ঢাকা ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

৮ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৮ পিএম
৮ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
ছবি : খবরের কাগজ

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির কারণে সিলেট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও ফেনীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন এসব জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বানভাসি মানুষের সংখ্যা। পাশাপাশি আশ্রয়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে দুর্গত এলাকার মানুষ।

আমাদের সিলেট ব্যুরো ও প্রতিনিধিরা জানান-

সিলেট ব্যুরো: সিলেটে ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে নদ-নদীর পানি। তবে বিভিন্ন উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীবেষ্টিত উপজেলাগুলোর নতুন এলাকা বেশি প্লাবিত হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ছয় স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, ১ হাজার ১৬০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৩ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত রয়েছে। জেলায় ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯৫১ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি 

কুড়িগ্রামে বেড়েই চলছে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি। এর ফলে বৃহসপতিবার উলিপুর, সদর, নাগেশ্বরী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত পাঁচ হাজার পরিবারের মানুষ। এ নিয়ে জেলায় বন্যায় আক্রান্ত রয়েছে ১৫ হাজার পরিবারের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চরবালাডোবার মানুষ। বন্যাকবলিতদের অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তবে তাদের মাঝে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আরও দুই থেকে তিন দিন ভারী ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। 

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বানভাসিদের মধ্যে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। 

ফেনীতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হলেও ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। দুই উপজেলার এখনো অন্তত দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। এদিকে বসতবাড়ি থেকে পানি নামলেও তলিয়ে আছে ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাট। অন্যদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য।

গতকাল বুধবার রাতে সিলোনিয়া নদীতে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন। এর আগে গত সোমবার রাতে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর আটটি স্থান ভেঙে পরশুরাম ও ফুলগাজীর ২৮ গ্রাম প্লাবিত হয়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। পানি কমলে ভাঙনস্থলের মেরামতকাজ শুরু হবে।

গাইবান্ধার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত 

গাইবান্ধায় জেলার সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার নদী-তীরবর্তী কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া তারাপুর, হরিপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি তিস্তামুখঘাট পয়েন্ট, ঘাঘটের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্ট, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ও তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। 

সিরাজগঞ্জে ৪০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ

সিরাজগঞ্জে যমুনা করতোয়া, হুরাসাগরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এদিকে যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে কাজীপুর, জেলা সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ফলে স্থানীয়দের মাঝে বন্যা-আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ছাড়া পানির তীব্র স্রোতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ও কৈজুরী দুটি ইউনিয়নে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদীতীরের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আরও কয়েক দিন যমুনা নদীর পানি বাড়বে। এতে করে ছোট থেকে মাঝারি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

টাঙ্গাইলে তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের নিচু এলাকা

টাঙ্গাইলের সব কয়টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তার মধ্যে ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে নদী-তীরবর্তী চরাঞ্চলের নিচু এলাকা। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে কয়েকটি উপজেলায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

নেত্রকোনার শতাধিক গ্রাম জলমগ্ন

১০ দিন পর পুনরায় বন্যার ঝুঁকিতে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, সদর ও খালিয়াজুরী উপজেলার মানুষ। এর ফলে এসব উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। কোথাও কোথাও সড়ক তলিয়ে গিয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান জানান, প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। 

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, শুকনো খাবার, ওষুধ বরাদ্দ করা হয়েছে। ৮৫টি মেডিকেল টিম দুর্গত এলাকায় কাজ করছে।

জামালপুরে পানিবন্দি ১০ হাজার 

জামালপুরে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরামসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বন্যার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাঠারবিল এলাকায় দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ৩০ মিটার অংশ বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া একই উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কে একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ভেসে যাওয়ায় খোলাবাড়ি ও গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। 

সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২০ পিএম
সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

দুর্গাপূজা উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। 

ড. ইউনূস বলেন, ‘দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।’

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সবার। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশ সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।’ দেশের সব নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হবে: এম সাখাওয়াত হোসেন

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ এএম
চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হবে: এম সাখাওয়াত হোসেন
ছবি: খবরের কাগজ

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্পূর্ণ অটোমেশন করা হবে। এতে কনটেইনার লোডিং-আনলোডিং আরও সহজ হবে। বন্দরে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে। হয়রানি ও দূর্নীতি কমে যাবে।

