ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

গাজীপুরে আগুনে পুড়ল এক কলোনির ৭০ ঘর

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
আপডেট: ২৪ মে ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম
গাজীপুরে আগুনে পুড়ল এক কলোনির ৭০ ঘর
ছবি : খবরের কাগজ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার একটি কলোনির ৭০টি বসতঘর আগুনে পুড়ে গেছে। শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে মৌচাকের তেলিরচালা এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।

কলোনির বাসিন্দা গার্মেন্টস্ শ্রমিক লতিফ জানান, কালিয়াকৈরের তেলিরচালা এলাকায় স্থানীয়দের কাছ থেকে জায়গা ভাড়া নিয়ে সারোয়ার ও সুফিয়ানসহ কয়েক ব্যক্তি ঘর তুলে গার্মেন্টস্ শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষদের কাছে ভাড়া দিয়েছিলেন। শুক্রবার দুপুরের দিকে সারোয়ারের কালোনিতে আগুন লাগে। তাৎক্ষণিক আগুন লাগার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসে জানানো হয়। তার দাবি, আগুনে কলোনির চারটি গলির প্রায় ৭০-৮০টি ঘর পুড়ে গেছে। 

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন জানান, শুক্রবার দুপুর ১টা ১৫মিনিটে কলোনিতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কালিয়াকৈর ও কোনাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় দুপুর ২টা ১৫মিনিটে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে তাৎক্ষণিক আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

এমএ/

 

মাধবদী পৌরসভা দুর্বৃত্তের আগুনে ৬ কোটি ২ লাখ টাকার ক্ষতি

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
দুর্বৃত্তের আগুনে ৬ কোটি ২ লাখ টাকার ক্ষতি
ছবি : খবরের কাগজ

নরসিংদীতে ১৯ জুলাই বিকেলে কোটা আন্দোলনের সময় মাধবদী পৌরসভায় তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় ‘মেয়রকে হত্যার’ উদ্দেশ্য করে পৌর কার্যালয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। মেয়রকে না পেয়ে আগুন জ্বালিয়ে পৌরসভার বিভিন্ন কক্ষ জ্বালিয়ে দেয় তারা। একই সময় পৌর ভবনের নিচতলায় থাকা দুটি গাড়ি, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ পৌরসভার সবগুলো কক্ষ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এতে মূল্যবান নথিপত্রসহ প্রায় ৬ কোটি ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান পৌর মেয়র হাজি মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক।

ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পৌর মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোটাবিরোধীরা আন্দোলন করেছে মহাসড়কে। তাদের মধ্যে দুষ্কৃতকারীদের কেউ ইন্ধন দিয়ে দেয় আমাকে হত্যার জন্য। তারা আমাকে না পেয়ে পৌর কার্যালয়ে তাণ্ডব চালায়। এ ছাড়া দুষ্কৃতকারীরা আমার বাড়িতে গিয়েও খোঁজে। সেখানে না পেয়ে তারা পৌর শহরের আনন্দি মোড়ে সোনালি টাওয়ারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা অস্ত্রধারী ছিল। তারা ককটেল ফোটায় ও গুলি করে। আমরা ভবনের ওপর থেকে খালি হাতে জীবন বাঁচাতে দুষ্কৃতকারীদের ইট-পাটকেল ছুড়ি।’ তিনি বলেন, ‘বাজারের ভেতরে এমবি টাওয়ারে যারা বসেছিল তারা যদি আসতো, আমাদের ওপর হামলা করতে পারত না তারা।’

মেয়র আরও বলেন, ‘মেহেপাড়ায় হুমায়ুনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে হামলা করা হয়। তাদের একটি গ্রুপ আমার ওপরে হামলা করার চেষ্টা করে।’

এ ছাড়া পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেনকে সহযোগিতা করার জন্য পুলিশসহ স্থানীয় এমপিকে ফোন করেও কারও সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

গত ১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাধবদী বড় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে যায় কোটা আন্দোলনকারীরা। এ সময় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আগুন দেয় তারা। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মাধবদী থানা ঘেরাও করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় কোটা আন্দোলনকারীদের। পরে শুক্রবার বিকেলে মাধবদী পৌর কার্যালয়, পোস্ট অফিস ও সোনালি টাওয়ারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

অরাজকতা রুখতে মাঠে ছিলাম, এখনো আছি : মেয়র লিটন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৩ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৩ এএম
অরাজকতা রুখতে মাঠে ছিলাম, এখনো আছি : মেয়র লিটন

