ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

বাটন ফোনে ফিরছে টিনএজাররা

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৫ পিএম
বাটন ফোনে ফিরছে টিনএজাররা
ছবি সংগৃহীত

১৭ বছর বয়সী কানাডিয়ান টিনএজার গ্যাভিন ম্যাকনিল ভালোবাসতেন নিজের আধুনিক ফিচার সম্পন্ন আইফোনে গান শুনতে, ভিডিও দেখতে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কাটাতে। তবে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিকে ১১ গ্রেডে ওঠার পর প্রিয় আইফোনটি বদলে ব্যবহার করতে শুরু করেন ফিচার বিহীন পুরোনো যুগের বাটন ফোন। 

টিনএজারদের প্রিয় সেলফোনের কথা উঠলেই হয়তো তালিকায় চলে আসবে স্যামসাং, অ্যাপল, গুগল পিক্সেলের মতো কোম্পানির নতুন মডেলের অত্যাধুনিক সব স্মার্টফোনের নাম। তবে অবাক করার বিষয় ম্যাকনিল এর মতো বাটন ফোন ব্যবহার করা টিনএজার ও তরুণদের সংখ্যাও এখন কম নয়। আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিজেদের উদ্যোগেই বাটন ফোন ব্যবহার করতে শুরু করেছে টিনএজাররা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি ও স্ক্রিন টাইম কমিয়ে সময় বাঁচাতে এই পথ বেছে নিয়েছে অনেকে।

বাটন ফোন নামে বেশি পরিচিত এই মোবাইল ফোনকে ফ্লিপ ফোনও বলা হয়। ২০০০ সালে বাজারে আসা ফ্লিপ ফোনের রাজত্ব ছিল ২০১০ সাল পর্যন্ত। নম্বর প্যাডযুক্ত এসব ফোনে কথা বলা, বার্তা পাঠানো, ম্যাপ দেখার মতো কাজগুলোর বাইরে আর কোনো কাজই করা যেত না। পরে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অত্যাধুনিক স্মার্টফোন জায়গা করে নেয় বাজারে। এমনকি শিশুরাও ফ্লিপ ফোনের পরিবর্তে ব্যবহার করতে শুরু করে স্মার্টফোন।

এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি এবং অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম থেকে শারীরিক মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে বাটন ফোনে আগ্রহী হচ্ছে টিনএজাররা। ১৬ বছর বয়সী আরেক কানাডিয়ান কিশোর লুক মার্টিন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে মার্টিন বলে, স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি আসক্তি দিন দিন তাকে অন্য সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন, হতাশ করে দিচ্ছিল। একসময় সে ও তার বন্ধু দৈনিক ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা স্মার্টফোনে সময় কাটাত। বাটন ফোনে এখন দৈনিক সময় কাটানো হয় গড়ে মাত্র ২০ মিনিট। সে মনে করে, এখন শুধু প্রয়োজনবশতই ফোন ব্যবহার করা হয়। এতে সময় ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

মার্টিনের মতো স্মার্টফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কাটানোর কারণে মানসিক সমস্যার শিকার অনেক টিনএজার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, টিনএজে নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণের সময় মস্তিষ্কের যে অংশ উদ্দীপিত হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও ওই একই অংশ উদ্দীপিত হয়। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসক্তি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে টিনএজারদের মধ্যে।

এ ছাড়া স্মার্ট ফোনে অতিরিক্ত সময় কাটানোর কারণে টিনএজারদের চোখের স্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা, অবসাদ ও বিষণ্নতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন গবেষক ও চিকিৎসকরা। এমন সময় টিনএজারদের বাটন ফোনে ফিরে যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত সাধুবাদ জানান মা-বাবা ও গবেষকরা।

শিক্ষামূলক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
শিক্ষামূলক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা
ছবি সংগৃহীত

সারা বিশ্বের নানা প্রান্তের কিশোর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশ নিয়ে নিজের মেধা পাকাপাকিভাবে যাচাই করে নিতে আয়োজিত হয় বিভিন্ন শিক্ষামূলক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশি টিনএজার শিক্ষার্থীদের জন্য এমন কিছু প্রতিযোগিতা সম্পর্কে আজকের লেখা।

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড (আইএসও)
শিক্ষার্থীরা যারা বিজ্ঞান ও গণিত ভালোবাসে তাদের জন্য অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এই প্রতিযোগিতা। অন্যান্য দেশের মতো ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারে এই প্রতিযোগিতায়। সাধারণত পদার্থ, রসায়ন, গণিত, কম্পিউটার ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় এখানে। আইএসওর রয়েছে কয়েকটি ধাপ। জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত হওয়া প্রতিযোগীরাই অংশ নিতে পারে আন্তর্জাতিক পর্বে।

আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড (আইএমও)
গণিতের এই উৎসব বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় একটি প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশি কিশোর গণিতবিদদের অনেকেই এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে রেখেছে কৃতিত্বের স্বাক্ষর। ২০ বছর বয়সের নিচে যেকোনো শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারে গণিত অলিম্পিয়াডে। আমাদের দেশে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের তত্ত্বাবধানে চারটি স্তরে এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়। বিজয়ী হতে গেলে প্রতিযোগীকে পার হতে হয় সবগুলো ধাপ।

বিশ্ব রোবট অলিম্পিয়াড (ডব্লিউআরও)
এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও ইতোমধ্যে সাফল্যের ছাপ রেখেছে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ক্ষুদে ও কিশোর শিক্ষার্থী। প্রযুক্তি ও রোবটিক্স কার্যক্রম যারা ভালোবাসে তাদের জন্যই মূলত ডব্লিউআরও প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারীরা দলগতভাবে রোবট ডিজাইন, তৈরি ও প্রোগ্রামিং করে থাকেন। ৮ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারে এই প্রতিযোগিতায়।

মডেল ইউনাইটেড নেশনস (এমইউএন)
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, বিশ্ব ব্যাংক প্রভৃতির সমন্বয়ে ৪-৫ দিনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজনে। তবে মজার বিষয় এই সম্মেলনে কূটনৈতিক হিসেবে অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে আলোচনা, বিতর্কতে যোগ দেয় অংশগ্রহণকারীরা। বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীদের জন্য এই আয়োজনে অংশ নিতে পারে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা।

আন্তর্জাতিক রচনা প্রতিযোগিতা 
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো এবং তরুণদের নিয়ে কাজ করা গোই পিস ফাউন্ডেশন পৃথিবীব্যাপী আয়োজন করে এই রচনা প্রতিযোগিতার। শান্তি, সমাধান ও টেকসই পৃথিবী সম্পর্কিত বিষয়ে সাধারণত রচনা লিখে পাঠায় বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা। ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী কিশোর ও তরুণরা অংশ নিতে পারে এই রচনা প্রতিযোগিতায়।

 

বিজ্ঞানের মজার পরীক্ষা

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৩২ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:১৭ পিএম
বিজ্ঞানের মজার পরীক্ষা
ছবি সংগৃহীত

শৈশবে কখনো কি মনে প্রশ্ন এসেছে- আমরা মানুষ না হয়ে গাছ, পাখি কিংবা অন্য কোনো প্রাণী হলাম না কেন? অথবা আমাদের গায়ের রঙ, চুলের ধরন, শরীরের আকৃতি এমন হলো কেন? আমরা দেখতে, স্বভাবে ঠিক যেমন তার সবকিছুই নির্ভর করে আমাদের শরীরে সমস্ত কোষের ভেতর লুকিয়ে থাকা লাখ লাখ ডিএনএর ওপর। আদতে আমরা যে মানুষ হয়ে জন্ম নিলাম, তাও এই ডিএনএ কোডের কারণে।

আমাদের শরীরে ঠিক কত সংখ্যক ডিএনএ আছে তা এখনো বিজ্ঞানীদের অজানা। যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ডিএনএ খুঁজে দেখাও খুব একটা সহজ নয়। তবে গাছ, মানুষ কিংবা ফল সব প্রাণের ডিএনএ দেখতে অনেকটা একই রকম। নরম-জাতীয় ফল যেমন কলা থেকে তোমরা ডিএনএ আলাদা করে শনাক্ত করতে পার সহজেই।

