একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। অভিনয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ার তার। এখনো কাজ করছেন নিয়মিত। অভিনয় থেকে শুরু করে পরিচালনা সবই চালিয়ে যাচ্ছেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা।
গত ১০ বছর ধরে নিজের আত্মজীবনী লিখেছেন তিনি। এর নামকরণ করেছেন ‘রবি পথ’। অবশেষে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে তার এই আত্মজীবনীমূলক বই। আজ (২ নভেম্বর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয়েছে রবি পথের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
‘রবি পথ- কর্মময় ৮০’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি খ্যাতিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা।
আবুল হায়াতের আত্মজীবনী রবি পথের প্রচ্ছদ এঁকেছেন তার বড় মেয়ে নন্দিত অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত। বইটি প্রকাশ হচ্ছে সুবর্ণ প্রকাশনী থেকে।
আত্মজীবনী সম্পর্কে আবুল হায়াত বলেন, ‘জন্ম থেকে এই পর্যন্ত যেসব কথা মনে হয়েছে বলা দরকার, বলেছি। আবার অনেক কথা হয়তো বলা দরকার ছিল, কিন্তু বলা হয়নি। লিখতে গেলে বোঝা যায়, কোনটা লেখা দরকার, আবার কখনো মনে হয় অনেক বিষয়ে না লিখলেই ভালো। তবু, সব মিলিয়ে নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা করেছি এই বইয়ে। আমার বিশ্বাস পাঠকদের ভালো লাগবে। এই বইয়ের মাধ্যমে আমাকে পুরোপুরি জানতে পারবে সবাই।’
১৯৬৯ সালে ‘ইডিপাস’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে তার অভিনয়ের অভিষেক হয়। তারপর থেকে টিভি নাটক, সিনেমায় আর বিজ্ঞাপনে সফলতার সঙ্গে অভিনয় করে আসছেন তিনি। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত অনেক নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। ‘মিসির আলি’ চরিত্রে অভিনয়টি তার বিশেষ কাজ। এর বাইরে ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’ ধারাবাহিকগুলোতে আবুল হায়াতের অভিনয় ছিল অনবদ্য। তার অসংখ্য খণ্ড নাটকও মুগ্ধ করেছে দর্শকদের।
অভিনয়ের মতো পরিচালনাতেও সফল হয়েছেন আবুল হায়াত। বেশ কিছু খণ্ড নাটক নির্মাণ করে তিনি প্রশংসা পেয়েছেন। তার পরিচালনায় ‘জোছনার ফুল’ নাটকটি বিটিভিতে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল। পরিচালনার পাশাপাশি নাটকটিতে অভিনয়ও করেছেন তিনি। একজন মঞ্চ অভিনেতা হিসেবেও আবুল হায়াত পেয়েছেন দর্শকদের ভালোবাসা। তার বেশ কিছু নাটক নতুনদের সৃষ্টিশীল অভিনয়ে উৎসাহ দেয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, আসাদুজ্জামান নূরের চিত্রনাট্য ও নির্দেশনায় বিদেশি নাটক অবলম্বনে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকটি। ১৯৭৮ সালে এতে অভিনয় করে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন আবুল হায়াত।
আবুল হায়াত সাহিত্যিক হিসেবেও পরিচিত। তার লেখা প্রথম উপন্যাসটি বের হয় ১৯৯১ সালের বইমেলায়। উপন্যাসটির নাম ছিল ‘আপ্লুত মরু’। এরই ধারাবাহিকতায় একে একে বের হয় ‘নির্ঝর সন্নিকট’, ‘এসো নীপ বনে’ (তিন খণ্ড), ‘অচেনা তারা’, ‘জীবন খাতার ফুট নোট’, (দুই খণ্ড) ও ‘জিম্মি’।
কলি