মঙ্গলবার ( ৮ অক্টোবর) বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে  এ সব কথা বলে তিনি।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন,  চট্টগ্রামে বন্দরের ইয়ার্ডে ২০ বছরের পুরনো কনটেইনার পড়ে আছে। ১৫ বছর আগের গাড়ি পড়ে আছে। কাস্টমস কী করছে আমি জানি না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। কনটেইনারের নিলাম করা দরকার। আটকে থাকা কনটেইনারগুলো ডেলিভারি দিয়ে ইয়ার্ড খালি করা দরকার। পুরনো কনটেইনার জায়গা দখল করে আছে এটি বড় সমস্যা। আমি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবো। যেন কাস্টমস হাউস দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করে।

এ বন্দরের সমস্যা দূর করতে হলে শুধু পোর্ট নয় আরও অনেকগুলো সংস্থাকে এক সঙ্গে উদ্যেগ নিতে হবে উল্লেখ করে নৌ উপদেষ্টা বলেন,   চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও সচল করতে হলে অটোমেশন করতে হবে। আমাদের কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের বিনিয়োগের লোক আছে। তারাই কাজ করবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বে- টার্মিনাল প্রকল্প আমি পরিদর্শন করেছি। এ মূহুর্তে বে-টার্মিনাল সম্পর্কে কিছু বলবো না। আপাতত এখানে কোন সমস্যা নেই । এখানে বিনিয়োগ হচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বসে আসে বেটার্মিনালে বিনিয়োগের জন্য। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বিনিয়োগ করতে চাইছে।

তিনি আরও বলেন, ২২ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের অনেক বেআইনি কাজ হয়েছে। সেগুলো বন্ধ করা হবে। উন্নয়ন প্রকল্পসহ সবকিছু ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে হবে। এখন আর ভাগবাটোয়ারা করে খাওয়ার সুযোগ নেই।

বেটার্মিনাল নিয়ে নৌ উপদেষ্টা বলেন, বেটার্মিনাল হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়বে। দেশের আরও বিদেশি বিনিয়োগকারী আসুন। আমরা বিদেশিদের উৎসাহিত করবো। সিংগাপুর, সৌদি আরব, নেদারল্যান্ড, দুবাই আমাদের বন্দরে বিনিয়োগ করছে। দেশের উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। বেটার্মিনালে জেনারেল কার্গো চট্টগ্রাম বন্দরের আন্ডারে থাকবে। আগামি সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক আছে। দেশের জন্য যেটা ভাল সেটা আমরা করবো। ডাইরেক্ট বিনিয়োগের জন্য অনেক দেশ বসে আছে। দেশের উন্নয়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। আমার দেশের ক্ষতি হবে এমন কিছুই করা হবে না।

দূর্নীতি বন্ধ করতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বড় দূর্নীতি বন্ধ করলে ছোট দূর্নীতিও বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে (বন্দরে) অনেক অনিয়ম হয়েছে। অনেকজনকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এ বন্দরকে জঞ্জালমুক্ত করতে হবে, বন্দরকে আরও দ্রুত তম করতে হবে।  দূর্নীতিমুক্ত করতে হবে, টেন্ডারে অনিয়ম হয়েছে এখন থেকে ওপেন টেন্ডার হবে। বহুবছর ধরে বিনা রেজিস্টেশনে গাড়ি চলছে। বিআরটিএকে বলবো সেই গাড়িগুলো বন্ধ করতে। সব কিছু নিয়মের মধ্যে চলে আসতে হবে। সব কিছু নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে চলতে হবে। যেখানে দূর্নীতি হবে সেখানে আপনারা লিখবেন, বলবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি চট্টগ্রাম বন্দর দেখতে আসলাম, শিখতে আসলাম, বুঝতে আসলাম। আস্তে আস্তে বন্দরের সব সমস্যা সমাধান হবে। আমি তিনদিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দর ঘুরে ঘুরে দেখেছি। সমস্যাগুলো দূর করতে সময় লাগবে। ইক্যুইপমেন্ট যা আসছে সব গুলোর সঠিক ব্যবহার হবে। দেশের স্থলবন্দরগুলোতেও অনেক অনিয়ম চলছে। সব দূর করা হবে। সমাধান হতে সময় লাগবে। দুই মাসের তো সম্ভব না। ২২ মাস সময় দেন।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে বিদেশি অপারেশনাল সংস্থা বেশ কিছু ইক্যুইপমেন্ট এনেছেন। তারা কাজ শুরু করেছে। আমাদেরও কিছু ইক্যুইপমেন্ট আছে। আমরা মাত্র ১৩শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু আগামি ২২ বছরে আমাদের আয় হবে ৫ হাজার কোটি টাকা।