প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম

কলার ডিনএনএ শনাক্ত করতে বড় আকারের পাকা কলা বেছে নাও। এ ছাড়াও লাগবে ছুরি, চপিং বোর্ড, চালনি, দুইটি গ্লাস, বাঁশের তৈরি কাঠি, কাঁটাচামচ,  লবণ, থালাবাসন ধোয়ার তরল সাবান, আইসোপ্রোপাল অ্যালকোহল, লবণ এবং পানি। রাসায়নিক সরঞ্জাম হিসেবে প্রয়োজন দুইটি বিকার, দুইটি টেস্ট টিউব, একটি টেস্ট টিউব হোল্ডার, একটি পাইপেট, স্টিরিং রড ও একটি ক্লনিকাল ফ্লাস্ক।

প্রক্রিয়া

চপিং বোর্ডের ওপর কলা রেখে ছুরির সাহায্যে ছোট স্লাইস আকারে কেটে নাও। এবার স্লাইস করা কলা একটি বিকারে রাখ। বিকারে রাখা কলা কাঁটা চামচ কিংবা স্টিরিং রডের সাহায্যে ম্যাশ করে নাও। অন্য একটি বিকারে গরম পানি নিয়ে তাতে এক চামচ লবণ এবং ৪-৫ ফোঁটা থালাবাসন ধোয়ার তরল সাবান অর্থাৎ ডিশ লিকুইড ভালোভাবে মিশিয়ে নাও। এবার ম্যাশ করা কলার বিকারে দ্রবীভূত পানিটি আস্তে আস্তে ঢেলে নাড়তে থাক। পরে একটি চালনির সাহায্যে কলার দ্রবণটি অন্য একটি বিকারে ঢাল। লক্ষ্য রাখবে ম্যাশ কলা যেন চালনিতেই আটকে থাকে এবং তরল দ্রবণটিই শুধু বিকারে যায়। এবার দ্রবণটি একটি টেস্ট টিউবের ভেতর ঢাল। টেস্ট টিউবের ৪ ভাগের ১ অংশ ফ্রিজে রাখা আইসোপ্রোপাল অ্যালকোহল দিয়ে পূর্ণ কর। একটি পাইপেটের সাহায্যে আইসোপ্রোপাল মেশানো দ্রবণটি নেড়ে নাও। কিছুক্ষণ পর ডিএনএর একটি আলাদা স্তর দেখতে পাবে।

ফলাফল

কলার কোষের নিউক্লিয়াসের ভেতর ফলের ডিএনএ থাকে। শুরুতেই কলা ম্যাশ করার কারণে কোষ এবং ঝিল্লিগুলো ভেঙে যাবে। লবণ ও লিকুইড ডিশওয়াশ মিশ্রিত পানি দেওয়ার ফলে কলার কোষ থেকে ডিএনএ আলাদা হয়ে তরল আকার ধারণ করবে। সর্বশেষ আইসোপ্রোপাল অ্যালোকহোল ব্যবহারের কারণে তরল ডিএনএ পানির সঙ্গে মিশে যেতে পারবে না। উপরন্তু একটি ডিএনএ স্তর তৈরি করবে। বাঁশের কাঠির মাধ্যমে এই ডিএনএ স্তর তুলে নিলেই আমরা তা দেখতে পাব।

 

উচ্চতায় সবাইকে ছাড়িয়ে অলিভার

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:০৮ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
উচ্চতায় সবাইকে ছাড়িয়ে অলিভার
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা টিনএজার অলিভার রিউক্স। ছবি সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা টিনএজার হিসেবে পরিচিত কানাডিয়ান টিনএজার অলিভার রিউক্স। ৭ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার অলিভার ২০২১ সালে উচ্চতায় সবচেয়ে দীর্ঘ টিনএজার হিসেবে নাম লেখান গিনেজ ওয়ার্লড বুকস রেকর্ডে। শিগগিরই সবচেয়ে লম্বা কলেজ বাস্কেটবল প্লেয়ার হিসেবেও রেকর্ড করতে যাচ্ছেন এই বাস্কেটবল খেলোয়াড়। 

