ঢাকা ২৩ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

­­কিশোর বয়সে আত্মহত্যার প্রবণতা

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০১:২৯ পিএম
­­কিশোর বয়সে আত্মহত্যার প্রবণতা

আত্মহত্যা হচ্ছে নিজেকে নিজে হত্যা করা। মানসিক রোগ বা অন্য কোনো কারণে নিজের জীবনকে শেষ করে দেওয়া। আত্মহত্যা দুই ধরনের, নির্ধারিত বা পরিকল্পিত, যা সাধারণত বিষণ্নতাসহ বিবিধ মানসিক রোগের কারণে হয়ে থাকে। আত্মহত্যার আরেকটি ধরন হচ্ছে ইমপালসিভ বা হঠকারী আত্মহত্যা। এটা সাধারণত আন্তব্যক্তিক সম্পর্কের টানাপড়েন (ইন্টার পারসোনাল কনফ্লিক্ট) থেকে হয়। স্টামফোর্ড চিলড্রেন্স হেলথ অবলম্বনে লিখেছেন ফখরুল ইসলাম

পৃথিবীতে প্রতিবছর ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ আত্মহত্যা। বিভিন্ন গবেষকের প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যার শিকার। সে হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ২৮ জন আত্মহত্যা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট আত্মহত্যাকারীদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী আর এদের বেশির ভাগের বয়স ১১ থেকে ২৫-এর মধ্যে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী এক বা একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।

আত্মহত্যা কেন?
কেন মানুষ আত্মহত্যা করে? এসব মানুষের কাছে যাপিত জীবনটি কেন বোঝা হয়ে দাঁড়ায়- এ প্রশ্ন নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোচিকিৎসকদের গবেষণার শেষ নেই। নিঃসহায় হওয়ার যাতনা আর আশাহত হওয়ার বেদনা থেকে রেহাই পেতে আত্মহননের পথ বেছে নেয় কেউ কেউ। কিন্তু মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে মুক্তির স্বাদ যারা পেতে চায়, তারা তো আসলে পরাজিত হয় নিজেরই কাছে।

টিনএজ আত্মহত্যা কেন?
বিষণ্নতা, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার ইত্যাদি রোগ আত্মহত্যার অন্যতম প্রধান কারণ। আর এই রোগগুলো বেশির ভাগ সময়ই টিনএজ বা তরুণ বয়সে দেখা দেয়। আবেগ নিয়ন্ত্রণ, আইডেন্টিটি ক্রাইসিস ইত্যাদি কারণে ইন্টারপারসোনাল কনফ্লিক্ট হয়। ফলে টিনএজারদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।

এদের মধ্যে মাদকে বেশির ভাগ আসক্তি। ইন্টারনেট আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপরিমিত, অযৌক্তিক ব্যবহার। পড়ালেখা, পারিবারিক সম্পর্ক, প্রেমের জটিলতা। প্রেম আর পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া। শৈশব বা কৈশোরে শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার বা উত্ত্যক্ত হলেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। সামাজিক দক্ষতা খানিকটা কম থাকলে, মানসিকভাবে পীড়িত হলে ও মানহানিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় অনেকে। টিনএজারের মধ্যে যাদের নিজের ক্ষতি করার প্রবণতা (হাত-পা কাটা, বেশি বেশি ঘুমের ওষুধ খাওয়া, হাত-পা পোড়ানো) থাকে বেশি, তারা আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।

পরিবারে যদি কারও আত্মহত্যার ইতিহাস থাকে, তবে অন্য সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় না হলে, সমাজ ও পরিবার যথেষ্ট সহায়ক না হলে বা বিচ্ছিন্ন পরিবারের সদস্য হলে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে।

যাদের ছোটবেলা থেকে সিদ্ধান্ত নিতে শেখানো হয়নি, যারা দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান নিজে নিজে করতে অপারগ, তারা সহজেই হতাশ হয়ে পড়ে এবং আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে থাকে। প্রচারমাধ্যমে আত্মহত্যার ঘটনাকে মহিমান্বিত করা হলে, আত্মহত্যাকারীকে মহান বানিয়ে তাকে অত্যধিক হাইলাইট করা হলে, আরেকজনের মধ্যে ‘মরে গিয়ে মহৎ’ হওয়ার চেষ্টা বা ‘কাউকে শায়েস্তা করতে হলে মরতে হবে’- এমন মনোভাব থেকে আত্মহত্যা ঘটে থাকে।

যৌন পরিচয় নিয়ে যাদের মধ্যে টানাপড়েন আছে- যারা ট্রান্সজেন্ডার, ট্রান্স সেক্সুয়াল বা যাদের যৌন আচরণ আর বিশ্বাস খানিকটা আলাদা (এলজিবিটি), তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকে।

টিনএজ আত্মহত্যা: কিছু ইঙ্গিত
আত্মহত্যার আগে সব ক্ষেত্রে না হলেও বেশির ভাগ সময়ই আত্মহত্যাপ্রবণ কিশোর-কিশোরী কিছু ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। মা-বাবা, প্রিয়জন আর শিক্ষকরা যদি এই ইঙ্গিতগুলো আগে ধরতে পারেন, তবে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

সাধারণ কথোপকথনে যারা অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রায়ই মৃত্যুর কথা বলে, মরে যেতে চায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মৃত্যু আর আত্মহত্যা নিয়ে নিজের ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করে। আত্মহত্যা বা মৃত্যুবিষয়ক কবিতা-গান বেশি বেশি লেখা, শোনা বা পড়া। প্রায়ই হাত-পা কাটে, ঘুমের ওষুধ বেশি খায়। বিষণ্নতার লক্ষণ (মনমরা হয়ে থাকে, সব কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে, নিজেকে সব বিপর্যয়ের জন্য দোষী মনে করে)।

মাদকাসক্তির লক্ষণ (চিন্তা আর আচরণের পরিবর্তন, রাতে জেগে থাকা, দিনের বেলা পর্যন্ত ঘুম, মিথ্যা বলা, টাকার চাহিদা বেশি, আগ্রাসী আচরণ করা ইত্যাদি)। বন্ধুবান্ধব, পরিবার থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়, সামাজিকতা এড়িয়ে চলে।

