ঢাকা ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় সংগীত বাজতেই ভয়টা কেটে গেছে

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ পিএম
জাতীয় সংগীত বাজতেই ভয়টা কেটে গেছে
ছবি : সংগৃহীত

অফুরন্ত দমের এক ফুটবলার শামসুন্নাহার সিনিয়র। মূলত ডিফেন্ডার হলেও রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি ফরোয়ার্ডদের বল জোগানের কাজটাও করেন তিনি নিপুণভাবে। বাংলাদেশের টানা দুটি সাফ শিরোপা জয়ে তার রয়েছে অগ্রগণ্য ভূমিকা। দুই আসরেই সবগুলো ম্যাচ খেলেছেন পুরো ৯০ মিনিট। সম্প্রতি খবরের কাগজের মুখোমুখি হয়েছিলেন কলসিন্দুরের কৃতী এই কন্যা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ক্রীড়া প্রতিবেদক তোফায়েল আহমেদ

খবরের কাগজ: আপনি তো নিয়মিতই দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। কিন্তু সব সময় কেমন যেন আড়ালে থেকে যান…

শামসুন্নাহার সিনিয়র: ভাইয়া, এ রকমটা না। আপনি যদি ওই চোখে দেখেন যে আড়ালে আছি, তাহলে আপনার কাছে আড়ালে মনে হবে। আর যদি আপনি ভাবেন, আড়ালে নেই, তাহলে আপনার কাছে এমন মনে হবে না।

খবরের কাগজ: আপনি বিষয়টা আসলে কীভাবে দেখেন। আপনার মনের কথাটা বলুন তো…

শামসুন্নাহার সিনিয়র: আমি বিষয়টা খারাপ চোখে দেখি না। ভালো চোখেই দেখি। সব সময় আড়ালে থাকতেই আমার বেশি পছন্দ। আড়ালে থেকে যদি ভালো কিছু করতে পারি, এটা আমার জন্য ভালো।

খবরের কাগজ: কিন্তু কখনো কখনো খারাপ লাগাও তো কাজ করার কথা। অন্য অনেককে নিয়ে যেমন মাতামাতি হয়। আপনাকে নিয়ে সেটা হয় না…

শামসুন্নাহার সিনিয়র: না-না, এ নিয়ে কোনো খারাপ লাগা কাজ করে না আমার মধ্যে। আমি তো ডিফেন্ডার। আমি যতটুকু জানি, ডিফেন্ডাররা এমনিতেই আড়ালে থাকে।

খবরের কাগজ: এই যে পরপর দুটি সাফ শিরোপা এনে দিলেন দেশকে। দুই আসরেই সবগুলো ম্যাচে খেলেছেন ৯০ মিনিট করে। কেমন লাগছে?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: প্রথমবার খুব উপভোগ করেছি। দ্বিতীয়টা সে রকম না। তবে ভালো লাগছে। আসলে যেকোনো কিছুরই প্রথমবারের স্বাদ আলাদাই থাকে।

খবরের কাগজ: কিন্তু এবার শিরোপা ধরে রাখাটা নিশ্চয়ই অনেক কঠিন ছিল?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: হ্যাঁ, যে রকম স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন, ঠিক একই রকম আমাদের দায়িত্ব ছিল চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখার। আমরা সেটা করতেও পেরেছি। এটাই আনন্দ। 

খবরের কাগজ: কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে এবার?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: এবার ফাইনাল ম্যাচটা একদমই সহজ ছিল না। নেপাল ও ভারতের মধ্যে সেমিফাইনাল ম্যাচটার কথা যদি বলি। ফাইনালের আগে ওটাই শেষ ম্যাচ ছিল। ওই ম্যাচে মাঠের অবস্থা খুব করুণ ছিল। অনেক ঝামেলা হয়েছে। নেপালি দর্শকে পুরো স্টেডিয়ামের গ্যালারি পূর্ণ ছিল। আমাদের ভেতরে একটা ভয় কাজ করেছিল। কারণ ফাইনালেও তো এমন হবে। যেহেতু আমাদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। আমাদের দলে বেশ কজন জুনিয়র খেলোয়াড় ছিল। এ রকম দর্শকের মধ্যে জুনিয়ররা কিন্তু আগে খেলেনি। আমাদের কাছে দ্বিতীয়বার হলেও ওদের কাছে এমনটা প্রথম ছিল। ওদের সঙ্গে আমরা এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছি যে ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এর আগেরবারও আমরা খেলেছি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমরা আছি। তোমরা তোমাদের খেলাটা খেলো।’ এর পরও ভয় কাজ করছিল। কিন্তু যখন মাঠে নামলাম, জাতীয় সংগীত শুরু হলো, তখন অন্য রকম একটা শক্তি এসেছে শরীরে। ভয়টা কেটে গেছে। নেপালি দর্শক যখন চিৎকার করছিল, তখন ভেবেছি তারা আমাদের জন্যই চিৎকার করেছে। আমরা ভালো খেলেছি বলে কিন্তু একপর্যায়ে দর্শক চুপও হয়ে গিয়েছিল।

খবরের কাগজ: নেপালের সাবিত্রা ভান্ডারিও তো বড় হুমকি ছিল। তাকে নিয়ে আপনাদের কী পরিকল্পনা ছিল?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: আমাদের পরিকল্পনা ছিল তার সঙ্গে একজন না একজন সব সময় থাকবে। তাকে একা ছাড়া যাবে না। একা ছাড়লে সেটা আমাদের ডিফেন্ডারদের জন্য বিপদ।

খবরের কাগজ: ফাইনালে শেষ গোলটা তো হলো আপনার থ্রোয়িং থেকে। এই যে অ্যাসিস্ট করা, সব সময় ওভারল্যাপ করে খেলা, এটাই কি আপনার খেলার স্টাইল?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: ২০১৪ সালে আমি প্রথমবার বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে ঢুকি। তখন থেকেই আমি এভাবে খেলে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আর আমি জুনিয়র দলে কিন্তু উইংয়ে (লেফট উইং) খেলতাম। সিনিয়র দলে একটু দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়, তাই ডিফেন্ডার হিসেবে খেলি। আর যেটা বললেন, ওভারল্যাপ করে খেলা, ওইটা আমার হয়ে যায়।

খবরের কাগজ: তার মানে রক্ষণ সামলানোর সঙ্গে সঙ্গে গোল করারও ইচ্ছা কাজ করে?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: গোল করার থেকে গোল করানোর ইচ্ছাটা বেশি কাজ করে আমার।

খবরের কাগজ: সাফ জিতে ফেরায় এখন তো চারদিক থেকে অনেক অভিনন্দন পাচ্ছেন। সামনে আরও ভালো করতে কী চাওয়া থাকবে আপনাদের?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: যেভাবে আমরা এখন আছি, মানে আমাদের একসঙ্গে ক্যাম্প চলছে, এভাবে যদি থাকতে পারি, তাহলে আমাদের নিজেদের জন্য ভালো। দেশের জন্যও ভালো। এভাবে একসঙ্গে ক্যাম্পিংয়ের মধ্যে থাকলে আমরা দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারব, এশিয়ার ভেতর ভালো কিছু করতে পারব। সেই সঙ্গে নিয়মিত বেতনটা যদি আমরা পাই, লিগটা যদি নিয়মিত হয়, তাহলে সেটা আমাদের জন্য ভালো হয়। আরেকটা ব্যাপার, যেকোনো টুর্নামেন্টের আগে আমাদের প্রীতি ম্যাচ থাকা দরকার। এবার যেমন প্রীতি ম্যাচ ছিল না। এ জন্য আমাদের বেশ ভুগতে হয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে যেমন করুণ অবস্থা ছিল আমাদের। যে পাকিস্তানকে আমরা ৬-৭ গোল দিতাম, এবার তাদের সঙ্গে হারতে হারতে ড্র (১-১) করেছি।