অলিভার রিউক্সের জন্ম ২০০৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কানাডার কুইবেক স্টেটের টেরেবোন শহরে। তিনি বর্তমানে পড়াশোনা করছেন আমেরিকার ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাশাপাশি তিনি একজন নিবেদিত বাস্কেটবল প্লেয়ার। পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা টিনএজার হিসেবে কলেজে জনপ্রিয় ও পরিচিত মুখ অলিভার। তাই বাসা থেকে কলেজ কিংবা বাস্কেটবল প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর সময় কোনো কোনোদিন পথচারী ও বন্ধুরা অলিভারের ছবি দিলেন শত শত। তবে সবগুলো ছবিই হয় উল্লম্ব চিত্র। কেননা সমতল বা আনুভূমিক অন্য কোনো ফ্রেমেই ধরা যায় না অলিভারের উচ্চতাকে। তবে ছবি তোলার এই ঘটনায় মোটেই বিচলিত হন না ১৯ বছর বয়সী এই কিশোর। এর কারণ হিসেবে পারিবারিকভাবেই তিনি পরিচিত এই জনপ্রিয়তার সঙ্গে। কেননা অলিভারের পরিবারের বাবা, মা ও ভাইও উচ্চতায় বেশ লম্বা। পরিবারের সবাই একসঙ্গে বের হলে বরাবরই পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন তারা। 

অলিভার তার এই উচ্চতাকে কাজে লাগিয়েছেন বাস্কেটবল খেলোয়াড় হিসেবে। ছোটবেলা থেকেই এই খেলায় অলিভারের ছিল আলাদা আগ্রহ। কানাডিয়ান প্লেয়ার হিসেবে ২০২১ সালে অলিভার এফআইবিএ অনূর্ধ্ব ১৬ প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক জয়ী হন। ২০২৪ সালে আর্জেন্টিনায় ফিবা অনূর্ধ্ব ১৮ আমেরিকা কাপে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয়বারের মতো ব্রোঞ্জ পদক জয়ী হন। কলেজ পর্যায়ের ক্রীড়া সংগঠন সাউথইস্টার্ন কনফারেন্সের একজন নিয়মিত বাস্কেটবল প্লেয়ার অলিভার। বর্তমানে ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজিয়েট পর্যায়ে বাস্কেটবল প্লেয়ার হিসেবে খেলছেন তিনি। শিগগিরই কলেজ পর্যায়ে সবচেয়ে লম্বা বাস্কেটবল প্লেয়ারের রেকর্ডটিও যাবে অলিভারের ঝুলিতে তার অপেক্ষায় রয়েছেন খেলাপ্রেমী ভক্ত-অনুরাগীরা। তবে ক্রীড়া জগতে অন্যতম জনপ্রিয় লিগ ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন (এনবিএ)। অলিভারের স্বপ্ন এনবিএ লিগে নিজের নাম লেখানো। এই লিগের সবচেয়ে লম্বা সাবেক খেলোয়াড়দের চেয়েও অলিভার এখন পাঁচ সেন্টিমিটার বেশি লম্বা। ২০২৮ সালের সম্ভাবনাময় এনবিএ বাস্কেটবল প্লেয়ার হিসেবেও রয়েছে অলিভারের নাম।

নিজের ব্যতিক্রমী উচ্চতা নিয়ে এই টিনএজারের রয়েছে মিশ্র অনুভূতি। অনেকটা আনন্দ নিয়েই অলিভার জানান, অন্যান্য মানুষের তুলনায় উচ্চতা বেশি হওয়ায় দূরের যেকোনো কিছুও তিনি সহজে দেখতে পান। অন্যদের চেয়ে দেখার দৃষ্টিকোণটাও তাই আলাদা। তা ছাড়া নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে মিশতে ভালোবাসেন অলিভার। উচ্চতার কারণে পৃথিবীর যে প্রান্তেই তিনি যান না কেন সবার নজরে পড়েন। তখন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব পাতাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে এই উচ্চতা। তবে অনেকটা মজার ছলেই বলেন, আমার উচ্চতার আশপাশে লম্বা এমন কিশোর হয়তো কম আছে। অতিরিক্ত উচ্চতার জন্য দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করতে এবং পোশাক নির্বাচনে বেশ বেগ পোহাতে হয় তাকে। তবে তার এই উচ্চতাকে অহংকার কিংবা উপদ্রব হিসেবে দেখতে নারাজ এই কিশোর। বরং শারীরিক বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে ইতিবাচক কাজে ভূমিকা রেখে যেতে চান তিনি।