নিজের পছন্দের জিনিসগুলো ভাই-বোন বা বন্ধুদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে থাকা। পড়ালেখা, খেলাধুলা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেওয়া, ঘুমের সমস্যা দেখা দেওয়া, কোনো কাজে মনোযোগ দিতে না পারা।

টিনএজারদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে করণীয়
মানসিক রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা: বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়াসহ নানাবিধ মানসিক রোগের দ্রুত শনাক্তকরণ ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারলে আত্মহত্যা বহুলাংশে কমানো যায়। মানসিক রোগের অপচিকিৎসা বন্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। যেকোনো ধরনের মানসিক রোগ বা আত্মহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। কাউন্সেলিং আর প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।

আত্মহত্যার উপকরণের সহজপ্রাপ্তি রোধ করা: লাইসেন্সের মাধ্যমে কীটনাশকের বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং কৃষকের বাড়িতেও তা এমন জায়গায় রাখতে হবে, যাতে সহজে কেউ এসবের নাগাল না পায়। সেই সঙ্গে প্রেসক্রিপশন ছাড়া সব ধরনের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করার কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।

মিডিয়ার ভূমিকা পরিবর্তন: আত্মহত্যার কৌশল ও মাধ্যম নিয়ে ফলাও করে পত্রিকায় বা টিভিতে সংবাদ প্রচার হলে, আত্মহত্যাকারীকে মহিমান্বিত করা হলে পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যার হার বেড়ে যায়। আত্মহত্যার সংবাদ মিডিয়ায় কীভাবে প্রকাশিত বা প্রচারিত হবে, সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি নীতিমালা রয়েছে, যা মেনে চলা সব প্রচারমাধ্যমের জন্য জরুরি।

স্কুল মেন্টাল হেলথ: প্রতিটি স্কুল, কলেজে মানসিক নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার একটি ব্যবস্থা করা উচিত। জেলার মেডিকেল কলেজ থেকে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি টিম নিয়মিত জেলার সব স্কুল-কলেজ পরিদর্শন করবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মানসিক রোগ শনাক্তে দক্ষ হয়ে উঠবেন। শিক্ষার্থীর সঙ্গে কী ধরনের আচরণ শিক্ষকরা করবেন, সে বিষয়টি শিক্ষক প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
অভিভাবকদের প্রশিক্ষণ: প্রশিক্ষণ প্রয়োজন মা-বাবারও। শুধু জিপিএ-৫ আর ভালো ফলের জন্য সন্তানকে চাপ না দিয়ে তাকে সামাজিকভাবে দক্ষ হতে সহায়তা করতে হবে। সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও যে জীবনের অনুষঙ্গ, তা তাদের বোঝাতে হবে। মা-বাবাদের উচিত, নিজেদের জীবনেও নৈতিকতা আর সততার চর্চা অব্যাহত রাখা।

ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণির প্রতি বিশেষ সহায়তা: মাদকাসক্ত ব্যক্তি, মানসিক রোগী, অভিবাসী, বেকার ও সাংস্কৃতিকভাবে শ্রেণিচ্যুতদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। এ কারণে তাদের প্রতি বিশেষ সহায়তা কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন। যেসব টিনএজারের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকি রয়েছে, তাদের একা থাকতে না দেওয়া।

পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন বৃদ্ধি: নানা কারণে ভাঙছে পারিবারিক কাঠামো আর কমছে সামাজিক বন্ধন। পারিবারিক বন্ধন বাড়ানো, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, অনেকে মিলে খেলা যায় এমন খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে ধর্মাচরণ মেনে চললে আত্মহত্যার প্রবণতা কমানো যায়।

সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: বিভিন্ন ধর্মে ও সংস্কৃতিতে আত্মহত্যাকারী বা আত্মহত্যার চেষ্টাকারীর পরিবার সামাজিকভাবে হেয় হয়। এ কারণে যাদের মধ্যে আত্মহত্যার ইচ্ছা আছে, তারা কোনো সাহায্য নিতে এগিয়ে আসতে দ্বিধাবোধ করে। ফলে বাধ্য হয়ে একসময় আত্মহত্যা করে ফেলে। যদি আত্মহত্যার বিষয়ে এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটিয়ে সবাইকে বিশ্বাস করানো যায় যে আত্মহত্যার ইচ্ছা একটি ভুল মানসিক প্রক্রিয়া এবং এ থেকে বাঁচার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন, তবে অনেক ক্ষেত্রেই আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সার্বক্ষণিক বিশেষ পরামর্শসেবা: জাতীয় পর্যায়ে সার্বক্ষণিক টেলিফোনে সাহায্য পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। কারও মধ্যে আত্মহত্যা করার ইচ্ছা জন্মালে বা জীবনে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটলে, সে যেন এই বিশেষ নম্বরগুলোয় ফোন করে সুপরামর্শ পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

জাহ্নবী

 

টিনএজ বয়সে হয়ে উঠুন উপস্থাপক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
টিনএজ বয়সে হয়ে উঠুন উপস্থাপক

টিনএজ বয়সে অনেকের উপস্থাপনার আগ্রহ তৈরি হয়। এই বয়সে যারা উপস্থাপনা শুরু করতে চান, তাদের কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন অনুষ্ঠানের শুরুটা যদি চিত্তাকর্ষক না হয়, তাহলে দর্শক বা অতিথি সহজেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। অনুষ্ঠানের শুরু সুন্দর করার ক্ষেত্রে উপস্থাপকের ভূমিকাই মূল। নিখুঁত অনুষ্ঠানের জন্য চাই দক্ষ একজন উপস্থাপক। ভালো একটা স্ক্রিপ্ট আর পূর্বপ্রস্তুতির পাশাপাশি কিছু উপস্থাপনা কৌশল অবলম্বন করলে একটা অনুষ্ঠান সার্থক হয়ে ওঠে। লিখেছেন ফারজানা আলম

দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করা
অনুষ্ঠানের শুরুতেই যদি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার মতো কোনো কিছু করা যায়, তবে বাকি অনুষ্ঠান ভালো যাওয়ার একটা পাকাপোক্ত সম্ভাবনা তৈরি হয়। ‘দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করছি’- এ ধরনের কথা না বলে এমন কিছু করা, যেন দর্শক নিজ থেকেই কৌতূহলী হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, অনুষ্ঠানের সঙ্গে যায় এমন একটা মজার কৌতুক দিয়ে শুরু করা যেতে পারে অথবা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একটা সংক্ষিপ্ত ভিডিও দিয়ে। দর্শক বিনোদন পেলেই ধরে নিন আপনি একটা সুন্দর অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত!

