![বিএনপি নেতাদের বাড়িতে ককটেল হামলা, শনাক্ত হয়নি দুর্বৃত্তরা](uploads/2023/11/23/1700739113.Koktel.jpg)
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাড়ির সামনে ককটেল হামলাকারীরা শনাক্ত হয়নি।
এ ছাড়া খুলনার ফুলতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবুল বাশার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাব্বির হোসেন রানার বাড়িতে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের যশোরের বাড়ির সামনে ককটেল নিক্ষেপ ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন সবুজের বাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় কাউকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বিএনপি নেতাদের দাবি, আতঙ্ক সৃষ্টি করার নতুন অপকৌশল হিসেবে এসব হামলা করেছে আওয়ামী লীগ।
পুলিশ বলছে, তারা ঘটনাগুলো তদন্ত করেছে এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টায় কারাগারে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসের ঢাকার শাহজাহানপুরের বাসায় দুর্বৃত্তরা ককটেল নিক্ষেপ করে। দুটি ককটেলের মধ্যে একটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় এবং অপর ককটেলটি সম্পূর্ণ অবিস্ফোরিত থাকে। মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ককটেল বিস্ফোরণের সময় বাসায় অবস্থান করা নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত বের হয়ে একটি মোটরসাইকেলকে চলে যেতে দেখেন। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীরা বাসার গেটের সামনে ইউনিফর্ম পরা ৬-৮ জন পুলিশকে ৩-৪টি মোটরসাইকেলসহ অবস্থান করতে দেখেন। তিনি আরও জানান, মোটরসাইকেল আরোহী এবং ককটেল নিক্ষেপের ঘটনাটি পুলিশের কাছে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন খবরের কাগজকে জানান, মির্জা আব্বাসের বাসায় ককটেল হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) দুই মেয়াদের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাড়িতে ককটেল হামলাকারীরা ঘটনার ভিডিও করায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি রাজনৈতিক নয় জানিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঘটনাটি প্রথম দিকে মনে হয়েছিল রাজনৈতিক। সিসি ক্যামেরা দেখে মোটেও সেটি মনে হয়নি। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে যে দুজন, তাদের প্রশিক্ষিত মনে হয়েছে। মুখে মাস্ক পরা ছিল। ভিডিও ধারণকারীকেও দেখাচ্ছিল যেন কারও নির্দেশ পালন করছে। এসব কারণে ঘটনাটি আমার কাছে রাজনৈতিক নয়, রহস্যজনক মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ফুটেজ পেয়েও পুলিশ রহস্য ভেদ করতে না পারায় মানুষের মনে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। ককটেল বিস্ফোরণকারী কারা? কেন তারা ককটেল ফাটিয়ে ভিডিও ধারণ করল? কাকে দেখাতে এই হামলা?’
এদিকে খুলনার ফুলতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবুল বাশার ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাব্বির হোসেন রানার বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। খুলনা জেলা বিএনপির নেতারা বলেছেন, এক দফা আন্দোলনে গণগ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপির নেতারা কৌশলগত কারণে বাড়িছাড়া। এ সুযোগে পরিবার-পরিজনের ওপর পুলিশি হয়রানির পাশাপাশি আতঙ্ক সৃষ্টি করতে নতুন অপকৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের যশোরের বাসভবনে বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিএনপির দাবি, দুটি বাসভবনে ১৫টির মতো ককটেল হামলা করা হয়। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণের তথ্য পেয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। এ ঘটনায় কেউ আটক নেই।’
তা ছাড়া সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন সবুজের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাকে না পেয়ে তার বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহজাদপুর পৌর শহরের পাঠানপাড়ায় আমির হোসেন সবুজের বাড়িতে ৮ থেকে ১০ জনের একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলে গিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন সবুজ বলেন, বর্তমান এমপি মেরিনা জাহান কবিতার নির্দেশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালান। এ বিষয়ে শাহজাদপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা বলেন, ‘হামলা ও ভাঙচুরের ব্যাপারে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়।’
আল-আমিন/সালমান/