 

ছবির রঙে মনের সুস্থতা

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
ছবির রঙে মনের সুস্থতা
রঙ দিয়ে হোক মনের বিকাশ। মডেল: নাজোয়া খান ছবি: আদিব আহমেদ

নুসাইবা ইসলাম (ছদ্মনাম) এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এ সময় পড়াশোনার বাড়তি চাপ থাকা সত্ত্বেও ছবি আঁকার জন্য সময় বের করতে ভুল করে না সে। তবে ছবি আঁকার এই অভ্যাসকে শুধু শখের কাজ হিসেবেই দেখতে নারাজ নুসাইবা। বরং তার কাছে এটি হলো দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যম। শখের ছবি আঁকা বা আর্ট থেরাপিই হতে পারে মানসিক সুস্থতার উপায়।

 ছবির ভাষায় মনের কথা

প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষের যোগাযোগের জন্য কোনো ভাষা ছিল না এ কথা তোমরা নিশ্চই জানো। ইশারা, ধ্বনি আর গুহার দেয়ালে ছবি এঁকেই প্রকাশ করা হতো আনন্দ, বেদনা আর ভাবনার কথা। তাই পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষা হিসেবে ধরা হয় ছবি আঁকাকে। আধুনিক সময়ে এসেও আঁকার মাধ্যমে মনের কথা জানানোর প্রয়োজন কিন্তু মোটেই ফুরিয়ে যায়নি। আমাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা কিংবা মতামতগুলো কখনো কখনো কথায় প্রকাশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিশোর বয়সে ভাষাগত দক্ষতা কম থাকায় তারা প্রায়ই মুখোমুখি হয় এমন অনুভূতির। বিশেষত যারা অন্তর্মুখী স্বভাবের টিনএজার- রঙ-তুলির আঁচড়ে তারা সহজেই ফুটিয়ে তোলেন মনের অন্তর্নিহিত ভাবনাগুলো।

মানসিক চাপের রঙিন ওষুধ

কিশোর বয়সে পড়াশোনার চাপ বেড়ে যাওয়া, নতুন নতুন সামাজিক অভিজ্ঞতা ও হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা বেড়ে যায়। গবেষণা জানায়, সারা বিশ্বে প্রতি ৭ জনে ১ জন টিনএজার বিষণ্ণতা ও মানসিক চাপে ভুগে থাকেন।  কিশোর-কিশোরীদের এই মানসিক চাপ কমাতে আর্ট থেরাপি বেশ জনপ্রিয়। এই থেরাপির জন্য এক টুকরো ছবি আঁকার কাগজ, রঙ আর তুলিই যথেষ্ট। মানসিক চাপ অনুভব করার সময়ে রঙ, তুলির খেলা উদ্দীপিত করে আমাদের মস্তিষ্কে থাকা কর্টিসল হরমোনকে। ফলে ছবি আঁকার মাধ্যমে  দ্রুত মানসিক চাপ নিরসন হয়ে মন শান্ত ও ইতিবাচক হয়ে ওঠে।