শ্রোতাদের কল্পনা করতে বা ভাবতে দেওয়া
একজন মানুষের মস্তিষ্ক যখন সরব থাকে, তার মনোযোগ আকর্ষণ করাও সহজ হয়। যদি অনুষ্ঠানের শুরু করা যায় একটা কল্পনা দিয়ে, তাহলে কিন্তু মন্দ হয় না। এক্ষেত্রে হয়তো আপনি অনুষ্ঠানের থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটা ‘কেমন হতো যদি অমুক ব্যাপারটা এমন না হয়ে তেমন হতো?’- জাতীয় প্রশ্ন দিয়ে শুরু করতে পারেন। তাহলে আপনার দর্শকও স্বাভাবিকভাবেই আপনার কল্পনা করা পরিস্থিতিটা নিজেরা কল্পনা করা শুরু করে দেবে। ব্যাস, পেয়ে গেলেন একসঙ্গে অনেক দর্শকের মনোযোগ।

ভবিষ্যৎ বা অতীত দিয়ে শুরু করতে পারেন
রাজনীতিবিদদের বক্তৃতায় এই ব্যাপারটি অনেক লক্ষ করে থাকবেন। তারা অতীতে কোনো খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে বর্তমানে এসে পৌঁছেছেন অথবা ভবিষ্যতে কী কী সাফল্য অর্জন করবেন এমন কথা দিয়ে শুরু করেন। মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে এটি হতে পারে আপনার মাধ্যম! উদাহরণস্বরূপ ধরুন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে আপনি আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান উল্লেখের মাধ্যমে শুরু করতে পারেন। অথবা মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সমৃদ্ধ করতে কীভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে বলতে পারেন।

প্রবাদ অথবা সংগতিপূর্ণ কবিতার লাইন
অনুষ্ঠান শুরুর বাক্য হিসেবে কবিতার লাইন অথবা কোনো প্রবাদ ব্যবহার করা নতুন কিছু নয়। কবিতার লাইন প্রাসঙ্গিক হলে অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য অনেকাংশে বেড়ে যায়। আপনি যদি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্লাইড ব্যবহার করেন, তাহলে বলার সময় স্লাইডেও লাইনগুলো তুলে দিতে পারেন। এটি দর্শককে বুঝতে, কল্পনা করতে সাহায্য করবে।

গল্প অথবা ঘটনা দিয়ে শুরু করা
এটা অনেকটা প্রথম কৌশলের মতোই। এখানেও আপনার মূল কাজ দর্শককে আপনার ভাবের জগতে নিয়ে যাওয়া। অনুষ্ঠানের মূল ধারণা আর তাৎপর্য বোঝার ক্ষেত্রে কাজে আসবে এমন একটা সত্যিকার অথবা কাল্পনিক গল্প দিয়ে আপনি শুরু করতে পারেন। গল্প কিন্তু মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করার একটা ভালো হাতিয়ার!

রসিকতার মধ্য দিয়েও গল্প বলা যায়।

অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা থাকলে সেটা শুরুতে বলার চেষ্টা করতে পারেন।

নিজের অথবা দর্শকদের জীবন নিয়ে গল্প বলা
শ্রোতারা গল্প শুনে উপভোগ করেন, এটা তো আমরা জানলামই। আর গল্পটির সঙ্গে যখন দর্শক-শ্রোতা নিজের জীবনের মিল পাবেন, তখন গল্পটি হয়ে উঠবে আরও অসাধারণ সুন্দর। উপস্থাপক হিসেবে আপনার নিজের কোনো ঘটনা অথবা দর্শকদের জীবনের সঙ্গে মিলে যায় এমন কোনো ঘটনা দিয়ে শুরু করতে পারেন। এতে করে দর্শকের সঙ্গে আপনার একটা সম্পর্ক তৈরি হবে অনুষ্ঠানের শুরুতেই।

দর্শকদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা
এটা অনুষ্ঠান শুরু করার আরেকটি সুন্দর উপস্থাপনা কৌশল। সাধারণত সেশন জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোয় এই পদ্ধতি ব্যবহার করেই সবসময় শুরু করা হয়। এ ছাড়া যেকোনো অনুষ্ঠান শুরু করার সময় প্রশ্ন করলে অনুষ্ঠানে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণ থাকে।

পরিসংখ্যানে শুরু!
আপনি যদি আপনার অনুষ্ঠানের একটি খুব অর্থপূর্ণ শুরু চান এবং বুঝতে না পারেন কীভাবে উপস্থাপনা শুরু করতে হয়, তবে পরিসংখ্যান দিয়ে শুরু করা হতে পারে সবচেয়ে ভালো অপশন। মনে করুন আপনার অনুষ্ঠান স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। আপনি শুরু করতে পারেন আপনার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি জরিপের মাধ্যমে। এতে করে অনুষ্ঠানে একটা ভাবগম্ভীরতা আসবে, পাশাপাশি দর্শকের মনোযোগও আকৃষ্ট হবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে যেন খুব কঠিন কোনো উপাত্ত চলে না আসে, যা দর্শকদের বুঝতে সমস্যা হয়।

উপস্থাপনায় নতুন হলে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন
উপস্থাপনায় নতুন হলে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। সবার আগে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। আর মনে রাখতে হবে আপনি কোন ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন। একটা অনুষ্ঠানে অনেক ধরনের মানুষ থাকতে পারে। আপনার কথা যেন সবারই বুঝতে সুবিধা হয়। একটা কথা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, সহজ যেকোনো কিছুই সুন্দর। আপনার বলার বিষয় কঠিন হলেও, আপনি কত সহজে সেটাকে উপস্থাপন করতে পারছেন, এটা জরুরি। উপস্থাপনার সময় মাথায় অনেক ধরনের চাপ থাকতে পারে, অনেক দায়িত্ব নিয়ে বুঝে শুনে কথা বলতে হয়। কিন্তু সহজ-সাবলীলতা একবার আয়ত্ত করে ফেলতে পারলে পুরো ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যায়।

অনেক অনুষ্ঠানেই উপস্থাপক অতিথির সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। অনেক সময় দেখা যায় উপস্থাপক কিংবা দর্শকের কথার বিপরীতে অতিথি একটা অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়ে যান। একজন উপস্থাপক হিসেবে আপনার দায়িত্ব হচ্ছে এটা নিশ্চিত করা যে, আপনার অতিথি যেন অপ্রীতিকর অবস্থায় না পড়েন এবং কোনো অবস্থাতেই অপমানিত বোধ না করেন।

অতিথি যেমন অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়তে পারেন, তেমনি আপনিও যেকোনো সময় একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন। কখনো হয়তো অপমানিত বোধ করতে পারেন। একজন সেরা উপস্থাপক হিসেবে আপনার কাজ হবে যতটা সম্ভব ওই পরিস্থিতিকে হাসিমুখে এড়িয়ে যাওয়া। যদি তা একান্তই সম্ভব না হয় তখন অবশ্য আলাদা ব্যাপার! তখন আপনার অন্য কৌশল অবলম্বন করতে হবে। তবু কোনো অবস্থাতেই অনুষ্ঠান ভণ্ডুল হতে দেওয়া যাবে না। এই ব্যাপারে আপনার ধৈর্য কম থাকলে উপস্থাপনার দিকে পা না বাড়ানোই ভালো!

আপনার যদি কোনোভাবে মনে হয় আপনার ধৈর্যধারণক্ষমতা কম, তাহলে উপস্থাপনা আপনার জন্য নয়। সব ক্যারিয়ারেই কমবেশি ধৈর্যের প্রয়োজন হয়, কিন্তু উপস্থাপনার ক্ষেত্রে এটা অপরিহার্য। উপস্থাপনার সময় যেহেতু সরাসরি অন্য মানুষদের সংস্পর্শে আসা হয়, সেহেতু অনেক ধরনের কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে। যেমন ধরুন, কোনো একটা অনুষ্ঠানে একজন দর্শক আপনাকে অকারণে একটা বিষয়ে দোষ চাপিয়ে দিতে পারেন, এমনকি কটাক্ষ করে উপহাস করতে পারেন। অনেক সময় দর্শক অথবা অতিথি এমন কথা বলতে পারেন, যা আপনার আদর্শিক দিককে মানে না। হোক সেটা টক শো, হোক সেটা সভা অথবা অন্য কোনো অনুষ্ঠান, আপনার ধৈর্য অটুট থাকা চাই। মনে রাখবে, উপস্থাপনার জগতে ধৈর্যই আর হাসিমুখই আপনার ব্রহ্মাস্ত্র।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপস্থাপনা কৌশল
নতুন উপস্থাপকদের জন্য পরামর্শ তো জানা হলো, এবার আসি উপস্থাপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপসে। একজন সফল উপস্থাপক হতে হলে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখা চাই।

আত্মবিশ্বাসী হতে হবে
উপস্থাপনায় অনেক সময় আপনার অভিজ্ঞতা নেই, এমন কাজও আপনাকে করতে হতে পারে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, অনেক অভিজ্ঞরাও কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খান। অভিজ্ঞতা থাকুক আর না-ই থাকুক, আত্মবিশ্বাস থাকাটা অপরিহার্য।

একজন সফল উপস্থাপক কিন্তু একজন অ্যাটেনশান সিকার!
কী, অবাক লাগছে? অ্যাটেনশান সিকার শব্দটাকে আমরা মোটামুটি নেতিবাচক একটা গুণের কাতারেই ফেলি। কিন্তু আপনি যদি একজন সফল উপস্থাপক হতে চান, তাহলে অ্যাটেনশান সিক করা শিখে নিন। একটা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা শুরুর পরমুহূর্ত থেকে উপস্থাপকের প্রধান কাজ থাকে দর্শক-অতিথির মনোযোগ ধরে রাখা। আর অ্যাটেনশান সিকিং এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ওপরে উপস্থাপনা শুরুর যে কয়েকটি কৌশলই দিয়েছি, তার প্রায় সবগুলোই দর্শকের মন আকর্ষণ করার। আপনার কাজ হচ্ছে এটা নিশ্চিত করা যে, তারা যেন সবাই আপনার কথা পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

পোশাকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা
পোশাক কি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ? উত্তর হচ্ছে- হ্যাঁ। পোশাকের ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছা থেকে দর্শকের পছন্দের দিক বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। একজন উপস্থাপকের প্রতিটি সূক্ষ্ম বিষয় মাথায় রেখেই পোশাক নির্বাচন করা উচিত। অনুষ্ঠানের ভাবের সঙ্গে যায় এমন মার্জিত পোশাক পরা উচিত। দর্শকের কাছে এর মাধ্যমে একটা ইতিবাচক ভাব আসে।

স্পষ্ট উচ্চারণে বোধগম্য ভাষায় কথা বলতে হবে
উপস্থাপনার ক্ষেত্রে বাচনভঙ্গির থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো স্পষ্ট, বোধগম্য ভাষায় কথা বলা। উপস্থাপকের কণ্ঠ নিচু না হওয়াই ভালো। চেষ্টা করতে হবে কথার স্পষ্টতা যেন এমন হয় যে একজন অমনোযোগী শ্রোতাও ঠিকমতো শুনতে পান।

দর্শকের দিকে তাকানো
উপস্থাপনা হোক কিংবা পাবলিক স্পিকিং, আই কন্ট্যাক্ট কিন্তু থাকা চাই-ই। অনেকসময় দেখা যায় কথা বলার সময় কেউ কেউ ছাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ফেলে। এটা করা যাবে না। আপনি যাদের লক্ষ করে কথা বলছেন, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের দিকে তাকিয়েই আপনার কথা বলতে হবে।

হাতে স্ক্রিপ্ট না রেখে বুলেট পয়েন্ট রাখুন
অনেকে উপস্থাপনার সময় পুরো একটা স্ক্রিপ্ট হাতে নিয়ে সেটা দেখে দেখে বলে। ফলে যা হয়, দর্শকের দিকে তাকানোই হয় না। তাই একটা পুরো স্ক্রিপ্ট হাতে না রেখে, মূল বিষয়গুলো একটা ছোট্ট কাগজে টুকে রাখা যায়। এতে করে কোনো কথা বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকে না, পাশাপাশি একাধারে স্ক্রিপ্টের দিকে না তাকিয়ে দর্শকের দিকেও মনোযোগ দেওয়া হয়।

হাসিমুখ ওষুধের মতো
হাসিমুখ আপনার উপস্থাপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে। আপনার কথার প্রতি দর্শকের মনোযোগ বাড়িয়ে দেবে, আর অনুষ্ঠানে একটা ইতিবাচক ভাব এনে দেবে। শুধু উপস্থাপনাই না, সবসময়ই হাসার চেষ্টা করুন। আপনি হাসছেন মানে আপনি আপনার নিজেকে আর আশপাশের মানুষকে ভালো থাকতে সাহায্য করছেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জানা
এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা বৈশিষ্ট্য, যেটা সব উপস্থাপকের আয়ত্তে আনতে হয়। অনেক সময় অনুষ্ঠান যেমন চিন্তা করা হয়েছিল অমন নাও হতে পারে। ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা। উপস্থাপকে মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কোনোভাবেই উত্তপ্ত হওয়া চলবে না।

শেষ ভালো যার..
একজন উপস্থাপক অনুষ্ঠানজুড়ে কী করেছেন, এটির ধারণা দিতে হবে শেষে এসে। এর সঙ্গে সহানুভূতি আর আবেগপূর্ণ কিছু কথা জুড়ে দিয়ে সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানের ইতি টানা যায়। সম্ভব হলে দর্শককে অনুষ্ঠানজুড়ে মনোযোগ ধরে রাখা এবং সাড়া প্রদানের জন্য ধন্যবাদ দিতে পারেন। অনুষ্ঠানের ইতি টানার কাজটি কিন্তু শুরুর মতোই দক্ষতার সঙ্গে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে করতে হবে।

জাহ্নবী

 

প্রতিভাবান মমতাহিনা

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১২ পিএম
প্রতিভাবান মমতাহিনা

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মায়ের কাছে এইচটিএমএল, সিএসএস প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের হাতেখড়ি তার। মা ফ্রিল্যান্সিং করতেন। এরপর সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালীন স্কুলের ওয়েবসাইট তৈরি করেন। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তৈরি করেন রোবট কিবো। এসবের পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফি, গ্রাফিতি করেন তিনি। প্রতিভাবান এই মানুষটির নাম মমতাহিনা করিম মিম। এইচএসসি পড়ছেন কাপাসগোলা মহিলা কলেজে। মা, বাবা, ছোট ভাই আর ছোট দুই বোন নিয়ে তার পরিবার। 

মা-ই মিমের কাজের বড় অনুপ্রেরণা। মা যখন কম্পিউটারে কাজ করতেন, মিম অবাক বিস্ময়ে তা দেখতেন। একসময় মা হাতে ধরে তাকে প্রোগ্রামিংয়ের টুকটাক কাজ শেখান। সঙ্গে ছিল গ্রাফিক্স ডিজাইনের নানা বিষয়। এ প্রসঙ্গে মিম বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মা কম্পিউটারে কাজ করতে। সেসব দেখতে দেখতে আমার কম্পিউটারের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। এরপর আমি যখন তৃতীয় শ্রেণিতে, তখন প্রোগ্রামিং শেখা শুরু করি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন আমি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। এই প্রতিযোগিতায়ও মিম খুব ভালো করি। আমার পাশে সবসময় সহযোগিতার হাত নিয়ে ছিলেন স্কুলের শিক্ষকরা। বন্ধুবান্ধবরাও উৎসাহ দিয়েছেন।

রোবট নিয়ে কৌতূহল মিমের অনেক আগে থেকেই। মিম ভাবতেন কীভাবে রোবট কাজ করে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় রোবট নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি। ব্যাটারি, মোটর দিয়ে কিছু ছোট ছোট প্রজেক্ট করার পর তার মনে হয়, রোবট তৈরি করতে পারবেন। প্রবল আত্মবিশ্বাস খুঁজে পান। এরপর মাত্র এক বছর পর দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় রোবট তৈরি করেন। রিমোট কন্ট্রোল রোবটটির নাম ছিল কিবো।

মিম একজন চেঞ্জ মেকার। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কাজ করেন। কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা যায় সে বিষয়ে সচেতনতামূলক ভিডিও তৈরি করেন। পথশিশুদেরও নানাভাবে সাহায্য করেন তিনি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মিম অংশ নিয়েছেন। দেয়ালে ছবি, গ্রাফিতি এঁকে ছাত্রদের উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতটুকু জীবনে এত অর্জনের মধ্যে স্কুলের ওয়েবসাইট তৈরি করা মিম সেরা অর্জন বলে মনে করেন। ওয়েবসাইট তৈরির ফলে অনেক মানুষ উপকৃত হয়েছে। ভবিষ্যতে মিম পড়াশোনার পাশাপাশি তার সৃজনশীল কাজগুলো অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।

জাহ্নবী

ফেলনা উপকরণ থেকে বাঁচবে জীবন

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১০ পিএম
ফেলনা উপকরণ থেকে বাঁচবে জীবন