খবরের কাগজ: প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হয়নি বলেই ওই ম্যাচটা এত কঠিন হয়েছে বলছেন?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: হ্যাঁ, প্রস্তুতি ম্যাচ হলে আমরা আমাদের ভুলত্রুটিগুলো ধরতে পারতাম, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে পারতাম। পাকিস্তান ম্যাচে যেমন ভুলত্রুটি হয়েছে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচে সেটা আর হয়নি। ভালো ভালো দলের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলে যেতে পারলে পাকিস্তানের সঙ্গে হয়তো অমনটা হতো না। আর এখানে একটা মিসটেকও ছিল।

খবরের কাগজ: কী সেটা?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: কোচের বিষয়টা…। কোচ একটু উল্টাপাল্টা কাজ করেছেন। জুনিয়রদের নামিয়েছেন। ওরা ভালো খেলেনি এমনটা না। ওরাও সুপার খেলোয়াড়। তবে অভিজ্ঞতাটা দরকার ছিল। কারণ এটা সিনিয়র টিম, এটা জুনিয়র টিম ছিল না। পরে আমরা কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছি। এরপর তো দ্বিতীয় ম্যাচে দেখেছেন, ম্যাচ কীভাবে ঘুরে গেছে।

খবরের কাগজ: তার মানে ভারত ম্যাচের আগে সিনিয়র খেলোয়াড়দের খেলানো নিয়ে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আপনাদের আলোচনা হয়েছে?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: হ্যাঁ, হ্যাঁ। আমরা এ নিয়ে কথা বলেছি ওনাদের সঙ্গে। ওনারা তো ওনাদের কাজ করবেই। কিন্তু আমরা আমাদের কথাটা বলেছি। কারণ দেশ আমাদের। বাটলার (প্রধান কোচ পিটার বাটলার) তো সব সময় থাকবেন না। আমাদের দায়িত্বটা আমাদের নিতে হবে।

খবরের কাগজ: ওনি নাকি আপনাদের চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছিলেন?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: হ্যাঁ, আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েই খেলেছি সত্যি কথা। আমরা আমাদের নিজেদের জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য খেলেছি।

খবরের কাগজ: ভারতের বিপক্ষে সেই চ্যালেঞ্জ জয়ের পরই তো সব বদলে গেল…

শামসুন্নাহার সিনিয়র: আমাদের টার্গেট ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে যে ভুলগুলো হয়েছে, সেগুলো অতিক্রম করে ভালো কিছু করার। ভারত ম্যাচের আগে আমরা নিজেরা কথা বলেছি, যেভাবেই হোক ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। এটা আমরা করতে পেরেছি।

খবরের কাগজ: একটু পেছনে ফিরে যাই। আপনার উঠে আসার কথাটা ছোট করে বলুন?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: ২০১২ সালে বঙ্গমাতা আন্তপ্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে আমার খেলা শুরু। পরিবার থেকে তখন খুব একটা সাপোর্ট দিত না। আমার আব্বু শুধু আমাকে সাপোর্ট করতেন। সানজিদা, তহুরারা খেলত, আমি শুধু বসে বসে দেখতাম। আমার খেলার ইচ্ছা ছিল, আগ্রহ ছিল। পরে আমাদের কলসিন্দুরের মফিজ স্যারকে (মজিফ উদ্দিন) বলেছি, আমি খেলতে ইচ্ছুক। আমার আব্বু আমাকে নিয়ে যান তার কাছে। এভাবেই শুরু। আমাদের গ্রামের অনেক মানুষই নানা ধরনের কথাবার্তা বলত তখন। সেগুলো অতিক্রম করেই এই জায়গায় এসেছি। ২০১৪ সালে প্রথমবার বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে ডাক পাই। ২০১৬ সালে প্রথমবার সিনিয়র সাফে খেলি। সেবার অনেক ছোট ছিলাম। এগুলো নিয়ে সাংবাদিকরা অনেক কথা বলেছেন, যে এত ছোট মেয়ে কীভাবে খেলবে (হাসি)। কিন্তু আমাদের তখনকার কোচ ছোটন স্যার (গোলাম রব্বানী ছোটন) বলেছিলেন, না পারবে ওরা (হাসি)।

খবরের কাগজ: তো, মা-বাবা কতটা খুশি আপনার সাফল্যে?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: মা-বাবা অনেক খুশি। ফাইনালে আমরা যখন একটা গোল খেয়েছি অনেক মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল তাদের। আমাদের থেকে ওনারাই বেশি উত্তেজিত থাকেন।

