![সিলেটে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন](uploads/2024/04/08/1712546599.Sylhet.jpg)
সিলেট নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার গৃহিণী তাসমিনা বেগম। গত শনিবার রাত পৌনে ১২টায় সাহরি রান্নার জন্য আয়োজন শুরু করেন। মাছ কাটা শেষে সবজি কাটা শুরু করতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে মোমবাতি জ্বালিয়ে রান্না শুরু করেন তিনি।
তাসমিনা বলেন, ‘রাত ১২টায় বিদ্যুৎ চলে যায়। ঘণ্টাখানেক পর বিদ্যুৎ এলেও ১০ মিনিটের ভেতর আবারও চলে যায়। পরে মোমবাতি জ্বালিয়ে রান্না শেষ করেছি। সারা দিন বিদ্যুৎ থাকে না, তাই লাইটেও চার্জ নেই। এরপর রাত সাড়ে ৩টায় বিদ্যুৎ আসে। সাহরি খাওয়া শেষ করে বিছানায় ঘুমাতে গেলে আবারও বিদ্যুৎ চলে যায়।’
একদিকে রোজা, অপরদিকে গরম। এর মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকে না বিদ্যুৎ। ঘন ঘন এই লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ইফতার আর সাহরিতে কিছু সময় বিদ্যুৎ থাকলেও দিনে-রাতে আট থেকে দশবার বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে নগরীর বাসিন্দাদের। এই লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রোজাদাররা।
এ ছিল সিলেট নগরীর চিত্র। কিন্তু গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। গ্রামে বেশির ভাগ সময় ইফতার ও সাহরি অন্ধকারেই করতে হচ্ছে।
সিলেট সদর উপজেলার মোগলাগাঁও এলাকার বাসিন্দা রজব আলী বলেন, ‘একদিকে গরম, অন্যদিকে রোজা। মাঝেমধ্যে ঝড়-তুফানও হচ্ছে। এর মধ্যে দিনে-রাতের বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। এই রোজার সময় সাহরি ও ইফতারও শান্তিতে করা যাচ্ছে না।’
অন্যদিকে এই লোডশেডিংয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষজনকে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, একটু পরপর বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় বারবার জেনারেটর চালু করতে হচ্ছে। খরচ বাড়ার পাশাপাশি আমাদের বিড়ম্বনাও বেড়েছে। এভাবে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে ক্রেতারও বিরক্ত হন।
অন্যদিকে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্রাহকদের মধ্যেও বেড়েছে ক্ষোভ। বিদ্যুতের দাবিতে গত মঙ্গলবার রাতে সড়ক অবরোধ করেন ওসমানী নগরের বাসিন্দারা। এর আগে ৩১ মার্চ রাতে দক্ষিণ সুরমার বড়ইকান্দি এলাকার বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৩-এর কেপিআইভুক্ত কন্ট্রোল রুমে ঢোকেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর রায়হান হোসেনসহ দুই ব্যক্তি। পরে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৩-এর সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুদ রানাকে মারধর করেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, সিলেট মহানগরীতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দিন-রাতে আট থেকে দশবার বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সাহরি ও ইফতারের সময় লোডশেডিং হওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন রোজাদাররাও। সেই সঙ্গে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঈদ সামনে রেখে কেনাকাটা করতে আসা মানুষজনকে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, বিদ্যুৎ সরবরাহ চাহিদার অর্ধেক হওয়ায় এমন লোডশেডিং অব্যাহত রয়েছে।