সালের সেই সিরিজে। চট্টগ্রামে বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই ম্যাচে হারের পরদিন আকস্মিকভাবে আবেগ জড়ানো কণ্ঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দেন তৎকালীন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পরের দিনই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে অবসর ভেঙে ফিরে আসেন তামিম। তবে সিরিজ চলাকালীন তার এমন অপেশাদারি আচরণ দলের ভেতর রীতিমতো প্রভাব ফেলেছিল। পরের ম্যাচে ১৪২ রানের হার। প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ পরাজয়। এই সিরিজ হারলেও বাংলাদেশ তো খারাপ দল হয়ে যায়নি, মিরাজের কথায়তো ছিল তেমনই সুর। কিন্তু আদৌ কি সেই সুযোগটা আছে? 

সর্বশেষ দুই আইসিসি বিশ্বকাপের দুই দলের পারফরম্যান্সের দিকে তাকালেই উত্তর অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যায়। ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল আফগানরা। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও জিততে চলেছিল তারা। কিন্তু আহত ম্যাক্সওয়েলের অতিমানবীয় ডাবল সেঞ্চুরির মনমুগ্ধকর ইনিংসে হেরে যায় আফগানরা। ফলে সেমিতে আর ওঠা হয়নি রশিদ-নবীদের। 

অথচ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জয় ছিল সাকুল্যে দুটি। একটি শ্রীলঙ্কা আর অন্যটি সেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তবে মোহাম্মদ নবী বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের কাছে হারা উচিত হয়নি।’ ধর্মশালায় সেই ম্যাচ জিতে গেলে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল নবীদের। যদিও পয়েন্ট টেবিলে তারা বাংলাদেশের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে ছিল। তবে সেই প্রতিশোধ তারা নেয় সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ দুই দলকেই হারিয়ে জায়গা করে নেয় তারা তাদের স্বপ্নের সেমিফাইনালে।

আফগানিস্তানকে মাত্র ১১৫ রানে আটকে দেওয়ার পর সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিতে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১২.১ ওভারে জয়। কিন্তু সেটি হয়নি সাহসের ঘাটতিতে, এমনকি জয়ের দেখাও বাংলাদেশ পায়নি। ক্ষুদ্র এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও বাংলাদেশ হেরেছিল বৃষ্টি আইনে ৮ রানে। সহজ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। যে ব্যর্থতার কোনো যৌক্তিক জবাব জানা নেই কারোই।

এই হলো আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়কার দৈন্যদশা। ২০২৩ সালে সিরিজ হারের পর পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপে তাদের বিপক্ষে জয় পেলেও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ হতাশ করেছে। যেখানে আফগানিস্তান নজর কেড়েছে গোটা ক্রিকেট বিশ্বের। ২০২২ সালে ফজলহক ফারুকীর পেসে বিভ্রান্ত হয়ে ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য এক জয় পেয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেনের ১৭৪ রানের জুটিতে। সেই সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। অথচ একটু এদিক ওদিক হলেই তিন সিরিজই হাতছাড়া হতে পারত বাংলাদেশের। সেই সিরিজে মিরাজই একপ্রকার বাংলাদেশকে ফিরিয়েছিলেন। আবার ২০২৩ সালে আত্মবিশ্বাসী মিরাজই নিজেদের অবস্থান শক্ত আছে বলেই দাবি করেছিলেন। আফগানিস্তান অবশ্য র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে টপকে যাওয়ায় এখন আর মুখ ফুটে জবাব দেওয়ার অবকাশ নেই।