ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বস্তি ফিরছে রাঙামাটির পর্যটনে

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পিএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ এএম
স্বস্তি ফিরছে রাঙামাটির পর্যটনে
ছবি: সংগৃহীত

মৌসুমের শুরুতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে রাঙামাটির পর্যটনে। গেল চারমাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করায় পর্যটক খড়ায় পড়া পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যে নামে ধস।

রাঙামাটি শহর, সাজেক ও কাপ্তাইয়ে কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না আসায় পর্যটনে ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। তবে মৌসুমের শুরুতেই ১ নভেম্বর থেকে পর্যটন উন্মুক্ত হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশায় আছেন ব্যবসায়ীরা।

আবাসিক হোটেল-রিসোর্ট, খাবারের দোকান (রেস্টুরেন্ট), পাহাড়িদের তৈরি টেক্সটাইল কাপড়, সড়ক ও নৌযান এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান  ঘিরেই মূলত রাঙামাটির  পর্যটন বাণিজ্যের পাঁচ খাত। গেল চার মাসে এই পাঁচ খাতে দৈনিক এককোটি ২০ লাখ টাকা হিসেবে ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা।

রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন- মৌসুমের শুরুতেই পর্যটন খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যটকদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ আগাম বুকিং পেয়েছি। জুলাই বিপ্লব থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গেল চারমাসে পর্যটন খাতে শত কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবো।

সাজেক হোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ বলেন- আমাদের রিসোর্টগুলো শুক্র ও শনিবার শতভাগ বুকিং হয়েছে। এখানে প্রায় সাড়ে চার হাজার পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারে। আশা করি এই মোসুমে ভালো ব্যবসা হবে।

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘পর্যটকরা আসছেন। স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে এই খাতে। নানান সংকটে পড়ে গত চারমাস খুবই মন্দা গেছে।  আশাকরি এই মৌসুমে ভালো আয় করতে পারবো।’

জিয়াউর রহমান/নাবিল/এমএ/

বেড়িয়ে আসুন হাজীগঞ্জ দুর্গ থেকে

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২০ পিএম
আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
বেড়িয়ে আসুন হাজীগঞ্জ দুর্গ থেকে
হাজীগঞ্জ দুর্গ পূর্ব দিক থেকে

শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ দুর্গের অবস্থান। দুর্গটি মোগল আমলের স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নিদর্শন। তবে অযত্ন-অবহেলায় এটি নষ্ট হতে চলেছে। অনেক আগেই দর্শনীয় এই স্থাপনার প্রধান ফটক খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ওয়াচ টাওয়ারটি ভেঙে পড়েছে। দুর্গের আশপাশের কিছু জায়গা প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সূত্রমতে, হাজীগঞ্জ দুর্গের পাশ দিয়ে একসময় শীতলক্ষ্যা নদী প্রবাহিত হতো। বর্তমানে দুর্গ থেকে নদী অনেকটা দূরে সরে গেছে। দুর্গ নির্মাণের তারিখ, এর নির্মাতা কে ছিলেন তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে দুর্গটি মোগল আমলের সপ্তদশ শতকে নির্মিত হয়েছিল বলে নানাভাবে জানা যায়। আরাকানি (মগ) জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে এটি নির্মিত হয়েছিল। অসমান বাহু ও ছয় কোণবিশিষ্ট দুর্গের উত্তরে রয়েছে প্রধান প্রবেশপথ। প্রবেশপথের সিঁড়িতে রয়েছে ১৯টি ধাপ। দুর্গের ছয় কোণায় নির্মিত বুরুজগুলো সম-আকৃতির নয়, তুলনামূলক দক্ষিণের বুরুজ দুটি বড়।
প্রাচীরবেষ্টিত দুর্গের মধ্যভাগে কোনো স্থাপনা নেই। দুর্গের ভেতরে পূর্ব দিকে বর্গাকার উঁচু একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে। দুর্গের জমির পরিমাণ ১৯ দশমিক ৬৪ একর। এটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত।
হাজীগঞ্জ দুর্গের নির্মাণকাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারও মতে ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে দুর্গটি নির্মিত হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন ১৬৫০ থেকে ১৬৬০ সালের মধ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। পঞ্চভুজ আকৃতির সীমানা প্রাচীরের দেয়ালে বন্দুক রেখে গুলি করার ছিদ্র রয়েছে। দুর্গের চারকোণে আছে চারটি বুরুজ। এ ছাড়া প্রাচীরের উপরে উঠার জন্য সিঁড়ি এবং এক কোণে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে কামান রাখার বেদি রয়েছে। ১৯৫০ সালে এই হাজীগঞ্জ কেল্লাটিকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করে বিভিন্ন ধাপে সংস্কার করে বর্তমান রূপ দেওয়া হয়।
বাংলাপিডিয়ার তথ্যমতে, মোগল সুবাদার ইসলাম খান ঢাকায় রাজধানী স্থাপন করেন। সম্ভবত এর কিছু দিন পরে নদীপথে আসা মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে দুর্গটি নির্মিত হয়। নদীর দিকের দুর্গের একমাত্র প্রবেশপথ থেকে বোঝা যায়, শুধু নদীপথেই দুর্গের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ দুর্গের ওয়াচ টাওয়ারটির কিছু অংশ ধসে পড়েছে। আশপাশে কিছু ঝোপঝাড় গজিয়েছে। অনেক স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে। দুর্গ দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চুক্তিভিত্তিক কর্মী মো. রায়হান। তিনি জানান, তারা সাধ্যমতো এর রক্ষণাবেক্ষণ করছেন।

হাজীগঞ্জ দুর্গ যাওয়ার উপায়
ঢাকার গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জগামী উৎসব, বন্ধন, হিমাচল, শীতল বাসে করে সোজা চাষাড়া। সেখান থেকে একটু সামনে এসে অটো স্ট্যান্ড থেকে অটোতে করে নবীগঞ্জ ৫ নম্বর ঘাট বা হাজীগঞ্জ কেল্লা।
ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুরের নারায়ণগঞ্জ শহরতলির প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনে করে চাষাড়া স্টেশন। চাষাড়া থেকে রিকশা হাজীগঞ্জ ফায়ার স্টেশন/নবীগঞ্জ ঘাট/কেল্লার কথা বললে নামিয়ে দেবে। হাজীগঞ্জ দুর্গ দেখে ৫ নম্বর খেয়াঘাট পার হয়ে ৫ টাকা জনপ্রতি। তার পর অটোরিকশা রিজার্ভ নিয়ে চলে যেতে পারেন সোনাকান্দা দুর্গে। অথবা ১০ টাকা জনপ্রতি দিয়ে ১ নম্বর খেয়াঘাট, সেখান থেকে জনপ্রতি ১০ টাকা দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে সোজা সোনাকান্দা কেল্লা। অটোরিকশা রিজার্ভ ৪০ টাকা।

হাজীগঞ্জ দুর্গের প্রবেশ তোরণ

 

কোথায় থাকবেন
ঢাকার খুব কাছে হওয়ায় এক দিনের মধ্যেই হাজীগঞ্জ কেল্লা ঘুরে আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রাতে থাকার জন্য আপনার কোনো চিন্তা করতে হবে না। তবে যারা দূর থেকে যাবেন তাদের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদরে থাকার বেশ ভালো ব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- হোটেল মেহরান, হোটেল সোনালি, হোটেল নারায়ণগঞ্জ, হোটেল সুগন্ধা, হোটেল সুরমা ও হোটেল রূপায়ণ ইত্যাদি।

আশপাশে আরও দর্শনীয় স্থান
সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘর, পানাম নগর, সোনারগাঁ তাজমহল, জিন্দা পার্ক, বারদীর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম, মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, সুবর্ণ গ্রাম পার্ক রিসোর্ট, বন্দরপাড়া মসজিদ, সোনাকান্দা কেল্লা, গোয়ালপাড়া হুসেন শহার মসজিদ, কিল্লারপুলে বিবি মরিয়মের মাজার প্রভৃতি।

কোথায় খাবেন
আশপাশে খাবারের ভালো ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের বিশেষ খাবারের মধ্যে কাইকারটেক হাটের পুতা মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারেন।

ভ্রমণে মেনে চলুন সাধারণ নিয়ম
ভ্রমণের সময় কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা আপনার ভ্রমণকে নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক করতে সাহায্য করবে। এখানে কিছু কাজ উল্লেখ করা হলো, যা ভ্রমণ করতে গিয়ে এড়িয়ে চলা উচিত। 
প্রতিটি জায়গার নিজস্ব নিয়ম এবং আইন থাকে। স্থানীয় নিয়ম ভাঙা আপনাকে সমস্যায় ফেলতে পারে, যেমন ট্রাফিক আইন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ইত্যাদি।
অপ্রয়োজনীয় মূল্যবান সামগ্রী (যেমন দামি গহনা) নিয়ে ভ্রমণ করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি চুরি বা হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
স্থানীয় সংস্কৃতি, ধর্মীয় প্রথা এবং সামাজিক আচরণের প্রতি অজ্ঞতা বা অবহেলা করা উচিত নয়। এটি স্থানীয় জনগণের সঙ্গে অশোভন আচরণের কারণ হতে পারে।
প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে পরিবেশের সুরক্ষা করতে হবে এবং নিজে যা নিয়েছেন তা ফিরিয়ে দেবেন।
খুব বেশি স্থান দেখার চেষ্টা করলে ভ্রমণের আনন্দ নষ্ট হতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং আনন্দের সময় রাখতে ভুলবেন না।
আপনার নিরাপত্তার জন্য সতর্ক থাকুন। অচেনা এলাকায় বা রাতে একা বের না হওয়া, জরুরি কন্ট্যাক্ট নম্বর সংরক্ষণ করা এবং নিজের জরুরি তথ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু স্থান নিরাপত্তার কারণে বা সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত থাকে। এসব জায়গায় অযথা যাওয়া উচিত নয়।

ঠাকুরগাঁও জেলার দর্শনীয় স্থান

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
ঠাকুরগাঁও জেলার দর্শনীয় স্থান
লোকায়ন জীবন বৈচিত্র জাদুঘর। ছবি: সংগৃহীত

উত্তরবঙ্গের একটি নয়নাভিরাম জেলা ও প্রাচীন জনপদ ঠাকুরগাঁও। ইতিহাস সমৃদ্ধ এই জনপদটিতে ছড়িয়ে আছে প্রাচীন সভ্যতার বহু মূল্যবান সম্পদ। এই জেলার দর্শনীয় স্থান ও জনপ্রিয় খাবার সম্পর্কে জানাচ্ছেন মোহনা জাহ্নবী

সদর উপজেলা

-বালিয়া মসজিদ
-লোকায়ন জীবন বৈচিত্র জাদুঘর

রাণীশংকৈল উপজেলা

-রাজা টংনাথের বাড়ি
-জগদল রাজবাড়ি
-রামরাই দিঘী

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা

-রূপগঞ্জ জমিদার বাড়ি
-ভবানী বাবু জমিদার বাড়ি
-সূর্যপুরী আমগাছ
-সনগাঁ মসজিদ

হরিপুর উপজেলা

-হরিপুর রাজবাড়ি

পীরগঞ্জ উপজেলা

-রাজভিটা

ঠাকুরগাঁও জেলার বিখ্যাত খাবার

-সূর্যপুরী আম

জাহ্নবী

মাদারীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম
মাদারীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরকে বলা হয় দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার। পদ্মা সেতু হওয়ার বদৌলতে দক্ষিণের জেলাগুলোর প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে। দক্ষিণের এই মাদারীপুর নামক জেলাটিতে আছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। সেসব দর্শনীয় স্থান, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং জনপ্রিয় খাবার সম্পর্কে জানাচ্ছেন মোহনা জাহ্নবী

সদর উপজেলা

-আলগী কাজি বাড়ি মসজিদ
-মিঠাপুর জমিদার বাড়ি
-কুলপদ্দি জমিদার বাড়ি বা হাওলাদার বাড়ি
-শশী রায়ের বাড়ি
-পর্বতের বাগান, সুরেশ চন্দ্র পোদ্দার জমিদার বাড়ি ও রাশবিহারি লজ
-যুধিষ্ঠির রায় জমিদার বাড়ি

রাজৈর উপজেলা

-রাজৈর জমিদার বাড়ি বা খালিয়া শান্তিকেন্দ্র
-রাজা রামমোহন রায়ের বাড়ি
-রাজা রাম মন্দির

কালকিনি উপজেলা

-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি

মাদারীপুর জেলার বিখ্যাত খাবার

-খেজুর গুড়
-রসগোল্লা

ঢাকা থেকে মাদারীপুর যাতায়াত ব্যবস্থা

মাদারীপুর যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো গুলিস্তান থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়া। বাসে মাত্র ২ ঘন্টার পথ। ভাড়া ৩৫০ টাকা।

জাহ্নবী

সাজেকে আটকা পড়েছেন ৫ শতাধিক পর্যটক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
সাজেকে আটকা পড়েছেন ৫ শতাধিক পর্যটক
রাঙামাটির সাজেক। ছবি : খবরের কাগজ

পাহাড়ের আঞ্চলিক দুই দলের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় রাঙামাটির সাজেক ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে। এতে পর্যটননগরী সাজেকে ঘুরতে এসে আটকা পড়েছেন প্রায় সাড়ে ৫০০ পর্যটক। 
 