মেডিটেশনের বিকল্প

নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে ফোকাস করার মাধ্যমে মনের নিয়ন্ত্রণ করাই মূলত মেডিটেশন। বয়ঃসন্ধিকালের চঞ্চলতায় মেডিটেশন করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য। তবে ছবি আঁকা হতে পারে ধ্যান বা মেডিটেশনের বিকল্প। ছবি আঁকার উজ্জ্বল রঙ, বিন্যাস, পেন্সিলে ফুটে ওঠা নানা অবয়ব খুব সহজেই কিশোর-কিশোরীদের দৃষ্টিকে এর ভেতর পুরোপুরি নিবদ্ধ করতে পারে। এ সময় মস্তিষ্কের নিউরনগুলোও ধীর গতিতে কাজ করতে শুরু করে। ফলে নিয়মিত ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে মেডিটেশনের মতোই ধৈর্য, স্থিরতা, প্রশান্তি; সর্বোপরি মানসিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রশমিত হয়।

মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে

কাগজে কোনো ছবি আঁকার আগে সাধারণত আমাদের মস্তিষ্কে সেই ছবি ফুটে ওঠে। পরে রঙ ও তুলির ছোয়াঁয় আমরা মস্তিষ্কের কল্পনার সেই ছবিরই পুনরাবৃত্তি করি। পুনরাবৃত্তির এই প্রক্রিয়া মস্তিষ্কের স্মরণশক্তি বাড়াতে ও ভারসাম্য রক্ষা করতেও সাহায্য করে। গবেষণা জানায়, যাদের কম বয়স থেকেই ছবি আঁকার অভ্যাস রয়েছে, তারা বৃদ্ধ বয়সে  ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমারের মতো স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার রোগে কম আক্রান্ত হন। তা ছাড়া কিশোর বয়সে মস্তিষ্ক বিকাশের সময়ে ছবি আঁকার বিভিন্ন প্রক্রিয়া স্মরণশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

সমস্যা সমাধানে দক্ষতা বাড়ায়

নিজের মনের মতো কোনো ছবি আঁকতে চাইলে সেটি সম্পন্ন করতে গেলে পূরণ করতে হয় বেশ কয়েকটি ধাপ। ছবির চরিত্রগুলো কেমন আকৃতির হবে, কী ধরনের কাগজ ও তুলির ব্যবহার হবে, কোন কোন রঙ ব্যবহার করলে ছবিটি দেখতে সামঞ্জস্যপূর্ণ  লাগবে- এ সবকিছু সমাধানের মধ্য দিয়েই ক্যানভাসে ফুটে ওঠে মনের মতো চিত্র। ছবি আঁকার সময় বিভিন্ন ধাপে যাচাই করা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই প্রক্রিয়া মস্তিষ্কের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়িয়ে তোলে। কিশোর বয়সে সমস্যা সমাধানে দক্ষতা বাড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অংশ নেওয়া, বয়সের তুলনায় কঠিন কাজ করার অভিজ্ঞতা হিতে বিপরীত পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা ছবি আঁকার মতো বিভিন্ন সৃজনশীল ও সুকুমার বৃত্তির কাজের পরামর্শ দেন।

আত্মবিশ্বাস ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ

বয়ঃসন্ধিকাল থেকে ছেলে-মেয়েদের চিন্তা ও যুক্তি দিয়ে কোনোকিছু দেখার ক্ষমতা অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটতে শুরু করে। এ সময় ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে শুধু নিজের কল্পনার প্রতিচ্ছবিই ঘটে না। বরং নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, ভাবনা ও কোনো কিছুকে সূক্ষ্মভাবে দেখার ক্ষমতা তৈরি হয়। এতে করে পরিণত বয়সে যৌক্তিক ও দৃঢ় পর্যবেক্ষণসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পথ সুগম হয়। আবার কিশোর বয়সে সামান্য ভুলেও ছেলে-মেয়েরা হীনম্মন্যতায় ভোগে। ঠিক এভাবেই নতুন কিংবা কঠিন কোনো কাজ সম্পন্ন করতে পারলে সহজেই ইতিবাচক ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। পড়াশোনার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজে দক্ষতা তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা কিংবা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সময় কিশোর বয়সের এই আত্মবিশ্বাসী মনোভাব সাহস জোগায় ও কাজে দক্ষতা বাড়ায়।

আত্মোন্নতির ৩০ দিনের চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
আত্মোন্নতির ৩০ দিনের চ্যালেঞ্জ
ছবি: এআই