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যেকোনো অরাজকতা রুখতে আমরা মাঠে ছিলাম, এখনো আছি।’

ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে গতকাল শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীর বড় মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
 
মেয়র বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমরা শুরু থেকেই পর্যবেক্ষণ করেছি। আমাদের কাছে মনে হচ্ছিল, এটা হয়তো ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হবে এবং কয়েক দিন যেতে না যেতেই সেটা প্রমাণিত হতে শুরু করল। ওই সময় থেকেই আমরা সতর্ক হয়ে যাই। জনগণের জানমাল রক্ষা ও কেউ যাতে অরাজকতা করতে না পেরে, সে জন্য আমরা মাঠে ছিলাম। আমরা এতে সফল হয়েছি। জেলার শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, সাধুবাদ জানিয়েছেন।’

এর আগে, বড় মসজিদে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। জুমার নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এরপর দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুমারপাড়ার মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঢাবির হলগুলোতে ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৫ পিএম
ঢাবির হলগুলোতে ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর
ঢাবির হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। ছবি: খবরের কাগজ

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে প্রায় ৩০০ কক্ষে ভাঙচুর করেছে। ইতোমধ্যে হলগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণও করা হয়েছে, শিগগিরই হলগুলো সংস্কার করে খোলার পরিকল্পনা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন করেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। এসময় তিনি ভাঙচুর হওয়া বিভিন্ন হলের কক্ষ পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ডিভিশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলসমূহের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিকট হতে আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে হলগুলোর কক্ষের পাশাপাশি অনেক স্থপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলোও সংস্কার করার পরিকল্পনা রয়েছে। সংস্কার শেষে দেশব্যাপী স্থিতিশীলতা বিরাজ করলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি প্রস্তুত হলে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে।’

কবে নাগাদ খুলবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে একটি অর্থ প্রাপ্তির বিষয় রয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে ইউজিসিকে এই আর্থিক বরাদ্দ দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। সেখানে আবার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের বিষয় রয়েছে। পরবর্তীতে টেন্ডার ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) অনুসরণ করে কাজগুলো সম্পাদন করতে হবে। যেই সময়টি প্রয়োজন এতোটুকু সময় তো প্রয়োজন। এখন টেন্ডার দেওয়ার পর সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব কবে কাজ শেষ হবে। এরপর আমরা খোলার সিদ্ধান্ত নেবো।’

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর: গত ১৭ জুলাই রাত ১২টা অভিযোগ ওঠে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসাইনসহ ৯ ছাত্রলীগ নেত্রী হলের কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করার। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে, ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা এবং ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাদের টেনে-হিঁচড়ে হল থেকে বের করে দেয়। পরে রোকেয়া হলে ‘সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ’- এই মর্মে একটি বিবৃতি প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে স্বাক্ষর করে নেন। 

একে-একে রাতের বিভিন্ন সময়ে শামসুন নাহার, কবি সুফিয়া কামাল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর ভোরে ছাত্রলীগ উৎখাত করে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান, এরপর সকাল সাতটা থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হল, সকাল সাড়ে আটটা থেকে কবি জসিম উদ্দীন হল, বিজয় একাত্তর, মাস্টার দা’ সূর্য সেন, মুহসীন, স্যার এ এফ রহমান এবং সবশেষ সলিমুল্লাহ মুসলিম হল নিয়ন্ত্রণে নেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এসময় হলে থাকা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের তাড়িয়ে দেন কেউবা আগেই সটকে পড়েন। একেবারেই ছাত্রলীগ শূন্য হয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো।

পরে আন্দোলনকারী বেছে বেছে পদধারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর এবং জিনিসপত্র বাহিরে ফেলে দেন। এ এফ রহমান হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের ৩১৮ নম্বর কক্ষ, কবি জসিম উদ্দীন হলে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কক্ষ, বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের পদ্মা-৭০১০ কক্ষ ও সূর্যসেন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়নের ৩৪৪ নম্বর ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে একটি এবং সূর্যসেন হলের সামনে আরেকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় আন্দোলনকারী।

পরবর্তীতে ওইদিন সকালেই জরুরি সিন্ডিকেটের সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত আসে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধে হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এর পরপরই পুরোপুরিভাবে হল ছাড়তে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যদিও এর আগে গত ১৫ ও ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল, শহীদুল্লাহ্ হল এনং ফজলুল হক হল দখলে নেন আন্দোলনকারীরা।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের জন্য চট্টগ্রামে দোয়া

