![মালয়েশিয়া যেতে পারেননি ১৭ হাজার কর্মী: প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ](uploads/2024/06/04/cabinate-meeting-1717474258.jpg)
সব প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি ১৭ হাজার কর্মী। আর এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৩ জুন) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি একে ‘দেশের জন্য বড় ক্ষতি’ উল্লেখ করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাদের কারণে এই বিপুল সংখ্যক কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, তাদের সবাইকে শাস্তি পেতেই হবে। আমি এ ঘটনায় দায়ীদের কাউকেই ছাড়ব না।’
মন্ত্রিসভার একাধিক সূত্র খবরের কাগজের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত এ বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভার এক সদস্য খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, বৈঠকে দেশের নদনদীর ড্রেজিংয়ের বিষয় নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যেভাবে ড্রেজিং করা হচ্ছে, তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। মাটি, বালু ও পলি তোলার পর আবার তা নদীতে চলে যাচ্ছে। তাই নৌ-পরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজটি করতে হবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উত্থাপিত ‘ড্রেজিং ও ড্রেজ ম্যাটারিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৪’ নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
এদিকে সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, দেশের সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময়সূচি এক ঘণ্টা বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। বর্তমানে অফিস সময়সূচি ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। ঈদুল আজহার ছুটির পর এই সময়সূচি বৃদ্ধি পেয়ে হবে ৯টা-৫টা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০২২ সালে সময়সূচি পরিবর্তন করে বিকেল ৫টার পরিবর্তে ৪টা করা হয়েছিল। এখন আগের অবস্থায় নেওয়া হলো।
এ ছাড়াও মন্ত্রিসভার বৈঠকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের কারণে শাহবাগ থানাকে সাকুরা বারের পেছনে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মন্ত্রিসভা সূত্র জানিয়েছে, ১৭ হাজার কর্মীর মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই আলোচনা শুরু করেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক এই অর্থনৈতিক সংকটের সময় এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এতে দেশের বড় ক্ষতি হয়েছে। এটা প্রতারণা, অবহেলা না কি অদক্ষতা কিংবা অন্য কোনো কারণে হয়েছে, তা বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। তিনি আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, যারা মালয়েশিয়া যেতে পারলেন না তাদের এখন কী হবে?
তিনি বলেন, ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের শাস্তি পেতেই হবে। এদের কাউকেই তিনি ছাড়বেন না বলেও হুঁশিয়ার করেন।
এ সময় প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী ১৭ হাজার কর্মীর মালয়েশিয়া যেতে না পারার প্রাথমিক কারণগুলো জানালে তা শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরক্তি প্রকাশ করেন।
জাতীয় জীবনিরাপত্তা নীতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন:
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন জানান, জাতীয় জীবনিরাপত্তা নীতি ২০২৪-এর খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
এ আইনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এখন অনেক রিসার্চ হচ্ছে। রিসার্চ যেন নিরাপদ হয়, যাতে রেগুলেট করতে পারি সে জন্য এটি করা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের এ আইন সম্পর্কে মাহবুব হোসেন আরও বলেন, কোনো একটি ভ্যারাইটি সরাসরি বাজারে আসতে পারবে না। সরকারের অনুমোদন লাগবে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কি না তা আগে ভেরিফাই করা হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় এটি করবে।
ভিসা ছাড়াই মঙ্গোলিয়া যেতে পারবেন অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা:
ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই মঙ্গোলিয়া যেতে পারবেন। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া সরকারের মধ্যে মিউচ্যুয়াল এক্সেম্পশন অব ভিসা রিকয়্যারমেন্টস চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে ২৯টি দেশের সঙ্গে এরকম চুক্তি রয়েছে। এটি কার্যকর হলে দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হবে ৩০। ডিপ্লোম্যাটিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া পরস্পরের দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।
এ ছাড়াও মন্ত্রিসভার বৈঠকে বন শিল্প উন্নয়ন আইনের খসড়া এবং নেদারল্যান্ডস ও মরিশাসের সঙ্গে দ্বৈত কর আরোপ পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি রোধে চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।