![চট্টগ্রামে বিক্রি করা নবজাতককে মায়ের কোলে ফেরত](uploads/2024/07/04/CTG-infant-1720066068.jpg)
আগের দুই সন্তান মেয়ে, তাই তৃতীয় সন্তানও মেয়ে হওয়ায় বিক্রি করে দিলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক।
বিক্রির এক দিন পর খবরটি জানাজানি হলে বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মা-বাবার কোলে ফেরত দিয়েছেন সেই নবজাতককে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মরিয়মনগর ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরো খবরের কাগজকে বলেন, ‘নবজাতককে বাবা-মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্রি করা ৫০ হাজার টাকাও ফেরত দেওয়া হয়েছে ওই দম্পতিকে। এ ছাড়া অটোচালকের পরিবারকে দুই মাসের বাজার করে দেওয়া হয়েছে, যেন দুই মাস অনায়াসে সংসার চালাতে পারেন তারা।
জানা যায়, গত ২৭ জুন রাতে প্রসববেদনা উঠলে উপজেলার দোভাষী বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মরিয়মনগর ইউনিয়নে ওই অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী সুমি আক্তারকে। ২৯ জুন সকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি মেয়ের জন্ম দেন ওই নারী। পরে নবজাতকের বাবা গত মঙ্গলবার ১৪ বছর ধরে নিঃসন্তান থাকা এক দম্পতির কাছে ৫০ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করে দেন। একই দিন ওই হাসপাতালে এক আত্মীয়ের জন্য রক্ত দিতে গিয়ে বিষয়টি দেখতে পান পারভেজ হোসেন নামের এক যুবক। নবজাতক বিক্রির বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট দেন তিনি। ফলে ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নবজাতকের বিষয়টি সামনে আনা যুবক পারভেজ হোসেন বলেন, হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পারায় চুক্তিপত্র করে মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছে বাবা। এটি খুবই অমানবিক ও মর্মান্তিক। বিষয়টি জানাজানি হলে অটোরিকশাচালকের বাড়িতে ও বাড়ির বাইরে ভিড় জমায় স্থানীয় লোকজন। এ সময় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে স্থানীয় এক ব্যক্তি সব টাকা পরিশোধ করে নবজাতকে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ওই সংগঠন থেকে নবজাতকের লালন-পালনের খরচও দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহবুব বলেন, ‘সন্তান বিক্রির ঘটনাটি খুবই অমানবিক ও মর্মান্তিক। অভাবে হয়তো সন্তান বিক্রি করেছে। কিন্তু বিষয়টি আমরা জানার পর নবজাতকটি মা-বাবার কোলে ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওই অটোরিকশাচালকের পরিবারের সংসার চালানোর জন্য বাজার করে দেওয়া হয়েছে।