খবরের কাগজ: কতজন ভাইবোন আপনারা?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: আমরা চার বোন, এক ভাই। আমি চার নম্বর। আমার বাবা কৃষিকাজ করেন। মা গৃহিণী।

খবরের কাগজ: শেষ প্রশ্ন। শামসুন্নাহার ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

শামসুন্নাহার সিনিয়র: অবশ্যই সব ফুটবলারের স্বপ্ন থাকে, ভালো খেলবে। ইউরোপের লিগে খেলবে। নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে। আমিও এমন স্বপ্ন দেখি।

ফ্যাবের সংবর্ধনায় সিক্ত মনি

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪২ পিএম
ফ্যাবের সংবর্ধনায় সিক্ত মনি
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় সাইফুর রহমান মনিকে সংবর্ধনা দিয়েছে ফ্যাব। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় সাইফুর রহমান মনিকে সংবর্ধনা দিয়েছে ফুটবর্লাস অ্যাসোসিয়েশন অব বিকেএসপি (ফ্যাব)।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে সংগঠনটি। একঝাঁক সাবেক ফুটবলারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি বর্ণিল হয়ে উঠে।

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব, মামুনুল ইসলাম, জাহিদ হাসান এমিলির মতো ফুটবল তারকারা উপস্থিত ছিলেন এতে। 
ছিলেন সাবেক ফুটবলার ও বাফুফের সদস্য গোলাম গাউস, ইকবাল হোসেন, সাখওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহীন, মঞ্জুরুল করিম, কামরুল হাসানসহ ফুটবল সংশ্লিষ্ট অনেকেই। সব মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি ফুটবলার ও সংগঠকদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল।

গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বাফুফে নির্বাচনে মনিকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। তিনি ও মো. এখলাছ উদ্দীন সমান ৬১টি করে ভোট পেয়ে ১৫তম সদস্য হওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। গত ৩০ নভেম্বর তাদের দুজনের মধ্যে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে এখলাছ উদ্দীনকে ৫৬-৫১ ভোটে হারান মনি।

বর্তমানে চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচের দায়িত্বে থাকা মনি আগেও দুইবার বাফুফে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু জয়ী হতে পারেননি। এবারের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়ে জয়ী হয়েছেন। তাইতো এই লড়াইয়ে যারা পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে অনুষ্ঠানে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেন মনি। বলেন, ‘এই জার্নি এতো সহজ ছিল না। আমি খালি পকেটে নির্বাচন শুরু করি। কারণ আমার বিশ্বাস ছিল, যারা ডেলিগেটেড আছে, তাদের সঙ্গে আমার ১২ বছরের সম্পর্ক। উনারা নিশ্চয়ই আমার ওপর আস্থা রাখবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পরিবেশ-পরিস্থিতি এমন ছিল, আমার নির্বাচন করাটাই অনেক বেশি কঠিন হয়ে গিয়েছিল।’

মনি বলে যান, ‘এর মধ্যেই আমি চেষ্টা করেছি, নির্বাচনটা যেন করতে পারি। এখানে উপস্থিত মঞ্জু ভাই, শাহিন ভাই, হিল্টন ভাই, ইকবাল ভাই, গাউস ভাই। উনারা আমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন। আমি যতই ধন্যবাদ দেই বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, এটা উনাদের ছোট করা হবে। আমি সারা জীবন মনে রাখবো যে আমি তাদের কারণে এই জায়গায় আসতে পেরেছি। আমি মনে করি না এটা শুধু আমার জয়। এটা সমগ্র ফুটবলের জয়।’

বিকেএসপির সাবেক ছাত্রদের মধ্যে মনিই প্রথম বাফুফে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সেটাও অনেক বারের প্রচেষ্টায়। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ছাত্র, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল তার বক্তৃতায় মনিকে যোদ্ধা বলে অবিহিত করে বলেন, ‘মনি ভাই সত্যি যোদ্ধা। ফুটবলে দেখবেন অনেক দল হারতে হারতে একটা পর্যায়ে ঘুরে দাঁড়ায়। মনি ভাই ঠিক তেমনই হাল না ছেড়ে লড়াই করে গেছেন এবং শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়ে ছেড়েছেন।’

