ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
আপডেট: ১৫ মে ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের সিদ্ধান্ত
ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শুরু হওয়ার আগেই গার্মেন্টসহ সব সেক্টরের শ্রমিকদের উৎসব ভাতাসহ বেতন পরিশোধ করা হবে। 

বুধবার (১৫ মে) শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে শ্রম ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের ঈদের ছুটি যাতে দীর্ঘ ও স্বস্তিদায়ক হয়, এ বিষয়ে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আলোচনা-সম্মতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঈদের আগে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই বা কারখানা লে-অফ করতে পারবে না। 

তিনি বলেন, সরকার, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের নানা সংকট নিরসন সম্ভব হয়েছে। রেশনিংব্যবস্থা চালুর ব্যাপারেও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

সভায় অংশ নেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব হোসেন, অতিরিক্ত সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন, শ্রম অধিদপ্তরে মহাপরিচালক তরিকুল আলম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক আবদুর রহিম খান, বিজিএমইএর প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার এবং বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনিসহ মালিক ও শ্রমিকপক্ষের অন্য নেতারা। 

নাশকতার পৈশাচিক চিত্র

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৩০ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৩০ এএম
নাশকতার পৈশাচিক চিত্র

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর সারা দেশে শুরু হয় বীভৎস নাশকতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, নির্মম হতাহতের ঘটনা। এতে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান স্থাপনা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ হয়েছে। ঘটেছে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড। বিশেষ করে রাজধানীর শনির আখড়ায় একাধিক পুলিশকে হত্যা করে ওভারব্রিজে ঝুলিয়ে রাখা এবং গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত সহকারীকে উত্তরায় হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় নাশকতার নির্মম পৈশাচিক চিত্র ফুটে উঠেছে। কোনো ধরনের হত্যা কখনোই কাম্য নয়। আর কাউকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা মানবতার মর্মস্পর্শী আর্তনাদকেই তাড়িত করে। 

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কোটা আন্দোলন শুরু হয় চলতি মাসের ৫ তারিখে। এ আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয় ১৬ জুলাই। পর দিন সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে আবাসিক হল ছাড়েন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা ঘোষণা দেন, তারা কোনো ধরনের নাশকতার সঙ্গে জড়িত নন। এর পরও ১৮ জুলাই থেকে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, মাদারীপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক নাশকতার ঘটনা ঘটে। 

এসব নাশকতায় ব্যাপক হতাহতের মধ্যে অন্যতম রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দুই পুলিশ সদস্যকে মেরে শনির আখড়ার ওভারব্রিজে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনা। ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেদিন ছিল ১৯ জুলাই। রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় এক মোটরসাইকেল আরোহীকে তাড়া করে দুর্বৃত্তরা। তাড়া খেয়ে ওই মোটরসাইকেল আরোহী রাস্তার পাশে পড়ে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা ওই ব্যক্তির ব্যাগ তল্লাশি করে পুলিশের পোশাক ও আইডি কার্ড দেখতে পান। এ সময় তারা পুলিশ, পুলিশ বলে চিৎকার শুরু করে। চিৎকারে আশপাশের আরও কিছু দুর্বৃত্ত ছুটে এসে তাদের হাতে থাকা হকিস্টিক, বাঁশ, লাঠি দিয়ে তাকে মারতে থাকে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তারা লাশ নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে। মোটরসাইকেলটিও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর তার লাশ শনির আখড়া ওভারব্রিজে ঝুলিয়ে রাখা হয়। 

পরের দিন ২০ জুলাই সকালেও একই এলাকায় ঘটে একই ধরনের ঘটনা। ওই এলাকায় মোটরসাইকেলে সাদাপোশাকে একজন ব্যক্তিকে আসতে দেখে দুর্বৃত্তরা ধাওয়া করে। কিছুদূর যেতেই তাকে ধরে ফেলে। আইডি কার্ড দেখে পুলিশ বুঝতে পেরে হকিস্টিক, বাঁশ, লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। তারও মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। মোটরসাইকেলটিও একইভাবে আগুনে পোড়ানো হয়।

এদিকে ১৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তিগত সহকারী জুয়েল মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তাকেও ঝুলিয়ে রেখে উল্লাস করে দুর্বৃত্তরা। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গাড়িবহর নিয়ে রওনা দেন জাহাঙ্গীর আলম। গাড়িবহর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকা পার হওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা গতিরোধ করে। একপর্যায়ে তারা হামলা চালায়। এ সময় আন্দোলনকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে জাহাঙ্গীর আলমের মাথা ফেটে যায়। তার মাথায় ১৭টি সেলাই দিতে হয়। অনেকেই আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। জাহাঙ্গীরের ব্যক্তিগত সহকারী জুয়েল মোল্লাও গুরুতর আহত হন। তাকে সেখান থেকে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আবারও তার ওপর হামলা করা হয়। একপর্যায়ে তাকে গাছে ঝুলিয়েও পেটানো হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশ ঝুলিয়ে রেখেই হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। 