বন্যা বলে কয়ে আসে না এবং আগে থেকে এর জন্য কেউ প্রস্তুতও থাকে না। তবু সব প্রতিকূল অবস্থা ডিঙিয়ে টিকে থাকতে পারার নামই জীবন। তখন হাতের কাছে যা পাওয়া যায় তাই নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করতে হয়। হাতের কাছে নাইবা থাকল নৌকা, স্পিডবোট। তবু টিকে থাকার লড়াই তো আর থেমে থাকবে না। এমন সময় হতভম্ব না হয়ে উদ্ধারকর্মী ছাড়াও নিজেকে নিজেই রক্ষা করতে পারেন একটু খেয়াল করলেই। লিখেছেন মেজবাহ মুকুল

প্লাস্টিকের বোতল: প্লাস্টিকের খালি বোতল আপনার জন্য লাইফ জ্যাকেট হিসেবে কাজ করবে। এক্ষেত্রে পাঁচ লিটার বা আরও বড় বোতল হলে কাজ হয়ে যাবে। প্রথমত প্লাস্টিকের দুই বা ততোধিক খালি বোতল হাতের কাছে থাকলে তাতে ফু বা পানি দিয়ে ছিদ্রমুক্ত কি না সেটা নিশ্চিত হোন। ছিদ্রমুক্ত হলে ভালো করে ছিপি লাগান যাতে ভেতরে পানি প্রবেশ করতে না পারে।

এবার একটি দড়ি নিন। দড়ি না পেলে বিকল্প হিসেবে কাপড়ের আঁচল ছিঁড়ে ব্যবহার করতে পারেন। এক থেকে দেড় হাত দড়ি দিয়ে ভালোভাবে ছিপির গোড়ায় বেঁধে নিন। দুই পাশে বাঁধা হয়ে গেলে অন্য পাশে বোতলের গোড়ায় পাঁচ-ছয় হাতের একটি অতিরিক্ত দড়ি বেঁধে রাখুন। সবশেষে বোতলগুলো পানিতে ভাসিয়ে দুই বোতলের সংযোগ দড়িতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার অতিরিক্ত দড়িটি পিঠের ওপর দিয়ে এনে অপর প্রান্তে থাকা বোতলের ছিপির গোড়ায় ভালোভাবে বেঁধে নিন। যাতে বোতলগুলো আপনার শরীর ছেড়ে ভেসে যেতে না পারে। আর বন্যার স্রোতে নিজের ভারসাম্য ধরে রাখতে অবশ্যই হাতে একটি লাঠি রাখবেন।

ড্রাম দিয়ে ডিঙি নৌকা: বড় প্লাস্টিকের ড্রাম যদি ঘরে থাকে সেটি কাজে লাগাতে পারেন ডিঙি নৌকা হিসেবে। তার আগে ড্রামের ছিপি ভালোভাবে আটকান। এবার হাতের মাপে প্রস্থের দিকে দেড় হাত দুই মাথায় কেটে নিন। সে বরাবর উভয় দিকে লম্বালম্বিভাবে কেটে ফেলুন। খুব সহজেই তৈরি হয়ে গেল ডিঙি নৌকা। এতে শুকনো কাঠ বা বাঁশ দিয়ে উভয় দিকে ভালোভাবে বেঁধেও নৌকো বানাতে পারেন সহজেই।

ড্রামের মাথায় থাকা বড় ঢাকনা অর্ধেক যদি কাটা থাকে তবে অপর পাশেও একই দিকে কেটে ফেলুন। কারণ এ অবস্থায় ভাসাতে গেলে পানি ঢুকে ড্রাম দ্রুতই ডুবে যাবে। এবার দুই মাথার কাটা পাশ নিচের দিকে রাখুন। এখানেও ওপরে উল্লিখিত শুকনো কাঠ বা বাঁশ ব্যবহার করুন। যদি কাঠ বা বাঁশ হাতের কাছে না থাকে তবে আপনার খাটের পাতানো দুটি তক্তা ব্যবহার করতে পারেন। যা সহজেই ড্রামকে ভাসিয়ে রাখবে।

বোতল দিয়ে ভেলা: শুকনো কাঠ যদি পান তাতে যদি ভর না হয় তবে চারপাশে ও নিচে ছোট-বড় খালি প্লাস্টিকের বোতল বেধে নিতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যেন বোতলের কোনো ছিপি খোলা না থাকে। তাতে কাঠ ভাসিয়ে রাখতে ভালো কাজ হবে। তবে হাতের কাছে একেবারেই কিছু না পেলে খাটে পাতানো শুধু কয়েকটি তক্তপোশ একসঙ্গে ভালোভাবে বেঁধে পানিতে ভাসিয়েও জীবন বাঁচাতে পারেন। যদি সম্ভব হয় তক্তার নিচে বেঁধে নিতে পারেন ছোট বড় পানির ছিপি লাগানো অসংখ্য প্লাস্টিকের বোতল।

বাঁশের ভেলা: গ্রামে হাতের কাছেই আছে বাঁশঝাড়। শুকনো না হলে কাঁচা বাঁশ দিয়েও তৈরি কার যায় বাঁশের ভেলা। এ ক্ষেত্রে লম্বালম্বিভাবে ১০-১২টি বাঁশ সমানভাবে কেটে নিন। তারপর সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে দুই মাথায় ও মাঝে ছয়টি বাঁশ দিয়ে দড়ি পেঁছিয়ে শক্ত করে বাঁধুন এবং পানিতে ভাসিয়ে দিন।

কলার ভেলা: কলার ভেলা অতি প্রাচীন এবং পানিতে ভাসানোর প্রথম পদ্ধতি বলা যায়। হাতের কলা গাছ থাকলে দ্রুত বড় ও মোটা সাইজের গাছ কেটে ফেলুন। তারপর তাতে গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি গেঁথে সহজেই ভেলা তৈরি করে নিজেকে নিয়ে যেতে পারেন নিরাপদ স্থানে।

জাহ্নবী

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কটা কেমন হবে

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:২৩ পিএম
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কটা কেমন হবে

ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক কেমন হওয়া প্রয়োজন? আমাদের স্কুলগুলোয় ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক যে খুব একটা পারস্পরিক সম্মানজনক অবস্থায় নেই সেটা সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনাতেই বোঝা যায়। পদত্যাগ করাতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের মেরেছেন, কেউ জুতার মালা গলায় তুলে দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষকদের চূড়ান্ত অপমান করা হচ্ছে।

অন্যদিকে একটি পত্রিকার শেষ পাতায় সম্প্রতি ছাপা হয়েছে, ‘পরীক্ষার হলে চুল কেটে দিলেন প্রধান শিক্ষক।’ অবশ্যই স্কুলে চুল ছোট করে কেটে যাওয়ার নিয়ম। কিন্তু তাই বলে পরীক্ষা চলার সময় কাটতে হবে। তাকে শাস্তি বা শিক্ষা দেওয়ার আরও অনেক সময় রয়েছে। প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার হলে সবার সামনে সেই ছাত্রটির চুল কেটে দেন। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল ছাত্রটি। অপদস্ত করার মধ্যে শিক্ষক কী আনন্দ পেলেন, আর পরীক্ষার সময় সেই শিক্ষার্থীকে কেন নির্যাতন করা হলো।

অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনাটি মনে আছে। এই তো কয়েক বছর আগের ঘটনা। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে। প্রশ্নের আঙুল ওঠে শিক্ষকসমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি। গ্রেপ্তার হন শিক্ষিকা। তিনজন সাময়িক বরখাস্ত হন। কিন্তু এসব বিচার ও দাবি পূরণ ছাপিয়ে কোথাও কি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মানবিক সম্পর্কের বিষয়টির কথা কেউ ভাবছেন।

 
শিক্ষকদের মতো আমাদের অভিভাবক অথবা মা-বাবার সঙ্গেও সন্তানদের সম্পর্ক বন্ধুর মতো না। একজন ছাত্রের ভালো লেখাপড়ার পেছনে তার শিক্ষক ও অভিভাবকের গুরুত্ব সমান। তাদের সঙ্গে সম্পর্কটাও সহজ হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক মোটেও সহজ নয়। একটি ভুল করার পর শিক্ষক বা অভিভাবকের সঙ্গে আলোচনা করার মতো সম্পর্ক কয়টি পরিবারে রয়েছে। তাই আমাদের শিশু-কিশোররা নিজেদের ভেতরে গুমড়ে মরে। ছেলেমেয়েদের বেড়ে ওঠার সময়টা এমন যে, যত দিন যায় তারা নতুন নতুন জিনিসের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকে। মুখোমুখি হয় নতুন নতুন পরিস্থিতির। টিনএজ বয়সে খুব আবেগপ্রবণ থাকে ছেলেমেয়েরা। তাই তাদের মন বুঝে কথা বলতে হয়। কোনো কিছু শেখাতে হলেও হুকুম বা বাধ্য না করে বন্ধুর মতো বোঝাতে হয়। কিন্তু আমরা কি তা করি!

এটাও ঠিক যে, আমাদের বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতিও স্বচ্ছ নয়। শিক্ষকদের মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দিয়ে কলেজে চাকরি পেতে হয়। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও যুক্ত থাকেন এ ধরনের খবরও প্রকাশিত হয় সংবাদপত্রে। এসব যখন হয় তখন সেই শিক্ষক স্বাভাবিকভাবেই সবার কাছে সম্মান হারান। ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়ায় তার নিজেরও নীতি বলে কিছু থাকে না। সুতরাং ক্লাসে সেই শিক্ষক-ছাত্রদের পাঠ্যবইয়ের বাইরে যে ভালো কোনো শিক্ষা দিতে পারেন না- এটা বুঝতে কষ্ট হয় না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক হবে বন্ধুর মতো। প্রত্যেক শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বাইরে কিংবা একাডেমিক কাজ ছাড়াও কথা বলার সময় দিতে হবে। শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের সময় দেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় ভালো হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকরা শুধু শিক্ষক নয় অনেকটা গাইড, ফিলোসফারের মতো। কেননা, বাংলাদেশের বাস্তবতায় সব শিক্ষার্থী শিক্ষিত পরিবার থেকে আসে না। তাদের কাছে শিক্ষকরাই হন সবচেয়ে কাছের মানুষ।

আজ থেকে ২০, ৩০ বা ৫০ বছর আগেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ছিল গুরু শিষ্যের। শিষ্য যে ভক্তি নিয়ে গুরুকে সমীহ করতেন, শিক্ষকরাও সেই মর্যাদাকে ধরে রাখতে নিজেদের সেই উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার মতো করেই পড়াশোনা করতেন, আদর্শবান হতেন। আধুনিক সময়ে বলা হচ্ছে, শিক্ষক হবে বন্ধুর মতো। শিক্ষক সেই সমীহ করার স্থান কি আগের তুলনায় অনেকটাই হারিয়ে ফেলেননি। যদি ফেলেই থাকেন, তার কারণ কী?

উত্তরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের কারণে এমনটা ঘটছে। জ্ঞান আহরণের বিষয় আর নেই। শিক্ষা হয়ে গেছে ভালো চাকরি পাওয়ার সিঁড়ি। আমাদের শিক্ষকরাই স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব শেখাচ্ছেন। বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে বলেই একই শিক্ষকের ক্লাস করে এসে তার কাছেই প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে জনৈক শিক্ষক বলেন, শিক্ষা যখন থেকে বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে, তখন থেকেই শিক্ষাব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষা এখন সনদমুখী। চাকরি পাওয়া ছাড়া এখন শিক্ষার আর কোনো উদ্দেশ্য নেই। শিক্ষা বাণিজ্য ও সনদমুখী হওয়ায় নামিদামি স্কুলগুলো এই ভর্তি-বাণিজ্য শুরু করেছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে কোচিং বাণিজ্য। এতে অভিভাবক আর শিক্ষার্থীরা জিম্মি। কেননা একজন শিক্ষার্থীকে টিসি দিলে সেই সিটে কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে আরেকজনকে ভর্তি করানো যাবে। এ অবস্থা বদলাতে শিক্ষা পদ্ধতি, পরীক্ষা পদ্ধতি বদলাতে হবে। ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক ও বার্ষিক পরীক্ষার বদলে সাপ্তাহিকভাবে ক্লাস টেস্টের মতো সৃজনশীল পরীক্ষা নিতে হবে। বছর শেষের পরীক্ষার চাপ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা বদলে দেওয়ায় জাপানে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার মাত্রা কমে এসেছে।

জাহ্নবী

অবসর কাটানোর সেরা কিছু গেমস

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:২১ পিএম
অবসর কাটানোর সেরা কিছু গেমস

অবসর সময় কাটানোর জন্য অধিকাংশ মানুষই এখন বেছে নিচ্ছেন মোবাইল গেমসকে। পাশাপাশি লাইভ স্ট্রিমিং করে মোবাইলের এসব গেমসকে কেন্দ্র করে আয়ও করছেন অনেকে। বেশকিছু মোবাইল গেমস এখন ইন্টারনেটে প্রচলিত আছে যেগুলো দেশ ও দেশের বাইরে প্রচুর পরিমাণে সাড়া ফেলেছে। এদের গ্রাফিক্স এবং নানাবিধ ফিচার দিনকে দিন আকর্ষণ করছে টিনএজ প্রজন্মসহ সব বয়সের স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীদের। আসুন জেনে নিই এমন কিছু মোবাইল গেমস সম্পর্কে যারা বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বের মোবাইল গেমারদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।

ক্যান্ডি ক্রাশ সাগা
যারা ধাঁধা খেলতে পছন্দ করেন তাদের জন্য ক্যান্ডি ক্রাশ সাগা এক অসাধারণ গেম। যেকোনো পরিস্থিতিতে সময় কাটানো এবং যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য পছন্দের শীর্ষে থাকে এই গেম। গেমটির একের পর এক ধাপ পার হতে বিভিন্ন আকৃতির ক্যান্ডি মিলিয়ে বুদ্ধি খরচ করতে হয় এই গেমে। গেমস ইন্ডাস্ট্রির এক প্রতিবেদন বলছে, ২০১২ সালে গেমটি বাজারে আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩ বিলিয়নেরও অধিক বার ডাউনলোড হয়েছে।

এইট বল পুল
শুধু বাংলাদেশ নয় বরং পুরো বিশ্বেই জনপ্রিয় এক গেমের নাম এইট বল পুল। মিনিক্লিপ প্রতিষ্ঠানের গেমটির বাস্তব থ্রিডি গ্রাফিক্স এবং অসাধারণ সব ফিচারের জন্য এর ব্যবহারকারীর রীতিমতো গেমটি আসক্তিতে পড়ে যান। অনলাইন কয়েন ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ রয়েছে এখানে। ২০১৩ সালে বাজারে আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ বিলিয়নেরও বেশিবার ইতোমধ্যে ডাউনলোড হয়েছে গেমটি।

ই-ফুটবল
অনলাইন ফুটবল গেমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ভার্সন তৈরি করেছে কোনামি। ২০২২ সালে এটি গুগল প্লে স্টোরে সংযুক্ত হলেও ২০১৯ সালে অনলাইন বাজারে আসার পর থেকেই শীর্ষে অবস্থান করছে গেমটি। শুধু গুগলেই বিলিয়নের বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে।

ফুটবল ইতিহাসের সব কীর্তিমান ফুটবলার থেকে শুরু করে বর্তমান সেরা খেলোয়াড়দের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে গেমে। পাশাপাশি একদম বাস্তব দেখতে থ্রি-ডি ভার্সন তৈরি করেছে কোনামি প্রতিষ্ঠানটি। তাই মেসি, নেইমার, রোনালদো কিংবা ম্যারাডোনা, ব্যাকহামদের মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে দল সাজিয়ে গেম খেলার অনুভূতি পায় ব্যবহারকারীরা। তাছাড়া মাল্টিপ্লেয়ার বা একাধিক ব্যবহারকারীদের মধ্যে উত্তেজনাকর ফুটবলের স্বাদ পাওয়া যায় এই গেমে।

বাস সিমুলেটর বাংলাদেশ
বাস সিমুলেটর বাংলাদেশ গেমটি ২০২১ সালের ২৭ আগস্ট বাজারে আসার পর থেকে বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাইরের দেশের গেমাররাও এই গেমের গ্রাফিক্স ও অন্যান্য ফিচারগুলো নিয়ে প্রশংসা করেছে। যারা বাস সিমুলেটরের অন্য ভার্সনগুলো ইতোমধ্যে খেলেছেন তাদের জন্য বাংলাদেশের রাস্তায় এমন থ্রি-ডি সিমুলেটর গেম অত্যন্ত আকাঙ্ক্ষিত ছিল।

গেমটি ঘোস্ট ইন্টারেক্টিভ প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা। অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৫.১ এবং এর ওপরের সব ব্যবহারকারীর ডিভাইসে গেমটি চলবে। শুধু গুগল প্লে-স্টোর থেকেই এখন পর্যন্ত ১০ লক্ষাধিক বার গেমটি ডাইনলোড হয়ে ৪.১ রেটিংয়ে অবস্থান করছে। বাস সিমুলেটর গেম পছন্দ করেন, এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি বাংলাদেশের রাস্তার আদলে বানানো থ্রি-ডি মোশন গ্রাফিক্সে পাবেন অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের সত্যিকারের ল্যান্ডমার্ক এবং বিল্ডিংয়ের গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়েছে এতে। তাছাড়া মাল্টিপ্লেয়ার বা একাধিক বন্ধুদের সঙ্গে খেলার ব্যবস্থা থাকায় অল্প সময়েই গেম ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে, কেউ কেউ এর বিজ্ঞাপনজনিত কারণে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

জাহ্নবী