আবদুস সাত্তার/এমএ/

নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ
ড. শেখ আব্দুর রশিদ

নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে আগামী দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন ড. শেখ আব্দুর রশিদ। 

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদটি জনপ্রশাসনে সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পদ।

অবসরে থাকা ড. শেখ আব্দুর রশিদকে গত ১৭ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। অবসর থেকে চুক্তিতে প্রশাসনে ফিরে আসার দুই মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই মন্ত্রিপরিষদ সচিব হলেন তিনি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নিলুফা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী ড. শেখ আব্দুর রশিদকে যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ১৪ অক্টোবর ২০২৪ অথবা যোগদানের তারিখ হতে পরবর্তী দুই বছর মেয়াদে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো। এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে এবং জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।’

প্রসঙ্গত, বর্তমানে মাহবুব হোসেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি বাংলাদেশের ২৪তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। গত বছরের ১৩ অক্টোবর মাহবুব হোসেনের অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে তখন অবসরে না পাঠিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তাকে আরও এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছিল। সেই হিসেবে আগামী ১৩ অক্টোবর তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কর্মদিবস হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবারই (১০ অক্টোবর) তার শেষ কর্মদিবস। এর আগেই নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব নিয়োগ দিল অন্তর্বর্তী সরকার।

গণপরিবহন খাতে যাত্রী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
গণপরিবহন খাতে যাত্রী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সব প্রতিষ্ঠানে যাত্রী প্রতিনিধি হিসেবে অংশীজন হিসেবে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গণপরিবহনের আইন ও বিধি-বিধান তৈরি, ভাড়া নির্ধারণ, গণপরিবহনে যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চায় সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সড়ক পরিবহন, সেতু মন্ত্রণালয় ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠকে সংগঠনের নেতারা স্মারকলিপি পেশ করে এই দাবি করেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সড়ক পথে সব প্রকল্প, বাস ভাড়া নির্ধারণ ও সড়ক নিরাপত্তার নানা পদক্ষেপে বাসমালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক সংগঠন ও সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব সময়। এতে করে পরিবহন খাতে নির্লজ্জ দলীয়করণ, চাঁদাবাজি, ধান্ধাবাজি, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা চরম আকার ধারণ করেছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিটি ফোরামে যাত্রী সংগঠন তথা জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এখন থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সব বৈষম্য দূর করা হবে। যাত্রী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে। তিনি মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রমে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহযোগিতা কামনা করেন।’ 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যাত্রী কল্যাণ সমিতি উপদেষ্টা ও এফবিসিসিআই সাবেক পরিচালক আবদুল হক, যাত্রী কল্যাণ সমিতিরসহ সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন ও প্রচার সম্পাদক মাহামুদুল হাসান রাসেল প্রমুখ।

শেখ হাসিনার অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
শেখ হাসিনার অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে কোথায় আছেন, তা সরকার নিশ্চিত হতে পারেনি।’

‘শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) উদ্দেশে নয়াদিল্লি ত্যাগ করেছেন’ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “আপনারা সবাই যেমন দেখেছেন (সোশ্যাল মিডিয়াতে), আমরাও দেখেছি, ‘যে তিনি সম্ভবত আজমানে আছেন।’ তবে আমরা দিল্লি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে খোঁজখবর নিয়েছি। কিন্তু কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার অবস্থান নিশ্চত করেনি।” 

শেখ হাসিনাকে অন্য দেশে পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে চাপ দিয়েছিল কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা হোসেন বলেন, ‘এই প্রশ্নটি যুক্তরাষ্ট্রকে করাই ভালো।’

ভ্রমণ পাস নিয়ে অন্য দেশের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সদস্যদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সাম্প্রতিক প্রবণতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ভ্রমণ পাস শুধুমাত্র বাংলাদেশে ফিরে আসার জন্য, অন্য দেশে ভ্রমণের জন্য নয়। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশে ফেরার জন্য বিশেষভাবে ভ্রমণ পাস ইস্যু করা হয়।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের ফেরত আনার প্রয়োজন হলে, আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরিয়ে আনা হতে পারে।’