ঢাবিতে বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে প্রায় ৩০০ কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনায় ঘটেছে। ইতোমধ্যে হলগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণও করা হয়েছে। শিগগিরই হলগুলো সংস্কার করে খোলার পরিকল্পনা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন করেছেন ঢাবি উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। এ সময় তিনি ভাঙচুর হওয়া বিভিন্ন হলের কক্ষ পরিদর্শন করেন। 

পরিদর্শন শেষে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ডিভিশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলগুলোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছ থেকে আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে হলগুলোর কক্ষের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অনেক স্থাপনা সংস্কার করার পরিকল্পনা রয়েছে। সংস্কার শেষে দেশব্যাপী স্থিতিশীলতা বিরাজ করলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত হলে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে।’ 

কবে নাগাদ খুলবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে একটি অর্থ প্রাপ্তির বিষয় রয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে ইউজিসিকে এই আর্থিক বরাদ্দ দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। সেখানে আবার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের বিষয় রয়েছে। পরবর্তী সময় টেন্ডার ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) অনুসরণ করে কাজগুলো সম্পাদন করতে হবে। এখন টেন্ডার দেওয়ার পর সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব কবে কাজ শেষ হবে। এরপর আমরা খোলার সিদ্ধান্ত নেব।’

 এ সময় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

বেছে বেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর
গত ১৭ জুলাই রাত ১২টার দিকে অভিযোগ ওঠে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকা বিনতে হোসাইনসহ ৯ ছাত্রলীগ নেত্রী হলের কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করছে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে, সেখানে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা এবং ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ নেত্রীদের টেনেহিঁচড়ে হল থেকে বের করে দেন। পরে রোকেয়া হলে ‘সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ’- এই মর্মে একটি বিবৃতি প্রাধ্যক্ষের কাছ থেকে স্বাক্ষর করে নেন। একে-একে রাতের বিভিন্ন সময়ে শামসুন নাহার, কবি সুফিয়া কামাল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর ভোরে ছাত্রলীগ উৎখাত করে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান, এরপর সকাল ৭টা থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হল, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কবি জসীম উদ্‌দীন হল, বিজয় একাত্তর, মাস্টার দা সূর্যসেন, মুহসীন, স্যার এ এফ রহমান এবং সবশেষ সলিমুল্লাহ মুসলিম হল নিয়ন্ত্রণে নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় হলে থাকা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের তাড়িয়ে দেন, কেউবা আগেই সটকে পড়েন। একেবারেই ছাত্রলীগশূন্য হয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো। পরে আন্দোলনকারীরা বেছে বেছে পদধারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কক্ষ ভাঙচুর এবং জিনিসপত্র বাহিরে ফেলে দেন। এ এফ রহমান হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের ৩১৮ নম্বর কক্ষ, কবি জসীম উদ্‌দীন হলে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের কক্ষ, বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের পদ্মা-৭০১০ কক্ষ ও সূর্যসেন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়নের ৩৪৪ নম্বর ভাঙচুর করা হয়। 

এ ছাড়া স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে একটি এবং সূর্যসেন হলের সামনে আরেকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন আন্দোলনকারী। পরবর্তী সময়ে ওই দিন সকালেই জরুরি সিন্ডিকেটের সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত আসে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধে হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এর পরপরই পুরোপুরিভাবে হল ছাড়তে শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যদিও এর আগে গত ১৫ ও ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল, শহীদুল্লাহ হল এনং ফজলুল হক হল দখলে নেন আন্দোলনকারীরা।

পৈশাচিক তাণ্ডব
দুর্বৃত্তরা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন, সেতু ভবন ও ভবনের অর্ধশতাধিক দামি গাড়ি, পুষ্টি ইনস্টিটিউট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশন ভাঙা, ফার্মগেট মেট্রোরেল ডিপোতে হামলা, শনির আখড়ায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজা, বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, ধানমন্ডি পিবিআই অফিস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, মহাখালীতে বিটিআরসির ডেটা বেজ সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছেন। 

এদিকে রাজধানীর বাড্ডা, নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। রামপুরা থানা কার্যালয় ও রামপুরা পাম্প হাউসে অগ্নিসংযোগ, উত্তর সিটি করপোরেশনে উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মহাখালী, মিরপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে হামলা করেছে। বর্জ্য পরিবহনের গাড়ি ও কীটনাশক ওষুধ পুড়িয়ে দিয়েছে। মেরাদিয়া পিআইবি অফিস ভাঙচুর, উত্তরায় রেললাইন তুলে ফেলেছে। মৌচাক পুলিশ বক্সে আগুন, বছিলায় সিটি হাসপাতালে ভাঙচুর, কদমতলী, মোহাম্মদপুর থানায় হামলা, রমনা ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর, ফকিরাপুল পুলিশ বক্সে আগুন, উত্তরা পুলিশের ডিসি কার্যালয়, টিএনটি আঞ্চলিক অফিস, বসুন্ধরা চৌরাস্তা পুলিশ বক্স, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জোনাল অফিসে ২০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে অগ্নিসংযোগ, গাজীপুরের টঙ্গী ডেসকো বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, টঙ্গী পূর্ব থানায় হামলা, দুর্যোগ ভবন আক্রমণ করে শতাধিক গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়ানো হয়েছে। 

সেতু ভবনের অর্ধশতাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ। নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস, পিবিআই অফিস, জেলা হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন হামলা, নারায়ণগঞ্জে একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি পুড়িয়েছে। নরসিংদী কারাগারে হামলা করে ভয়ঙ্কর জঙ্গি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। বরিশালে র‌্যাবের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে, গাড়ির ভেতরে থাকা র‌্যাব সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগ কার্যালয়, কালিহাতী উপজেলা কার্যালয়, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন। গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর ও ১১টি মোটরসাইকেল পুড়ানো, রেললাইন উপড়ে ফেলা, বগুড়া জেলার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর, জাসদ কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, সাংস্কৃতিক জোটের কার্যালয়, পুলিশ বক্স, ভূমি অফিস, সিটি অফিস, ন্যাশনাল ব্যাংক, রেল স্টেশন, সরকারি শাহ আজিজুল হক কলেজ, সদর থানায় হামলা, বগুড়া পৌরসভা, হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী নাজমুল হোসেন, সুমন এবং যুবলীগ কর্মী রোমানকে হত্যা করা হয়। মাদারীপুরে বাস পোড়ানো হয়েছে।

সরকার পতনের আলোচনা করেন নূর ও ২ সমন্বয়ক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১৬ এএম
সরকার পতনের আলোচনা করেন নূর ও ২ সমন্বয়ক
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক সার্জিস আলম, নাহিদ ইসলাম ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। ছবি: খবরের কাগজ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সার্জিস আলম ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের মধ্যে সরকার পতনের আলোচনা হয়েছে। 

শুক্রবার (২৫ জুলাই) ভিপি নূরের মামলার তদন্তকারী কর্মকতা আবু সাঈদ মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। 

গতকাল পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে নুরুল হক নূরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আদালতে পুলিশের করা আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি ভিপি নূরকে আদালতের নির্দেশনা মেনে নিবিড়ভাবে মামলার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আসামির জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু সাঈদ মিয়া জানান, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আদালতের রায় হয়। এরপর থেকেই নূর নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সার্জিস আলম, আসিব মাহমুদ, আক্তার হোসেন এবং আহনাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে গত ১৮ জুলাই রাতে নাহিদ ইসলাম ও সার্জিস আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে এবং মেসেজে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ও বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার আলোচনা হয়।

তিনি আরও জানান, ওই দুই সমন্বয়ক নূরকে দাবি দাওয়াগুলো মেসেজ করে দিতে বলেন। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, ইন্টারনেট সচল করা, ছাত্রলীগ অথবা যুবলীগে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ সরকারের পদত্যাগ ইত্যাদি দাবি দাওয়া লিখে দেন নুরুল হক নূর। পরের দিন ১৯ জুলাই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য নূর তার নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান এবং বর্তমান সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে অন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। আসামি মামলার ঘটনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

নাহিদসহ ৩ সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৭ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৯ এএম
নাহিদসহ ৩ সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে এবার হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে সাদাপোশাকের কিছু মানুষ তাদের তুলে নিয়ে যায়। ডিবিপ্রধান বলেছেন, তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমাদের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ও আসিফকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে সাদাপোশাকে আবার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এভাবে সমাধান চান আপনারা? মনে রাখবেন, ভয় দেখিয়ে কখনো আন্দোলন শেষ করা সম্ভব নয়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও নার্স জানিয়েছেন, বিকেল ৪টার কিছু পরে তাদের (নাহিদ, আসিফ ও বাকের) তুলে নেওয়া হয়। কয়েক দিন ধরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তারা। ছিলেন নজরদারিতে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই তাদের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।

নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে এর আগেও তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। 

এ বিষয়ে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, তাদের তিনজনকে নিরাপত্তার স্বার্থে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ
সজীব ওয়াজেদ জয়

ডিজিটাল বাংলাদেশের নেপথ্য নায়ক এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ঘটে যাওয়া বিপ্লবের স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা- এ দুজনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নেপথ্য কারিগর হিসেবে কাজ করছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়। 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় মা ও বাবার সঙ্গে জার্মানিতে ছিলেন জয়। পরে মায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে চলে যান তিনি। তার শৈশব ও কৈশোর কাটে ভারতে। সেখানকার নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক করেন তিনি। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। 

লেখাপড়ারত অবস্থায় রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত থাকলেও জয় সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান ২০১০ সালে। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়া হয় তাকে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন জয়। তিনি ২০০৭ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে নির্বাচিত হন।

বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ মিশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:২৯ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৫২ এএম
বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ মিশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ করেছেন। এসব বিক্ষোভ কারা সংগঠিত করেছে, কারা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে তা জানতে দেশগুলোয় বাংলাদেশের মিশনগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বের নানা প্রান্তে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের কূটনীতিকরা সেখানকার সরকারের কাছ থেকে বিক্ষোভের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করবেন। এরপর ওই তথ্য ঢাকায় পাঠাবেন।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে অন্তত ছয়টি চিঠি পাঠানো হয়েছে।  

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিক্ষোভ করায় ইতোমধ্যে আরব আমিরাতে ৫৭ বাংলাদেশির কারাদণ্ড হয়েছে।