আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা ও দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা বিবেচনায় পূর্বঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি থেকে সরে এসেছে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। এদিকে শনিবার পুলিশি বাধার মুখে পড়ে ইনকিলাব মঞ্চের পদযাত্রা। পরে তারা কর্মসূচি স্থগিত করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে পদযাত্রা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে শাহবাগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদী দুই দফা দাবিসহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পাঁচ দফা দাবি থেকে সরে এসে দুই দফা দাবি জানাচ্ছি। আজ থেকে আগামী এক মাস আমরা প্রতিদিন লিফলেট বিতরণ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করব। আগামী ২৫ এপ্রিল বিকাল ৩টার সময় শাহবাগ মোড়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং জুলাই, শাপলা ও পিলখানা হত্যার বিচার দাবিতে শহিদি সমাবেশ ঘোষণা করছি।’
ইনকিলাব মঞ্চের দাবিগুলো হলো- জুলাই, পিলখানা, শাপলা গণহত্যার বিচার ও গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব দাবিতে শনিবার শাহবাগে জড়ো হয়ে শহিদ মিনারের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করে ইনকিলাব মঞ্চ। শাহবাগ থেকে শহিদ মিনারের দিকে মিছিল নিয়ে এগোতে থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবির হাট এলাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ফিরে যান।
এদিকে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোর শহিদ মিনার থেকে গণপদযাত্রার কথা থাকলেও তারা কর্মসূচি থেকে সরে আসে। দুপুরে শহিদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত একটি সমাবেশ থেকে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এ সময় তারা সাত দফা দাবি ঘোষণা করেন। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন দাবিগুলো ঘোষণা করেন।
দাবিগুলো হলো- আছিয়াসহ সব হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার; ‘ব্যর্থ’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ; জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার; মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলাকারী মব সন্ত্রাসীদের বিচার; চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ, যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার; সাগর-রুনী, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত হত্যার বিচার এবং হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা, লুটপাটের বিচার করতে হবে।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।’
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল), পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত, বাম ঘরানার আটটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা দেশে হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের প্রতিবাদ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে গণমিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে শহিদ মিনার থেকে তাদের সরে যেতে আলটিমেটাম দিয়েছিল ইনকিলাব মঞ্চ।