ফ্যাবের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘১৯৮৬ সাল থেকে আজকে ২০২৪, বিকেএসপি থেকে মনির আগে কোনো ক্যাডেট এখন পর্যন্ত ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারেননি। মনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি, এটার সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছেন। মনিকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আমরা নিজেরাও খুব খুশি। ফ্যাবের সদস্যরা এবং বাফুফের সদস্যরা যারা এসেছেন, এই যে একটা সেতু বন্ধন, এটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা এতে খুশি এবং গর্বিত।’

সিরিজ হাতছাড়া মেয়েদের

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ পিএম
সিরিজ হাতছাড়া মেয়েদের
ছবি: সংগৃহীত

ফরম্যাট বদলেছে, ভেন্যুও। তাতেই যেন বিবর্ণ বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। কিছুদিন আগেও যারা শাসন করেছে আইরিশ মেয়েদের, তাদের মাথাই এখন নত প্রতিপক্ষের কাছে। সিলেটে টানা দুই ম্যাচ হারে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হাতছাড়া করেছে টাইগ্রেসরা। আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্বাগতিকদের হার এসেছে ৪৭ রান ব্যবধানে। প্রথম ম্যাচ হেরেছিল ১২ রানে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৪ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় আয়ারল্যান্ড দল। জবাবে ১৭.১ ওভারে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট জয় বাংলাদেশ দল। একই ভেন্যুতে আগামী সোমবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচেই জয় তুলে আইরিশদের ধবলধোলাইয়ের লজ্জা দিয়েছিল টাইগ্রেসরা। তারাই এখন ছোট সংস্করণের খেলায় ধবলধোলাই হওয়ার শঙ্কায়। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে লড়াই করলে আজ বিন্দুমাত্র লড়াই দেখাতে পারেনি নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।

লক্ষ্য তাড়ায় মাত্র ২২ রানেই ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলে বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন শারমিন আক্তার এবং স্বর্ণা আক্তার। দুজনের ৩৮ রানের প্রতিরোধ ভাঙতেই ফের ব্যাটিং ধস। মাত্র ১৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন শারমিন। দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছানো অপর দুই ব্যাটার হলেন- দিলারা আক্তার (১০) এবং স্বর্ণা (২০)।

৩৩৭ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়ার লিড ১৫৭

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
৩৩৭ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়ার লিড ১৫৭
ছবি : সংগৃহীত

৩৩৭ রানে অলআউট হয়ে ১৫৭ রানের লিড দাঁড় করিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডিলেড টেস্টের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনের তৃতীয় ওভারেই অলআউট হয়েছে অজিরা।

ভারত তাদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৮০ রানে অলআউট হওয়ায় তাদের চেয়ে ১৫৭ রান বেশি করে এগিয়ে আছে অজিরা।

মোহাম্মদ সিরাজ ও জাসপ্রিত বুমরাহ’র দাপুটে বোলিংয়ের পরও প্রায় সাড়ে তিন শ এর কাছাকাছি দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে। দুজনে শিকার করেছেন সমান ৪টি করে উইকেট। 

১৫৭ রানের লিড দাঁড় করালেও এর অধিকাংশ রান এসেছে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ট্রাভিস হেডের শতকে। ভারতকে সামনে পেলেই যেন তার ব্যাট হয়ে ওঠে শক্তিশালী। আউট হওয়ার আগে খেলেন ১৪০ রানের অনবদ্য ইনিংস। 

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেছেন মারনাস লাবুশানে। ৩৯ রান করেছেন নাথান ম্যাকসুয়েনি। উসমান খাজা, ম্যাকসুয়েনি, স্মিথ ও কামিন্সকে শিকার করেন বুমরাহ।

অন্যদিকে, সর্বোচ্চ ১৪০ রান করা ট্রাভিস হেড, ক্যারি, স্টার্ক ও বোল্যান্ডকে ফেরান মোহাম্মদ সিরাজ। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও নীতিশ রেড্ডি ১টি করে।

