গাজার যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান আল-থানি।
মঙ্গলবার (১৪ মে) এ তথ্য দেন তিনি। পাশাপাশি জানান, ইসরায়েলের রাফায় অভিযান শুরু করার কারণেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাসের প্রথমদিকে রাফায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে মিসরের সঙ্গে গাজার যে সীমান্তটি রয়েছে, তা বন্ধ হয়ে গেছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এতে করে আগে থেকেই চলমান কঠিন পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল হয়ে গেছে।
আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছিল জানিয়ে দোহায় এক অর্থনৈতিক ফোরামে শেখ মোহাম্মদ বলেন, ‘বিশেষ করে গত সপ্তাহে আমরা কিছু গতিশীলতা তৈরি হতে দেখছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সবকিছু ঠিক পথে এগোয়নি এবং আমরা এখন প্রায় স্থবির পরিস্থিতিতে পৌঁছেছি। অবশ্যই রাফায় যা হয়েছে, তা আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে।’
রাফার পূর্ব অংশে ইসরায়েলি ট্যাংক প্রবেশ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার ওই অঞ্চলের ভেতরের দিকে আরও বেশকিছু স্থানে পৌঁছেছে তারা। প্রায় সাত মাসের যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলি অভিযানের জেরে এখন তাদের সেই আশ্রয় থেকেও সরতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি তাদের ঠেলে দিচ্ছে মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে। পুরো গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায়। ফলে তাদের যাওয়ার মতো কোনো স্থান নেই।
পরিস্থিতি ঠিক করার লক্ষ্যে কাতার নিজ কাজ অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন শেখ মোহাম্মদ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবার জন্যই এটি স্পষ্ট করতে চাই যে, আমাদের কাজ মধ্যস্থতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমরা সেটিই চালিয়ে যাব, আমরা সেটিই করা অব্যাহত রাখব।’ শেখ মোহাম্মদ জানান, দুই পক্ষের মধ্যে জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধের অবসান নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ যুদ্ধে ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। যুদ্ধ শুরু হয় হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আক্রমণের মধ্য দিয়ে। সে সময় প্রায় ১২০০ ইসরায়েলি মারা যান। এ ছাড়া হামাস জিম্মি করে নিয়ে আসে ২৫২ জনকে। পরে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। তবে শুরু থেকেই তারা নির্বিচার গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা শুরু করে। যাতে ক্ষয়ক্ষতি হয় বেসামরিক মানুষেরই বেশি। এ নিয়ে একাধিকবার আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করা সত্ত্বেও কোনো লাভ হয়নি। গাজার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়েছে ইসরায়েলের।
এখনো গাজায় হামাসের হাতে ১৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে। তাদের মুক্ত করে আনা নিয়ে দেশের ভেতরেও চাপের মুখে রয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন। বেশ কয়েকবার তেল আবিবে বিক্ষোভও হতে দেখা গেছে। সূত্র: রয়টার্স