যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় হতাশা জানিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। দেশটির নিউইয়র্ক ও সিয়াটলের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে গত শনিবার ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। নারীদের প্রজনন অধিকার নিয়ে তৈরি হুমকি ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণহারে অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি ট্রাম্প দিয়েছিলেন সেই প্রেক্ষাপটে এ বিক্ষোভ হয়।
নিউইয়র্কে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন পরামর্শক গ্রুপের কর্মীরাও। তারা কর্মীদের অধিকার ও অভিবাসীদের বিষয়ে ন্যায়বিচারের আশ্রয় নেওয়ার দাবি জানান।
নিউইয়র্কের ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড টাওয়ারের সামনে এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল, ‘আমরা আমাদের রক্ষা করি’, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, নারীরা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য আর কত দীর্ঘসময় অপেক্ষা করবেন?’, ‘আমরা পিছু হটব না’- এমন নানা স্লোগান লিখিত প্ল্যাকার্ড। কাউকে কাউকে স্লোগান দিতে শোনা যায়, ‘আমরা এখানে আছি এবং আমরা চলে যাচ্ছি না।’
একই ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতেও। সেখানে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন সংগঠন ‘উইমেন্স মার্চ’-এর কর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বিক্ষোভ নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এর কোনোটিতে লেখা, ‘ভালো ব্যবহারকারী নারীরা ইতিহাস তৈরি করেন না’, ‘আপনারা কখনোই নিঃসঙ্গ নন’, ‘আমার স্বাধীনতা কোথায় যেখানে আমার পছন্দের অধিকার নেই?’ ইত্যাদি। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, আমরা জিতব!’
গুরুত্বপূর্ণ শহর সিয়াটলেও মানুষ স্পেস নিডলের সামনে জড়ো হন। সেখানে বিক্ষোভকারীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘গণ-আন্দোলন গড়ে তুলুন যুদ্ধ, নিপীড়ন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে’। এ সময় আন্দোলনকারীদের অনেকে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি ও গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ রেইনকোট ও খুফিয়া গায়ে জড়িয়ে উপস্থিত হন।
আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে যিনি ক্ষমতায় এসেছেন তিনিই শ্রমিকদের হতাশ করেছেন।’
এর আগে গত শুক্রবার ওরেগনের পোর্টল্যান্ড এবং পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গেও ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ হয়। স্টিভ ক্যাপরি নামক আন্দোলনের এক সমন্বয়ক বলেন, ‘সামনে যা ঘটতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, তবে আমরা পিছু হটছি না। ট্রাম্প আমাদের সবার জন্যই হুমকি, তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং একসঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিতে হবে।’
ট্রাম্পের ৭ এ ৭, এল পূর্ণাঙ্গ ফল
অবশেষে প্রকাশিত হলো অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফল। এই অঙ্গরাজ্যের ফলও এসেছে ট্রাম্পের অনুকূলে। এর মাধ্যমে ব্যাটলগ্রাউন্ডখ্যাত ৭টি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের সবকটিতে জিতলেন তিনি। গতকাল প্রকাশিত হয়েছে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী, অ্যারিজোনার ১১টিসহ সবমিলিয়ে ৩১২টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প, যেখানে হোয়াইট হাউসের মসনদে যেতে প্রয়োজন ছিল ২৭০টি ভোট। এর আগে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ৩০৪টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছিলেন এই রিপাবলিকান।
অন্যদিকে কমলা হ্যারিসের ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ২২৬-এ। পপুলার ভোটেও জয় পেয়েছে রিপাবলিকানরা। এখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট আর কমলার ঝুলিতে গেছে ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি