চট্টগ্রামে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন মো. ফারুক (৩২) ও মো. ওয়াসিম আকরাম (২৪)। ফারুকের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ফার্নিচারের দোকানে চাকরি করতেন। নিহত অপরজনের নাম মো. ফয়সাল। ফয়সাল ওমরগণি এমইএস কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বরিশাল। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে নিহত ওয়াসিমকে ছাত্রদলের কর্মী দাবি করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত হয়েছে। লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেলে আছে। সে চট্টগ্রাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়ায়। সে বদ্দারহাটে থাকত।’
চমেক হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নুজহাত ইনু জানান, চমেক হাসপাতালে তিনজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে ফারুক নামে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুর থেকে শহরে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনেই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগ যাতায়াত করেন। কিন্তু সকাল থেকে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বাস, সিএনজি অটোরিকশাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শহরে আসেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের একাংশের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছুড়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণে বহদ্দারহাট থেকে জিইসি পর্যন্ত সিডিএ অ্যাভিনিউ কেঁপে ওঠে। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে সাধারণ মানুষ এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চট্টগ্রামে তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিজিবি ৮-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী।
তারেক মাহমুদ/সালমান/