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রোজা রাখা। রমজানের ৩০ দিন নির্দিষ্ট সময় খাবার না খেয়ে থাকাই কিন্তু শুধু রোজা রাখার উদ্দেশ্য নয়। বরং ক্ষুধা সংযমের মতোই নিজেদের নেতিবাচক দিকগুলো ত্যাগ করার শিক্ষা নেওয়াই রমজানের উদ্দেশ্য। এই রমজানে কিশোর-তরুণদের মধ্যে প্রচলিত কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করে নিতে পারেন।

অপভাষা বর্জন 
স্ল্যাং বা অপভাষার সঙ্গে সারা বিশ্বের তরুণরাই পরিচিত। প্রতি বছর তরুণদের কথার মধ্য দিয়েই প্রচলিত হয় নিত্যনতুন অপভাষা। বন্ধুদের আড্ডায়, মজার ছলে, কাজের বিরতিতে কিংবা রাগ প্রকাশ করতে কখনো অর্থ না জেনেই অনেক অপভাষার প্রয়োগ করেন তরুণরা। তবে অনেক শব্দের অর্থই হয় অবমাননাকর, লিঙ্গ বৈষম্যমূলক ও কুরুচিপূর্ণ। রমজানের পরিবেশ ইতিবাচক ব্যবহারে উৎসাহ দেয়। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে বদলে নিতে পারেন অপভাষা প্রয়োগের অভ্যাস।

রাগ নিয়ন্ত্রণ
রোজা রাখা অবস্থায় বদমেজাজ কিংবা রাগারাগি প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে তো হবেই। পাশাপাশি এই মাস থেকেই চর্চা করতে পারেন মেজাজ নিয়ন্ত্রণের কৌশল। কোনো বিষয়ে উত্তেজনা অনুভব করলে করতে পারেন শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম। কিছুক্ষণ জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে মন শান্ত হয় ও রাগ কমে আসে। 

মাদকদ্রব্য পরিহার
মাদকাসক্তি মূলত নিয়মিত অভ্যাসের ফল। রোজা রাখার মধ্য দিয়ে মাদক গ্রহণের অভ্যাস থেকে বিরত থাকার সুযোগ পাওয়া যায়। পাশাপাশি এ সময় বই পড়া, প্রার্থনা, গঠনমূলক কাজের মধ্য দিয়ে সময় কাটানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এতে করে মস্তিষ্ককে মাদক গ্রহণের চিন্তা থেকে দূরে রাখা যাবে।

ঘুমের রুটিন
রাত জাগা ও সকালে দেরি করে ওঠার অভ্যাস অনেক কিশোর ও তরুণদের মধ্যেই আছে। কখনো কখনো এই অভ্যাসই পরিণত হয় ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগে। রমজানে রাতের শেষ ভাগে সাহরি খাবার কারণে পরিবর্তন আসে ঘুমের সময়েও। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেন ঘুমের রুটিন তৈরির কাজে। কারও কারও সাহরির আগ পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাস। এটি পরিত্যাগ করে রাতে জলদি শুয়ে পড়ুন ও ছয় ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিন। সাহরির প্রয়োজনে ঘুম থেকে ওঠা তো হবেই। এর মধ্য দিয়ে রাতে জলদি ঘুমানো এবং সকালে ওঠার অভ্যাসও গড়ে তোলা যাবে।

সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ
রমজান মাস ঘিরে ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ গড়ে ওঠে। সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ইফতার আয়োজন, ঈদ পোশাক, অর্থ প্রদানের উদ্যোগ নিয়ে থাকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবী কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজের দক্ষতা ও মানবিক মূল্যবোধ বাড়িয়ে তুলতে পারেন আপনিও।

জ্ঞানচর্চা
রমজানজুড়ে সাধারণত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকে। তাই এ সময় বাড়িতে নিরিবিলি অনেকটা সময় পাওয়া যায়। এ সময় প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার বাইরেও নিজের আগ্রহের বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। আবার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কিংবা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত, দক্ষতামূলক কাজও আয়ত্ত করতে পারেন।