মঙ্গবার (৩ নভেম্বর) রাতে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় ৪ নভেম্বর থেকে সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। 

এতে ভ্রমণে এসে আটকা পড়েছেন এসব পর্যটক।

এই নির্দেশনার ফলে সাজেকের বাঘাইহাট থেকে নতুন করে কোনো পর্যটক আজ সাজেকে প্রবেশ করতে পারবেন না। তেমনি সেখানে অবস্থান করা পর্যটকরাও নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারবেন না। 

তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এলে পর্যটকরা গন্তব্যে ফিরতে শুরু করবেন বলে জানিয়েছে বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয়রা বলছেন, গত ৩০ নভেম্বর থেকে সাজেকের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও প্রসীত খীসার ইউপিডিএফের অস্ত্রধারীদের মধ্যে থেমে থেমে বন্দুকযুদ্ধ চলছে। 

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার খবরের কাগজকে বলেন, ‘পাহাড়ি দুর্গম এলাকা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক অভিযান চালাতে পারছে না। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। তবে আজকেও দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধের কথা শুনেছি।’

তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছেন জেলা প্রশাসন। এতে ভ্রমণে আসা কিছু পর্যটক আটকা পড়েছেন। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাদের নিজ গন্তব্যে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে।

জিয়াউর জুয়েল/তাওফিক/অমিয়/

ট্রাভেল পাস নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলেন ৬৫৩ পর্যটক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২১ পিএম
ট্রাভেল পাস নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলেন ৬৫৩ পর্যটক

জটিলতা কাটিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে চলতি মৌসুমে ৬৫৩ জন পর্যটক নিয়ে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা করেছে এমভি বার আউলিয়া।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজটি ছেড়ে যায়।

জাহাজটি বিকেল নাগাদ দ্বীপে পৌঁছার কথা রয়েছে।

এমভি বার আউলিয়ার পরিচালক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

এর আগে গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।

ওইদিন কেয়ারী সিন্দাবাদ জাহাজ সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা থাকলেও পর্যটক সংকটের কারণে যাত্রা বাতিল করে।  

এমভি বার আউলিয়ার পরিচালক বলেন, রবিবার তিনটি জাহাজ ছাড়ার পরিকল্পনা থাকলেও ছেড়েছে কেবল এমভি বার আউলিয়া। জাহাজটিতে ৮৫০ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতা থাকলেও যাচ্ছেন ৬৫৩ জন।

রবিবার পর্যন্ত এই রুটে কেয়ারী সিন্দাবাদ ও এমভি বার আউলিয়া ছাড়াও কর্ণফুলী এক্সপ্রেস চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। তবে যাত্রী সংকটের কারণে বার আউলিয়া ছাড়া অপর দুটি জাহাজ সেন্টমার্টিন যায়নি।  

সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির আহ্বায়ক এবং কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মেনে পর্যটকরা আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। দৈনিক দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন।

ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে সপরিবারে সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন ওবাইদুর রহমান। তিনি বলেন, দ্বীপে দুই দিন থাকার পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছি। তাদের মতো অনেকেই দুএকদিন থাকার প্রস্তুতি নিয়েই সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন বলে জানান।

জেটিতে জাহাজে উঠার সিঁড়িতে পর্যটকদের হাতে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক আছে কিনা, তা তদারকি করতে দেখা যায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।

পর্যটকরা যাতে জাহাজে পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন। 

তিনি বলেন, পর্যটকদের পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। জাহাজে যাতে কোনোভাবে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর থাকবে পরিবেশ অধিদপ্তর।

এদিকে সকালে পর্যটকবাহী জাহাজ পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।  

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক ভ্রমণ এবং জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে কক্সবাজার থেকে জাহাজ চলাচলের ঘাট নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা কার্যকর করতে এ সংক্রান্তে গঠিত কমিটি কাজ করবে।  

গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজ নিয়ন্ত্রণে যৌথ কমিটি গঠন করা হয়।  

আদেশে বলা হয়, সেন্টমার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। ওই মন্ত্রণালয়ের গঠন করা যৌথ কমিটি এসব বিষয় দেখভাল করবে। 

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে করা হয়েছে সদস্যসচিব।  

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মায়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটনের জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ার পর ইনানী সৈকতে স্থাপিত নৌ-জেটি ব্যবহার করে সেন্টমার্টিনে পর্যটক পরিবহন হতো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ইনানী জেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখান থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

মুহিববুল্লাহ মুহিব/অমিয়/