![পরিবার-সমাজ থেকে শিশুরা অসৎ হওয়ার শিক্ষা পায়’](uploads/2024/05/24/Jessore-1716522712.jpg)
‘সব শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় সততা নিয়ে জন্ম নেয়। কিন্তু এরপর পরিবার ও সমাজ থেকে শিশুরা অসৎ হওয়ার শিক্ষা পায়। এ কারণে শিশুকে প্রথমে পরিবার থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততার বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। আর সেই কাজ করে যাচ্ছে ‘সততা স্টোর’। প্রতিটি স্কুলে ‘সততা স্টোর’ সততা চর্চার একটি অন্যতম প্লাটফর্ম। এটি একটি প্রতীক। নতুন প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং অল্প বয়স থেকেই দুর্নীতিবিরোধী নৈতিকতায় উদ্বুদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) যশোর জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে ‘দুর্নীতির সময় শেষ গর্ব সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের শিক্ষাবৃত্তি, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোরে অর্থ দেওয়া ও শিক্ষার্থী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল-আমিন। প্রধান অতিথি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারে সততা স্টোর গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোয়েব হোসেন ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ।
বক্তারা বলেন, ‘সততা স্টোর’ থেকে যেসব শিক্ষার্থী পণ্য কিনছে, তারা পণ্য কেনার পাশাপাশি তাদের দিতে হচ্ছে সততা এবং বিবেকের পরীক্ষা। যে কেউ চাইলে এখান থেকে মূল্য পরিশোধ না করে চুপিচুপি পণ্য নিয়ে চলে যেতে পারবে। কিন্তু তারা সেটা করছে না। অর্থাৎ সরকারের এ উদ্যোগ সার্থক হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল-আমিন বলেন, যশোরের ১৭৫টি স্কুলে সততা স্টোরে টাকা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঝে সততা স্টোরের টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুদকের পক্ষ থেকে ১৪ জনকে উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণও এ অনুষ্ঠানে বিতরণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘কৈশোরেই শিক্ষার্থীরা লোভ-লালসা ত্যাগ করে সততার সঙ্গে বেড়ে ওঠার ‘হাতে-কলমে’ নতুন পাঠ নেবে। সততা স্টোর হচ্ছে- স্কুল প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিক্রেতাবিহীন দোকান। এসব দোকানে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণের পাশাপাশি বিস্কুট, চিপস, চকলেট ইত্যাদি রাখা হয়। প্রতিটি সততা স্টোরে পণ্যের মূল্য তালিকা ও পণ্য মূল্য পরিশোধের জন্য ক্যাশ বাক্স রাখা হয়। কোনো বিক্রেতা থাকে না। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে তারাই ক্যাশ বাক্সে পণ্যের মূল্য দিয়ে রাখবে। এভাবেই শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে শিখবে সততার প্রথম পাঠ।’
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, যশোরের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে যশোর ও নড়াইল জেলার ২৪টি বিদ্যালয়ে সততা স্টোর স্থাপনের জন্য স্কুলপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যশোর ও নড়াইল জেলার ২৫০টি বিদ্যালয়ের অনুকূলে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে যশোর জেলার ১৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর সদর উপজেলায় ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সাতটি উপজেলায় ২০টি করে ১৪০টি প্রতিষ্ঠানে এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।