ডিএসপি সিরাজের ১৮১ কিলোমিটার গতির বল নিয়ে চলছে চর্চা

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
ডিএসপি সিরাজের ১৮১ কিলোমিটার গতির বল নিয়ে চলছে চর্চা
ছবি : সংগৃহীত

ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার পিঙ্ক বল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা চলমান। সে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের একটি বলের গতি নিয়ে হচ্ছে ব্যাপক আলোচনা। স্কোরকার্ডের নীচে গতি দেখানো হয়েছে ১৮১.৬ কিলোমিটার।

নেটিজেনদের মধ্যে অনেক আলোচনা হলেও মূলত বেশিরভাগই বিষয়টিকে নিয়ে মেতেছেন কৌতুকে। আদতে ভুলটা করেছে বলের গতি নির্ণয়কারী প্রযুক্তি স্পিডমিটার। 

প্রযুক্তিগত ভুলের কারণেই সিরাজের সেই বলের গতি দেখিয়েছে ১৮১.৬ কিলোমিটার। সাধারণত মোহাম্মদ সিরাজ ১৪০ এর আশেপাশে এবং এর ওপরে বল করে থাকেন। তার গতি সম্পর্কে সমর্থকদের ধারণা থাকাইয় হয়েছে এমন কৌতুক ও ঠাট্টা। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬১.৩ (১০০.২৩ মাইল) কিলোমিটার গতিতে বল করার রেকর্ড রয়েছে পাকিস্তানি কিংবদন্তি শোয়েব আখতারের। ২০০৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই রেকর্ড গড়েন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মজা করে অনেকে লিখেছেন, ‘ডিএসপি সিরাজকে স্পিডমিটারও ভয় পেয়েছে।’

সিরাজের পুলিশের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করে অন্য আরেকজন লিখেছেন, ‘একমাত্র ডিএসপি সিরাজই এত জোরে বোলিং করতে পারেন।’ 

সমতা ফেরানোর ম্যাচেও ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৩ পিএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৪ পিএম
সমতা ফেরানোর ম্যাচেও ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
ছবি : সংগৃহীত

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়ারল্যান্ড নারী দল। মুদ্রা নিক্ষেপে দ্বিতীয় ম্যাচেও টস হেরেছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। 

প্রথম ম্যাচে টস হারলেও জেতার পথে থাকা নিগারের দল হঠাৎ ছন্দপতনে ম্যাচ হেরেছে ১২ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচটি তাই বাংলাদেশের জন্য সমতা ফেরানোর লড়াই। ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে প্রথম ম্যাচে হারিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আইরিশরা।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়। 

বাংলাদেশ দল তিনটি পরিবর্তন এনেছে একাদশে। ঋতু মনি ও ফারিহা তৃষ্ণার পরিবর্তে একাদশে এসেছেন ফাহিমা খাতুন ও সাজেদা আক্তার মেঘলা।

অন্যদিকে, দুটি পরিবর্তন এনেছে আয়ারল্যান্ডও। উনা রেমন্ড-হোয়ে ও আভা ক্যানিংয়ের পরিবর্তে একাদশে এসেছেন রেবেকা স্টকেল ও আলনা ড্যালজেল।

বাংলাদেশ একাদশ

দিলারা আক্তার, শারমিন আক্তার, সোবহানা মোস্তারি, নিগার সুলতানা (অধিনায়ক), তাজ নেহার, ফাহিমা খাতুন, স্বর্ণা আক্তার, নাহিদা আক্তার, জাহানারা আলম, সাজেদা আক্তার মেঘলা, জান্নাতুল ফেরদোস।

আয়ারল্যান্ড একাদশ

গ্যাবি লুইস (অধিনায়ক), অ্যামি হান্টার (উইকেটকিপার), ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট, লিয়াহ পাল, লোরা ডেলানি, রেবেকা স্টকেল, সারাহ ফোর্বস, আর্লেন কেলি, আলনা ড্যালজেল, ফ্রেয়া সার্গেন্ট, অ্যাইমি ম্যাগুইয়ার।