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের জন্য চট্টগ্রামে দোয়া

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় চট্টগ্রাম নগরীর পাড়া-মহল্লার মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে। এ সময় ইসরায়েলের বর্বরোচিত আক্রমণ থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়। এতে অসংখ্য মুসল্লি অংশ নেন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ এ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করে। 

চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন খবরের কাগজকে বলেন, নগরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মসজিদে জুমার নামাজের পর কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দোয়া চেয়ে মোনাজাত করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছি। আজ (শুক্রবার) দেড় হাজার মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচি চলবে। মূলত কারফিউতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কাজ করতে না পারায় তারা যেন কষ্টে না পড়েন, সে লক্ষ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।’ 

উল্লেখ্য, গত ১৬ ও ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম নগরী। এই দুই দিন দফায় দফায় নগরের মুরাদপুর ও বহদ্দারহাটে শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়া নগরের কোতোয়ালি, নিউ মার্কেট, নতুন ব্রিজ, বাকলিয়া এলাকাও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই দুই দিনে তাৎক্ষণিক ৫ জন ও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ মারা যান। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ; যাদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ। গত ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ শুরু হলে নগরে থেমে যায় সংঘর্ষের ঘটনা।

ছয় জেলায় দুই কাউন্সিলরসহ গ্রেপ্তার ৮৪

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৪ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৩ পিএম
ছয় জেলায় দুই কাউন্সিলরসহ গ্রেপ্তার ৮৪
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতার মামলায় সারা দেশে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জেলায় অভিযান চালিয়ে ৮৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৬৮ জন, দিনাজপুরে ৯, নারায়ণগঞ্জ ও মেহেরপুরে দুই কাউন্সিলর, খুলনায় ৩ ও নড়াইলে ২ জন। খবরের কাগজের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

চট্টগ্রামে ৬৮ জন গ্রেপ্তার

নাশকতার বিভিন্ন মামলায় চট্টগ্রামে আরও ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে চট্টগ্রামে ৮০৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এদিকে গতকাল নগরের ডবলমুরিং থানায় ৩১ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৭ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত সিএমপিতে মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮টিতে। অন্যদিকে জেলা পুলিশের আওতাধীন ১৬টি থানায় মামলা হয়েছে ১১টি। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র কাজী তারেক আজিজ ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলর ইস্রাফিল গ্রেপ্তার

নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ইস্রাফিল প্রধানকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কাউন্সিলর ইস্রাফিল প্রধান দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

দিনাজপুরে কাউন্সিলরসহ ৯ জন গ্রেপ্তার 

দিনাজপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা মো. আব্দুল্লাহসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে গত তিন দিনে ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, পুলিশের কাছে সুস্পষ্ট তথ্য আছে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে শহরে নাশকতা চালিয়েছেন। পুলিশ তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছে। তাদের ধরতে চিরুনি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

মেহেরপুরে বিএনপি নেতা বাবলু গ্রেপ্তার 

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলুকে (৫৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে গাংনী থানা-পুলিশ তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। বাবলু গাংনী শহরের চৌগাছার বাসিন্দা। তিনি সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, কয়েক মাস আগে নাশকতার একটি মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নড়াইলে যুবদল নেতাসহ ২ জন গ্রেপ্তার

নড়াইলে নাশকতার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজ নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তি ব্যক্তিরা হলেন নড়াগাতি থানা যুবদলের আহ্বায়ক মিজান মীর (৪৯) ও ছাত্রদল কর্মী সাজেদুল ইসলাম (২৪)। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, নাশকতার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

খুলনায় ৩ জন গ্রেপ্তার

নাশকতার মামলায় খুলনা নগরীর যুবদলের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আলী খানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে নাশকতার তিনটি মামলায় গত ১০ দিনে খুলনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৯৩ জন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে যারা ইন্ধন দিয়েছেন তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মাগুরায় আটক ৫০ জন 

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আন্দোলন, সংগ্রাম, নিহতের ঘটনা ঘটলেও মাগুরার পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। মাগুরাতে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আন্দোলনের সময় ১৭ জুলাই জেলার শ্রীপুর উপজেলা সদরে ও ১৮ জুলাই জেলা শহরের ভায়নার মোড়ে কিছু সময়ের জন্য আন্দোলনে যুক্ত হয় শিক্ষার্থীরা। শ্রীপুর উপজেলার আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও জেলা শহরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা দাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কলিমুল্লাহসহ পুলিশের একাধিক সদস্যের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করে। তবে নতুন করে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে কারণে পুলিশ প্রায় ৫০ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ।